আত্মবিশ্বাস, উদ্দীপনা এবং অনুপ্রেরণার এক নির্ভরশীল জায়গা পরিবার
রহমান মৃধা, সুইডেন থেক
প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারি ২০২০, ০১:৩৪ পিএম
একটি মজার কাহিনী বহু দিন পর মনে পড়ে গেল। শেয়ার করতে শখ হলো তাই এই লেখা। কারণ শেয়ার ভ্যালু এবং লার্নিং ফ্রম লার্নার কনসেপ্টের মূল লক্ষ্য হলো নতুন কিছু জানা এবং অনুপ্রাণিত হওয়া।
আমার কাকা মরহুম আব্দুস ছাত্তার মৃধা, (বিএসসি, বিএড) মাগুরা জেলার গঙ্গারামপুর প্রসন্ন কুমার উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের ছাত্র ছিলেন। মেট্রিক পরীক্ষার ছয় মাস বাকি থাকতে বাবা তাঁর ছোট ভাইকে গঙ্গারামপুর হাইস্কুলে ভর্তি করেন।
শুধুমাত্র আমার কাকা মেট্রিকে ১৯৬৩ সালে ওই স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে পাস করেন। পরে তিনি ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন ১৯৮৪ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত।
আমার মেজভাই কর্নেল (অব.) হান্নান মৃধা ওই একই স্কুলে পড়েছেন দুই বছর। আমি নিজেও সেখানে পড়েছি দুই বছর। আমার বাবাকে বহুদিন পরে জিজ্ঞেস করেছিলাম কী কারণে তিনি আমাকে সেখানে পড়তে উৎসাহিত করেছিলে।
যদিও আমাদের বাড়ির কাছেই ভালো স্কুল রয়েছে এবং আমি সেখান থেকেই এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারতাম। বাবার একটাই উত্তর ছিল তা হলো সেখান থেকে অজিৎ বিশ্বাস, যশোর বোর্ডে স্ট্যান্ড করেছিল ১৯৬৭ সালে।
আমার কাকার ফার্স্ট ডিভিশনে এসএসসি পাশ করাটা তখনকার সময়ের একটি নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত এবং তা অনুপ্রাণিত করেছিল অজিৎ বিশ্বাসসহ আরও হাজারো ছাত্র-ছাত্রীকে।
আমি যশোর বোর্ডে স্ট্যান্ড করতে পারিনি তবে তার কাছাকাছি রেজাল্ট ছিল। আর হ্যাঁ, বাবার সেই বোর্ডে স্ট্যান্ড স্বপ্ন পূরণ করেছিলেন আমার বড় ভাই প্রফেসর ড. মান্নান মৃধা; তবে এক বার নয় দুবার।
সেটা হয়েছিল ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ থেকে। পরে ১৯৭৪ সালে উচ্চশিক্ষার্থে তিনি স্কলারশিপে ইউরোপে আসেন। মান্নান ভাইয়ের সব কিছু আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে।
এই কারণে আমিও স্বপ্ন দেখেছি বিদেশে যাব, উন্নত শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে ভালো চাকরি করব ইত্যাদি।
ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিতে চাকরি করার সময় দেখেছি পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত আমেরিকান ফ্রেড হাসান হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করে একটি বিশ্বখ্যাত ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর হতে পেরেছে, আমি কেন পারব না?
জীবনে অনেক কিছু সম্ভব হতে পারে যদি সত্যিকারে ধ্যানে জ্ঞানে মোটিভেশন, ডেডিকেশন এবং সামনে একজন রোল মডেল থাকে।
একটা ভালো রোল মডেল সামনে থাকলে জীবন যুদ্ধে জয়ী হবার সম্ভাবনা বেশি, যেমনটি দেখছি আমার ছেলে মেয়ের ক্ষেত্রে। ওদের রোল মডেল হচ্ছে দুই বিশ্ব টেনিস তারকা রজার ফেদেরার ও সেরিনা উইলিয়াম।
তাইতো দেখছি তারা প্রতিদিন কঠিন পরিশ্রম করছে তাদের উদ্দেশ্য সফল করতে।
আমার এই উপলব্ধি ও উদাহরণ বয়ে আসুক সফলতা আমাদের হাজারো ভাইবোনদের ছেলেমেয়ের মাঝে এই কামনায়- You can only understand my devotion if you share my passion.
রহমান মৃধা, দূরপরবাস সুইডেন, Rahman.Mridha@gmail.com