
প্রিন্ট: ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:২৭ এএম

ড. মাহফুজ পারভেজ
প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

আরও পড়ুন
ইসরাইল-হামাস যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ায় ইসরাইল আবারও গাজায় আগ্রাসন চালাচ্ছে। প্রতিদিন শত শত মানুষ হত্যা করছে। মোট প্রাণহানি ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে বহু আগেই। স্কুল, হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয় ও আবাসিক ভবনের ধ্বংসযজ্ঞের পাশাপাশি ত্রাণকর্মী, চিকিৎসক, শিক্ষক ও সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু বানানোর নৃশংসতাও অব্যাহত রয়েছে।
একতরফা আক্রমণে পাখির মতো মানুষ মারার উপমা এখন ফিলিস্তিনের গাজা। অথচ বিশ্বের সরকারগুলো কিছুই করছে না। এমন নির্লিপ্ততা বিস্ময়কর, অভাবনীয়, কাপুরুষোচিত। একটি দেশের পুরো জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একতরফা হত্যালীলার নৃশংস-বর্বরতা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।
গাজার ওপর সাম্প্রতিক হামলা এবং সেখানে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু, বিশেষ করে শিশু ও নারীদের, গোটা মানবজাতির বিবেককে নাড়া দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমরা দেখছি-বিশ্ব নেতৃত্ব মুখে মানবাধিকারের কথা বললেও গাজা প্রসঙ্গে তারা নীরব। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো তাদের চিরাচরিত ‘উদ্বেগ প্রকাশ’ ছাড়া কার্যকর কিছু করছে না। মিডিয়ার একাংশ বরাবরের মতো নির্দিষ্ট পক্ষকে ‘ভিক্টিম’ সাজাতে ব্যস্ত। অথচ গাজা উপত্যকা একসময় গৌরবদীপ্ত ইতিহাসের অংশ ছিল। ছিল জায়নবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের প্রতীক।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের একাংশ পক্ষপাতদুষ্ট ভাষায় হামলাকারীদের ‘আত্মরক্ষার’ অধিকার নিয়ে কথা বলছে, অথচ গাজায় মাটিচাপা পড়া শিশুগুলোর কান্না তাদের চোখে পড়ে না। এটি শুধু গণহত্যা নয়, এটি মানবতা, ন্যায়বিচার এবং আন্তর্জাতিক নীতিমালার ওপর সরাসরি আঘাত, একতরফা নরহত্যাযজ্ঞ। এক্ষেত্রে জাতিসংঘ, ওআইসি, মানবাধিকার সংস্থা-সবার ভূমিকা চরমভাবে প্রশ্নবিদ্ধ। যেসব সংস্থা মানবাধিকার রক্ষার কথা বলে গঠিত হয়েছিল, তারা আজ নিঃশব্দ। কেবল উদ্বেগ প্রকাশ করে বা তদন্তের কথা বলে সময় পার করছে তারা। এ নীরবতা এক ধরনের মদদ, এক ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা, হত্যার পরোক্ষ সহযোগিতা। ফলে আজ যারা গাজা নিয়ে চুপ, ইতিহাস একদিন তাদেরও বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে।
গাজার চলমান গণহত্যার পাশে একইসঙ্গে চলছে আরেক যুদ্ধোন্মাদনা। যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনে হামলা চালাচ্ছে হুথিদের (আনসারুল্লাহ) গাজার প্রতি সমর্থন এবং লোহিতসাগরে অবরোধের প্রতিক্রিয়ায়। ইসরাইলি বাহিনী লেবাননের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে এবং একইসঙ্গে সিরিয়ার কিছু অংশে অগ্রসর হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইল নেতৃত্ব থেকে ইরানের প্রতি নিয়মিত হুমকি দেওয়া হচ্ছে। স্পষ্টত, যুক্তরাষ্ট্রের সবুজ সংকেত পেয়ে ইসরাইল তার অঞ্চল, সীমান্ত ও দখল সম্প্রসারণের মহাপরিকল্পনার পরবর্তী ধাপে এগোচ্ছে। যারা এর বিরোধিতা করবে, তাদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে।
