পুলিশকে হতে হবে রাষ্ট্রের সেবক, সরকারের নয়

মুহাম্মদ নুরুল হুদা
প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
-67d9df44e4e8e.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
এটা ঐতিহাসিকভাবে সত্য যে, উপমহাদেশের পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা রাজনৈতিকভাবে ব্যবহৃত হয়েছে। পুলিশকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার কথা পুলিশ আইনের কোথাও উল্লেখ নেই। পুলিশ সব সময় আইন মোতাবেক দায়িত্ব পালন করবে, এটাই বলা আছে। পুলিশ যদি আইন মোতাবেক দায়িত্ব পালন না করে, তাহলে সেখানে দুই ধরনের ব্যর্থতা আছে। এটি হচ্ছে তাদের ব্যক্তিগত ব্যর্থতা এবং সংগঠনের ব্যর্থতা। আরেকটি হচ্ছে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব। পুলিশের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ এজন্য দায়ী। সরাসরি বলতে গেলে বলতে হয়, পুলিশ স্বাধীনভাবে আইন মোতাবেক দায়িত্ব পালন না করতে পারলে তার ব্যর্থতা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওপর বর্তায়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওপরেও নিয়ন্ত্রণকারী থাকেন, যিনি হলেন রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী। তিনি যদি চান পুলিশ বাহিনী আইন মোতাবেক দায়িত্ব পালন করুক, তাহলে তাদের সরকারের আজ্ঞাবহ হওয়ার কথা নয়। তাতে পুলিশ রাষ্ট্রের সেবক হতে পারবে। রাষ্ট্র ও সরকারের পার্থক্য আমাদের এখানে অনেকেই ভুলে যান। চারটি আবশ্যিক উপকরণ নিয়ে একটি রাষ্ট্র গঠিত হয়। এগুলো হচ্ছে-নির্দিষ্ট ভূখণ্ড, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, জনসংখ্যা এবং সরকার। এর মধ্যে একমাত্র পরিবর্তনশীল উপকরণ হচ্ছে সরকার। কিন্তু আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ রাষ্ট্র ও সরকারকে একই মনে করেন। সরকার হচ্ছে অস্থায়ী বা পরিবর্তনশীল। সরকার হচ্ছে একদল মানুষের সমষ্টি। পুলিশ বাহিনীর সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে কাজ করার কথা নয়। পুলিশ হচ্ছে রাষ্ট্রের কর্মকর্তা বা কর্মচারী। তাদের আইন মোতাবেক জনস্বার্থে কাজ করতে হবে।
এই প্রচলিত রীতির যখন ব্যত্যয় ঘটে, তখনই সমস্যার সৃষ্টি হয়। পুলিশ রাষ্ট্রের স্বার্থরক্ষায় কাজ করবে, নাকি সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে দায়িত্ব পালন করবে-এটা মূলত নির্ভর করে সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার ওপর। সরকার যদি চায় পুলিশ সরকারের প্রতি অতিমাত্রায় অনুগত না হয়ে বিদ্যমান আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তা বা কর্মচারী হিসাবে কাজ করবে, তাহলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কারণ পুলিশ যে আইনের আওতায় পরিচালিত হয়, তা রাষ্ট্রের স্বার্থরক্ষায় সক্ষম। এখানে রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকতে হবে, পুলিশের মতো একটি প্রতিষ্ঠান বা বাহিনী যাতে আইনানুগ কাজ করে তার বন্দোবস্ত করতে হবে। এটা করা গেলে প্রকৃত গণতান্ত্রিক ও সভ্য সমাজের দিকে আমাদের যাত্রা শুরু হবে বলে আমি মনে করি।
আমাদের দেশের পুলিশ বাহিনী নানা সমস্যা ও সংকটের মধ্য দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটানো জরুরি। বিদ্যমান অবস্থার পরিবর্তনের জন্য রাজনীতিতে ভালো ও গণতান্ত্রিক মনোভাবাপন্ন মানুষের আসা দরকার। রাজনীতিতে এমন লোকদের আসা দরকার, যারা উচ্চ নৈতিকতা গুণসম্পন্ন এবং সৎ চরিত্রের অধিকারী। উচ্চশিক্ষিত ও উদার মনোভাবাপন্ন মানুষ রাজনীতিতে এলে প্রচলিত রাজনৈতিক ধারা এবং চিন্তা-চেতনা পরিবর্তিত হতে পারে। পরমত সহিষ্ণু এবং আদর্শিক মনোভাব ধারণ করেন এমন লোকদেরই রাজনীতিতে বেশি করে আসা দরকার। দূরদৃষ্টি সম্পন্ন এবং যারা ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে দেশের স্বার্থকে স্থান দিতে পারবেন, এমন মানুষ যদি রাজনীতিতে অধিক সংখ্যায় যুক্ত হন, তাহলে পুরো পরিস্থিতি পালটে যেতে বাধ্য। কিন্তু আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে যারা সরকারি অফিসে আসেন, তাদের অধিকাংশেরই মূল উদ্দেশ্য থাকে ব্যক্তিগত সুবিধা বা মুনাফা অর্জন করা। রাজনীতি হচ্ছে জনসেবা। কিন্তু এখন অনেকের কাছ রাজনীতি হচ্ছে পেশা। রাজনীতি যদি ব্যক্তিগত মুনাফা অর্জনের ক্ষেত্র হিসাবে বিবেচিত হতে থাকে, তাহলে এ সংকটময় অবস্থা থেকে উত্তরণ কঠিন হবে।
ভালো, নৈতিকতা বোধসম্পন্ন, প্রকৃত শিক্ষিত মানুষদের রাজনীতিতে আসা প্রয়োজন, যারা রাজনীতিকে পেশা নয়, জনসেবা হিসাবে বিবেচনা করবেন। অবশ্য রাজনীতির গুণগত মানোন্নয়নের জন্য শিক্ষার চেয়েও ব্যক্তিগত সততা ও নৈতিকতা বেশি প্রয়োজন। পড়াশোনা কিছুটা কম জানলেও অসুবিধা হয় না। যাদেরকে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা বা কর্মচারী বলা হয়, তাদেরও আত্মসম্মান, আত্মপ্রত্যয় ও অহংবোধ থাকা প্রয়োজন। প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী বা কর্মকর্তা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না হতে পারেন, কিন্তু তিনি রাষ্ট্রের মনোনীত প্রতিনিধি। কাজেই রাষ্ট্রের প্রতি তার বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে। প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে বুঝতে হবে, তিনি গৃহভৃত্য নন। প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর সঙ্গে গৃহভৃত্যের যে পার্থক্য, তাকে তা বুঝতে হবে। গৃহভৃত্যের সম্মানবোধ বা মর্যাদা না থাকতে পারে, কিন্তু প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী বা কর্মকর্তার ক্ষেত্রে বিষয়টি তেমন নয়। তারা নির্দিষ্ট আইনের আওতায় চালিত হন। তারা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজনৈতিক সরকারের আদেশ-নির্দেশ মেনে চলতে বাধ্য হলেও নৈতিকতা পরিপন্থি বা রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর কোনো সিদ্ধান্ত বা নির্দেশনা দেওয়া হলে তার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণের অধিকার তাদের থাকে। প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে বুঝতে হবে, তিনি রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জনগণের সেবা করার জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন। তাকে নির্দিষ্ট আইনের আওতায় চলতে হয়। কোনো কারণেই আইনের বাইরে গিয়ে তিনি কোনো কাজ করতে পারেন না। এটা করতে হলে রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং রাজনৈতিক দলগুলোতে আলোকিত নেতৃত্ব থাকা প্রয়োজন। রাজনীতিতে এমন লোকদের আসা দরকার, যাদের কাছে রাষ্ট্রটাই সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাওয়ার অধিকারী। ব্যক্তিগত স্বার্থ তাদের কাছ গৌণ। রাজনীতিতে এখন যে নেতৃত্ব আছে, তাদের অধিকাংশের মধ্যেই এমন গুণাবলির অনুপস্থিতি রয়েছে বলে অনেকেই মনে করছেন।
আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সংজ্ঞা অনুযায়ী রাজনীতি কখনোই পেশা হতে পারে না। কেউ যদি তার মূল পেশা থেকে এসে মন্ত্রী বা অন্য কোনো দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তাহলে রাষ্ট্র তাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ বেতন-ভাতা প্রদান করবে। পরবর্তীকালে তার রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের মেয়াদ শেষ হলে আবারও তিনি আগের পেশায় চলে যাবেন। কিন্তু বাস্তবতা এটাই যে, তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও এমন অনেক রাজনীতিক আছেন, যাদের নির্দিষ্ট কোনো পেশা নেই। তারা রাজনীতিকেই পেশা হিসাবে বিবেচনা করে থাকেন। রাজনীতি হচ্ছে জনসেবা বা পাবলিক সার্ভিস। পাবলিক সার্ভিসকে ইসলাম ধর্মে অত্যন্ত উচ্চ স্থান দেওয়া হয়েছে। যারা রাজনীতিতে আছেন অথবা অন্য কোনোভাবে পাবলিক সার্ভিসে আছেন, তাদের মাঝে এ বোধটুকু থাকতে হবে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সরকার পরিবর্তনের পর আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনীর কাজে অনেকটাই মন্থর ভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে। বিগত সরকার আমলের শেষের দিকে রাজনৈতিক অঙ্গন বা রাষ্ট্রক্ষমতায় যে পরিবর্তন সাধিত হয়েছে, সেখানে পুলিশ বাহিনী মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করেছে। কোনো কোনো পুলিশ কর্মকর্তা বা সদস্য আন্দোলনকারীদের দমনের জন্য অতিমাত্রায় উৎসাহী ছিলেন এবং বলপ্রয়োগ করেছেন। ফলে তারা গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে। পুলিশের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা অনেকটাই কমে গেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পুলিশ জনগণের প্রতিরোধের মুখে পড়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন করে আইন প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে তাদের মাঝে কিছুটা হলেও ইতস্তত ভাব কাজ করছে। পুলিশ সদস্যদের ব্যাপকভাবে বদলি করা হয়েছে। অনেকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হয়েছে। অনেক স্থানে স্থানীয় জনগণের আক্রমণের মুখে পুলিশ সদস্যরা মারাও গেছেন। যদিও অনেক ঘটনায় পুলিশ সদস্যদের কোনো দোষ ছিল না। সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে বেশ কিছুসংখ্যক পুলিশ বিক্ষুব্ধ জনতার আক্রমণে নিহত হয়েছে। থানার পুলিশ এমন কোনো আক্রমণের জন্য প্রস্তুত ছিল না। এসব ঘটনায় কোনো ফৌজদারি কেস হয়নি। এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় পুলিশ সদস্যদের মাঝে কিছুটা হলেও আতঙ্ক বিরাজ করছে। পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের অনেকেই নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত।
আমাদের সমাজে এক ধরনের বিষাক্ত বিভাজন বিদ্যমান আছে। ফলে সরকারি কর্মকর্তাদের মনে করা হয় তারা হয়তো এই দলের লোক অথবা ওই দলের লোক। কিন্তু সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে পারেন না। তারা সর্বোতভাবেই প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা বা কর্মচারী এবং দলনিরপেক্ষ। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের দলীয় কর্মীর মতো আচরণের জন্য রাজনীতিকরা দায়ী, কর্মীরাও দায়ী। যারা পুলিশে কর্মরত আছেন, তাদের অনেককেই আওয়ামী ট্যাগ দেওয়া হচ্ছে। সবাই যে দোষী তা নয়। অনেকেই আওয়ামী লীগ করেনি। তারা সরকারি নির্দেশনা মেনেছে মাত্র। অনেকে আবার বাড়াবাড়ি করেছে। অনেক ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তারা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করেনি। তারা রাজনৈতিক প্রভুদের খুশি করতে গিয়ে নানা ধরনের অন্যায় কর্মে লিপ্ত হয়েছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ চরমতম অন্যায় করেছে। সীমা লঙ্ঘন করেছে। সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য যে নিয়মকানুন আছে, সেগুলো তারা ভঙ্গ করেছে। সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে দ্রুত একটি রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে এ অবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব হতে পারে। পুলিশসহ সব শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদ্যমান আইনের আওতায় চলার সুযোগ দিতে হবে।
আমাদের দেশে চাঁদাবাজি একটি বড় সমস্যা। আগামীতে চাঁদাবাজি কমবে নাকি আরও বাড়বে, তা এখন বলা সম্ভব নয়। আগামীতেই এটা নিশ্চিত করে বলা যাবে। এখন দেখতে হবে কারা চাঁদাবাজি করে। তাদের পরিচয় কী। চাঁদাবাজরা যদি রাজনৈতিক আশীর্বাদপুষ্ট হয়, তাহলে তো চাঁদাবাজি কমবে না। সরকারি অফিসে যাওয়ার উদ্দেশ্য যদি হয় ব্যক্তিগত সম্পদ বাড়ানো, তাহলে অন্যায়ভাবে অর্থ উপার্জনের প্রবণতা কমবে না। আর চাঁদাবাজি তো ব্যক্তিগত সম্পদ বাড়ানোর একটি প্রক্রিয়া মাত্র। দেশে বেকার সমস্যা প্রকট। অনেকেই বেকারত্বের যন্ত্রণা থেকে মুক্তির জন্যও অনৈতিকভাবে অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করে থাকে। দলীয় পর্যায় থেকে অনেক সময় অনৈতিকভাবে অর্থ উপার্জনকে উৎসাহিত করা হয়। এ অবস্থা থেকে একদিনে বা রাতারাতি বেরিয়ে আসা সম্ভব হবে না। এজন্য সঠিক অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ করে বেকার সমস্যাসহ অন্যান্য সামাজিক সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে।
সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, রাজনৈতিক নেতৃত্বকে এ ব্যাপারে আন্তরিক হতে হবে। বেকার জনগোষ্ঠীর জন্য উপযুক্ততা অনুযায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দানের মাধ্যমে যুবসমাজের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ নিশ্চিত করা যেতে পারে। অভ্যন্তরীণভাবে এবং বিদেশেও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। সবকিছু নির্ভর করছে রাজনৈতিক নেতাদের সততা ও নৈতিকতার ওপর। রাজনৈতিক নেতারা যদি অন্যায়কে প্রশ্রয় দেন বা সমর্থন জ্ঞাপন করেন, তাহলে ভবিষ্যতেও একইরকম অন্যায় কর্ম আবারও সংঘঠিত হবে। বিগত সরকারের আমলে আমরা দুর্নীতি-চাঁদাবাজির ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করেছি। রাজনৈতিক নেতাদের আচরণে যদি ঔদ্ধত্য প্রকাশ পায়, তাহলে জনগণ তা সহ্য করে না। এক সময় প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। মানুষ উন্নয়নের চেয়ে নিরাপত্তা বেশি প্রত্যাশা করে। হয়তো বড় একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হলো, কিন্তু সেই ব্রিজের আশপাশে যারা বাস কার তাদের সামাজিক নিরাপত্তা যদি নিশ্চিত করা না যায়, তাহলে এ ধরনের উন্নয়ন কোনো কাজে আসবে না। রাজনৈতিক সংস্পর্শ ছাড়াই নিজস্ব যোগ্যতা বলে কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকতে হবে। প্রচলিত নিয়ম মোতাবেক সব ধরনের কাজ যদি হয়, তাহলে সমাজ থেকে দুর্নীতি-অনিয়ম অনেকটাই কমে আসতে পারে বলে আমি মনে করি। (অনুলিখন : এম এ খালেক)
মুহাম্মদ নুরুল হুদা : অবসরপ্রাপ্ত মহাপরিদর্শক, বাংলাদেশ পুলিশ