কর-শুল্ক বৃদ্ধি মানুষকে দুর্ভোগের দিকে ঠেলে দেবে
শহিদুজ্জামান শাকিল
প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত
মানুষকে দুর্ভোগে ফেলে কি আদৌ উন্নয়ন সম্ভব! দেশের উন্নয়ন মানে মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন। সরকারের সব কাজের লক্ষ্য হওয়া উচিত-কীভাবে দেশের উন্নতি হবে, মানুষের জীবনমানের উন্নতি হবে। কিন্তু বাংলাদেশে প্রায়ই এর ব্যতিক্রম লক্ষ করা যায়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাঝপথে এসে সরকার নতুন করে প্রায় শতাধিক পণ্যের ওপর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট), সম্পূরক শুল্ক ও করপোরেট কর বাড়ানোর যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা একেবারেই অযৌক্তিক এবং দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বর্তমানে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ডলারের দাম বৃদ্ধি, ঋণের সুদের হার বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগে স্থবিরতা বিরাজ করছে। এ অবস্থায় করের বোঝা বাড়ানো শুধু সাধারণ মানুষের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে তা-ই নয়, এটি ব্যবসা-বাণিজ্য এবং দেশি ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগেও বাধা সৃষ্টি করবে। গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশের অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছে এবং জনগণের জন্য জীবনযাত্রা আরও কঠিন হয়ে উঠেছে। সরকার যদি সত্যিই দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি করতে চায়, তাহলে সাধারণ মানুষের ওপর করের বোঝা চাপানো উচিত নয়। এর পরিবর্তে সরকারি বিভিন্ন খাতে ব্যয় কমানো যেতে পারে, যা দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করবে। সরকারি খাতে অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে কর আরোপের মাধ্যমে সরকার যে পরিমাণ রাজস্ব পেত, তার প্রায় অনেকটাই পূরণ হয়ে যাবে।
এছাড়া বাড়তি শুল্ক আরোপের ফলে ব্যবসায়ীদের জন্য খরচ বাড়বে, যা তাদের উৎপাদন খরচও বাড়িয়ে দেবে। এর প্রভাব পড়বে সাধারণ মানুষের ওপর। ফলে সরকারের এ সিদ্ধান্ত দেশের অর্থনৈতিক গতি ধীর করবে এবং জনগণের কষ্টের মাত্রা বাড়াবে। সুতরাং, সরকারের উচিত কর ও ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা এবং জনগণের কল্যাণের কথা চিন্তা করে খরচ কমিয়ে এ সংকটের মোকাবিলা করা।
শিক্ষার্থী, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ঢাকা কলেজ