ট্রাম্প প্রশাসন, কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় গঠিত যুদ্ধবিরতি, যা সদ্য ভেস্তে গেছে, তা তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত ছিল। প্রথম পর্যায় শুরু হয় ১৯ জানুয়ারি-যেখানে হামাস ৩৩ বন্দিকে মুক্তি দেয়, বিনিময়ে ১,৯০০ ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পায় এবং ইসরাইল গাজায় খাদ্য ও মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু বন্দিমুক্তির পরপরই ইসরাইল মানবিক সহায়তা বন্ধ করে দেয়-এটি প্রথম পর্যায়ের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। খাদ্য, আশ্রয়, বিদ্যুৎ, চিকিৎসা বা বিশুদ্ধ পানি না দেওয়া আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন এবং এটি গণহত্যার উদ্দেশ্য প্রমাণে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের মানদণ্ড পূরণ করে। অন্যদিকে হামাস প্রথম ধাপ পালন করে দ্বিতীয় ধাপের অপেক্ষায় ছিল।
দ্বিতীয় ধাপে ১ মার্চ থেকে সব ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি, গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার কথা ছিল। কিন্তু ইসরাইলের তা মানার কোনো ইচ্ছা ছিল না, যা স্পষ্ট হয়ে ওঠে তাদের আলটিমেটামে-‘যদি সব বন্দি মুক্তি না দেওয়া হয়, তারা গাজার আরও এলাকা দখল করবে, জনগণকে উচ্ছেদ করবে এবং নিরাপত্তা অঞ্চল সম্প্রসারিত করবে।’ প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ ঘোষণা করেছিলেন, পূর্ণ গাজা দখল, সামরিক শাসন প্রতিষ্ঠা এবং পরিকল্পিত গণহত্যা ও জাতিগত নিধনের উদ্দেশ্যে তারা প্রকাশ্যে কাজ করেছে। ফিলিস্তিনিদের সামনে তাই ‘চূড়ান্ত সমাধান’ হিসাবে বেছে নেওয়ার মতো দুটি পথই খোলা আছে : মৃত্যু কিংবা দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া।
ন্যক্কারজনকভাবে গাজায় জাতিগত নিধন এবং দখলকে অনুমোদন দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরাইলের সুরে সুর মিলিয়ে বলেছেন, হামাস যদি এক সপ্তাহের মধ্যে সব বন্দি মুক্তি না দেয়, তাহলে ‘তাদের মূল্য দিতে হবে নরকে।’ এ হুমকিমূলক অবস্থান ইসরাইলের কট্টর ডানপন্থিদের তুষ্ট করেছে, যেমন নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির, যিনি যুদ্ধবিরতির সময় প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছিলেন, এখন আবার গণহত্যার সুযোগ পাওয়ার পাশব আনন্দে মন্ত্রিসভায় ফিরে এসেছেন। শুধু তাই নয়, ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ইসরাইলের কাছে ১২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছেন এবং ৪ বিলিয়ন ডলার জরুরি সহায়তা প্রদান করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা ইসরাইলকে পূর্ণ সমর্থন দেবে ইরান ও অন্যান্য সন্ত্রাসী প্রতিনিধির বিরুদ্ধে ‘বহুমুখী যুদ্ধের’ প্রয়োজনে, যা গাজার পাশাপাশি পশ্চিম এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইল জোটের যুদ্ধবাজ নীতির প্রকাশ মাত্র।
যুক্তরাষ্ট্র গাজায় ইসরাইলি গণহত্যার বিরুদ্ধে যে কোনো মানবিক অবস্থান ও সমালোচনাকে ‘ইহুদিবিদ্বেষী’ হিসাবে চিত্রিত করছে, এমনকি তা যদি ইহুদি সম্প্রদায়ের ভেতর থেকেও আসে। বিশেষ করে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ নির্মমভাবে দমন করা হচ্ছে। অনেক প্রতিবাদী ছাত্রের ভিসা বাতিল করে তাদের স্বদেশে পাঠানো হচ্ছে। অনেকের চাকরি খেয়ে ফেলা হয়েছে। ইসরাইলের প্রতি এহেন ছত্রছায়া দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলি নৃশংসতার অন্যতম মদদদাতার ভূমিকা পালন করছে।
এ অবস্থায় ব্যক্তিগত পর্যায় ছাড়াও বিভিন্ন গোষ্ঠী ও দেশ ইসরাইলি গণহত্যার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের রোষানলে পড়েছে। যেমন, ইসরাইলের স্বার্থেই যুক্তরাষ্ট্র হুথিদের ওপর বোমা হামলা এবং ইয়েমেনে বেআইনি যুদ্ধ শুরু করেছে। ইসরাইল কর্তৃক গাজায় চরম গণহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের পটভূমিতে মূলত ইয়েমেন ও ইরানকে থামিয়ে রাখতে যুক্তরাষ্ট্র দ্বিতীয় বিমানবাহী রণতরী মোতায়েন করেছে উপসাগরীয় অঞ্চলে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র প্রেরিত প্রথম বিমানবাহী রণতরি হুথিদের থামাতে পারেনি। বিমানবাহী রণতরীর দ্বিতীয়টিও পারবে কিনা, তা স্পষ্ট নয়। কারণ, ইয়েমেনের হুথিরা উপসাগরের সবচেয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠী হলেও তারা ফিলিস্তিনিদের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে এবং লোহিত সাগরে তাদের অবরোধ চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইলের স্বার্থের বিরুদ্ধে প্রাণপণ লড়ছে। হুথিরা হলো শিয়া জায়েদি সম্প্রদায়ের মানুষ, যারা কারবালার বিয়োগান্ত ঘটনার পর থেকেই ন্যায়ের পক্ষে ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবিচল।
অন্যদিকে, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সিরিয়ায় নতুন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারাআ ওরফে আবু মোহাম্মদ আল-জুলানি, যিনি একসময় যুক্তরাষ্ট্রের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় ছিলেন, এখন ক্ষমতা বাঁচাতে সেখানকার সংখ্যালঘু আলাভি শিয়া ও খ্রিষ্টানদের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। কারণ, তারা গদিচ্যুত বাশার আল-আসাদের মিত্র ছিল। ইসরাইল নিয়মিত সিরিয়ায় বিমান হামলা চালাচ্ছে এবং গোলান হাইটসের চারপাশে ৪০০ বর্গকিমি এলাকায় নিয়ন্ত্রণ বিস্তারে কাজ করছে, যা ১৯৭৩ সাল থেকে ইসরাইলের দখলে। সিরিয়ায় এ বিশৃঙ্খলা এখন পর্যন্ত ইসরাইলের সম্প্রসারণবাদকে সহায়তা করেছে। তবে এখন তাদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে তুরস্কের, যারা আল-শারাআ সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে এবং ইসরাইলবিরোধী অবস্থান নিয়েছে।
লেবাননে ২০২৪ সালের নভেম্বরে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরাইল এখনো লেবাননের ভূমি দখল করে রেখেছে, যেখান থেকে তারা সরে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ‘হেজবুল্লাহ নির্মূল’ করার অজুহাতে তারা লেবাননের গ্রামগুলোতে হামলা চালাচ্ছে।
ইরান শুরু থেকেই ইসরাইলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানকে বারবার হুমকি দিচ্ছেন, পরমাণু কর্মসূচি পুরোপুরি বন্ধ করে নতুন চুক্তি না করলে ফল ভোগ করতে হবে। কিন্তু ২৫ মার্চ সর্বশেষ মার্কিন গোয়েন্দা মূল্যায়নে বলা হয়েছে, ইরান বর্তমানে কোনো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে না। নেতানিয়াহু ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাইলে এককভাবে তা পারবেন না। ইসরাইলের পক্ষে শুধু মার্কিন সমর্থনেই ইরান আক্রমণ করা সম্ভব। কিন্তু ইরান যুক্তরাষ্ট্রের চাপের কাছে নতিস্বীকার করবে না বলে সাফ জানিয়েছে। ১৮ মার্চ ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে আলাপকালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, ইরানে যেন ইসরাইল হামলা না করে। চীন ও রাশিয়া উভয়ই বলেছে, ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি অর্জনের অধিকার রয়েছে এবং তারা আলোচনার মাধ্যমে যে কোনো সমস্যার সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে।
