Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

ট্রাম্পের আগমনে আমেরিকানরাই বিপদে

Icon

আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ট্রাম্পের আগমনে আমেরিকানরাই বিপদে

নিউইয়র্ক থেকে

যদি সম্ভব হতো, তাহলে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একদিনেই আমেরিকা থেকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করতেন নাগরিক-অনাগরিক নির্বিশেষে সব অশ্বেতাঙ্গকে। কিন্তু আদালত তার লম্বা হাতে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্রের অতি ক্ষমতাধর প্রেসিডেন্টকেও আটকে ফেলেন। প্রেসিডেন্ট হিসাবে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদেও আদালত তার অনেক নির্বাহী আদেশ বাস্তবায়ন আটকে দিয়েছিলেন। এবারও শপথ গ্রহণের পরই তার জারি করা অনেক আদেশের মধ্যে ‘জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার’ খর্ব করার আদেশ বাস্তবায়নের ওপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আদালত প্রেসিডেন্টের এখতিয়ারের দম্ভের জবাব দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতার ভারসাম্যের এটাই সৌন্দর্য, যে কারণে দেশটি অনেক বড় সমস্যা নিয়ে এবং বলতে গেলে সমগ্র বিশ্বকে খেপিয়েও ভালোভাবে টিকে থাকে।

মাত্র উনিশ দিন হলো (৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। উনিশ দিনেই আমেরিকানরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে এবং সামনের দিনগুলোতে কী ঘটবে, তা ধারণা করে ভীতির রাজ্যে বাস করছে। নির্বাচনি প্রচারাভিযানে ট্রাম্পের অন্যতম প্রতিশ্রুতি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার মেক্সিকো ও কানাডা থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ এবং চীন থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর বিদ্যমান শুল্কের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্কারোপ করার। এ শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত শুধু বাণিজ্যিক কারণে নয়, দেশ তিনটি থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ নিয়ন্ত্রণও ট্রাম্পের একটি লক্ষ্য। তিন দেশের মধ্যে মেক্সিকো ও কানাডার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘ স্থলসীমান্ত রয়েছে এবং সীমান্ত অতিক্রম করে প্রতিবছর অসংখ্য বিদেশি যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে। চীনের ক্ষেত্রে অনুপ্রবেশের চিত্র একটু ভিন্নতর। ২০২৩ সালের পরিসংখ্যান অনুসারে যুক্তরাষ্ট্রে চীনা ইমিগ্রান্ট সংখ্যা বিপুল। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী মোট ৪ কোটি ৭৮ লাখ ইমিগ্রান্ট জনসংখ্যার মধ্যে ২৪ লাখ, অর্থাৎ মোট ইমিগ্রান্ট সংখ্যার ৫ শতাংশ চীনা বংশোদ্ভূত। তারা যে শুধু অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে, তা নয়। ভ্রমণভিসা অথবা অন্যান্য ভিসায় অসংখ্য গর্ভবতী চীনা নারী যুক্তরাষ্ট্রে এসে তাদের সন্তান প্রসবের পর চীনে ফিরে যায়। অন্য যে কোনো দেশের চেয়ে চীনাদের মধ্যে এ প্রবণতা সর্বাধিক। যুক্তরাষ্ট্রে ‘জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার’ নিয়ে চীনে ফিরে যাওয়া সেই সন্তানগুলো ১৮ বছর বয়সে উন্নীত হলেই তাদের বাবা-মাসহ অনায়াসে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার সুযোগ লাভ করে। ট্রাম্প তথা তার দল রিপাবলিকান পার্টির এতে প্রচণ্ড আপত্তি; যা তারা নিয়ন্ত্রণ করতে চায় ‘জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার’ বাতিল করার মধ্য দিয়ে।

