উত্তর আমেরিকার স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ডের বরফে দীর্ঘায়িত বিশালাকার ভাইরাস আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। ডেনমার্কের আরহাস ইউনিভার্সিটির পধিরবেশ বিজ্ঞান বিভাগের পোস্টডক লরা পেরিনি এবং তার সহকর্মীরা এই ভাইরাসগুলো আবিষ্কার করেছেন। সম্প্রতি ইন্ডিয়া টুডের খবরে এ তথ্য উঠে এসেছে।
গত চার দশক ধরে গলতে শুরু করেছে গ্রিনল্যান্ডের বরফ। পেরিনি বলেছেন, আমরা ভাইরাস সম্পর্কে এখনো অনেক কিছু জানি না। তবে আমি মনে করি, তারা বরফ গলে যাওয়া কমানোর উপায় হিসেবে বেশ কার্যকর হতে পারে। কতটা কার্যকর হবে সে বিষয়েও আমরা স্পষ্ট নই। তবে এই প্রশ্নের উত্তর দিতে আমরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছি। ভাইরাস সাধারণত ব্যাকটেরিয়ার তুলনায় অনেক ছোট হয়। নিয়মিত ভাইরাসের আকার ২০ থেকে ২০০ ন্যানোমিটার। যেখানে একটি সাধারণ ব্যাকটেরিয়া ২ থেকে ৩ মাইক্রোমিটার। কিন্তু দৈত্য ভাইরাসের ক্ষেত্রে বিষয়টা ভিন্ন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দৈত্যাকার ভাইরাসগুলো ২.৫ মাইক্রোমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। বেশির ভাগ ভাইরাসের আকার ব্যাকটেরিয়ার চেয়েও বড়। দৈত্যাকার ভাইরাসগুলো শুধু আকারেই বড় নয়, তাদের জিনোমও সাধারণ ভাইরাসের তুলনায় অনেক বড়। ১৯৮১ সালে সমুদ্রে প্রথম দৈত্য ভাইরাস খুঁজে পান গবেষকরা। তবে প্রথমবারের মতো দৈত্যাকার ভাইরাস ভূপৃষ্ঠের বরফ ও তুষারে বসবাস করতে দেখা গেছে। পেরিনি বলেছেন, বরফের যে পৃষ্ঠে ভাইরাসগুলো পাওয়া গেছে, কয়েক বছর আগে সেই অংশটিকে অনুর্বর এবং জীবনহীন বলে মনে করা হতো। কিন্তু এখন আমরা জানতে পেরেছি ওই ভাইরাসসহ বেশ কিছু অণুজীব সেখানে বাস করে।
যদিও গবেষকরা তাদের নিজের চোখ দিয়ে দৈত্যাকার ভাইরাসগুলো দেখতে পাননি। তবে তারা নমুনায় তাদের ডিএনএ এবং এমআরএনএ শনাক্ত করেছেন। তাদের উপস্থিতি এবং কার্যকলাপ নিশ্চিত করেছেন। বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে তাদের সঠিক ভূমিকা এবং মিথস্ক্রিয়া সম্পর্কে অনেক প্রশ্ন রয়ে গেছে। পেরিনি বলেছেন, আমরা দৈত্যাকার ভাইরাসগুলোকে তাদের মিথস্ক্রিয়া এবং বাস্তুতন্ত্রে তাদের ভূমিকা সম্পর্কে আরও জানতে অধ্যয়ন করছি। চলতি বছরের শেষের দিকে গ্রিনল্যান্ড আইসশিটের পৃষ্ঠের বরফের উপরের এ দৈত্য ভাইরাস সম্পর্কে আরও কিছু তথ্যসহ আরেকটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রকাশ করার কথাও ব্যক্ত বরেন তিনি।