পক্ষান্তরে ইরান হুঁশিয়ারি দিয়েছে, তাদের ওপর যে কোনো আগ্রাসনের পরিণাম ভয়াবহ হবে। বিশ্বে তেল সরবরাহের ২ শতাংশ আসে ইরান থেকে এবং তাদের ওপর হামলা বৈশ্বিক জ্বালানি সংকট ও মূল্যবৃদ্ধি ডেকে আনবে। ইরানের শক্তিশালী সামরিক সক্ষমতা, রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে নিরাপত্তা চুক্তি এবং BRICS ও Shanghai Cooperation Organisation-এর সদস্যপদ-এসব কারণে ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ শুধু মধ্যপ্রাচ্য বা পশ্চিম এশিয়ায় নয়, বিশ্বব্যাপী যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি করবে।
অন্যদিকে, জনসমর্থনহীন দখলদারি নেতা এবং সরকারের দ্বারা শাসিত অসহায় ও অথর্ব আরব রাষ্ট্রগুলো কাপুরুষের মতো নিশ্চুপ হয়ে আছে কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের তাঁবেদারি করছে। মূলত তারা নিজেদের গদি বাঁচাতে মরিয়া। কারণ তারা আশঙ্কা করছে, গাজার মানুষদের জোরপূর্বক তাদের দেশে ঠেলে দেওয়া হতে পারে কিংবা জনগণ গাজা গণহত্যায় আন্দোলনমুখর হতে পারে। এসব স্বার্থবাদী আরব দেশের পক্ষে ইসরাইলি গণহত্যার বিরুদ্ধে কোনো যৌথ পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না তাদের নিজেদের নৈতিক শক্তি ও জনসমর্থন না থাকার কারণে। তারা যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরাইলকে আটকাতে তো পারছেনই না, বরং মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতিকে কৌশলগতভাবে সহযোগিতা করছে, যা প্রকারান্তরে ইসরাইলের শক্তি ও নিরাপত্তা বাড়াচ্ছে।
এটি দিবালোকের মতো স্পষ্ট, গাজায় গণহত্যার পাশাপাশি ইসরাইল-যুক্তরাষ্ট্র পশ্চিম এশিয়ায় একটি স্থায়ী যুদ্ধমঞ্চ তৈরি করেছে। তারা সিরিয়া, লিবিয়া ও ইরাকের মতো রাষ্ট্রগুলোকে সরকার পতনের মাধ্যমে অস্থিতিশীল করে ঋণ, দারিদ্র্য ও দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি তৈরি করেছে। ইসরাইলের প্রতিটি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের জনতা জায়নবাদী হন্তারকদের পতন কামনা করলেও আরব রাষ্ট্রগুলোর নতজানু নীতির জন্য তা সফল হচ্ছে না। নিজেদের শাসনের বৈধতার সংকটের জন্য আরব সরকারগুলো নিজ নিজ ক্ষমতা বাঁচানোর স্বার্থবাদী আচরণ করছে। এজন্য তারা অত্যন্ত অমানবিক হয়ে গণহত্যা থেকে মুখ ফিরিয়ে চুপ রয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে তারা শুধু জ্বালানি উত্তোলন ও রপ্তানি এবং এর মাধ্যমে ডলার উপার্জন করার তালে আছে। যদিও গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল, ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা, ওপেকসহ আঞ্চলিক জোট রয়েছে; কিন্তু তারা একটি সম্মিলিত নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করতে অতীতের মতো এবারও ব্যর্থ হওয়ায় গাজায় ‘গণহত্যা’ চলছেই। ইসরাইল ‘সম্পূর্ণ নিরাপদ’ রয়েছে আর গোটা মধ্যপ্রাচ্য তথা পশ্চিম এশিয়া ডুবে আছে ‘অনিরাপত্তা ও যুদ্ধের’ ঝুঁকিতে।
প্রফেসর ড. মাহফুজ পারভেজ : চেয়ারম্যান, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়