
প্রিন্ট: ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৩৬ পিএম
সৌদি আরবের সঙ্গে ‘পারমাণবিক চুক্তি’র দ্বারপ্রান্তে যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:০৪ পিএম

আরও পড়ুন
জ্বালানি বিনিয়োগ ও বেসামরিক পারমাণবিক প্রযুক্তি বিষয়ে একটি প্রাথমিক চুক্তি স্বাক্ষর করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব। এ নিয়ে শীঘ্রই দুই দেশের মধ্যে পারমাণবিক সহযোগিতা বাস্তবায়িত হবে।
রোববার রিয়াদে এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানিয়েছেন মার্কিন জ্বালানি সচিব ক্রিস রাইট।
তিনি বলেন, এই সহযোগিতা সৌদি আরবে একটি বাণিজ্যিক পারমাণবিক বিদ্যুৎ শিল্প গড়ে তোলার দিকে মনোযোগী হবে। আর এ বছরই এ বিষয়ে ‘গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি’ প্রত্যাশিত।
তবে, দুই দেশের মধ্যে এই পারমাণবিক সহযোগিতা সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য এ বছরের শেষ দিকে প্রকাশ করা হবে বলেও উল্লেখ করেন রাইট। খবর আরব নিউজের।
মার্কিন জ্বালানি সচিব আরও বলেন, ‘অবশ্যই সৌদি আরবের সঙ্গে একটি পারমাণবিক চুক্তি হবে। যুক্তরাষ্ট্র চায় সৌদি আরবের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী পারমাণবিক শিল্প গড়ে তুলতে’।
রাইট এ সময় জানান, তার এই সফরে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল- জ্বালানি সহযোগিতা, গুরুত্বপূর্ণ খনিজ আহরণ ও প্রক্রিয়াকরণ, শিল্প উন্নয়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব।
যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি সম্পর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগকারী শীর্ষ দেশগুলোর একটি হয়ে উঠবে। আর তা হবে উভয় দেশের জন্যই লাভজনক’।
রাইট এ সময় সৌদি আরবের সৌরশক্তি সম্ভাবনা ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সম্ভাবনা ও সুযোগেরও প্রশংসা করেন। এছাড়া সৌদি জ্বালানি খাতের দক্ষতা ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
একই সঙ্গে তিনি সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও জ্বালানি মন্ত্রী প্রিন্স আব্দুল আজিজ বিন সালমানের আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়ে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
শুল্ক ও মার্কিন শিল্পনীতি
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি শুল্ক (ট্যারিফ) বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রাইট বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতির বড় একটি অংশ হলো- ন্যায্য ও পারস্পরিক বাণিজ্য নিশ্চিত করা।
তিনি জানান, অতীতে অনেক শক্তি-নির্ভর শিল্প যুক্তরাষ্ট্র থেকে অন্য দেশে স্থানান্তর হয়েছে। যা চাকরির হার কমানো ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা হ্রাস করেছে। ট্রাম্প সেই কাজগুলো দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ট্যারিফ হচ্ছে দেশীয় উৎপাদন উৎসাহিত করার একটি কৌশল মাত্র।
তেল ও শক্তির দাম নিয়ে আশাবাদ
একই সঙ্গে, যদি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আবারও নেতৃত্বে ফিরে আসেন, তাহলে পরবর্তী চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানি ও পারমাণবিক শক্তির গড় দাম কমে আসবে বলেই বিশ্বাস করেন রাইট।
তার ভাষায়, ‘বিশ্বে আরও বেশি শক্তির প্রয়োজন। আর শক্তি উৎপাদন বাড়ালে সরবরাহ বাড়ে। ফলে দাম কমে যায়—এটি মৌলিক অর্থনীতি’।
রাইট মনে করেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর মানুষ যেন আমাদের মতো জীবনযাপন করতে পারে, সেটাই হওয়া উচিত এই নীতির মূল লক্ষ্য।
সৌদি আরবের পারমাণবিক পরিকল্পনা
এদিকে সৌদি আরব দীর্ঘদিন ধরে বাণিজ্যিক পারমাণবিক শক্তির দিকে ঝুঁকছে এবং যুক্তরাষ্ট্র এতে সহযোগিতা করতে চায় বলে উল্লেখ করেন রাইট।
তিনি বলেন, ‘সৌদি আরবের প্রাকৃতিক খনিজ, বিশেষ করে ইউরেনিয়াম তাদের পারমাণবিক শক্তি উন্নয়নে বিশেষ সুবিধা দেবে’।
মার্কিন জ্বালানি সচিবের মতে, ‘শক্তি উন্নয়ন মূলত সপ্তাহ বা মাসের বিষয় নয়, এর জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন’।
সেই সঙ্গে তিনি, যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি সহযোগিতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের নীতিগত পরিবর্তন বিশ্বের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।