
প্রিন্ট: ০১ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০২ পিএম
ঈদ আনন্দকে আরও প্রাণবন্ত করতে এ ছুটিতে কী করবেন?
প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ১০:০৫ পিএম

ফাইল ছবি
আরও পড়ুন
পবিত্র ঈদুল ফিতর আসে আনন্দের বার্তা নিয়ে—রোজার পরিণতিতে ক্ষমা, মিলন আর উৎসবের এক অপার মুহূর্ত। এবার ঈদের ছুটি দীর্ঘ, প্রায় ৯ দিন। এই সময়টাকে কীভাবে গুছিয়ে নেবেন? কেমন করে ভরবেন তাৎপর্য আর ভালোবাসায়? শুধু ঘুরে বেড়ানো বা বিশ্রাম নয়, এই ছুটিকে স্মরণীয় করে তোলার আছে নানা রকম উপায়।
ফিরে যান শেকড়ের টানে
শহরের কোলাহল থেকে মুক্ত হয়ে একটু প্রকৃতির কোলে ফিরে যাওয়ার মজাই আলাদা। ঈদের ছুটিতে শহুরে ব্যস্ততার মধ্যে যারা গ্রামের বাড়ির কথা ভুলে থাকেন, এবার সময়টা কাজে লাগান। নদীর পাশে সবুজ মাঠ, শিশুদের উচ্ছ্বাস, আত্মীয়দের আপ্যায়ন—গ্রামের ঈদ যেন এক স্বর্গীয় আবেশ। দাদা-দাদির হাসি, মায়ের রান্নার গন্ধ, চাচাতো ভাইবোনদের সঙ্গে খুঁনসুটির স্মৃতি তৈরি করুন। গ্রামের সেই পুরোনো আমবাগানে বসে এক কাপ চায়ের আড্ডা আপনাকে ফিরিয়ে দেবে হারানো সময়ের গল্পে।
আত্মীয়তার বন্ধন দৃঢ় করুন
ঈদ শুধু নতুন জামা-কাপড় বা সেমাই খাওয়ার উৎসব নয়, এটি সম্পর্কের উৎসব। দীর্ঘদিন দেখা হয়নি, এমন আত্মীয়স্বজনকে ফোন করুন, তাদের বাড়ি যান। বাবা-মায়ের সঙ্গে সময় কাটান, তাদের হাসিতে ভরিয়ে দিন। ছোট ভাইবোন বা বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরতে যান, তাদের জন্য ছোট উপহার কিনুন। দূরের কাউকে হয়তো সামনাসামনি দেখা হবে না, কিন্তু ভিডিও কলের মাধ্যমেও তো ভালোবাসা আদান-প্রদান সম্ভব!
ভ্রমণের প্ল্যান করুন
যদি গ্রামে না যান, তাহলে ছুটিটাকে কাজে লাগিয়ে ঘুরে আসুন দেশের কোথাও। সেন্ট মার্টিনের নীল জল, রাঙ্গামাটির পাহাড়, সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ—প্রকৃতির কোলে কয়েক দিন কাটালে মনটা সতেজ হয়ে উঠবে। অথবা যদি বড় ভ্রমণ সম্ভব না হয়, আশেপাশের পার্ক, মিউজিয়াম বা ঐতিহাসিক স্থান ঘুরে দেখুন। পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে পিকনিক প্ল্যান করুন।
নিজেকে সময় দিন
এই দ্রুতগতির জীবনে আমরা নিজেদের জন্য কতটুকু সময় বের করি? ঈদের ছুটিতে একটু থামুন। বই পড়ুন, গান শুনুন, সৃজনশীল কিছু করুন। হয়তো লিখতে ভালোবাসেন, আঁকতে চান বা নতুন কোনো রেসিপি ট্রাই করতে চান—এখনই সময়। মেডিটেশন বা ইবাদতের মাধ্যমেও আত্মশুদ্ধির চেষ্টা করুন।
অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান
ঈদের আনন্দ সবার জন্য সমান নয়। পাশের রাস্তায় যে শিশুটি নতুন জামার জন্য তাকিয়ে আছে, কিংবা বৃদ্ধাশ্রমে যে মানুষগুলো আপনজনহীন—তাদের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করুন। সামান্য অর্থ, খাবার বা সময় দিয়েও আপনি কারও ঈদকে আলাদা করে দিতে পারেন। সাদাকাতুল ফিতর, জাকাত বা স্বেচ্ছাসেবার মাধ্যমে গরিবদের পাশে দাঁড়ালে ঈদের সত্যিকারের তৃপ্তি পাওয়া যায়।
প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগ
মোবাইল, ল্যাপটপ থেকে দূরে থাকুন কিছু সময়। প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটান, বাগান করুন, পাখির ডাক শুনুন। বাড়ির ছাদে বা বারান্দায় বসে সন্ধ্যার চা উপভোগ করুন। প্রিয়জনের সঙ্গে আড্ডা দিন গল্পে গল্পে, ফোনে নয়—চোখের সামনে।
সবশেষে
ঈদের ছুটি কেবল দিন কয়েকের অবসর নয়, এটি আত্মার খোরাক জোগানোর সময়। নিজেকে, পরিবারকে এবং সমাজকে সময় দিন। আনন্দ ভাগাভাগি করুন, স্মৃতি তৈরি করুন। কারণ, জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো—ভালোবাসা আর একসাথে থাকার মুহূর্তগুলো।
ঈদ মোবারক!