কিন্তু এ অধিকার বাতিল করা যে সহজ নয়, তা ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রিপাবলিকান নীতিনির্ধারকরা জানেন। বাস্তবে ‘জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার’ বাতিল করা কঠিন এবং এ আদেশ যে সন্দেহাতীতভাবে আইনি জটিলতার মুখে পড়বে, তা মাথায় রেখে শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্বের আধুনিক প্রবক্তা ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবিধানিক আইন নিয়ে লড়াইয়ের প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাংবিধানিক আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশে সংবিধানে স্বীকৃত ‘জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার’ বাতিল করার পরিকল্পনা অবাস্তব এবং তা রাজনৈতিক বাগাড়ম্বর ছাড়া কিছু নয়। সংবিধান সংশোধন করা ছাড়া এ অধিকার বাতিল করা অসম্ভব ব্যাপার এবং আমেরিকান সংবিধান সংশোধন এক জটিল প্রক্রিয়া। ১৮৬৮ সালে গৃহীত আমেরিকান সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীতে এ অধিকার স্বীকৃত, যার ভিত্তিতে কোনো অবৈধ ইমিগ্রান্টের সন্তানও যদি যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করে, তাহলে সেই সন্তান জন্মসূত্রে আমেরিকান নাগরিক। এর ব্যত্যয় ঘটার কোনো সুযোগ নেই। একটি ফেডারেল আদালত ইতোমধ্যে ট্রাম্প ‘জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকারের’ অবসান ঘটাতে যে আদেশ জারি করেছেন, তা আটকে দিয়েছেন। সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতার কারণেই ডোনাল্ড ট্রাম্প তার এ সংক্রান্ত ইচ্ছা, প্রতিশ্রুতি বা আদেশ বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবেন না। কেবল ট্রাম্পই নন, ভবিষ্যতেও যদি ইমিগ্রেশনবিরোধী কট্টর বর্ণবাদী প্রেসিডেন্ট এ ধরনের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেন, তার পক্ষেও কেবল সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে, নির্বাহী আদেশ দিয়ে ‘জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার’ খর্ব করা সম্ভব নয়। কারণ এজন্য সংবিধানের সংশোধনী প্রস্তাব আনতে হবে এবং প্রস্তাবটি কংগ্রেসের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পাশ করতে হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি স্টেটের আইনসভাগুলোর দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থনের প্রয়োজন হবে, যা করা প্রায় অসম্ভব ব্যাপার।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট তার নিজস্ব ক্ষমতাবলে একতরফাভাবে নির্বাহী আদেশ জারি করেন, যার মধ্য দিয়ে তার প্রশাসনের নীতির প্রতিফলন ঘটে এবং সেই নীতি কার্যকর করা ফেডারেল সরকারের জন্য বাধ্যবাধকতায় পরিণত হয়। কংগ্রেসনাল রিসার্চ সার্ভিসের এক রিপোর্ট অনুসারে প্রেসিডেন্টের নির্বাহী এখতিয়ারের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে উল্লেখ করা নেই এবং কোনো আইন বা বিধিতেও তাকে নির্বাহী আদেশ জারি করার ক্ষমতা প্রদান করা হয়নি। তা সত্ত্বেও এটি ব্যাপকভাবে স্বীকৃত যে, নির্বাহী আদেশ জারি করা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের অন্তর্নিহিত ক্ষমতা। নির্বাহী আদেশে আইনের ক্ষমতা ও প্রভাব বলবৎ ততক্ষণ পর্যন্ত থাকে, যতক্ষণ তার গৃহীত পদক্ষেপগুলো সংবিধানের দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ অথবা কংগ্রেস কর্তৃক প্রেসিডেন্টকে প্রদত্ত এখতিয়ারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে। নির্বাহী আদেশ জারি করতে প্রেসিডেন্টকে কংগ্রেসের দ্বারস্থ হতে হয় না এবং তার জারি করা নির্বাহী আদেশ কংগ্রেস সহজে বাতিল করতে পারে না। তা সত্ত্বেও কংগ্রেস যদি প্রেসিডেন্টের কোনো নির্বাহী আদেশ বাতিল করতে চায়, তাহলে দুটি উপায়ে তা করতে পারে। একটি হলো, কংগ্রেস কর্তৃক প্রেসিডেন্টের আদেশ বাতিলের বিল পাশ করা। কিন্তু সেক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট তার ভেটো প্রয়োগ করে বিলটি আটকে দিতে পারেন। প্রেসিডেন্টের ভেটো রহিত করতে কংগ্রেসের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজন। দ্বিতীয় উপায় হলো, প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশের বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করতে কংগ্রেস কর্তৃক প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ না করা। আমেরিকান সুপ্রিমকোর্ট এবং ফেডারেল আদালতগুলোও প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশের ওপর রুল জারি এবং বাস্তবায়ন আটকে দিতে পারেন, যদি দেখা যায়, কোনো কোনো আদেশ জারি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট তার কর্তৃত্ব লঙ্ঘন করেছেন। আদালত ইতোমধ্যে সেই দায়িত্ব পালন করেছেন ‘জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার’ সংক্রান্ত আদেশের ওপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

অবৈধ অভিবাসীদের গণবহিষ্কার শুরু

অভিবাসীবিরোধী প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশের বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে গত ২০ জানুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের পরদিন থেকেই। ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটির ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) তালিকা ধরে অবৈধ অভিবাসীদের আটক করতে শুরু করেছে ২১ জানুয়ারি থেকেই এবং আটককৃতদের ইতোমধ্যে নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে সামরিক পরিবহণ বিমানযোগে। আইসিই’র তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রে আনুমানিক দেড় কোটি অবৈধ অভিবাসীর মধ্যে সাড়ে ১৪ লাখ অবৈধ অভিবাসীর বিরুদ্ধে ইমিগ্রেশন কোর্টের ডিপোর্টেশন অর্ডার বা বহিষ্কারাদেশ রয়েছে। প্রথম ধাপে বহিষ্কারাদেশপ্রাপ্ত অভিবাসীদের বহিষ্কার করা হবে। পরবর্তী ধাপে অন্যান্য অবৈধ অভিবাসীকে পর্যায়ক্রমে ডিপোর্ট করার উদ্যোগ নেবে ইমিগ্রেশন বিভাগ।

ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত আইসিই’র ডিপোর্টেশন অর্ডারের তালিকায় মোট ১৪ লাখ ৪৫ হাজার ৫৪৯ জন অবৈধ অভিবাসী রয়েছেন, যার মধ্যে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ৪,৮৩৭ জন। ডিপোর্টেশন অর্ডারের আওতায় থাকা বাংলাদেশিদের অধিকাংশই নিউইয়র্কে বসবাস করেন। তাদের আটক করার জন্য আইসিই এজেন্টরা সম্ভাব্য স্থানগুলোতে হানা দিয়ে বেশ কিছুসংখ্যক বাংলাদেশিকে আটক করার পর নিউইয়র্কে বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এর ফলে যেসব স্থানে কাগজপত্রবিহীন বাংলাদেশিরা কাজ করেন, যেমন-গ্রোসারি, রেস্টুরেন্ট, কসাইখানা ও কন্সট্রাকশন সাইটগুলোতে কর্মী সংকট দেখা দিয়েছে। নগরীর সাধারণ সমাবেশস্থলগুলোতেও বাংলাদেশিদের সভা-সমাবেশ অনুষ্ঠান এখন প্রায় বন্ধ। বিভিন্ন বাংলাদেশি অধিকার সংগঠন এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইমিগ্রেশন আইনজীবীরা ডিপোর্টেশন অর্ডারের আওতায় থাকা বাংলাদেশি অভিবাসীসহ কাগজপত্রবিহীন সব বাংলাদেশি অভিবাসীকে পরামর্শ দিচ্ছেন কীভাবে তাদের ডিপোর্টেশন এড়াতে হবে।

