
প্রিন্ট: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৫২ পিএম
বাংলাদেশের আকাশে শকুনের আনাগোনা

মুহসিন উদ্দীন
প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
-67f5929106220.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
দীর্ঘ ১৬ বছর পর ফ্যাসিবাদের জাঁতাকলে নিষ্পেষিত জনতা স্বাধীনতা ও নাগরিক অধিকার ফিরে পেয়েছে। বাহ্যত ফ্যাসিবাদ ও আওয়ামী দুঃশাসনের পতন হয়েছে; কিন্তু ফ্যাসিস্টদের প্রেতাত্মারা সর্বত্র হায়েনার মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে। সুযোগের অপেক্ষায় আছে কখন ছাত্র-জনতার বিপ্লবকে নস্যাৎ করা যায়। ভারতীয় আধিপত্যবাদও বাংলাদেশের আকাশে ডানা মেলে আছে। ওদের দেশে বেশকিছু চ্যানেল প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অলীক কল্পকাহিনি প্রচার করেই চলেছে। গেল ১৬ মার্চ আমেরিকার ন্যাশনাল ইনটেলিজেন্স ডাইরেক্টর তুলসী গ্যাবার্ড ভারত সফরে আসেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে তিনি একটি নাতিদীর্ঘ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, যার আদ্যোপান্তই ছিল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক ও অসত্য। মূলত এসবই ভারতীয় আধিপত্যবাদের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের ফসল। সুতরাং ভারতের এহেন ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করার জন্য রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে গিয়ে দেশ-জনতাকে দুর্ভেদ্য ঐক্যের প্রাচীর গড়ে তুলতে হবে। ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী সরকার ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশ্বব্যাপী আকাশচুম্বী প্রভাব ও ভালোবাসার কারণে আধিপত্যের জাল বিস্তারের সাহস পাচ্ছে না। শুধু প্রহর গুনছে, কখন-কীভাবে বিশ্ববরেণ্য এ মানুষটিকে ক্ষমতাচ্যুত করা যায়। আমরা বুঝতে না পারলেও তারা জানে, বাংলাদেশে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিকল্প কোনো ব্যক্তি বা শক্তি এখনো সৃষ্টি হয়নি, যে বা যারা এ দেশকে ওদের কালো ছোবল থেকে রক্ষা করতে পারে। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গনে যাদের বিচরণ, তারা ইতিহাস-ঐতিহ্যের স্মৃতিচারণে ব্যর্থ।
শেখ হাসিনার দুঃশাসনের ভয়াবহ চিত্র দেশপ্রেমিক জনতার কাছে দিবালোকের মতো পরিষ্কার। শুধু ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য তিনি ভারতের শক্তিকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করেছেন। তাই তিনি একবার মুখ ফসকে বলেছিলেন, ভারতকে আমি যা দিয়েছি, ভারত তা জীবনে কখনো ভুলতে পারবে না। কিন্তু আমাদের রাজনৈতিক নেতারা এসব প্রত্যক্ষ করেও ভারতীয় আধিপত্যবাদের পরিণতির ভয়াবহতা ভুলে গিয়েছেন। তারা উপলব্ধি করতে পারছেন না, ক্ষমতায় গেলেও এর আয়ুষ্কাল কদিন হবে। সুতরাং ধৈর্য ধরুন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে যথাযথ সংস্কার করার সুযোগ দিন।
বলা বাহুল্য, জুলাই আগস্টের ছাত্র-জনতার মহাবিপ্লব দমন করার জন্য বিগত সরকার হাজার হাজার শিশু-কিশোর এবং নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়েছে। এই নরপিচাশদের বিচার একান্ত কাম্য। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মতো লৌহ মানবের শাসনামলেই এসব মানবতাবিরোধী অপরাধের সুষ্ঠু বিচার সম্পন্ন হওয়া সম্ভব। তাই রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীদের প্রতি সনির্বন্ধ অনুরোধ, ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে যথাযথ সংস্কার ও বিচারকাজ সম্পন্ন করার সুযোগ দিন।
লেখক ও শিক্ষক