পরীক্ষায় শতভাগ প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে
মো. মাকছুদ উদ্দিন
প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৪, ১১:০৪ পিএম
সুপ্রিয় এইচএসসি পরীক্ষার্থী বন্ধুরা, প্রীতি ও শুভেচ্ছা রইল। আগামী ৩০ জুন, ২০২৪ থেকে তোমাদের এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হতে যাচ্ছে। এসময় আগের তুলনায় পড়ালেখার প্রতি মনোযোগ বাড়াতে হবে। মানসিকভাবে দুশ্চিন্তা ও চাপমুক্ত থাকতে হবে। মহান সৃষ্টিকর্তার ওপর ভরসা ও নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে। রুটিন মাফিক পুরো সময়টাকে বিষয় অনুযায়ী বিভাজন করে পড়ালেখায় আত্মনিয়োগ করতে হবে। সব বিষয়ে সমান গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে। যেহেতু আবহাওয়ার উত্তাপ খুব বেশি, তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। ফাস্টফুড ও রিচফুড খাওয়া পরিহার করতে হবে। দিনের প্রথম ভাগে গোসল সেরে নেওয়া ও সময়মতো খাওয়া দাওয়া করতে হবে। বাহিরের রোদে ঘোরাফেরা না করা, ছয় ঘণ্টার বেশি না ঘুমানো ও বেশি বেশি পানি পান করতে হবে। এ সময় আত্মীয়-স্বজনের বাসায় বেড়াতে না যাওয়াই উত্তম। কোনো বিষয়ে জটিলতা ও বোঝার ঘাটতি থাকলে এখনই সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা দূর করতে হবে।
প্রবেশপত্র হাতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তোমার নাম, পিতা/মাতার নাম, ঠিকানা, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, রোল নম্বর, বিষয় কোড, বিষয়ের নাম ইত্যাদি সঠিক ও সুস্পষ্ট আছে কি-না তাও ভালোভাবে দেখে নেবে। সামান্যতম ভুল পেলেই সঙ্গে সঙ্গে তোমাদের প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষকে তা অবহিত করবে এবং বিধিমতো সংশোধন করিয়ে এনে দিতে বলবে। প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ডের দুটি করে ফটোকপি করবে। মূল কপি পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যাবে এবং ফটোকপি বাসায় রাখবে।
যেদিন তোমার পরীক্ষা শুরু হবে তার আগের দিন বিকালে মা-বাবাসহ পরীক্ষাকেন্দ্রে ঘুরে আসতে পার। এতে তোমার পরীক্ষা সংক্রান্ত ভীতি অনেকটা কেটে যাবে। পরীক্ষার আগের রাতে প্রয়োজনীয় স্কেল, কলম, পেন্সিল, ইরেজার, রেজিস্ট্রেশন কার্ড, প্রবেশপত্র এবং পরীক্ষার রুটিন নির্দিষ্ট একটি ফাইলে গুছিয়ে রাখবে। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে অবশ্যই পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে হবে। পরীক্ষাকেন্দ্রে সময়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। এজন্য অবশ্যই সঙ্গে করে একটি ঘড়ি নিয়ে যেতে হবে। প্রশ্নের মান অনুযায়ী কোনো প্রশ্নের উত্তর লেখার জন্য কতটুকু সময় নেবে তার একটা ছক তুমি ঘরে বসে পরীক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে করে নিতে পার। শুধু পড়লেই চলবে না। লিখতেও হবে বারবার। মনে রেখ, একবার লেখা দশবার পড়ার চেয়ে বেশি ফলপ্রসূ। মুখস্থ না করে নিজের সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে লিখতে শেখ। পরীক্ষায় শতভাগ প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। অর্থাৎ কোনো প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে উত্তরপত্র জমা দেবে না। পরীক্ষাকেন্দ্রে তাড়াহুড়া করা যাবে না।
প্রশ্নপত্র পাওয়ার পর মনোযোগ দিয়ে পড়ে ভেবেচিন্তে উত্তর দিতে হবে। পরীক্ষাকেন্দ্রে তোমাদের প্রথম ৩০ মিনিট বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। এক্ষেত্রে বেশ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। বিষয়কোড ও সেটকোড সতর্কতার সঙ্গে পূরণ করবে। সেটকোড পূরণ না করলে ওএমআর শিট বাতিল হয়ে যাবে। একাধিক অপশন ভরাট করা যাবে না। অবশ্যই কালো কালির বলপয়েন্ট কলম দিয়ে বৃত্ত ভরাট করতে হবে। পরীক্ষাকেন্দ্রে একটি বিষয় অনেক সময় পরীক্ষার্থীকে ঘাবড়ে দেয়, তা হলো প্রশ্ন কমন না পড়া। মনে রাখতে হবে সৃজনশীল পদ্ধতিতে শতভাগ প্রশ্ন প্রত্যাশামতো নাও হতে পারে। দু-একটি এদিক-সেদিক হতেই পারে। বিকল্প প্রশ্ন থাকায় তেমন কোনো সমস্যা হবে না ইনশাআল্লাহ। যদি কোনো বিষয়ে পরীক্ষা মনের মতো না হয়, তবে সে বিষয়ে না ভেবে পরের পরীক্ষাটি ভালো করার চেষ্টা করতে হবে। প্রতিটি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ উত্তর লেখার পর হাতে ৫-১০ মিনিট সময় রাখতে হবে। এ সময়টুকু রিভিশন দিয়ে সবকিছু যাচাই করে নিতে হবে। পরীক্ষাশেষে সময় নষ্ট না করে দ্রুত বাসায় চলে আসবে ও পরের পরীক্ষার জন্য রুটিন অনুযায়ী প্রস্তুতি গ্রহণ শুরু করবে।
সর্বোপরি শিক্ষার্থীদের প্রতি একটি কথা- তোমার উচ্চশিক্ষা কোন দিকে মোড় নেবে তা নির্ধারিত হবে তোমাদের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ওপর। কাজেই পরীক্ষার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে। পরিশেষে আমি তোমাদের সার্বিক মঙ্গল ও সাফল্যের জন্য মহান সৃষ্টিকর্তার দরবারে প্রার্থনা করি।
লেখক: অধ্যক্ষ, ন্যাশনাল আইডিয়াল কলেজ, খিলগাঁও, ঢাকা