শুল্কারোপ আদেশের প্রতিক্রিয়া

মেক্সিকো, কানাডা ও চীন থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উচ্চহারে শুল্কারোপের আদেশের ফলে সংশ্লিষ্ট তিনটি দেশসহ বিশ্বব্যাপী বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ায় এর কার্যকারিতা ৩০ দিনের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কবিষয়ক সিদ্ধান্ত যখনই এবং যে হারে আরোপ করা হোক না কেন, এর অনিবার্য পরিণতি যে একটি সর্বগ্রাসী বিশ্ব বাণিজ্য যুদ্ধ, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। বহির্বিশ্বে ট্রাম্পের শুল্কারোপ আদেশের প্রতিক্রিয়া হয়তো বিলম্বে পড়বে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বাজারে এ আদেশের মারাত্মক প্রতিক্রিয়া এখনই অনুভূত হচ্ছে। শুল্কারোপের ঘোষণাই খুচরা বাজারে পণ্যমূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধির কারণে পরিণত হয়েছে। এর মুখ্য কারণ, যুক্তরাষ্ট্রে ভোগ্যপণ্যের অধিকাংশই আমদানি করা হয় মেক্সিকো ও কানাডা থেকে। কোনো কোনো ভোগ্যপণ্যের মূল্য এত বৃদ্ধি পেয়েছে যে, বিদ্যমান মূল্যস্ফীতির ওপর পণ্যমূল্যের লাগামহীন বৃদ্ধি সাধারণ কর্মজীবী মানুষের ওপর প্রচণ্ড আঘাত হানছে। তাদের ক্রয়ক্ষমতা এতটাই হ্রাস পেয়েছে যে, প্রতিটি সবজি, মাছ, মাংস ও ডিমের বর্ধিত মূল্যের কারণে তাদের ক্রয়তালিকা ব্যাপক কাটছাঁট করতে হচ্ছে। মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ আমেরিকানদের খাদ্যাভ্যাস পর্যন্ত বদলে দিতে পারে বলে আলোচনা চলছে।

যুক্তরাষ্ট্রে ভোগ্যপণ্যের অভ্যন্তরীণ বাজার পরিস্থিতি কেমন দাঁড়িয়েছে, তা আমেরিকানদের প্রাত্যহিক খাদ্য তালিকার একটি আইটেম ডিমের দাম বৃদ্ধি থেকে ধারণা করা যেতে পারে। বলা যায়, ডিমের বাজারে রীতিমতো আগুন লেগেছে। অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে ডিমের দাম বৃদ্ধি নজিরবিহীন। অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই ডিম আমেরিকানদের অন্যতম ব্যয়বহুল খাদ্যে পরিণত হয়েছে। ডিম সরবরাহ ঘাটতির কারণে নিউইয়র্ক সিটির অনেক গ্রোসারিতে গ্রাহকপিছু সর্বোচ্চ দুই ডজন ডিম বিক্রি করা হচ্ছে। এক বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে ডিমের গড় বাজারদর যেখানে প্রতি ডজনে ছিল ২.৫১ ডলার, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১০ ডলারে। ডিমের বাজার পরিস্থিতি এতই সঙ্গিন হয়ে উঠেছে যে, গত ১ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কের পার্শ্ববর্তী পেনসিলভেনিয়া স্টেটের গ্রিনক্যাসেল নামে এক জায়গায় চোরেরা এক গ্রোসারি থেকে ৪০ হাজার ডলার মূল্যের ১ লাখের বেশি ডিম চুরি করেছে। বার্ড ফ্লু মহামারির কারণে ডিম উৎপাদনে ঘাটতির পাশাপাশি শুল্কারোপের হুমকিও ডিমের মূল্যবৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে। যুক্তরাষ্ট্র চাহিদা পূরণের প্রয়োজনীয় ডিম উৎপাদন করলেও কানাডা ও নেদারল্যান্ডস থেকে ডিম আমদানি করে।

আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু : সিনিয়র সাংবাদিক ও অনুবাদক

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম