ক্ষমতা অর্জনই কি রাজনীতির শেষ কথা?
আল সাকিব হোসেন
প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
চারদিকে শুধু দখল, ক্ষমতার লড়াই আর লোকবল দেখানোর মহড়া চলছে। এ যেন বিগত পনেরো বছরের লুকানো সব লোকবল একসঙ্গে বেরিয়ে আসা। বলছিলাম রাজনৈতিক দলগুলোর কথা। এখানে কোনো একটি বিশেষ দলের কথা বলা হচ্ছে না, কারণ পুরো বাংলাদেশের চিত্রটাই এখন এমন। আসলে রাজনৈতিক দলগুলোর বিষয়ে কথা বলতে গেলে আগেই আসবে তাদের কর্মকাণ্ডের বিষয়টি। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রধান লক্ষ্যই হলো জনগণের জন্য কাজ করা, জনগণের সেবা করা ও জনগণ যাতে শান্তিতে থাকতে পারে, সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। তাছাড়া জনগণের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতের জন্য দিন-রাত কাজ করে যাওয়াও রাজনৈতিক দলগুলোর অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হওয়ার কথা ছিল। তবে বাস্তবতা কি তাই বলছে?
বিগত সরকার জনগণের মৌলিক অধিকারকে গুরুত্ব দিয়েছিল যতটুকু, তার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিল নিজেদের চাহিদা মেটানোতে। তাছাড়া ক্ষমতায় টিকে থাকতে একটি রাজনৈতিক দল কতটা নির্মম হতে পারে, তা সাধারণ মানুষের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে জুলাই বিপ্লবের সময়েই। এখন সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন একটাই, রাজনৈতিক দলগুলো কি আদৌ সাধারণ মানুষের সেবা করার উদ্দেশ্য নিয়ে রাজনীতি করে, নাকি ক্ষমতাই তাদের কাছে শেষ কথা? বর্তমান রাজনৈতিক দলগুলোর এমন উৎসাহ দেখে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়েছে, অধিকাংশ দলই জনগণের কথা বিবেচনায় না রেখে নিজ নিজ স্বার্থ হাসিলে মনোযোগী। তবে জনগণকে গিনিপিগ বানিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর এ রকম ফায়দা লোটার কথা জনগণ বুঝতে পারলেও সবাই চুপ থাকে।
তবে কি এর কোনো সমাধান নেই? সমাধান আছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সময় প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাদের নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করে। সেখানে তারা জনগণের জন্য আগামী পাঁচ বছরে কী কী উন্নয়মূলক কাজ করবে, তার একটা মৌখিক ঘোষণাও দেয়। তবে বছর শেষে দেখা যায় তারা সেগুলো পালনে ব্যর্থ হয়। এখানে যদি নির্বাচনি ইশতেহারগুলো গুরুত্ব দিয়ে দেখার ব্যবস্থা থাকত অর্থাৎ নির্বাচন কমিশনের হাতে এমন একটা ক্ষমতা দেওয়া যেত, যদি ক্ষমতায় যাওয়ার পর ঘোষণাকৃত ইশতেহার অর্জনে দলটি ব্যর্থ হয়, তাহলে পরবর্তী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না, তাহলে যে কোনো রাজনৈতিক দলই জনগণের জন্য রাজনীতি করবে। সুতরাং এই জনশক্তিই পারে তাদের অধিকার আদায় করে নিতে। কারণ দিনশেষে জনগণের ভোট বা সমর্থন ছাড়া কোনো রাজনৈতিক দলই ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে না।
শিক্ষার্থী, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, রাজশাহী কলেজ