ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থান ও অন্তর্বর্তী সরকারের ৬ মাস পার হতে চলল। এখনো পরিস্থিতি থিতু হয়েছে জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে, বিব্রতকর বহুমুখী তৎপরতা, নানা ধরনের উত্তেজনা। সরকারকে কেন্দ্র করে জনপরিসরে হতাশার সুর, স্বপ্নভঙ্গের আশঙ্কা। বাজারে স্বস্তি নেই, জানমালের নিরাপত্তাও নিশ্চিত হয়নি। এক ধরনের সামাজিক নৈরাজ্যের বিস্তার ঘটছে। গণ-অভ্যুত্থানের অপার সম্ভাবনা কি এরই মধ্যে ফিকে হতে শুরু করেছে-এ প্রশ্নও ক্রমে বড় হয়ে উঠছে।
অথচ এক অভূতপূর্ব গণপ্রতিরোধ-গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ৫ আগস্ট-২০২৪ আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের পতন ঘটেছে। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় রক্তাক্ত আন্দোলনের মধ্য দিয়ে প্রায় দুই হাজার ছাত্র-শ্রমিক-সাধারণ মানুষের আত্মদানে শেখ হাসিনা ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের পালিয়ে যেতে হয়েছে। এদের পালিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে আওয়ামী দুঃশাসনের পরাজয় ঘটেছে; গণ-অভ্যুত্থান দৃশ্যত বিজয়ী হয়েছে; গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ইতোমধ্যে জনগণের বিপুল প্রত্যাশার চাপ নিয়ে এ অন্তর্বর্তী সরকারও তার ৬ মাস পার করছে।
এ মুহূর্তে বাংলাদেশ ও তার জনগণ এক অসাধারণ অনন্য সময় অতিক্রম করছে। পরিবর্তনের বিপুল কর্মযজ্ঞের নানা আয়োজন চারদিকে। এর অনেকটা স্বতঃস্ফূর্ততা ও এক পবিত্র আবেগে ঠাসা হলেও রূপান্তরের অনেক তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা ও প্রস্তাবনাও উঠে আসছে। চায়ের দোকানের আড্ডা থেকে সুসজ্জিত ড্রয়িংরুম, পত্রিকার পাতা থেকে টেলিভিশনের পর্দায় ফ্যাসিবাদ-উত্তর রাষ্ট্র-রাজনীতির সংস্কার নিয়ে নানা প্রস্তাব আর মতামত উঠে আসছে।
বস্তুত, ফ্যাসিবাদবিরোধী এ লড়াই ছিল ১৬ বছর ও ৩৬ দিনের। এ লড়াইয়ের একেবারে শেষ দিকের পুরোধা সৈনিক ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ বৈষম্যের ইস্যুকে বড় আকারে সামনে নিয়ে এসেছে। কিন্তু গত ১৮০ দিনে অনেক বিষয় জাতীয় মনোযোগ পেলেও রাষ্ট্র ও সমাজে বৈষম্য নির্মূলের ইস্যুটি সাইড লাইনেই ঝুলে আছে। জাতীয় পরিসরে অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা নেই। বিদ্যমান প্রকট রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য রেখে কী ধরনের সংস্কার করা যাবে বা এ ধরনের উৎকট বৈষম্য রেখে আদৌ টেকসই কোনো সংস্কার করা যাবে কিনা, তা নিয়েও গুরুতর প্রশ্ন রয়েছে।
অর্থনীতির ঘনীভূত প্রকাশ যদি রাজনীতি হয়, তাহলে তো সেই দুর্বৃত্তায়িত অর্থনীতির পরিবর্তন বা সংস্কার ব্যতিরেকে কীভাবে রাষ্ট্র-রাজনীতির সংস্কার করা যাবে, তা বোধগম্য নয়। যে দুর্বৃত্ত অর্থনীতির রাজনীতিকরণ ঘটেছে এবং রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের সঙ্গে যার অশুভ আঁতাত গড়ে উঠেছে, তার বদল ছাড়া সংস্কারের হাঁকডাক যে অনেকখানি উপরভাসা তা স্পষ্ট। অর্থনীতি আর রাজনীতির এ অশুভ নেক্সাস ভেঙে দিতে না পারলে আখেরে সংস্কারের কোনো তৎপরতা যে টেকসই হবে না, তা নিয়েও সন্দেহের অবকাশ নেই।
কিন্তু সংস্কারের রাজনৈতিক উত্তেজনা এখনো প্রবল। সবাই সংস্কার নিয়ে কথা বলছেন। কেউই পিছিয়ে থাকছেন না। বিপ্লবী, অবিপ্লবী, প্রতিবিপ্লবী, প্রতিক্রিয়াশীল, কূপমণ্ডূক সবাই সংস্কারের বাজারে পসরা সাজিয়ে বসেছেন। তাদের হাজার হাজার প্রস্তাবনা। মনে করছেন, ভালো একটা সংবিধান লিখলে, রাষ্ট্র প্রশাসন, সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গণতান্ত্রিক সংস্কার করলে বা নতুন নতুন বিধি ও আইন প্রণয়ন করলেই দেশ ও জনগণের কাঙ্ক্ষিত মুক্তি ঘটবে। কিন্তু এ তো সোনার পাথর বাটির মতো অবস্থা। এসব নিয়ে গভীর কোনো উপলব্ধি দেখা যাচ্ছে না।
গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের এ ৬ মাসে বস্তুত, রাষ্ট্রের স্বৈরতান্ত্রিক কাঠামোর পাশাপাশি গোটা দুর্বৃত্ত-মাফিয়া নিয়ন্ত্রিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থাই অক্ষুণ্ন রয়েছে। বলা চলে, এদের রামরাজত্ব বহাল তবিয়তে আছে। কেউই এদের স্পর্শ করতে পারেনি। লুটেরা-দুর্বৃত্ত গোষ্ঠী গত ৬ মাসে প্রায় সবকিছু ‘ম্যানেজ’ করে ফেলেছে। কারা কারা কীভাবে ‘ম্যানেজন্ড’ হয়েছেন, তা হয়তো একদিন বেরিয়ে আসবে। লুণ্ঠননির্ভর এ অলিগার্ক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কমপক্ষে একটা উদারনৈতিক সংস্কার ব্যতিরেকে উপরতলার ন্যূনতম রাজনৈতিক সংস্কারের ভিত্তিও পাকাপোক্ত হবে না।
বিষয়টি উলটো দিক থেকেও কিছুটা সত্য, রাষ্ট্র-রাজনীতির, বিশেষ করে সরকার, রাষ্ট্র প্রশাসন, সংবিধান, সংসদ, সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর একটা স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ও দায়বদ্ধ গণতান্ত্রিক রূপান্তর বা সংস্কার ছাড়া বিদ্যমান লুটেরা-দুর্বৃত্ত অর্থনীতির সংস্কার করাও সম্ভব নয়। প্রকৃত প্রস্তাবে অর্থনীতি ও রাজনীতির এ আন্তঃসম্পর্ক বোঝা না গেলে অর্থাৎ রাজনৈতিক অর্থনীতির মেলবন্ধনের সুতাটা শনাক্ত করা না গেলে, কোনো সংস্কারই আখেরে জায়গা করে নিতে পারবে না।
একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লক্ষণীয়। ব্যতিক্রম ছাড়া রাজনৈতিক দল, ছাত্র-তরুণ, সুশীলসমাজ, বুদ্ধিজীবীরা রাজনৈতিক সংস্কারে যত আগ্রহী ও স্বতঃস্ফূর্ত, অর্থনৈতিক সংস্কারে তাদের সেই আগ্রহের ছিটেফোঁটাও দেখা যায় না। এখানে শ্রেণি ও শ্রেণিস্বার্থের প্রশ্নটি বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে। গণঅভ্যুত্থানকে যারা বিপ্লব হিসাবে দেখছেন, তাদেরও দুর্বৃত্তায়নের অর্থনীতি পরিবর্তনে কোনো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। এর একটা অন্যতম কারণ হচ্ছে, জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নতুন কোনো বিপ্লবী শ্রেণি বা তাদের রাজনৈতিক প্রতিনিধিরা ক্ষমতায় আসেনি। বিদ্যমান ব্যবস্থার গণতান্ত্রিক রূপান্তরকামী র্যাডিকাল কোনো গ্রুপও ক্ষমতায় আসেনি। ক্ষমতাসীনদের এক ধরনের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা রয়েছে সত্য, কিন্তু নানা কারণে তার উপযুক্ত বাস্তবায়নের প্রজ্ঞা ও সক্ষমতা তাদের সেভাবে দেখা যাচ্ছে না। এটি নিয়ে হা-হুতাশ করার কিছু নেই। এটি তাদের শ্রেণি আর রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতা। আর গণ-অভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে রাজনৈতিক ইসলামের যেটুকু উত্থান ঘটেছে, তাদের পক্ষ থেকেও পরিবর্তনের কোনো এজেন্ডা দেখা যায় না। তারাও শ্রেণিগতভাবে ও মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকে এ একই অংশে অঙ্গীভূত।
এটা স্পষ্ট, পুরোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থাটা ভেঙে পড়েছে। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ভিত্তি পাওয়া ৭২-এর গোটা রাজনৈতিক বোঝাপড়া, সমগ্র সমঝোতা, রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক চুক্তিগুলোও কার্যকর হয়নি, বরং তা অনেকটা ভেঙে পড়েছে। গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশকে এখন সামনে এগোতে গেলে নতুন বোঝাপড়া, নতুন রাজনৈতিক-সামাজিক চুক্তি বা মতৈক্য জরুরি। এ লক্ষ্যে যতখানি সমঝোতা প্রতিষ্ঠা করা যায়, সেটুকুই লাভ।
কতখানি সংস্কার? রাজনৈতিক দলগুলো ও গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনরা যতটা মতৈক্যে আসতে পারবেন, সংস্কারও হবে ততখানি। সাংবিধানিক সংস্কারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনেক সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এক ধরনের ঐকমত্য রয়েছে। সাংবিধানিক সংস্কার ব্যতিরেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের বিষয়ে মতৈক্যের বিষয়গুলোতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ব্যাপারেও অবিলম্বে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
এর মধ্যে আবার জরুরি হচ্ছে নির্বাচনিব্যবস্থার গণতান্ত্রিক সংস্কার। দেশের প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সমগ্র নির্বাচনব্যবস্থা যেখানে ভেঙে পড়েছে, সেখানে এর গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার ব্যতিরেকে আগামীতে অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কোনো অবকাশ নেই। আগামী দু-তিন মাসের মধ্যে এসব সংস্কারও নিষ্পন্ন করা দরকার।
সাংবিধানিক সংস্কারের কী হবে-এটি এখন রাজনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল প্রশ্ন। সাংবিধানিক সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর বেশকিছু অঙ্গীকার রয়েছে। এসব অঙ্গীকারের বাইরেও সংবিধান সংস্কার কমিশন অনেক প্রস্তাবনা পেশ করেছে। এর মধ্যে অনেক বিতর্কিত প্রস্তাব যেমন রয়েছে, তেমনি গ্রহণযোগ্য হতে পারে এরকম যুক্তিযুক্ত কিছু প্রস্তাবনাও রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার কোথায় দাঁড়াবে?
অন্তর্বর্তী সরকার ঐকমত্যের ওপরেই দাঁড়াবে। সাংবিধানিক সংস্কারে ঐকমত্যের বিষয়গুলো পরবর্তী জাতীয় সংসদ কীভাবে গ্রহণ করবে ও তা আইনি রূপ দেবে, সে ব্যাপারেও সম্মিলিত সমঝোতা প্রয়োজন।
৭২-এর সংবিধান কি কবরেই যাবে? গেল জুলাই-আগস্টে বিপ্লব হলে বিপ্লবের প্রথম প্রহরেই শুধু বিদ্যমান সংবিধান কেন, অনেক কিছুকেই কবরে পাঠানো যেত, শুধু ডিক্রির পর ডিক্রি জারি করে। বাস্তবে তা হয়নি, সেজন্য এ সংবিধানকেও আপাতত কবরে পাঠানো যাচ্ছে না। আমি ইতোমধ্যে লিখেছি, বহুবার বলেছি, নানা স্ববিরোধিতা ও বৈপরীত্য নিয়ে বিদ্যমান সংবিধানেই অন্তর্বর্তী সরকার চলছে, দেশ পরিচালিত হচ্ছে। যারা এখন ক্ষমতায় আছেন, তাদের রাজনৈতিক ও শ্রেণিগত ক্ষমতা নেই ৭২-এর সংবিধানকে বাতিল করার। এমনকি নৈতিক দিক থেকেও তারা এ সংবিধান বাতিল করতে পারেন না। তাহলে তারাও আর থাকেন না। এ ধরনের উদ্যোগ নিলে শুধু অনাকাঙ্ক্ষিত ও অভূতপূর্ব নৈরাজ্যকেই শুধু ডেকে আনা হবে; যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।
বিদ্যমান রাজনৈতিক-সামাজিক বাস্তবতা, সামাজিক শ্রেণিগুলোর অবস্থান, রাজনৈতিক দল ও নানা অংশীজনদের যে রাজনৈতিক অবস্থান, তাতে রাজনৈতিক-সাংবিধানিক সংস্কারের জন্য সংবিধান সভা বা সংবিধান সংস্কার সভার নির্বাচনেরও সুযোগ নেই। সংবিধানকে কেন্দ্র করে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ আদর্শিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক প্রশ্ন রয়েছে, যার মীমাংসা করার এখন কোনো সম্ভাবনা নেই। এ ধরনের মীমাংসার জন্য বাংলাদেশের মতো একটি সমাজের যে ন্যূনতম আদর্শিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিপক্বতা থাকা দরকার, তা থেকে আমরা এখনো বহু দূরে। এটি নিয়ে টানাটানি করতে গেলে তা হিতে বিপরীত হয়ে উঠতে পারে; নানা দিক থেকে দেশ আরও প্রতিক্রিয়াশীলতার পক্ষে নিপতিত হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে। এটি বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন, ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান আমাদের মধ্যে একদিকে যেমন জাতীয় ঐক্যের এক অসাধারণ সেতুবন্ধন সৃষ্টি করেছিল, আবার অন্যদিকে আদর্শিক-রাজনৈতিক অনেক প্রশ্নে নিজেদের মধ্যে মতভিন্নতা আরও পরিষ্কার করে তুলেছে। গত ৬ মাসে এসব মতপার্থক্য শুধু বেড়েই চলেছে।
গন্তব্য আর কর্তব্য কী : গণতান্ত্রিক রূপান্তরের প্রশ্নে রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সর্বোচ্চ বোঝাপড়া তৈরি করাই এখন প্রধান কর্তব্য; বিশেষ করে সংস্কার ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যাপারে মতৈক্য প্রতিষ্ঠা করাই এখন সরকারের প্রধান কাজ। সংবিধান সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে মতৈক্য প্রতিষ্ঠা করে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি রাজনৈতিক সনদ বা অঙ্গীকারনামা তৈরি করা যেতে পারে, যাতে পরবর্তী নির্বাচিত জাতীয় সংসদ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সংবিধানে প্রয়োজনীয় সংশোধনী বা সংযোজনী এনে সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন করতে পারে।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ন্যূনতম ঐকমত্য থাকলে, এ ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এসব সাংবিধানিক সংস্কারের আপাত অর্জন হবে সংবিধানের অগণতান্ত্রিক চরিত্র ও ক্ষমতা কাঠামো পরিবর্তন করে একটি উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক চরিত্র-বৈশিষ্ট্যের দায়বদ্ধ ও জবাবদিহিমূলক শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করা। এটুকু করতে পারলে তা হবে রাজনৈতিক দল, সরকার ও জনগণের জন্য এক বড় মাইলফলক; ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের এক ঐতিহাসিক অর্জন। কারও হঠকারিতা, বাড়াবাড়ি বা অতি আবেগ-উচ্ছ্বাসে সম্ভাব্য এ অর্জনটুকু যাতে বিসর্জনে না যায়, সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকা দরকার।
সাইফুল হক : সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি