Logo
Logo
×

দৃষ্টিপাত

রাজনীতিতে জামায়াতের সরব উত্থান এবং প্রসঙ্গ কথা

Icon

সাজ্জাদ পারভেজ

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৮ পিএম

রাজনীতিতে জামায়াতের সরব উত্থান এবং প্রসঙ্গ কথা

দীর্ঘ ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদ শাসনে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত দলের নাম বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির প্রথম সারির সকল নেতাকে হত্যা করা হয়েছে, শত শত কর্মীকে খুন করা হয়েছে, হাজার হাজার মিথ্যা মামলা দিয়ে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদেরকে নিঃস্ব করে ফেলা হয়েছে।  জামায়াতের জনশক্তির সাথে সম্পৃক্ত ব্যবসা-বাণিজ্য, ব্যাংক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, সব দখল করা হয়েছে।  বলতে গেলে জামায়াত ছিল নিষিদ্ধ। দলটিকে গত সরকারের পুরো আমলেই গোপনে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়েছে। মিথ্যা ট্যাগ দিয়ে হঠকারি প্রচারণায় সমাজ ও নতুন প্রজন্মের কাছে দলটি সম্পর্কে  শতভাগ নেতিবাচক বয়ান দাঁড় করিয়েছে।  

৫ আগস্টে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতনের পর জাময়াতে স্বস্তি এসেছে।  আয়নাঘর নামের অন্ধকার প্রকোষ্ঠ থেকে ব্রিগেডিয়ার আজমী, ব্যারিস্টার আরমান ফেরত এসেছেন। জামায়াত অফিস খুলে প্রকাশ্যে রাজনৈতিক তৎপরতা শুরু করতে পেরেছে। নিষিদ্ধ প্রজ্ঞাপন বাতিল হয়েছে। নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ফেরত পাচ্ছে। কর্মীরা মামলা, জেল প্রভৃতি থেকে নিষ্কৃতি পাচ্ছে। জামায়াতের কাছে গণপ্রত্যাশা বাড়ছে।

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গত এক মাসের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এই মুহূর্তে জামায়াত সবচেয়ে আলোচিত দল। দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান সবচেয়ে আলোচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।

বিগত কয়েক দিনে জামায়াত মোটাদাগে যেসব কাজে ব্যস্ত রয়েছে তা হলো-

জামায়াত হিন্দুদের মন্দির ও বাড়িঘর পাহারা দিয়েছে, তাদেরকে নিরাপত্তার ব্যপারে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছে। 

শহিদ আবু সাঈদের পরিবারসহ সকল শহীদ পরিবারের পাশে ছুটে গিয়েছে। আহতদের চিকিৎসার জন্য সাধ্যমত চেস্টা করছে। বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে।

জুডিশিয়াল ক্যু, সংখ্যালঘু কার্ড ব্যবহারের চেষ্টা, ১৫ আগস্ট কেন্দ্রিক আওয়ামী পরিকল্পনাসহ বিপ্লব বিরোধী বিভিন্ন হঠকারি তৎপরতাকে ভন্ডুল করতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। 

ইসলামপন্থী দলসমূহকে কাছে টানার চেষ্টা করছে। নেতারা স্ব স্ব এলাকায় গিয়ে জনসংযোগ করছেন।

এ সকল তৎপরতা থেকে প্রতীয়মান যে, মোটাদাগে জামায়াত সমাজ কল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমে ইমেজ বৃদ্ধি, নির্বাচনি মাঠ দখল এবং হারানো প্রতিষ্ঠান পুনরুদ্ধার কাজকে প্রাধান্য দিচ্ছে।

রাজনীতিতে নিজেদের অবস্থান মজবুত করার জন্য এ সকল কাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্ত এটাও সমভাবে বিবেচ্য যে, সমাজকল্যাণ আর ভোট ছাড়াও বহু ফ্যাক্টর আছে যা রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণ করে। মনে রাখতে হবে, এনজিও টাইপ কর্মকাণ্ড আর রাজনীতি এক কথা নয়। 

সামাজিক কাজ করে ক্ষমতায় যাওয়া গেলে ব্র্যাকের আবেদ সাহেবরা নেতা হতেন। জামায়াতের প্রতি মানুষের যে সমর্থন সেটার মূল কারণ আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দলটির আপসহীন ভূমিকা ও অসামান্য ত্যাগ-কুরবানি। সত্যিকারের দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতা এটা মনে করে যে, জামায়াতই একমাত্র দল যারা এদেশকে ভারতের আগ্রাসন থেকে মুক্ত করতে পারবে। 

ইবাদতে কাজা কাফফারা আছে কিন্তু রাজনীতিতে তা নেই। যেকোনো রকমের ভুল কথা বা সিদ্ধান্ত সকল সম্ভাবনাকে নস্যাত করে দিতে পারে। ইসলামফোবিক  ও  আজন্ম জামায়াত বিদ্বেষী  মিডিয়া ও সিভিল সোসাইটির নেতিবাচক প্রচারণা সামাল দেয়ার মতো পর্যাপ্ত সক্ষমতা অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত স্পর্শকাতর ইস্যুতে মন্তব্য বা দলীয় অবস্থান  নিয়ে কথা বলতে সংযম ও সতর্কতা অবলম্বন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আবেগতাড়িত দলীয় নেতা-কর্মীদেরকে উচ্ছাস প্রসূত  অতিকথন থেকে দূরে থাকতে কঠোর নির্দেশনা দেয়া প্রয়োজন। আল্লাহর মহা অনুগ্রহে যে সুযোগ পাওয়া গেছে সেটাকে  কাজে লাগিয়ে  জনগণের কাছে ইসলামের বিশুদ্ধ  রূপ তুলে ধরার প্রতি বেশি মনোযোগ প্রদান করা বুদ্ধিমত্তার পরিচয় হবে। সোশাল মিডিয়া, সংবাদ মাধ্যম  এবং অহেতুক বিতর্ক এড়িয়ে চলা একান্ত  প্রয়োজন। সোশাল মিডিয়ায় কনটেন্ট  তৈরিকারকদেরকে বিশেষ প্রশিক্ষণের আওতায় আনা দরকার। একটি নির্দিষ্ট নিয়মনীতি মেনে চলার বাধ্যবাধকতায় না আনলেই নয়। মিথ্যা, অর্ধসত্য, বিকৃত, ফেক তথ্য বা নিউজ পরিবেশন করা থেকে বিরত থাকা, চরিত্র হননমূলক প্রচারণা পরিহার করা এবং আপত্তিকর, অশালীন শব্দ বা কথা পরিহার করা দাওয়াতি চরিত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য।

শহিদ পরিবারের পুনর্বাসন, আহতদের চিকিৎসা, বন্যার্তদের পুনর্বাসন কাজের পাশাপাশি আরও কিছু কাজ বেশ জরুরি।

এর মধ্যে প্রথম হলো জাতীয় ঐক্য ধরে রাখা। এবারের বিজয়ের পিছনে মূল বিষয় ছিল ছাত্র-জনতার জাতীয় ঐক্য। দলগত স্বার্থ ম্যাক্সিমাইজ করতে যেয়ে জাতীয় ঐক্য যাতে নষ্ট  না হয় সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ  সতর্কতা  অবলম্বন করে রাজনৈতিক বয়ান বা  তৎপরতা পরিচালিত হওয়া প্রয়োজন। 

মাফিয়া সরকারের সকল এজেন্ট এখনো সর্বত্র বহাল তবিয়তে রয়েছে। জাতীয় ঐক্য ক্ষতিগ্রস্ত হলে মাফিয়া শকুনগুলো আবার হামলে পড়বে।  বিপ্লব সংহত করতে ঐক্য ধরে রাখার কোনো বিকল্প নেই।

অন্তর্বর্তী সরকার যাতে সফল হয় তার জন্য সার্বিক সহযোগিতা করা আবশ্যক। সরকারকে সফল হতে হলে সবার আগে বিচার বিভাগ, পুলিশ প্রশাসন ও সিভিল প্রশাসনসহ সকল জায়গা থেকে দ্রুত ফ্যাসিস্টদের  দোসরদের সমূলে বিদায় দিতে হবে। ফ্যাসিস্টদের দোসররা যাতে রঙ পাল্টিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদে আসতে না পারে সে ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। এজন্য রাজনৈতিক দল ও ছাত্ররা মিলে প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্যে সরকারের ওপর সর্বাত্মক চাপ জোরদার করতে হবে। চাপ না থাকলে ফ্যাসিস্ট বামরা উপদেষ্টাদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের কানেকশনে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখলে নিবে। 

ফ্যাসিস্ট আমলে যে সকল দক্ষ আমলা ও পেশাজীবীদেরকে ওএসডি করে রাখা হয়েছিল বা বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছিল তাদের মেধা ও যোগ্যতাকে  বিপ্লবের অনুকূলে কাজে লাগানোর জন্য যত্নবান হওয়া খুবই জরুরি। কেবল খেয়াল রাখতে হবে যে, এই প্রক্রিয়ায় যেন কোনো দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তি বা চক্র পদ-পদবীর ধারে কাছে ঘেঁষতে না পারে। 

