Logo
Logo
×

বাতায়ন

রাজনৈতিক সংকটের ফাঁদে জনগণ

Icon

মোহাম্মদ হোসেন

প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

রাজনৈতিক সংকটের ফাঁদে জনগণ

ছবি: সংগৃহীত

শুরুতেই ’৯০-এর একটি ব্যক্তিগত ঘটনা উল্লেখ করতে চাই। আমি তখন একটি ছোট শহরে একটি কথিত প্রগতিবাদী ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। এরশাদ পতনের পর বিজয় উদযাপনের জন্য সভার আয়োজন করা হয়। আমাদের শহরেও হলো। আমার ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে আমার দায়িত্ব পড়ল বক্তৃতা দেওয়ার। আমরা অনুষ্ঠানস্থলে আছি, বক্তৃতা চলছে। বক্তৃতায় সবাই রাজনৈতিক ঐক্যের কীর্তন করছে। এরশাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো যাতে পারস্পরিক সৌহার্দ, সৌজন্য ভবিষ্যতেও অটুট থাকে তার প্রস্তাবনা বা দাবি তুলছে ইত্যাদি ইত্যাদি। এরই মধ্যে আমাদের অনুষ্ঠানস্থলের বাউন্ডারির বাইরে হঠাৎ করে তীব্র আওয়াজে কোনো একটি দলের ছাত্র সংগঠনের স্লোগান উঠল জিকিরের মতো, নেত্রী আছে? কোন সে নেত্রী? যা হয় আর কী! অনুষ্ঠানস্থলের সবাই অর্র্থাৎ ওই দলেরও উচ্চপদধারী নেতারা সবাই বিরক্ত। খবর পাওয়া গেল, পার্শ্ববর্তী শহর থেকে একজন প্রভাবশালী ছাত্রনেতা তার দলবল নিয়ে এসেছেন। তিনিই এ স্লোগানের উদ্যোক্তা। যা হোক, স্লোগান থামলে এদের বিপরীতে যে সংগঠন তারা মনে করল, ওরা তো স্লোগান দিয়ে এগিয়ে গেল। এরা পেছনে থাকবে কেন? এরাও স্লোগান তুলল। আবার লোক পাঠিয়ে থামাতে গেলে এরা আরও তীব্রতা দেখাল এবং অনুষ্ঠানস্থলের বাইরের রাস্তায় ওই দুই সংগঠনের ছাত্রদের মধ্যে প্রায় হাতাহাতি হওয়ার উপক্রম হলো। আমার সংগঠন নিরীহ, তার মধ্যে আমি ব্যক্তিগতভাবে আরও নিরীহ। ওইদিনই আমার মধ্যে এ দেশের রাজনীতির অনৈক্য বা রাজনৈতিক অনৈক্য, বিস্বাদ সম্পর্কে যে হতাশা বাসা বেঁধেছিল, আজও আমি তা থেকে মুক্ত হতে পারলাম না। পরবর্তীকালে ওইরূপ অনৈক্য, তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়ল।

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীনের তত্ত্বাবধানে এ জাতির জীবনে একটি শ্রেষ্ঠ নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানকালে বিভাজনের ফাটল আরও চওড়া হলো। একটি দলের নেত্রী কলকাতায় গিয়ে অপর দলের বিরুদ্ধে বিষ উদ্গিরণ করে এলেন। নির্বাচনের ফলাফল হলো বিপরীত। উভয়ের মনের ক্ষত আরও গভীর হলো। পরবর্তীকালে সরকারি দল একটি মাত্র আসনে উপনির্বাচনে জয়ের লোভ সংবরণ করতে না পেরে নিরপেক্ষ নির্বাচন করাতে ব্যর্থ হলো। প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচনি এলাকায় ভোটদানের দিন ঘুরে এসে আইনের প্রয়োগ ত্যাগ করে কাব্যের ভাষা ব্যবহার করলেন। বিভাজনের খাদ আরও গভীর হলো। আন্দোলনের দামামা বেজে উঠল। আবার জনগণের জানমালের ক্ষতি। জনগণের নামে জনগণকে বলি দেওয়ার রাজনীতি, কাদা ছোড়াছুড়ি, যা আমাদের রাজনীতিকরা বহুকাল ধরে করে এসেছেন, তাই করলেন। আলোচনা, সমঝোতা বরাবরই এদের কাছে অস্পৃশ্য। ক্ষমতার দম্ভ, চাটুকারিতা আর হঠকারিতাই যে এদের প্রধান অবলম্বন। যা হোক, আমার সমবয়সিরা পরের ইতিহাসের প্রত্যক্ষ সাক্ষী। পরের প্রজন্মের রাজনৈতিক সচেতনতা নিশ্চয় তাদের মুরব্বিদের কাছে শুনে, পত্রিকা বা বই পড়ে শিখে নিয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন হলো। একটি দল ক্ষমা-টমা চেয়ে ক্ষমতা হাতের মুঠোয় পেয়েই আবার বেমালুম জনগণকে ভুলে গেল। ক্ষমতায় যাওয়ার আগে দেশের সব মানুষকেই তারা জনগণ মনে করে। ক্ষমতায় গেলে শুধু দলীয় চাটুকারদের জনগণ মনে করে। এমনকি দলের ত্যাগী, নীতিনিষ্ঠ অনুসারীরাও তাদের কাছে আর জনগণ হিসাবে বিবেচিত হয় না। গণতান্ত্রিক রাজনীতি ক্রমান্বয়ে দূষিত হতে থাকল। জনগণের ভাগে দুধের পরিবর্তে ঘোল, আস্তে আস্তে ঘোলও উবে গেল, রইল শুধু ঘোল পচা পানি। রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যক্তিকেন্দ্রিক স্বার্থপরতা, ব্যক্তি ও দলীয় শত্রুতা এমন পর্যায়ে উন্নীত হলো, এক দলের মানুষ অন্য দলের মানুষের জানের শত্রুতে পরিণত হলো। এদেশের জনগণকে আবার ১/১১-এর সরকার দেখতে হলো। যারা গণতন্ত্রচর্চা করতে ব্যর্থ, তারাই আবার ১/১১-এর সরকারকে অগণতান্ত্রিক-অনির্বাচিত ইত্যাদি গালাগাল দিতে থাকল। যা হোক, আবার একটি অগণতান্ত্রিক সরকারের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত ভোটের নির্বাচনে অন্য একটি দল শাসনক্ষমতা লাভ করল।

এবার ক্ষমতা গ্রহণের মাধ্যমে শুরু হলো জনগণের গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষার মৃত্যুযাত্রা। আক্ষরিক অর্থেই মৃত্যুযাত্রা, যাদের লড়াকু প্রতিপক্ষ মনে করা হলো, তাদের তামাশার বিচারে মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করা হলো। বিভাজনের খাদ গভীর থেকে গভীরতর হলো। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিলুপ্তির মাধ্যমে গণতন্ত্রকে ভারত মহাসাগরের গভীরতম খাদে কবর দেওয়া হলো। ২০১৪ সালের প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে স্বৈরতন্ত্রের বিষবৃক্ষের মূল অনেক গভীরে পৌঁছাল, অপশাসনের বিষাক্ত নিশ্বাস ছড়িয়ে পড়ল বাংলাদেশের রাজনীতিতে। গুম, খুন, সন্ত্রাস আর প্রতারণার রাজনীতিই হয়ে উঠল ক্ষমতাসীন দলের ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার মূলমন্ত্র। উন্নয়নের নামে প্রতারণা আর দুর্নীতি। নির্বাচনের নামে প্রতারণা। সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে গত ১৭ বছরে। শুধু রাজনৈতিক বিভাজনই দুর্লঙ্ঘ্য করা হয়নি, সমাজের অভ্যন্তরে এমন গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে, তা এ জাতি আদৌ কাটিয়ে উঠতে পারবে কিনা আমার বোধে হিসাব মেলে না। ২০১৪, ১৮ ও ২৪-এর প্রতারণামূলক গণতন্ত্র আমাদের সমাজ মানসে যে ঋণাত্মক দায় সৃষ্টি করেছে, তা কবে ঘুচবে তা-ও অনুমান করা যাচ্ছে না। কোনো এককালে বঙ্গ সমাজে ‘ঠগ’ একটি পেশা হিসাবে চিহ্নিত ছিল। রাষ্ট্র পরিচালকরা যখন ‘ঠগি’ হয়, তখন সমাজের সাধারণ মানুষ কী করবে? তারাও তো মনে করে ‘ঠগি’ হওয়াটাই উত্তম কাজ। ব্যবসা-বাণিজ্য, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী, রিকশাওয়ালা, বাসের কন্ডাকটর, মাছওয়ালা, মুরগিওয়ালা, তরকারিওয়ালা সবাই মনে করে মন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রী যদি এরূপ ঠগবাজি করে, তাহলে তারা কী দোষ করেছে? তারাও ওই মহাজনদের পথ অনুসরণ করতেই পারে। আজ সমাজে সেই বিষবাষ্প ছড়িয়ে আছে। আমাদের গত ৩৩ বছরের গণতন্ত্র যাত্রার ফসল হলো কয়েক হাজার গুম-খুন। আর গত জুলাই ও আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে হাজারের উপরে শিশু, কিশোর, তরুণ, যুবক, নারী শহিদ হয়েছেন এবং কয়েক হাজার মানুষ পঙ্গুত্ববরণ করলেন, দৃষ্টিশক্তি হারালেন। মা-বাবা সন্তান হারিয়েছেন, সন্তান, মা-বাবা হারিয়েছে, ভাই, বোন হারিয়েছে, বোন, ভাই হারিয়েছে, স্ত্রী হারিয়েছে স্বামী, সমাজ হারিয়েছে অনেক সাহসী মানুষ। এই তো মাত্র কয়েকদিন হলো আমাদের সামনে এ ঘটনাগুলো ঘটে গেল। গত ১৭ বছর আমরা দুঃশাসন সহ্য করেছি। কিন্তু ইতোমধ্যে আমরা সবকিছু ভুলতে বসেছি। মনে হয় যেন, আমাদের রাজনৈতিক জীবনে বিগত বছরগুলোতে কিছুই ঘটেনি।

আন্দোলনের অগ্রসেনানী ছাত্রদের মধ্য থেকে একটি অংশ কোনো একটি রাজনৈতিক দলের পরিচয় নিয়ে বেরিয়ে গেল তড়িঘড়ি করে। মাস্টারমাইন্ড নিয়ে বিতর্ক এবং বিভাজন সৃষ্টি হলো। আন্দোলনকালে প্রকৃতিগত কারণে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দূরত্ব কিছুটা কমে এসেছিল। কিন্তু তাদের মধ্যে বিভাজনের দূরত্ব আবার তীব্র গতিতে বাড়তে লাগল। রাজনৈতিক দলগুলো আবার বিভক্ত হয়ে পড়েছে। বর্তমানে সবচেয়ে বড় দলটি চাচ্ছে কত দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আরোহণ করতে পারে। ছোট ছোট দল, যাদের নির্বাচনে জেতার সম্ভাবনা অনেক কম, তারা চাইছে নির্বাচন দেরি করে হোক। এর মধ্যে তারা একটু বড় হতে পারে কিনা তার সুযোগ খুঁজছে। আমাদের অনেক জাতীয় ইস্যু আছে, যেখানে দৃঢ় জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো, সে কথা বেমালুম ভুলে গিয়ে আবারও সেই ব্যক্তিস্বার্থ এবং দলীয়স্বার্থ নিয়েই বেশি উত্তেজিত হয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভক্তি অনেক আগ থেকেই ছিল। ফলে তারা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি। বামপন্থি বলে বিবেচিত রাজনৈতিক দলগুলো বা ইসলামি দলগুলো বহুকাল থেকেই বহুধাবিভক্ত ছিল। জামায়াতে ইসলামী এবং জাতীয়তাবাদী দলের মধ্যে ২০০৬ সাল পর্যন্ত একটি ঐক্য থাকলেও ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগের আন্দোলন প্রতিহত করার সময়ে জামায়াতকে সামনে রেখে জাতীয়তাবাদীরা অনেকটা ব্যক্তিস্বার্থে পিছপা থাকল। ফলে উভয়ের মধ্যে বিভাজনের রেখা স্পষ্ট হলো। তারপর ঘটনাপঞ্জিতে জামায়াতের ওপর যে নিপীড়ন চলেছে, সেসময় জাতীয়তাবাদীরা জামায়াতের পাশে প্রায় দাঁড়ায়নি বললেই চলে বা অন্যায়ের বিচারের বিপক্ষে কোনো দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেনি। প্রহসনের বিচারে তাদের প্রধান প্রধান নেতাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিল। ফলে এককালের ঐক্যবদ্ধ দুটি দলের মধ্যে বিভাজনের বিস্তার ও গভীরতা দুটিই অপূরণীয় ব্যবধানে বেড়ে গেল। আওয়ামী লীগ জামায়াতকে কাবু করার পর জাতীয়তাবাদীদের ধরল এবং তাদের প্রধান প্রধান নেতাকে ফাঁসি দিতে না পারলেও জেলে দেওয়া ও দেশান্তরে থাকা নিশ্চিত করে ছাড়ল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক দলগুলো কিছুটা একই মাঠে নামলেও বিজয় অর্জনের পরে তারা আবার বিভক্ত হতে শুরু করেছে। ফলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে যে দৃঢ় জাতীয় ঐক্য গড়ে ওঠার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল, তা আবার দ্রুতবেগে বিলীন হতে থাকল। এ জাতির ভাগ্যে আবারও সেই পুরোনো প্রাপ্তি ‘হতাশা’ নসিব হওয়ার জোগাড় হয়েছে। দলগুলো উপদেষ্টাদের সাক্ষাতের সময় পৃথক পৃথক এজেন্ডা নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সবাই মিলে একটি জাতীয় এজেন্ডা তৈরি করতে পারছেন না; যা নিয়ে সবাই একযোগে কাজ করে এ রাষ্ট্রটিকে একটি মানুষের বসবাসযোগ্য রাষ্ট্র হিসাবে গড়ে তোলা যায়। প্রধান উপদেষ্টা যে কথাটি বারবার বলার চেষ্টা করছেন, আমাদের হাতে একটা বড় সুযোগ এসেছে, এ সুযোগ যদি আমরা কাজে লাগাতে না পারি, তাহলে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। একটা জাতির জীবনে এ রকম সুযোগ বারবার আসে না। সে কথায় কেউ কর্ণপাত করছেন বলে মনে হচ্ছে না। প্রধান উপদেষ্টা এরূপ আকুতি জানালেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেরূপ ব্যবস্থা নিচ্ছে বা পদ্ধতি অবলম্বন করছে বা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের অগ্রভাগের ছাত্র নেতৃত্ব যে ধরনের আচরণ করছে, তা-ও বিভাজনের ক্ষেত্র তৈরি করছে। অর্থাৎ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে পারছে না। সফল, সার্থক নেতৃত্ব দিতে পারছে না। তারা সুযোগের কথা বললেও সে সুযোগ নিজেরাও কাজে লাগাতে পারছে বলে মনে হয় না। জনগণের এখন দেখার বিষয় ভাগ্যে কী ঘটে।

যা হোক, আমাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কোনো গণিত শাস্ত্রবিদ অন্তঃকলন, সমাকলন বা লগারিদম নির্ণয় করে কোনো ফলাফল দেখাতে পারবেন কিনা আমি জানি না। কোনো জ্যোতিষী কোনো ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারবেন কিনা, তা-ও আমি জানি না। সাধারণ মানুষ হিসাবে আমাদের মনে ভয় ও শঙ্কাই বেশি কাজ করে। তারপরও আমাদের আশা থাকবে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে ঐক্য গড়ে উঠবে। আর এ ঐক্য গড়ে তুলতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও তার নেতৃত্বের বলিষ্ঠতা দেখাবে, যাতে আমরা একটি শক্তিশালী ও মানুষের জন্য মর্যাদাবান রাষ্ট্র গড়ে তুলতে পারি। ‘সময় গেলে সাধন হবে না’-এ কথাটি যেন আমরা সবাই মনে রাখি।

মোহাম্মদ হোসেন : লেখক ও বিশ্লেষক

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম