ঢাকার দুর্বিষহ অস্বাস্থ্যকর জীবন
ড. মুনীরউদ্দিন আহমদ
প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
মানবসভ্যতার ক্রমবিকাশে শহুরে জীবনের অবদানকে খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। আঠারো শতকে লন্ডনের কফি হাউজের নাগরিক সমাবেশে রসায়ন, প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতি ও জ্ঞানবিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা হতো। প্যারিসের লেফট ব্যাংক বারে পাবলো পিকাসো সৃষ্টি করেছিলেন তার অনবদ্য শিল্পকর্ম। শেকসপিয়র বা জেমস জয়েসের অনবদ্য সৃষ্টির সূত্রপাত হতো না, যদি তাদের জীবনে শহুরে জীবনের ছোঁয়া না লাগত। আইনস্টাইন পর্যন্ত শহরের কমিউটিং ট্রেনের ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন এবং শহুরে জীবন দ্বারা ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।
এত ভালো যার, ততো মন্দ তার। শহুরে জীবন তত সহজ ও আনন্দদায়ক নয়, যতটুকু আমরা ভাবি। প্রতিটি ওষুধের যেমন কমবেশি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও বিষক্রিয়া রয়েছে, শহুরে জীবনেরও তেমনি শরীর, মন ও জীবনযাপনের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া রয়েছে। যে লন্ডনের ক্যাফে বেন ফ্রাঙ্কলিনকে উজ্জীবিত করেছিল, সেই লন্ডনে ছড়িয়ে পড়েছিল মারাত্মক কলেরা। পাবলো পিকাসোকেও শেষ নাগাদ প্যারিসের জড় জীবন ছেড়ে শহরের বাইরে নিরিবিলি পরিবেশে ফিরে যেতে হয়েছিল তার জীবন ও শিল্পকর্মের জন্য। আধুনিক শহর মানবসভ্যতাকে অনেক খ্যাতনামা কবি-সাহিত্যিক, বৈজ্ঞানিক, দার্শনিক উপহার দিয়েছে, সন্দেহ নেই। মানবসভ্যতার বিকাশ, জ্ঞানবিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক বিপ্লব বিশ্বের চেহারা পালটে দিলেও শহর হলো জড়, অনৈসর্গিক, অস্বাভাবিক, অপ্রাকৃতিক, কট্টর এবং সুস্থ শরীর, মন ও জীবনযাপনের পরিপন্থি। ইদানীং বিজ্ঞানীরা শরীর ও মস্তিষ্কের ওপর শহুরে জীবনের বিরূপ ও ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে নানা গবেষণা শুরু করেছেন। গবেষণার ফলাফল নিয়ে বিজ্ঞানী, পরিবেশবাদী ও আমাদের মতো মানুষের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার শেষ নেই। গবেষণার ফলাফলে প্রকাশ-শহুরে জীবন মানুষের মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যপ্রণালিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। গবেষণায় দেখা গেছে, কোনো মানুষ একটি ব্যস্ত, জনাকীর্ণ ও কোলাহলময় রাস্তায় বা জায়গায় কয়েক মিনিট সময় কাটিয়ে আসার পর তার স্মরণশক্তি স্বাভাবিক থাকে না এবং তার আত্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়। আমরা কেউই অস্বীকার করতে পারি না, শহুরে জীবন হলো নিদারুণ ক্লান্তিকর। আর সেজন্যই হয়তো পিকাসোকে প্যারিস ছাড়তে হয়েছিল। শহুরে জীবন মানুষের চিন্তাশক্তিকে প্রায়ই নিস্তেজ ও মন্থর করে দেয়। এসব বিরূপ প্রতিক্রিয়ার পাশাপাশি শহুরে জীবন এমনসব স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করে, যা কারও কারও ক্ষেত্রে বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। মানুষের মন হলো একটি সীমাবদ্ধ যন্ত্র-বলেছেন মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মনোবিজ্ঞানী। আমরা এখন ক্রমান্বয়ে বুঝতে ও জানতে শুরু করেছি, শহুরে জীবনের বিভিন্ন দিক কীভাবে মানুষের মনের সীমাবদ্ধতার গণ্ডিকে অতিক্রম করে মানুষকে বিপদে ফেলতে পারে।
শহুরে জীবনের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, আমরা প্রকৃতিবিবর্জিত জীবনযাপন করছি, যা শরীর ও মনের জন্য অবশ্যম্ভাবী ধ্বংসের কারণ হতে চলেছে। পরীক্ষায় দেখা গেছে, হাসপাতালে রোগীরা অতি তাড়াতাড়ি সেরে ওঠেন, যদি তারা জানালা দিয়ে সবুজ গাছপালা দেখেন। নারীরা বাসাবাড়িতে সানন্দে ভালো কাজ করতে পারেন এবং উৎফুল্ল থাকেন, যখন তারা বাড়ি থেকে সবুজ ঘাসের আঙিনা দেখতে পান। এমনকি এভাবে ক্ষণিকের এক ঝলক প্রকৃতি দেখা মানুষের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতাকে প্রচণ্ড সতেজ ও উদ্দীপিত করতে পারে। এ প্রকৃতি শহরের জড় জীবনের ক্লান্তি আর অবসাদ দূর করে মানুষকে দিতে পারে অনাবিল আনন্দ আর স্বস্তি-হোক না সেটা ক্ষণিকের জন্য।
শহুরে জীবনের বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলাফল নিয়ে আমরা এসব কথাবার্তা এমন সময় বলতে শুরু করেছি, যখন মানবসভ্যতা প্রথমবারের মতো এক ঐতিহাসিক মাইলফলক অতিক্রম করেছে। বর্তমানে বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ শহরেই বসবাস করছে। ফলে শহুরে জীবনের ওপর চাপ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। বাসযোগ্য পরিবেশের অভাবে শহুরে জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। খোলামেলা প্রাকৃতিক পরিবেশে জনবসতি গড়ে তোলার পরিবর্তে বাস, ট্রাক, গাড়ি, ট্রাফিক ও লাখ লাখ মানুষ পরিবেষ্টিত কংক্রিটের জঙ্গলে বসবাসে আমরা অভ্যস্ত হতে বাধ্য হচ্ছি। আমরা খুব কমই উপলব্ধি করতে পারছি, এ অনৈসর্গিক ও অস্বাভাবিক দূষিত পরিবেশে বসবাস ও জীবনযাপনের কারণে আমরা শারীরিক ও মানসিকভাবে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। আমাদের মস্তিষ্ক ও চিন্তাচেতনায় নীরবে কী বিপর্যয় ঘটে যাচ্ছে। এসব শারীরিক, মানসিক ও মানবিক বিপর্যয়ের কথা বিবেচনায় নিয়ে উন্নত বিশ্বের নগর পরিকল্পনাকারীরা এখন যত বেশি সম্ভব গাছপালা, বাগান, উদ্যান ও প্রাকৃতিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনায় সচেষ্ট হচ্ছেন। ম্যানহাটনের কেন্দ্রে সেন্ট্রাল পার্ক তৈরি করাটা কোনো দৈব ঘটনা ছিল না। পরিকল্পনাকারীরা ম্যানহাটনের মধ্যে একটি পার্কের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিলেন বলে সেন্ট্রাল পার্ক তৈরি হয়েছিল। আমাদের শরীর, মন প্রকৃতি ও নৈসর্গিক শোভা দেখতে চায়, উপলব্ধি করতে চায়। আমাদের জানা দরকার, শহর পরিকল্পনায় শহরের ভেতরে যত বেশি সম্ভব বিভিন্ন ধরনের ছোট-বড় গাছ পরিবেষ্টিত পার্ক স্থাপন শহুরে জীবনের ক্ষতিকর প্রভাবগুলো বহুলাংশে দূর করতে পারে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, শহরের প্রাকৃতিক ও বসবাসযোগ্য পরিবেশ নিয়ে আমাদের চিন্তাচেতনা এবং সামর্থ্য সীমিত ও সংকীর্ণ।
এ বছর লন্ডনভিত্তিক ‘ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট’ কর্তৃক পরিচালিত সমীক্ষার ফলাফলে ঢাকা বিশ্বের ষষ্ঠ নিকৃষ্টতম বাসযোগ্য শহর হিসাবে পরিগণিত হয়েছে। সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অপরাধপ্রবণতার হার, মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবার সহজলভ্যতা, প্রাকৃতিক পরিবেশ, শিক্ষা ও জনগণের জন্য যানবাহনের সুযোগ-সুবিধাসহ অবকাঠামোগত বিশেষত্বের ওপর ভিত্তি করে এ মূল্যায়ন করা হয়েছে। উল্লিখিত কোনো মাপকাঠিতেই ঢাকা বাসযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করা হয়েছে। যানজট ঢাকাকে স্থবির করে ফেলেছে। শুধু ঢাকার কথাই বলি কেন, যানজটের কারণে পুরো দেশই অচল হয়ে পড়ছে। ঢাকার যানজট এক অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। মানুষের জন্য এখন আর রাস্তায় চলাচল বা গাড়ি চালানো যায় না। হাজার হাজার মানুষ যত্রতত্র ছোটাছুটি করছে, চলন্ত গাড়ি থামিয়ে যত্রতত্র রাস্তা পার হচ্ছে। আমি প্রায়ই ভাবি, লাখ লাখ টাকা খরচ করে ঢাকা শহরে এত ফুটওভারব্রিজ কেন তৈরি করা হয়েছিল? এসব ওভারব্রিজ ব্যবহার করে নগণ্যসংখ্যক মানুষ। ওভারব্রিজ ব্যবহার করতে মানুষকে বাধ্য করা হয় না, এমনকি উদ্বুদ্ধও করা হয় না। ট্রাফিক আইন না মানা আমাদের অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। আইন আমাদের নিয়ন্ত্রণ করে না; আইনকে আমরা তাড়িয়ে বেড়াই, পদদলিত করি। কারণ পেশিশক্তি হলো আসল শক্তি।
ঢাকা শহরে মানুষের চাপ যে হারে বাড়ছে, তাতে সামনের দিনগুলোতে ঢাকার নাগরিক জীবনে বিপর্যয় নেমে আসবে। ক্রমবর্ধমান গাড়ির কারণে শহরে চলাফেরা যেমন দায় হয়ে পড়েছে, তেমনি শব্দদূষণ ও পরিবেশদূষণে বিপর্যস্ত হচ্ছে ঢাকার নাগরিক জীবন। জাতি হিসাবে আমাদের ধৈর্যের প্রচণ্ড ঘাটতি রয়েছে। ঘাটতি রয়েছে নিয়ম-শৃঙ্খলাবোধের। আমরা যে কত বিশৃঙ্খল জাতি, ঘরের বাইরে গেলেই তা প্রতিমুহূর্তে হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া যায়। এদেশে পথচারীর যেমন তাড়া, তেমনি বিকশাওয়ালা, ঠেলাগাড়িওয়ালা বা গাড়িওয়ালারও সমান তাড়া। তাড়ার চোটে আজকাল সাইকেল, মোটরসাইকেল ও রিকশা পর্যন্ত ফুটপাত দিয়ে চলা শুরু করেছে। পথচারীরা অসহায়। জাতি হিসাবে আমাদের নিয়ম-শৃঙ্খলার প্রতি বেশি শ্রদ্ধা নেই। কারণ, ছোটকাল থেকে আমাদের এসব শেখানো হয়নি।
গাড়ি চালাতে গিয়ে অকারণে হর্ন বাজানো আমাদের বদভ্যাসে পরিণত হয়েছে। যখন-তখন হর্ন বাজালে শব্দদূষণের কারণে মানুষের নাগরিক জীবনে অশান্তি সৃষ্টিসহ শারীরিক ক্ষতি হয়-এটা হাজার বলেও মানুষকে শেখানো যাচ্ছে না। শুনেছি আমাদের পাশের দেশ মিয়ানমারে হর্ন বাজে না। শব্দদূষণ আমাদের শরীর ও মনে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। শব্দদূষণের কারণে সারা বিশ্বে লাখ লাখ মানুষ শ্রবণশক্তি হারাচ্ছে। একসময় ভাবা হতো শব্দদূষণ শুধু বিরক্তি উৎপাদন করে; কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, আচার-আচরণ ও মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন ছাড়াও শব্দদূষণ ঘুমের ব্যাঘাত, কাজকর্মে অমনোযোগ, শিশুদের মানসিক বিকাশ রোধ, মানসিক চাপ এবং উগ্রতা ও আক্রমণাত্মক মনোভাব সৃষ্টির পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। শব্দদূষণের কারণে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের মতো প্রাণঘাতী রোগের সৃষ্টি হতে পারে। শব্দদূষণের কারণে শরীরে অ্যাড্রেনালিনের নিঃসরণ বেড়ে যায়, যা রক্তনালি সংকোচনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। রক্তনালি সংকোচনের ফলে রক্তচাপ বেড়ে যায়। হৃৎপিণ্ডের রক্তনালি সংকুচিত হলে হৃদরোগের উৎপত্তি হয়।
ধুলা ঢাকার আরেক অন্যতম সমস্যা। শহরজুড়ে সবচে য়ে বেশি ধুলা ওড়ে সেসব এলাকায়, যেখানে উন্নয়নকাজ চলছে। বাতাসেও প্রচুর ধুলাবালি। ঢাকার বাতাসে কতটুকু ধুলা আছে, তার কোনো পরিমাপ পাওয়া যায়নি। শহরের গাছপালাগুলোর দিকে তাকালে বোঝা যায়, আমরা ধুলায় ডুবে আছি। খুব ভোরে ঢাকার মূল সড়কগুলোতে দায়সারাভাবে ঝাড়ু দেন সিটি করপোরেশনের কর্মীরা। ছোট ও কম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা, অলিগলিতে কোনো দিনই ঝাড়ুর ছোঁয়া লাগে না। রাজধানীর ফুটওভারব্রিজ ও ফ্লাইওভারগুলোও ঝাড়ু দেওয়া হয় না। যেসব রাস্তায় ঝাড়ু পড়ে, সেগুলোও ঠিকমতো পরিষ্কার হয় না। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা ঝাড়ু দিয়ে শুধু টুকরো কাগজ ও অন্যান্য ময়লা নিয়ে যান। ধুলাবালি থেকে যায় রাস্তার দুই পাশে। ফলে গাড়ি চলাচল শুরু হলে সেগুলো আবার উড়তে শুরু করে। রাজধানীর দুই কোটির বেশি মানুষের জন্য ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী রয়েছেন প্রায় আট হাজার। ফলে নগরীর বিপুল পরিমাণ ময়লা-আবর্জনা সরানো তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না।
ঢাকার পরিবেশদূষণের ওপর বলতে গেলে বড়সড় একটি প্রবন্ধ লেখার প্রয়োজন হবে। তাই সংক্ষেপে শুধু বলতে হয়, ঢাকা শহর ময়লা-আবর্জনা-ধুলাবালিতে ডুবে আছে। এখন আর এই ধুলাবালি-ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করা সম্ভব হয়ে উঠছে না। পচনশীল ময়লা-আবর্জনার কারণে চারদিকে দুর্গন্ধ ও রোগ-জীবাণু ছড়িয়ে পড়ছে। ঢাকা পৃথিবীর নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর শহর। ঢাকার পরিবেশদূষণের কারণে মানুষ দিন দিন বিভিন্ন প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এবং মারা যাচ্ছে। অনেকেই হয়তো জানেন না, ঢাকায় ধূলিদূষণের কারণে শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসের ক্যানসার, ব্রংকাইটিস, হাঁপানির মতো রোগ দেখা দিচ্ছে। শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়ায় ধূলিদূষণে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তারা। পরিবেশদূষণের কারণে অধিক হারে মানুষ অ্যাজমা ও নানারকম অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হচ্ছে। এতে শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বেশি। পরিবেশদূষণের কারণে সংক্রামক রোগের হার বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে অ্যান্টিবায়োটিকের নির্বিচার ব্যবহার, যা সৃষ্টি করছে ভয়ানক অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স। অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স আরেক বিপর্যয় সৃষ্টিকারী সমস্যা।
আমরা সমাজ বা রাষ্ট্রীয় জীবনে যেসব সমস্যার মুখোমুখি হই, তার মূল কারণ মানুষ। আমরা নিজেরাই নিজেদের সমস্যা সৃষ্টি করি। আমরা যদি প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হতাম, একটু সচেতন ও সহনশীল হতাম, একটু বিবেক-বুদ্ধি প্রয়োগ করতাম, স্বার্থপর না হতাম, তাহলে আমার মনে হয়, আমাদের এত সমস্যা থাকত না। সমস্যা থাকলেও সহজ হোক, কঠিন হোক, উত্তরণের কোনো না কোনো পথ পাওয়া যেত। তখন অবশ্যই আমাদের জীবনযাত্রার মান আরও অনেক উন্নত হতো। মনমানসিকতা সুন্দর হতো এবং জাতি হিসাবে পৃথিবীর বুকে আমাদের মানমর্যাদা অনেক বৃদ্ধি পেত। কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছে না। এ যে কত বড় ব্যর্থতা আর অসম্মানের ব্যাপার, তা-ও আমরা উপলব্ধি করতে পারছি না। এ কষ্ট সই কী করে! বা এত অসুস্থতা নিয়েই বা বেঁচে থাকি কী করে!
ড. মুনীরউদ্দিন আহমদ : প্রফেসর ও বিভাগীয় প্রধান, ফার্মেসি বিভাগ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ঢাকা
drmuniruddin@gmail.com