ইতোমধ্যেই ফ্যাসিবাদের দোসররা প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে সামনে আসতে শুরু করছে।  প্রতিরোধ করতে না পারলে খুব দ্রুতই দ্বিতীয় স্বাধীনতা ৭১ এর গল্পে হারিয়ে যাবে। ফ্যাসিস্টদের পক্ষে যেকোনো বিবৃতি, সহানুভূতি, পরামর্শমূলক নীতিকথা, নমনীয় মনোভাব, প্রতিবাদ, ইত্যাদিকে বিপ্লবের শত্রু হিসেবে দেখতে ও চিহ্নিত করতে হবে। প্রতিরোধ গড়ে  তুলতে হবে। 

এক সময় আলেম-উলামা আর সিনিয়র রাজনীতিকদেরকে আদালতে তুলতে কষ্টদায়ক ডান্ডাবেড়িও পরানো হেতো। আর আজ পুলিশের সাবেক মাফিয়া কর্মকর্তাদেরকে হাতকড়াটাও না পরিয়ে সম্মানজনক প্রটোকল দিয়ে ফজরের ওয়াক্তে আদালতে হাজির করার মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট পুনর্বাসনের আলামত দৃশ্যমান হচ্ছে। এ ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে হবে। 

রাজনৈতিক দলের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে, ক্ষমতাসীনদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় রাখা। এজন্য সরকারের কর্মকাণ্ডের গঠনমূলক  সমালোচনা করা রাজনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সমঝোতা, সমর্থন, সহযোগিতা ইত্যাদি ভূমিকার পাশাপাশি সরকারের ভুল ধরিয়ে দেওয়া এবং দরকারি জায়গাগুলোতে করণীয় সম্পর্কে স্পষ্ট  পরামর্শ প্রদান বা চাপ প্রয়োগ করা খুবই দরকার। 

তাছাড়া, এখন যারা ক্ষমতায় আছেন তারা বেশির ভাগ সরকার ও প্রশাসন  পরিচালনায় অনভিজ্ঞ।  এ কারণে তাদেরকে সার্বক্ষণিক ভিজিলেন্সের মধ্যে না রাখলে যেকোনো দুর্বল বা ভুল সিদ্ধান্ত  হয়ে গেলে তা অপূরণীয় ক্ষতির কারণ হতে পারে। ইতোমধ্যেই বেশকিছু ভুল ও অদক্ষতা স্পষ্ট হয়েছে। আনসার বিদ্রোহ, এইচএসসি পরীক্ষা, ডাক্তারদের শাটডাউন, দুর্নীতিবাজদের  জামিন,  পদায়ন  ইত্যাদি। সরকারে রাজনৈতিক মেধার সংযোজন দাবি করা সমীচীন।

সরকারকে সময় প্রদান বিষয়ে মন্তব্যের চাইতে গুরুত্বপূর্ণ হলো সরকারকে তার কাজ  দ্রুত সমাধা করতে বাধ্য করা। সাহাবীদের আমল থেকে শুরু করে সব আমলেই সলফে সালেহীনরা শাসকদের গঠনমূলক সমালোচনা করেছেন। মোহরানার ব্যাপারে হয়রত উমর রা. সীমা নির্ধারণ করতে চাইলে মহিলা সাহাবীরা প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেছেন। 

সমালোচনা না করার অন্য বিপদও আছে। আল্লাহ না করুন! এই সরকার ব্যর্থ হলে তার দায় জামায়াতের ওপরও পড়বে। নিজেদের সমর্থিত সরকার বলে কোনো বিরোধিতা করা যাবে না, এমন ধারণা খুবই ভুলনীতি। 

এই সরকারের সাফাই গাওয়া জামায়াতের কাজ না। তাতে অন্যদের নিকট ভুল বার্তা যাবে। সরকারেরই দায়িত্ব তার কাজের ব্যাখ্যা দেয়া। তাছাড়া সরকার যদি দেখে জামায়াত নিঃশর্ত সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে তখন ন্যায্য পাওনাটাও দিতে গড়িমসি করবে।

এই মুহূর্তে রাজনৈতিক দলসমূহের প্রধান কাজ আওয়ামী ফ্যাসিবাদী রাজনীতির বয়ান যাতে আর ফিরে আসতে না পারে তার জন্য সর্বাত্মক কর্মসূচি গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন। আ.লীগ আর তার লেজুড়বৃত্তি করা ইনু-মিনু-জিএম গং সংগঠিত হওয়া মানেই হলো দেশ অস্থিতিশীল হওয়া। এতবড় গণহত্যা করার পরও আবার যদি আলীগ সংগঠিত হতে পারে তাহলে সবাইকে এর জন্য চরম মূল্য দিতে হবে। ভারত ও র-এর এজেন্টরা, বামপন্থীরা, হিন্দুত্ববাদীরা, ইসকনের বরকন্দাজরা, নাস্তিক আলট্রা সেকুলাররা, এলজিবিটি সমর্থক ব্র্যাক টাইপ ব্যবসায়ী কাম এনজিওরা, ইসলামফোবিক কালচালাল একটিভিস্টরা এবং তাদের ফুয়েলদাতা ব্যবসায়িক চক্র, গোপালী বেনিফিসিয়ারিরা, প্রভৃতি সবাই কিন্তু পুরোমাত্রায় সক্রিয়। ওরা সবসময়ই ঐক্যবদ্ধ। কুরআনে এসবের সত্যতার অনুকূলে মেসেজ রয়েছে। 

অপরদিকে ইসলামপন্থীদের মধ্যেও হুজুরলীগ রয়েছে। ইসলামপন্থীদের মধ্যে রয়েছে কাঙ্খিত মানের পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সংযোগের অভাব। তাই, ঘরে বাইরে এত প্রতিবন্ধকতা ডিঙিয়ে আগামীদিনে গণমানুষের নেতৃত্বে আসতে হলে অনেক বিষয়ে সক্ষমতা  অর্জনে  অধিকতর যত্নবান হতে হবে।  

জামায়াতের যে পরিমাণ জনসমর্থন আছে সেই তুলনায় সমাজ ও ক্ষমতাকাঠামোর  গুরুত্বপূর্ণ জায়গা গুলোতে অবস্থান নেই বললেই চলে। তাই শোডাউন ধরণের কাজের চাইতে সেক্টরভিত্তিক নেতৃত্ব তৈরির জন্য অনুকূল পরিবেশের সুযোগকে কাজে লাগানো দরকার।

জামায়াত সংস্কারের পর নির্বাচনের কথা বলছে। কি সংস্কার চাওয়া হচ্ছে তা স্পষ্ট করা উচিৎ। বিশেষজ্ঞদের নিয়ে  বিভিন্ন সেক্টর ভিত্তিক কনসালটেটিভ টিম তৈরি করা সময়ের দাবি। সংবিধান, শিক্ষা কারিকুলাম, নির্বাচন, গণহত্যার বিচার, ফ্যাসিস্ট সরকারের  ইনটেলিজেন্স ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাজারো সীমালঙ্ঘনের জবাবদিহিতা, ব্যাংকিং খাত ও শেয়ারবাজারের লুণ্ঠন, দ্রব্যমূল্য ইত্যাদি বিষয়ের সংস্কারকে অগ্রাধিকার দিয়ে এগুতে হবে। ইনটারিম সরকার সব সংস্কার করে দেবে আর রাজনীতিকরা ড্রইংরুমে সময় কাটাবেন এটা হতে পারে না। সংস্কারে গণ আকাঙ্খার প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে  হবে। রাজনৈতিক মেধাকে কাজে লাগানোর  বিকল্প নেই।

আর গতিশীল একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান  বা রাজনৈতিক নেতৃত্বের অপরিহার্য  বৈশিষ্ট হলো  নিজেকে সমালোচনা সহনশীল করে তোলা। দলের বা নেতার নীতি, সিদ্ধান্ত বা আচরণের  বিপক্ষে কেউ কিছু বললেই তাদেরকে প্রত্যাখান করা, অপমান করা, উপেক্ষা করা, অবজ্ঞা করা, এবং তাদেরকে কোণঠাসা করার জন্য উঠে পড়ে লেগে যাওয়া, ইত্যাদি ঘোরতর অন্যায়। চিস্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ছাড়া স্বাধীনতার দাবি প্রকৃতঅর্থে  স্বাধীনতাকে অস্বীকার করা। ভিন্নমতকে আনুগত্যহীনতা গণ্য করা একটি অপরাধ বটে। তাই ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধা তৈরির কালচার গড়াটা খুবই দরকার। ভিন্নমতের স্পেস  থাকতেই হবে। সংস্কারের চেতনায় ভিন্নমতের অবস্থান স্বীকৃত। ভিন্নমতকে কটাক্ষ করা, ও উপেক্ষা করা হলে ভাঙন বা স্থবিরতা অবশ্যম্ভাবী।

লেখক: রাজনৈতিক বিশ্লেষক

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম