Logo
Logo
×

বাতায়ন

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চাকরি ও অর্থনীতিতে কী প্রভাব ফেলতে পারে

Icon

ড. শাহ জে মিয়া

প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চাকরি ও অর্থনীতিতে কী প্রভাব ফেলতে পারে

অস্ট্রেলিয়া থেকে

একটি প্রশ্ন দিয়েই শুরু করা যাক। আপনি কি মনে করেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি বাস্তবায়ন বা প্রয়োগের কারণে বাংলাদেশে প্রচলিত চাকরির কোনো ঝুঁকি রয়েছে? এবং বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কোনো প্রভাব ফেলতে পারে বা কীভাবে তা ত্বরান্বিত হতে পারে? এ প্রশ্নগুলোর সঙ্গে আপনার মনে এ প্রশ্নও আসতে পারে যে, তাহলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কীভাবে যুবসমাজকে কর্মক্ষম, বেকারত্ব দূরীকরণ, দারিদ্র্য দূরীকরণ ও গ্রামীণ উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে? আসুন আমরা এ বিষয়গুলোর ভেতরে প্রবেশ করি।

হ্যাঁ সত্য, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান বিকাশ ও প্রয়োগের ফলে স্বল্প কিছু ক্ষেত্রে চাকরির হার কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফোর্বস এডিটরিয়ালের একজন সিনিয়র সাংবাদিক জ্যাক ক্যালি ২০২৩ সালের শেষদিকে লিখেছেন, শুধু ইউরোপ ও আমেরিকায় জেনারেটিভ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Generative AI) প্রযুক্তির প্রয়োগে ৩০০ মিলিয়ন (৩০ কোটি) মানুষ চাকরিচ্যুত বা অপ্রয়োজনীয় হয়ে উঠতে পারে। গোল্ডম্যানের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি লিখেছেন, তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতির প্রভাবে ট্র্যাডিশনাল আইসিটি ও কম্পিউটার সফটওয়্যার উন্নতির গতিপথের পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য, গোল্ডম্যানের ভবিষ্যদ্বাণী আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ইনডেক্স অনুসারে। এতে বলা হয়েছে, ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের শেষ পর্যন্ত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিতে বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৯৪ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। যদি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির এ গতিপথ অব্যাহত থাকে, তাহলে এটি ২০৩০ সালের মধ্যে আমেরিকার জিডিপিতে ১ শতাংশ যোগ করতে পারে।

এখন আমাদের দেশে কিছু ডেটা সম্পর্কিত কাজ, যেমন ডেটা এন্ট্রি, মেসেজের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা গ্রাহক পরিষেবা, পরিষেবার স্ট্যাটাস রিপোর্ট, পরিষেবার রিমাইন্ডার, পরিষেবার নোটিফিকেশন, সর্বোপরি কম জটিলতাসম্পন্ন ডেটা অ্যানালাইসিস এবং এ ধরনের কাজগুলো করার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ অনস্বীকার্য। ২০২৫ সালে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে এগুলোর ব্যবহার নিয়ে চিন্তা শুরু করেছে। এটি অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। এবং এক্ষেত্রে আমাদের দেশের বেসরকারি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাহবা জানাচ্ছি; কারণ আমি মনে করি, আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভ্যুলিউশন (আইআর) ৪ ও ৫-এর ওপর আন্তর্জাতিক গবেষণায় এবং তার যথাযথ সুযোগ সরকারি-বেসরকারি সেক্টরের আইসিটি পেশাদারদের অনুপ্রাণিত করেছে। তাহলে আগে আমরা ছোট করে জেনে নিই আইআর ৪ ও ৫ কী। আমাদের শিখতে হবে, যেখানে আইআর ৪ প্রযুক্তির মাধ্যমে অপ্টিমাইজেশন অর্থাৎ পদ্ধতিগত পরিবর্তনের মাধ্যমে অবস্থার উন্নয়ন ঘটানো এবং দক্ষতার ওপর উন্নত প্রযুক্তি প্রয়োগে গুরুত্ব দেওয়া হয়, সেখানে আইআর ৫-এর লক্ষ্য হলো, মানবসম্পদের উপাদানগুলোকে এবং সমাজের অদেখা নিয়মকানুন সমীকরণে পুনঃপ্রবর্তন করা।

যেমন ধরা যেতে পারে, একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আইআর ৫-এর লক্ষ্য তখনই পূরণ হবে, যখন এটি পণ্য কাস্টমাইজেশন, শ্রমিক এবং বুদ্ধিমান মেশিনের মধ্যে সহযোগিতার গুরুত্বের ওপর জোর দেবে। এ উদ্ভাবনগুলো চাকরির বাজারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং চাকরি হারানোর দুশ্চিন্তা, বিশেষ করে শিল্পে রুটিন ও নিয়মভিত্তিক যে কাজের চাহিদা আছে, তা কমিয়ে ফেলতে পারে। কিন্তু উদ্ভাবনী জ্ঞানের চাহিদা বেড়ে যাবে অনেক গুণ। এজন্য আমরা বিজ্ঞান এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা জ্ঞাননির্ভর নতুন সমাজব্যবস্থার কথা বলছি, যা কিনা এই একবিংশ শতাব্দীর অন্যতম চ্যালেঞ্জ। যা হোক, আইআর ৫-এ আমরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং সাইবার ফিজিক্যাল সিস্টেমসের ব্যবহার এবং যথাযথ প্রয়োগভিত্তিক উন্নতির কথা বলছি, যেটি কিনা ছিল আইআর ৪-এর ক্ষেত্রে শুধু ট্র্যাডিশনাল আইসিটির ব্যবহারের মধ্যে সীমাবদ্ধ। আইআর ৪ জার্মানির একটি উদ্যোগ, যা গত এক দশকেরও আগে বিশ্বব্যাপী গৃহীত হয়ে উঠেছিল। অনেক আধুনিক প্রতিষ্ঠান এর অনুকরণ করে কৌশলগত উদ্যোগ প্রবর্তন করেছিল। আইআর ৪ প্রবর্তনের দশ বছর পূর্তিতে ইউরোপীয় কমিশন আইআর ৫ ঘোষণা করেছে। আইআর ৪-কে ট্র্যাডিশনাল প্রযুক্তিচালিত বলে মনে করা হয়, যেখানে আইআর ৫-কে গবেষণায় মান ও মানবসভ্যতার চালিতশক্তি এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বপ্ন ধারণকারী হিসাবে দেখা হয়।

যাহোক, আগের আলোচনায় ফিরে আসি। আমি মনে করি, আমাদের দেশে বেশকিছু শিল্প-কারখানায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত রোবোটিক্সের ব্যবহার এবং এর প্রয়োগের সুযোগ তৈরি হয়েছে। উন্নত দেশগুলোর মতো আমাদের দেশের সুপারশপগুলোতে স্বয়ংক্রিয় চেকআউট সিস্টেম এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্ম চালু করা যেতে পারে, যা কিনা বর্তমান চেকআউট সিস্টেমের সমান্তরালে চলতে পারে। এর মাধ্যমে আমরা ওই সিস্টেমের উপযোগিতা নির্ণয় করতে পারব। এছাড়া খুবই সীমিত পরিসরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত পরিবহণ এবং স্বায়ত্তশাসিত যানবাহন প্রযুক্তি বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। রেজিস্ট্রার কর্মীদের প্রয়োজনীয়তা কমানোর জন্য আমরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত সফটওয়্যার এবং ডেটা সেনসিং অ্যান্ড স্ক্যানিং ডিভাইসের ব্যবহার বাড়াতে পারি; যা পরিবহণ ব্যবস্থা পরিচালনা এবং ডেলিভারি কর্মীদের কাজের সঠিকতা ও দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করবে। এখানে আমরা বলতে পারি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগের কারণে স্বল্পসংখ্যক উৎপাদনে বিঘ্নতা, গ্রাহক পরিষেবায় একটু জটিলতা আসতেই পারে। কারণ ডেটা এন্ট্রি, রেজিস্ট্রার এবং পরিবহণ সেক্টরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং অটোমেশন টুলসের প্রচলনের কারণে কিছু ক্ষেত্রে স্বল্প দক্ষতার চাকরির হার কমে যেতে পারে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা জ্ঞানভিত্তিক চাকরির মূল্য বহুল পরিমাণে বেড়ে যাবে।

তাহলে আমরা বলতে পারি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশের ফলে স্বল্প কিছু ক্ষেত্রে চাকরির সম্ভাবনা কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকলেও বাংলাদেশের অর্থনীতিকে গতিশীল করতে এর বহুল সম্ভাবনা রয়েছে। যেমন-কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কৃষি, উৎপাদন, শিল্প ও পরিষেবা প্রক্রিয়াগুলোকে আরও উন্নত করতে পারে, সঠিকতা বাড়িয়ে মান উন্নয়ন করতে পারে, খরচ কমাতে পারে এবং উৎপাদন বাড়াতে পারে, যা নির্ভর করবে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কাজের ধরন ও লক্ষ্যের ওপর। যেমন, কৃষিক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত সরঞ্জামগুলো ফসল ফলনের পূর্বাভাস, কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ এবং দক্ষ সম্পদের ব্যবহার উন্নত করতে পারে, যেটা কিনা কৃষি খাতের আরও মানোন্নয়ন করতে পারে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত সরঞ্জাম ও অ্যাপসের সঠিক প্রয়োগের সাহায্যে কৃষিকাজ পদ্ধতি আধুনিকীকরণ করা সম্ভব (স্মার্ট কৃষি); যা উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে এবং কৃষিতে ক্ষতি কমাতে সাহায্য করবে এবং গ্রামীণ অর্থনীতিকে উপকৃত করবে। আমরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমে দূরত্ব এবং সীমিত সম্পদের বাধা অতিক্রম করে গ্রামীণ এলাকায় মানসম্মত শিক্ষা চালু করতে পারি। এছাড়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত স্বাস্থ্যসেবা সমাধানগুলোর মাধ্যমে দূরবর্তী রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা প্রদান করা সম্ভব, যা সুবিধাবঞ্চিত গ্রামীণ অঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ইউটিলিটি এবং শক্তি গ্রিডসহ স্মার্ট গ্রামীণ অবকাঠামো পরিকল্পনা এবং নির্মাণে সহায়তা করতে পারে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক বিপণন সমাধানের মাধ্যমে গ্রামীণ উদ্যোক্তাদের বৃহত্তর বাজারে পৌঁছাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সরঞ্জামগুলো সহায়তা করতে পারে।

শিল্প-কারখানায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যথোপযুক্ত ব্যবহার উৎপাদন প্রক্রিয়াকে আরও সহজ ও কার্যকর করতে পারে, মান নিয়ন্ত্রণের উন্নতি করতে পারে এবং বর্জ্য উৎপাদন কমাতে পারে। বাংলাদেশি পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি প্রতিযোগিতায় গুণগত মান বাড়াতে পারে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও আর্থিক পরিষেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আরও প্রয়োজনীয় উদ্ভাবন নিয়ে আসতে পারে; যেমন-স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম, জালিয়াতি শনাক্তকরণ এবং ক্রেডিট চুরির ঝুঁকি বিশ্লেষণ ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এর মাধ্যমে আর্থিক পরিষেবাগুলোকে মানুষের জন্য আরও সহজে ব্যবহারযোগ্য করতে পারে, যা ছোট ব্যবসা এবং উদ্যোক্তাদের অনুপ্রাণিত করবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে। নতুন শিল্প, স্টার্টআপ, আউটসোর্সিংয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্রমবিকাশ এবং ডিজিটাল পরিষেবার ওপর দৃষ্টি প্রযুক্তি ক্ষেত্রে নতুন কর্মসংস্থান উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করবে। এছাড়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহকে উন্নত করতে পারে, খরচ কমাতে পারে এবং উৎপাদনশীলতা উন্নত করতে পারে, যা কর্মশক্তির স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাবে। এটি পরোক্ষভাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার বাড়াবে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারে, বিশ্ব অর্থনীতিতে নিজেকে একটি প্রতিযোগিতামূলক খেলোয়াড় হিসাবে তুলে ধরতে পারে। তরুণ প্রজন্মকে কর্মশক্তিতে রূপান্তরিত করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। সমগ্র পৃথিবী তাদের নিজেদের ব্যবসায় অথবা কাজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে সার্বিকভাবে সংযুক্ত করছে। তাই বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি সংবলিত সফটওয়্যার তৈরি, ফ্রিল্যান্সিংয়ের ব্যবহার, বিক্রি বাংলাদেশের তরুণ সমাজের জন্য অত্যন্ত লাভজনক একটি ব্যবসার উপায় হতে পারে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শিক্ষা প্রদানকারী ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্মগুলো কারিগরি ও বৃত্তিমূলক দক্ষতায় সাশ্রয়ী মূল্যের ব্যক্তিগত ও স্থানীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করতে পারে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালিত সরঞ্জামগুলো শিক্ষার্থীদের শক্তি ও আগ্রহ বিশ্লেষণ করে উপযুক্ত ক্যারিয়ার পথ এবং প্রশিক্ষণ কর্মসূচির পরামর্শ দিতে পারে এবং অনলাইন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্ল্যাটফর্মগুলোতে তরুণরা ফ্রিল্যান্স এবং দূরবর্তী চাকরির বাজারে সংযুক্ত হতে পারে, যেখানে তারা বাংলাদেশে অবস্থান করে বিশ্বব্যাপী কাজ ও রেমিট্যান্স আয় করতে পারবে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সিস্টেম তৈরিতে দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে দেশের তরুণ সমাজ তাদের বেকারত্ব দূর করার পাশাপাশি পরিবার ও সমাজের দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারে। একমাত্র দক্ষ জনশক্তিই পারে দেশের অর্থনীতির আমূল পরিবর্তন আনতে। তরুণদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক দক্ষতা অর্জনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালিত অ্যাপস অথবা সিস্টেমগুলো সাহায্য করতে পারে। যেমন-কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক প্ল্যাটফর্মগুলো দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং বাজারের চাহিদা বিশ্লেষণ করে চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ ঘটিয়ে দিতে পারে, উন্নত কর্মসংস্থানের সুযোগ নিশ্চিত করতে পারে। এর সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সরঞ্জামগুলো বাজার গবেষণা, ব্যবসায়িক পরিকল্পনা এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনায় উদীয়মান উদ্যোক্তাদের সাহায্য করতে পারে, স্ব-কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে পারে। চাকরি প্রতিস্থাপনের পরিবর্তে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিদ্যমান ভূমিকাগুলোকে বাড়িয়ে তুলতে পারে, শিল্পগুলোকে আরও দক্ষ করে তুলতে পারে এবং নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-সমর্থক ভূমিকা তৈরি করতে পারে।

দেশের দারিদ্র্য বিমোচনে শুধু তরুণদের এগিয়ে এলেই চলবে না, একই সঙ্গে সরকার এবং অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে। তরুণরা অনলাইন ও অফলাইন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত হবে। এই আধুনিক যুগে এর কোনো বিকল্প নেই। তরুণ সমাজ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কাজ করবে, নিজেরা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান তৈরিতে উদ্বুদ্ধ হবে। এজন্য সরকারকে সহায়ক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে যুগোপযোগী শিক্ষা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত ক্ষুদ্র ব্যবসার ওপর বিভিন্ন ভর্তুকি প্রদান করতে হবে। উৎসাহ প্রদান করতে হবে, ব্যাংক এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তরুণদের ব্যবসাসংক্রান্ত প্রশিক্ষণ, বিনিয়োগ ও প্রেরণা প্রদান করতে হবে।

ড. শাহ জে মিয়া : প্রফেসর অব বিজনেস অ্যানালিটিক্স, নিউক্যাসল ইউনিভার্সিটি, নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম