অতিথি পাখি রক্ষা করুন
খন্দকার বদিউজ্জামান
প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
শীতকাল এলেই প্রকৃতিতে যেন রোমাঞ্চকর আমেজ বিরাজ করে। সেই রোমাঞ্চকে আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিতে বাংলাদেশে আগমন করে পরিযায়ী পাখি। পরিযায়ী পাখিগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সাদা হাঁস, কুমির পাখি, কালো টোক, গাঙচিল ইত্যাদি। তীব্র শীত ও তুষারপাত থেকে বাঁচতে হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে তারা আসে। বাংলাদেশে সাধারণত শীতকালে হাওড় ও উপকূলীয় অঞ্চল, সেই সঙ্গে সমতল ভূমিতে তাদের আগমন ঘটে। জীববৈচিত্র্য বৃদ্ধি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এসব পরিযায়ী পাখি। এদের আগমনে পরিবেশের সৌন্দর্য যেন বহুগুণ বৃদ্ধি পায়, যা অবিশ্বাস্য ও আনন্দঘন মুহূর্তের সূচনা করে। অনেক পাখি একসঙ্গে কলতানির মাধ্যমে এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ সৃষ্টি ও তাদের স্বকীয় উপস্থিতির জানান দেয়, যা প্রকৃতিপ্রেমীদের আকৃষ্ট করে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ১৯৯৪ সালে ৮ লাখ পরিযায়ী পাখির আগমন ঘটেছিল। যদিও সময়ের পরিক্রমায় সংখ্যাটা অনেক কমে আসছে। জলবায়ু পরিবর্তন, জলাভূমি হ্রাস ও জঙ্গল উজাড় হওয়া, শিকারিদের হাতে ধরা পড়ার মতো নানা কারণে পরিযায়ী পাখির বিচরণ এদেশে কমে যাচ্ছে। পাখির জন্য বাংলাদেশ হয়তো অনিরাপদ হয়ে আসছে, যার কারণে এ দেশে শীত মৌসুম এলেও আগের মতো পরিযায়ী পাখিদের আগমন তেমন ঘটে না।
যেহেতু এসব পরিযায়ী পাখি আমাদের দেশে শীতকালের একটি বিশেষ আকর্ষণ। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পরিযায়ী পাখিগুলো বিশেষ নিয়ামকও বটে। তাই এসব পাখির সুরক্ষায় আমাদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে পাখি শিকারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পরিযায়ী পাখিদের আবাসস্থল ও বিচরণক্ষেত্রগুলো সংরক্ষণ করতে হবে। সেইসঙ্গে পাখিগুলোর গুরুত্ব ও তাৎপর্য জনগণের মাঝে প্রচার করতে হবে, যাতে মানুষ এ পাখিগুলোর সৌন্দর্য ও পরিবেশগত উপকারিতার বিষয়ে অবগত থাকতে পারে। এসব পরিযায়ী পাখি যেন শীত মৌসুমে বাংলাদেশে তাদের নিরাপদ আবাস্থল গড়ে তুলতে পারে।
শিক্ষার্থী, আনন্দ মোহন কলেজ, ময়মনসিংহ