মিঠে কড়া সংলাপ
কক্সবাজারের সৌন্দর্য বাড়ছে, নাকি কমছে?
ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন
প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত
প্রায় পাঁচ বছর পর কক্সবাজার গিয়ে ফিরে আসার পর এ বিষয়ে কিছু লেখার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করলাম। বিশ্বের দীর্ঘতম বালুকাবেলার এ সমুদ্রসৈকত আমাদের জন্য একটি গর্বের বিষয়। আমি বিদেশ গেলে সেসব দেশের লোকজনের সঙ্গে যখন কথাবার্তা হয়, তখন গর্বভরে বলি, ‘Do you know, we have the longest sea beach and the biggest mangrove forest of the world in our country?’ আর আমার কথা শুনে তাদের প্রায় প্রত্যেকেই ‘না’ সূচক জবাব দেন। অর্থাৎ এ বিষয়টি তাদের অজানা! কিন্তু আমি হাল না ছেড়ে তাদের বোঝাই; বলি, একবার এসো না, বেড়িয়ে যাও, দেখে যাও কত বিশাল দীর্ঘ বালুকাময় আমাদের সমুদ্রসৈকত, কত সুন্দর আমাদের সুন্দরবন, এমনকি কাউকে কাউকে এমন কথাও বলি, ‘আমি তোমার বা তোমাদের হোস্ট হব, তবু তোমরা দু-চার দিনের জন্য এসো, দেখে যাও আমাদের দেশটা কত সুন্দর।’
আমি নিজেও একজন ভ্রমণপিপাসু মানুষ এবং গত ৫০ বছরে আমি বিশ্বের ৩৮টি দেশ ভ্রমণ করেছি। দেশের ভেতরের পার্বত্য এলাকা এবং সমুদ্রতটও আমার ভীষণ পছন্দের জায়গা। আর সেই কারণে এ নিয়ে আমার প্রায় ১৫-১৬ বার কক্সবাজার ভ্রমণ হয়ে গেল। তাছাড়া আমি রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ইত্যাদি স্থানও একাধিকবার ভ্রমণ করেছি এবং পর্যটনের দৃষ্টিকোণ থেকে এসব এলাকাও অত্যন্ত উপযোগী স্থান হিসাবে আমি বিবেচনা করি; বিশেষ করে রাঙামাটির লেক পৃথিবীর একটি উন্নত পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে উঠতে পারে বলে আমার বিশ্বাস। কারণ, কাশ্মীরের ডাল লেক, পোখরার ফেওয়া লেক ইত্যাদি ঘুরেফিরে আমি যা দেখেছি এবং বুঝেছি, তাতে আমি অত্যন্ত দৃঢ় এবং পরিষ্কারভাবে বলতে পারি, ওইসব লেক অপেক্ষা আমাদের রাঙামাটির লেক অনেক বেশি দৃষ্টিনন্দন। শুধু পর্যটন শিল্প বিকাশের উদ্যম-উদ্যোগের অভাবেই আমাদের দেশের এত সুন্দর স্থানগুলোও দেশ-বিদেশের পর্যটক আকর্ষণে ব্যর্থ। অন্যদিকে প্রচার-প্রচারণা এবং উদ্যম-উদ্যোগের ব্যাপকতায় কাশ্মীরের ডাল লেক বা নেপালের ফেওয়া লেক বিশ্ববিখ্যাত হয়ে গেল। বিশেষ করে ফেওয়া লেক তো সৌন্দর্যের দিক থেকে রাঙামাটির লেকের ধারেকাছেও আসে না। আর ডাল লেক, সেও গলাবাজির জোরেই বিশ্বখ্যাতি পেয়েছে। কারণ, শত শত বছরজুড়ে প্রচার-প্রচারণার তুঙ্গে থাকা ডাল লেক কখনো ডাল লেক হয়ে উঠত না, যদি না সে সময়ের কবি আমির খসরু বলতেন, ‘আগার ফিরদাউস রুহি ই জামিনাস্ত, হামিনাস্ত, হামিনাস্ত, হামিনাস্ত!’ অর্থাৎ পৃথিবীতে স্বর্গ বলে কিছু থাকলে, তা এখানে, এখানে, এখানে!
এক হাজার বছর আগে জালালুদ্দিন খিলজির রাজত্বকালে রাজকবি, গায়ক তথা সুফিসাধক আমির খসরু কাশ্মীরে বসে সুফি সাধনা করার সময় সেখানকার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে কাশ্মীরকে বেহেশতের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন এবং তারপর থেকেই কাশ্মীরকে ভূস্বর্গ বলা হয়ে থাকে। অতঃপর সেখানকার ডাল লেকটি বোট হাউজ দিয়ে সাজিয়ে-গুছিয়ে আকর্ষণীয় করে তোলা হলে বছরজুড়ে সেখানে পর্যটকদের ঢল নামে। অথচ ডাল লেক এমন কোনো সুন্দর জায়গা নয়, সেখানে যেতে পাগল হয়ে উঠতে হবে! সে সময়ের কবি ও গায়ক কাশ্মীরের সৌন্দর্যে আকর্ষিত হয়ে তাকে ভূস্বর্গ উপাধি দিয়েছিলেন; কারণ, কাশ্মীরের ভূপ্রকৃতি খুব সুন্দর; শীতকালে সেখানে সুন্দর সুন্দর ফুল ফোটে। কিন্তু পৃথিবীতে কাশ্মীর অপেক্ষাও আরও সুন্দর এবং মনোহরণকারী অপরূপ সৌন্দর্যের ভূপ্রকৃতি আছে, যার অন্যতম সুইজারল্যান্ড। এ অবস্থায়, ১০০০ বছর আগে একজন কবি, গায়ক এবং সুফিসাধক কাশ্মীরকে ভূস্বর্গ বলতেই পারেন, কারণ সে সময়ে তার পক্ষে পৃথিবীর অন্যান্য সুন্দর, আরও আকর্ষণীয় বা দৃষ্টিনন্দন স্থান ভ্রমণ করা সম্ভব হয়নি। তবে সেখানকার ডাল লেক নিয়ে যেভাবে মাতামাতি করা হয়, তা নিতান্তই গলাবাজি। কারণ, আমি আবারও বলছি, ডাল লেক বা ফেওয়া লেকের তুলনায় আমাদের রাঙামাটির লেকগুলো অনেক বেশি সুন্দর। যাক সে কথা, এবার কক্সবাজারের প্রসঙ্গে ফিরে আসি।
মুঘল আমলে প্রিন্স শাহ সুজা আরাকান প্রদেশে যাওয়ার পথে বর্তমান কক্সবাজার অঞ্চলের সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়ে যান এবং তিনি তার সেনাদের সেখানে ঘাঁটি করতে বলেন। তার সেনাবহরে এক হাজার পালকি বা ঢুলি ছিল বিধায় ঘাঁটি গাড়ার স্থানটিকে ঢুলাহাজারা নাম দেওয়া হয়; বর্তমানে যার নাম ডুলাহাজারা। মুঘল আমলের পর এ অঞ্চল আরাকানদের দখলে যায়, তারপর পর্তুগিজ জলদস্যুরা এলাকাটি দখল করে নেয়! অতঃপর এলাকাটি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দখলে আসায়, ক্যাপ্টেন হিরাম কক্সকে অঞ্চলটির দায়িত্বভার অর্পণ করা হলে তিনি এখানে একটি বাজার প্রতিষ্ঠা করেন, যা কক্স সাহেবের বাজার এবং পরবর্তীকালে কক্সবাজার নামে পরিচিতি লাভ করে। আর সেই কক্সবাজারই এখন দেশবাসীর কাছে আকষর্ণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। রেললাইন সম্প্রসারিত করে এখানে একটি রেলস্টেশন স্থাপন করা হয়েছে এবং ১ ডিসেম্বর থেকে ঢাকা-কক্সবাজার সরাসরি ট্রেন সার্ভিস চালু করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
এবারের কক্সবাজার ভ্রমণের প্রথম দিকেই আমি সেখানকার নবনির্মিত রেলস্টেশনটি পরিদর্শন করে হতাশ হয়েছি। স্টেশনটির নির্মাণশৈলী আদৌ আমার পছন্দ হয়নি। আগাগোড়া লোহার এঙ্গেল, থাই ও কাচ দিয়ে তৈরি স্থাপনাটি মোটেই আমার মনঃপূত হয়নি! আমার মনে হয়েছে, রেলস্টেশনটি আরও অনেক বেশি সুন্দর হতে পারত। অনেক আবেগ নিয়ে দৌড়ে সেখানে গিয়ে এমন একটি কাচঘর দেখতে হবে তা ভাবতে পারিনি। যদিও যারা এটা ডিজাইন করেছেন, নির্মাণ করেছেন, অর্থ খরচ করছেন, তারা নিশ্চয়ই এটাকে তাদের শ্রেষ্ঠ কর্ম বলেই বিবেচনা করবেন বা করেছেন। অথচ ভারতের মুম্বাই শহরের পাঁচটি রেলস্টেশন দেখে আমার কতই না ভালো লেগেছে, জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট শহরের রেলস্টেশনটি দেখেও আমি অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থেকেছি। শত শত বছরের পুরোনো এসব রেলস্টেশন আজও আধুনিক। এ অবস্থায় কক্সবাজারের স্টেশনটি দেখার আগে ভেবেছিলাম, নিশ্চয়ই পুরোনো আর নতুন কৃষ্টি কালচারের সংমিশ্রণে একটি আধুনিক রেলস্টেশনই দেখতে পাব। কিন্তু হা হতোস্মি! প্রচুর অর্থ ব্যয়ে একটা বিশাল কাচঘর নির্মাণ করা হয়েছে।
এবারের কক্সবাজার ভ্রমণের আমার আরও একটি বিশেষ যে উদ্দেশ্য ছিল তা হলো-কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্মিত একটি ফ্ল্যাট ক্রয় করা। কারণ, জীবনের বাকি অংশটুকুর বেশিরভাগ সময় এখন আমি পাহাড় এবং সাগরের সান্নিধ্যে থেকে লেখালেখি করতে চাই। আর হোটেলে থেকে যেহেতু তা সম্ভব নয়, তাই ছোট একটি ফ্ল্যাট ক্রয় শ্রেয় বিবেচিত হওয়ায় পরপর দু’দিন কউক অফিসে গিয়ে পরদিন চেয়ারম্যান সাহেবের সাক্ষাৎ পেলে আমি প্রকল্প-১-এর বাতিলকৃত বা কিস্তি বরখেলাপকৃত একটি ফ্ল্যাট ক্রয় বা বরাদ্দ পাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করায় তিনি আমাকে সাদা কাগজে একটি দরখাস্ত দিতে বলেন এবং আমি তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রকল্প-১-এর নির্মিত ফ্ল্যাট দেখতে চলে যাই। উল্লেখ্য, প্রকল্প ১-এ ৯/১০টি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এ অবস্থায় আমি দুটি ভবন পরিদর্শন করি এবং একটি ফ্ল্যাট খালি থাকায় ভেতরে গিয়ে সবকিছু দেখে আসি, যেখানে একটি বিস্ময় আমার জন্য অপেক্ষা করছিল। কারণ, এত আগ্রহ নিয়ে দুদিন কউক অফিসে গিয়ে চেয়ারম্যান সাহেবের সঙ্গে সাক্ষাতের পর ফ্ল্যাট দেখতে গিয়ে যা দেখলাম, তা না দেখলেই ভালো হতো। সরকারি কর্তৃপক্ষের নির্মিত ফ্ল্যাটের নির্মাণমান এত খারাপ হতে পারে, তা আমি কল্পনাও করতে পারিনি। এ বিষয়ে বিস্তারিত বলার ইচ্ছা থাকলেও তা দমন করে বলতে চাই, কউক নির্মিত এসব ফ্ল্যাট নির্মাণে দোষ-ত্রুটি উদ্ঘাটনে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা উচিত। আর তদন্তে দোষ-ত্রুটি, কারও গাফিলতি বা অনিয়ম-দুর্নীতি প্রমাণিত হলে সে বিষয়েও ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। আর দেশের একজন নাগরিক হিসাবে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছে এটি আমার একটা দাবিও বটে। আমি কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছি না, এভাবে প্রাইভেট একটি এরিয়া, যেখানে বিবিধ শ্রেণি-পেশার মানুষের স্থাপনা, হোটেল, রেস্টুরেন্ট, দোকানপাট ইত্যাদি স্থাপনার ফাঁকফোকরে এক এক টুকরো জমি নিয়ে আলাদা আলাদা বিভিন্ন স্থানে কউক-এর মতো একটি সংস্থা কীভাবে এসব ফ্ল্যাট নির্মাণ করেছে; রুচিবোধ বলেও তো একটা কথা ছিল। আর এক্ষেত্রে চউক, রাজউক এসব সংস্থার উদাহরণও তো গ্রহণ করা যেত নাকি? কক্সবাজারের মতো জায়গায় আলাদা একটু জমি অধিগ্রহণ করে এক্সক্লুসিভ এলাকায় ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে না বা তা পারা যাবে না, সে কথাটিও তো ভাবতে কষ্ট হয়। তাহলে কউক-এর মতো একটি প্রতিষ্ঠানেরই বা উপযোগিতা বা প্রয়োজনীয়তা কী?
এ অবস্থায়, লেখাটি আর দীর্ঘায়িত না করে উপসংহারে বলতে চাই, যেখানে-সেখানে যেনতেন স্থাপনা নির্মাণ করে কক্সবাজারকে কংক্রিটের বস্তি না বানিয়ে সুন্দর এবং সঠিক একটি পরিকল্পনার মাধ্যমে সেটাকে গড়ে তোলা হোক। লন্ডনের ব্রাইটন সিবিচে যেসব ফ্ল্যাট নির্মিত হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার গোল্ড কোস্ট সিবিচে যেসব বাংলো নির্মিত হয়েছে, সেসব দৃষ্টিভঙ্গি মাথায় রেখে চউক-এর এগিয়ে যাওয়া উচিত। অন্যথায় যেভাবে ৮-৯টি ফ্ল্যাট ভবন নির্মাণ করে যাদের মধ্যে তা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং সেসব বরাদ্দগ্রহীতা যেভাবে হোটেল ব্যবসায়ীদের কাছে সেসব ফ্ল্যাট ইজারা দিয়েছেন, তাতে কউক-এর ফ্ল্যাট নির্মাণের উদ্দেশ্য হাসিল হয়েছে, মোটেও তা বলা যাবে না। এখানে আমি কউক-এর ২০১৮ সালে গৃহীত মাস্টারপ্ল্যান সম্পর্কেও কিছু বলতে চাই। যেখানে বলা হয়েছে, দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন, ভারত, থাইল্যান্ড...ইত্যাদি দেশের আদলে আধুনিক মানের মেরিন বিচ, সামুদ্রিক প্রাণী অ্যাকুরিয়াম স্থাপন করা, অপেক্ষাকৃত দৃশ্যমান স্থানে বিশাল আকৃতির ঘড়ি স্থাপন, পাহাড়ি এলাকায় গলফ্ মাঠ নির্মাণ, ইলেকট্রিক কেবল কার নির্মাণ, সমুদ্রসৈকতে Tide এবং Ebb-Tide সি নেটিং ব্যবস্থা চালু করা ইত্যাদি। কিন্তু কোথায়, ৫ বছর আগে গৃহীত এসব প্রকল্পের একটিও তো দেখে আসতে পারলাম না; গৃহীত বাদবাকি আরও অনেক প্রকল্পের কথা না হয় বাদই দিলাম। বরং এবারে যা দেখে এলাম তা হলো, সিবিচে ঘোড়ার মলমূত্রের গন্ধ, ঘোড়া দাপানোর ঠেলায়, সিবাইকের গর্জনে সেখানে হাঁটাচলা, বসা মুশকিল। তাছাড়া সিবাইকের নির্গত ধোঁয়া এবং গন্ধে সেখানকার পরিবেশও দূষিত হচ্ছে। আর হকারদের যন্ত্রণা, যাতনা তো আছেই; এটা-সেটা বিক্রির জন্য একদম কানের কাছে এসে তারা ঘ্যানঘ্যান করতেই থাকে। এসবের সঙ্গে নতুন মাত্রা হিসাবে ভিখারিদের উৎপাতও যোগ হয়েছে। সিবিচে ১০-১৫ মিনিট বসলেই এসব অত্যাচারে উঠে আসতে হয়। আর সেখানে ৭ দিন অবস্থান করে দেখেশুনে মনে হলো না এসব দেখাশোনা বা প্রতিরোধ করার কেউ আছে। যদিও একদিন সন্ধ্যায় দেখলাম নিরাপত্তা দিতে মাঝেমধ্যে কিছু পুলিশ দাঁড়িয়ে আছেন। এ অবস্থায় গণপূর্ত মন্ত্রণালয় তথা সরকারের উদ্দেশে বলতে চাই, কক্সবাজারের উন্নয়নের ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত যেসব ব্যয় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যেসব অর্থ খরচ করা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তার সঠিক হিসাব নেওয়া হোক। কারণ যা দেখে এলাম, তাতে কাজের কাজ তেমনটি হয়েছে, তা নয়। আর এক্ষেত্রেও আমরা ‘সরকারকা মাল, দরিয়া মে ঢাল’ অবস্থাটি দেখতে চাই না। দেশের টাকা, দশের টাকার সদ্ব্যবহার হোক, একজন আয়করদাতা তথা নাগরিক হিসাবে এটি আমার নিজেরও অধিকার। সুতরাং, কক্সবাজারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে কে বা কোন কর্তৃপক্ষ কোথায়, কীভাবে কত টাকা খরচ করেছেন বা করছেন, সে বিষয়ে সরকার যেন চোখ বন্ধ করে না থাকে, সেটাই কাম্য। কারণ যা দেখে এলাম, তাতে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সঠিকভাবে সঠিকপথে এগোচ্ছে বলে মনে হলো না। আর সাগরকন্যা কক্সবাজারকেও তাই বর্তমান অবস্থায় আমার কাছে সুন্দর লাগেনি; বরং আগের চেয়ে সেখানকার সৌন্দর্য কিছুটা বিনষ্ট হয়েছে।
ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন : কবি, প্রাবন্ধিক, কলামিস্ট