Logo
Logo
×

দৃষ্টিপাত

রেলের ভোগান্তি কমবে কবে

Icon

মোহাম্মদ ইশতিয়াক হোসেন

প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

রেলের ভোগান্তি কমবে কবে

ছবি: সংগৃহীত

দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গণপরিবহণ ব্যবস্থা ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে’তে প্রতিদিন গড়ে ৩ লাখের বেশি মানুষ যাতায়াত করেন। দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় এটি বিশাল ভূমিকা রাখে; কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে রেলের যাত্রীসেবার মান নিয়ে সাধারণ মানুষের অসন্তোষ ক্রমাগত বাড়ছে। সময়সূচির অনিয়ম, টিকিট সংকট, অতিরিক্ত যাত্রী, নিরাপত্তাহীনতা, দুর্বল অবকাঠামো এবং রেলওয়ের প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনার কারণে মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। যদিও সরকার ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে; কিন্তু বাস্তবায়নের ধীরগতির কারণে যাত্রীসেবায় দৃশ্যমান উন্নতি খুব কমই হয়েছে। তাই প্রশ্ন ওঠে, এ বছর কি রেলের ভোগান্তি কমবে? যাত্রীসেবা কি উন্নত হবে, নাকি আগের মতোই দুর্ভোগের শিকার হতে হবে সাধারণ মানুষকে?

বাংলাদেশে বর্তমানে ২,৯৫৫ কিলোমিটার রেললাইন রয়েছে এবং এর আওতায় ৪৬০টির বেশি ট্রেন পরিচালিত হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রধানত দুটি ব্রডগেজ ও মিটারগেজ লাইন নিয়ে গঠিত, যার মধ্যে ৫৫ শতাংশ ব্রডগেজ এবং ৪৫ শতাংশ মিটারগেজ। যদিও ব্রডগেজ ট্রেনের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়ছে; কিন্তু এখনো অনেক গুরুত্বপূর্ণ রুটে পুরোনো মিটারগেজ ট্রেন চলাচল করছে, যা রেলভ্রমণকে ধীরগতির ও অস্বস্তিকর করে তুলছে। রেলের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো শিডিউল বিপর্যয়। বিশেষ করে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-রাজশাহী, ঢাকা-খুলনা, ঢাকা-সিলেটসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ রুটগুলোতে ট্রেন প্রায়ই দুই থেকে চার ঘণ্টা দেরিতে চলে। ২০২৪ সালের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, প্রতি মাসে গড়ে ৬০ শতাংশ ট্রেন নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে গন্তব্যে পৌঁছায়। এর মূল কারণগুলো হলো : সিগন্যালিং সমস্যার কারণে একাধিক ট্রেন একই লাইনে আটকে থাকে, সিঙ্গেল লাইন রেলপথের কারণে এক ট্রেন পার না হলে অন্য ট্রেন চলতে পারে না, বেশিরভাগ ট্রেনের ইঞ্জিন ও বগি পুরোনো হওয়ায় মাঝপথে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিকল হয়ে যায়, স্টেশন ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা এবং ট্রেন পরিচালনায় দক্ষ জনবলের অভাব।এছাড়াও টিকিট সংকটের মতো বড় সমস্যা তো আছেই। বিশেষত ঈদ, পূজা কিংবা বড় ছুটির সময়ে রেলের টিকিট পাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে ওঠে।

সরকার রেলের উন্নতির জন্য বেশকিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিলেও বাস্তবায়নের ধীরগতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে অনেক সমস্যা এখনো রয়ে গেছে। যদি সরকার দ্রুত পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করতে পারে, তাহলে রেলের ভোগান্তি ধীরে ধীরে কমবে। সবচেয়ে বেশি দরকার শিডিউল বিপর্যয়, টিকিট সংকট ও নিরাপত্তাহীনতার মতো সমস্যার সমাধান। যদি সঠিক পরিকল্পনা ও নজরদারি নিশ্চিত করা যায়, তাহলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে সত্যিকারের একটি আধুনিক ও উন্নত যাত্রীসেবায় পরিণত হতে পারে।

শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম