
প্রিন্ট: ০২ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪৫ এএম

ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন
প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

আরও পড়ুন
যুক্তরাষ্ট্রকে নিরাপদ, শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ রাখতে অভিবাসন আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আপনি যদি অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করেন, মিথ্যা তথ্য দিয়ে ভিসা পান, বৈধ অনুমতি ছাড়া কাজ করেন অথবা ভিসা কিংবা ভিসা ওয়েভারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করেন, তাহলে আপনাকে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। এই শাস্তির মধ্যে রয়েছে কারাদণ্ড, নির্বাসন (ডিপোর্টেশন), এবং ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাওয়ার ওপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা।
আপনার পরিবার বা বন্ধুদের কেউ যদি যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে অবস্থান করে থাকেন, তাদের দেশে ফিরতে বলার এখনই উপযুক্ত সময়।
অবৈধভাবে প্রবেশ বা অবস্থান করলে ধরা পড়ার সম্ভাবনা নিশ্চিত
অনেকেই মনে করেন, তারা চুপিচুপি যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে বা সেখানে থেকে গিয়ে ধরা পড়া এড়াতে পারবেন। এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। ট্রাম্প প্রশাসন সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার এবং অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেফতার ও নির্বাসনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছে।
২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের হার ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারির তুলনায় ৯৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। একই সময়ে, যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেফতারের হার ৬২৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আপনি যদি যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত অবৈধভাবে অতিক্রম করতে চান বা অবৈধভাবে অবস্থান করেন, তাহলে আপনাকে আটক করে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এর পাশাপাশি, আপনি ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা, অর্থদণ্ড বা ফৌজদারি মামলারও মুখোমুখি হতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা জালিয়াতির ফলাফল হতে পারে গুরুতর
আমেরিকার ভিসা প্রক্রিয়া বিশ্বে সবচেয়ে নিরাপদ বলে স্বীকৃত। তবুও কেউ কেউ অবিবেচকের মতো ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করে, আবেদনপত্রে মিথ্যা তথ্য দিয়ে, অথবা ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্রে থেকে গিয়ে এই ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে চেষ্টা করে। এসব কর্মকাণ্ড ভিসা জালিয়াতির উদাহরণ এবং গুরুতর অপরাধ। কেউ এই আইন ভাঙলে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং ভবিষ্যতে আর কখনোই সে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি নাও পেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে পৌঁছানোর পথ বিপজ্জনক
যারা অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের উদ্দেশ্যে বিপজ্জনক যাত্রা করার কথা ভাবছেন, তাদের মনে রাখা জরুরি-এই যাত্রা আপনার নিরাপত্তা, এমনকি জীবনের জন্যও হুমকিস্বরূপ। অপরাধী চক্র, মাদক ও মানব পাচারকারীরা অবৈধ অভিবাসীদের নিজেদের নিশানা বানিয়ে সহিংসতা, চাঁদাবাজি ও নিপীড়নের শিকার করে। অনেকেই এই যাত্রা শুরু করেও গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন না।
যুক্তরাষ্ট্র এখন পশ্চিমা বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে মিলে কাজ করছে, যাতে যারা অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করছে, তাদের সীমান্তে পৌঁছানোর আগেই আটকানো ও ফেরত পাঠানো যায়। আমরা সীমান্ত সুরক্ষা জোরদার করার মাধ্যমে শুধু আমেরিকান নাগরিকদেরই সুরক্ষা দিচ্ছি না, বরং অবৈধ অভিবাসনের কারণে যে মানবিক দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়, সেটিও প্রতিরোধ করছি।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সবাইকে জবাবদিহির আওতায় আনছেন
যুক্তরাষ্ট্র সরকার যারা অবৈধভাবে প্রবেশে সহায়তা করে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে পাচারকারী চক্র, মানব পাচারকারীরা, এমনকি কিছু বিদেশি সরকারি কর্মকর্তাও, যারা অবৈধ অভিবাসন অব্যাহত রাখতে ভূমিকা রাখছেন।
সম্প্রতি সেক্রেটারি অফ স্টেট মার্কো রুবিও ঘোষণা করেছেন, ইমিগ্রেশন, কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাসহ যারা অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধে সহযোগিতা করতে ব্যর্থ, তাদের বিরুদ্ধে নতুন ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। এটি পরিবহণ ও পর্যটন খাতে আগেই চালু হওয়া একই ধরনের নিষেধাজ্ঞার ভিত্তিতে তৈরি। যারা অবৈধ অভিবাসনকে উৎসাহ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করে, তাদের জন্য আমেরিকার দরজা বন্ধ।
সাফ কথা, আইন মেনে চলুন
যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে অভিবাসনের চেষ্টায় লাভের চেয়ে ক্ষতির আশঙ্কাই বেশি। আপনি প্রাণ হারাতে পারেন, অপরাধীদের হাতে নিপীড়নের শিকার হতে পারেন, কিংবা এমন একটি রেকর্ড তৈরি হতে পারে, যা আপনার এবং আপনার পরিবারের ভবিষ্যৎকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
অবৈধভাবে প্রবেশ শুধু আমেরিকার আইনের লঙ্ঘনই নয়, এটি আপনার নিরাপত্তা ও সুস্থতার জন্যও হুমকিস্বরূপ। এর শাস্তি অত্যন্ত কঠোর : কারাদণ্ড, পরিবারের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া এবং ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ওপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা। যদি আপনার চেনা কেউ যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে অবস্থান করেন, তাহলে তাদের ভালোর জন্য কাজটা করতে পারেন, তা হলো ধরা পড়ার আগে এখনই স্বেচ্ছায় ফিরে আসতে উৎসাহ দেওয়া।
সবার জন্য স্পষ্ট বার্তা : সঠিক সিদ্ধান্ত নিন, আইনের পথ অনুসরণ করুন এবং নিজের, পরিবারের ও ভবিষ্যতের ঝুঁকি নেবেন না।
অ্যাম্বাসেডর ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন : চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস, ঢাকা