Logo
Logo
×

যুক্তরাষ্ট্র

শ্রমিক অধিকার হরণ হলে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৩, ০৯:৩৬ পিএম

শ্রমিক অধিকার হরণ হলে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, বিশ্বজুড়ে যারা শ্রমিক অধিকার হরণ করবে, শ্রমিকদের ভয়ভীতি দেখাবে এবং আক্রমণ করবে তাদের ওপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা, ভিসা নিষেধাজ্ঞাসহ নানা ধরনের শাস্তি দেবে যুক্তরাষ্ট্র।

বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করার প্রত্যয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো একটি স্মারক (মেমোরেন্ডাম) স্বাক্ষর করেছেন। একে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসাবে উল্লে­খ করেছে হোয়াইট হাউজ। এ স্মারক স্বাক্ষরের পর সানফ্রান্সিসকোর একটি হোটেলে শ্রমিক নেতাদের সামনে বিস্তারিত তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। খবর বিবিসি, এএফপির। 

সংবাদ সম্মেলনে ব্লিংকেন বলেন, শ্রমিকদের অধিকারের বিষয়টি এখন আর শুধু কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়; এটা এখন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা, এর পররাষ্ট্রনীতি হিসাবে বিবেচিত হবে। তিনি বলেন, শ্রমিকদের অধিকার এবং তাদের শ্রম মান উন্নয়নের জন্য কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতির কেন্দ্রীয় অংশ এবং এটি পররাষ্ট্র দপ্তরেরও কার্যক্রমের মূল বিষয়।

শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিতে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনার বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা শ্রমিকদের হুমকি-ধমকি দেবে, ভয় দেখাবে, শ্রম ইউনিয়নের নেতা, শ্রম অধিকারের পক্ষে কাজ করা ব্যক্তি এবং শ্রম সংগঠনের ওপর হামলা করবে- তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা এবং ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বাংলাদেশের গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকারকর্মী কল্পনা আক্তারের উদাহরণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমরা কল্পনা আক্তারের মতো মানুষদের পাশে থাকতে চাই।’ এ বিষয়ে ব্লিংকেন বলেন, ‘কল্পনা আক্তার একজন বাংলাদেশি গার্মেন্টসকর্মী এবং গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার কর্মী। তিনি বলেছেন যে, তিনি জীবিত আছেন কারণ, মার্কিন দূতাবাস তার পক্ষে কাজ করেছে।’

তিনি বলেন, শ্রম অধিকার আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা এবং বৈদেশিক নীতির চাবিকাঠি। আন্তর্জাতিকমানের শ্রম অধিকার নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশের সরকার, শ্রমিক ও শ্রমিক সংগঠন, বেসরকারি খাত এবং নাগরিক সমাজের সঙ্গে কাজ করবে বলে তিনি জানান।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা শ্রমিক নেতা, শ্রমিক সংগঠন ও শ্রম অধিকার নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিদের ভয় দেখায় এবং তাদের ওপর আক্রমণ করে, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। 

ব্লিংকেন বলেন, বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের অধিকারকে সক্রিয়ভাবে একীভূত ও উন্নত করার জন্য পাঁচ ধরনের কর্মপরিকল্পনা রয়েছে। এগুলো হচ্ছে- প্রথমত, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শ্রম অধিকারকে সুরক্ষিত করতে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার, শ্রমিক, শ্রম সংগঠন, ট্রেড ইউনিয়ন, সুশীল সমাজ এবং বেসরকারি খাতের সঙ্গে মিলিতভাবে কাজ করবে। এর অংশ হিসাবে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও দূতাবাসকর্মীরা শ্রমিক ও শ্রম ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত হবে। দ্বিতীয়ত, যারা শ্রমিকদের হুমকি-ধমকি দেবে, ভয় দেখাবে, শ্রম ইউনিয়নের নেতা, শ্রম অধিকারের পক্ষে কাজ করা ব্যক্তি, শ্রম সংগঠনের ওপর আক্রমণ করবে তাদের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ, বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা এবং ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে। তৃতীয়ত, দক্ষতাসম্পন্ন শ্রমিকদের জন্য চাকরির সুযোগ বাড়ানোকে অগ্রধিকার দিয়ে বিদেশে শ্রমিকদের অধিকার উন্নত করার জন্য মার্কিন ফেডারেল সরকারের সক্ষমতা বাড়ানো হবে। চতুর্থত, শ্রম অধিকার এবং শ্রমমান উন্নত করতে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশের সরকার এবং জাতিসংঘ, জি-২০ এর মতো বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কাজ করবে। পঞ্চমত, যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব বাণিজ্য চুক্তি এবং সাপ্লাই চেইন যাতে শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে সে লক্ষ্যে মার্কিন প্রচেষ্টা আরও বাড়ানো হবে। 

অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, পররাষ্ট্রনীতি চালুর বিষয়ে এটি একটি বাস্তবিক ও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ। এই নীতি সব আমেরিকানের পক্ষে কাজ করবে।

যা বলছে হোয়াইট হাউজ : বৃহস্পতিবার স্মারকে স্বাক্ষরের অংশ হিসাবে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ফেডারেল বিভাগ এবং সংস্থাগুলোকে দেশের বাইরে শ্রম অধিকার ও শ্রমিকদের ক্ষমতায়নকে এগিয়ে নিতে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। 

এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইতিহাসের সবচেয়ে শ্রমবান্ধব প্রেসিডেন্ট এবং তিনি একটি টেকসই বৈশ্বিক অর্থনীতি গড়ে তুলতে অঙ্গীকারবদ্ধ। আর এটা শুধু যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরেই নয় বরং বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও বাস্তবায়ন করা হবে। শ্রমিকদের সংগঠন করার অধিকার নিশ্চিত করার জন্য মার্কিন পদক্ষেপ শ্রমিকদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়ার মতো একটি জায়গা তৈরি করবে বলে বিবৃতিতে উলে­খ করা হয়। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম