আমাদের অনেকের মধ্যে এক ধরণের হাহাকার বিরাজ করে। আমি সাধারণত যাদের সঙ্গে চলাফেরা করি কিংবা যাদের সাথে বিভিন্ন সময় কথাবার্তা হয়, তারা মোটামুটি সবাই সুস্থ, ভালো আয় করে, বাসস্থানের সমস্যা নাই। তারপরেও তাদের মধ্যে বিভিন্ন রকমের কষ্ট দেখি।
যেমন, কবে যে বাড়িটা তিন তলা থেকে চার তলা করতে পারবো?/ কবে যে ৫ম গ্রেডে প্রমোশন পাবো?/ কবে যে বাগান বাড়ি করতে পারবো?/ ড্রয়িং রুমে ১ টন থেকে ২ টনের এসি কবে যে লাগাতে পারবো?/ খুব নিঃসঙ্গ লাগে/ খুব ডিপ্রেশনে আছি/ ব্যাংকের সুদের হার কেন যে ০.৫% কমে গেল ইত্যাদি ইত্যাদি।
আমি যখন হতাশার কথা শুনি, নিজের মধ্যে হাসি পায়। নিজে নিজে ভাবি, আল্লাহর রহমতে দুটি চোখ দিয়ে দেখতে পাচ্ছি, হাত-পা সচল আছে, অসুস্থতা নেই, লেখাপড়া করতে পেরেছি, সম্মানের সাথেই সমাজে চলাচল করছি, পরিবারের মধ্যে আছি, বন্ধু-বান্ধব আছে। সবই আল্লাহর রহমত।
এতো রহমতের মধ্যে বেঁচে থেকে আমাদের উচিত প্রতিনিয়ত আল্লাহকে ধন্যবাদ দেওয়া। তাকে স্মরণ করা। একবার ভাবুন তো, দুই মিনিটের জন্য যদি অক্সিজেন বন্ধ হয়ে যেত, তাহলে কি করতেন? সকল ধরণের চাওয়া পাওয়া বাদ দিয়ে শুধু বেঁচে থাকতেই চাইতেন। হ্যাঁ, সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকাটাই সবচেয়ে বড় চাওয়া হওয়া উচিত।
আসলে আমরা লোভের মধ্যে বেঁচে থাকতে চাই। কোন কিছুতেই আমাদের সন্তুষ্টি নেই। সবসময় উপরের দিকে তাকিয়ে থাকি। একবার নিচের দিকে তাকান। একবার একজন অন্ধ মানুষের কথা ভাবুন। যদি আপনার দুইটি চোখের বিনিময়ে একটা রাষ্ট্র লিখে দেওয়ার কথা বলা হয়, তবু আপনি রাজি হবেন না। অন্তত আমার ব্যাপারটা বলতে পারি, আমি হবো না।
আমাদের যা আছে, তাই নিয়েই সন্তুষ্ট হওয়া উচিত। দেখবেন খারাপ লাগবে না। ভালো থাকবেন, সুখে থাকবেন।
লেখক: রিয়াজুল হক, উপ পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক।