জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের গন্তব্য কোথায়?
ড. মোসলেহ উদ্দিন আহমদ
প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পর জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন যাত্রা শুরু করে ৩ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে; যার উদ্দেশ্য হলো জুলাই গণ-অভ্যুত্থান থেকে উৎসারিত রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার আলোকে একটি জনমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার রূপরেখা প্রণয়ন। জনপ্রশাসন নিয়ে স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের যে অভিজ্ঞতা, তাতে এটি স্বভাবতই স্পষ্ট যে, দেশের জনপ্রশাসনে দক্ষতা, নিরপেক্ষতা, জবাবদিহিতা ও জনকল্যাণমনস্কতার কিছু ঘাটতি রয়েছে, যার সংস্কার এবং এ প্রশাসনিক সার্বিক উন্নতির ধারণা থেকেই যে সংস্কার কমিশনের অভিলক্ষ্যগুলো তৈরি করা হয়েছে, এটি নিশ্চিত করেই বলা যায়।
বিগত তিন দশকে বিশ্বব্যাপী নানা দেশের সরকার কর্তৃক গৃহীত জনপ্রশাসন সংস্কার বা প্রশাসনিক সংস্কারের প্রস্তাবগুলো বিশ্লেষণ করলে আমরা মূলত কয়েক ধরনের অভিলক্ষ্য দেখতে পাই-১. ‘মিনিমাম গভর্নমেন্ট, ম্যাক্সিমাম গভর্নেন্স’ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারের আকার ও পরিসর কমিয়ে বেসরকারিকরণ/আউটসোর্সিংয়ে গুরুত্ব প্রদান; ২. আর্থিক ক্ষমতা ও প্রশাসনিক কর্তৃত্বের বিকেন্দ্রীকরণ; ৩. সরকারি আমলাতন্ত্রের দক্ষতা বৃদ্ধি, সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং মনোজাগতিক পরিবর্তন ঘটিয়ে জনস্বার্থ সংরক্ষণকারীতে রূপান্তর; ৪. বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/অধিদপ্তরের পুনর্গঠন ও পুনর্বিন্যাসসহ কাঠামোগত পরিবর্তন এবং ৫. সরকারি কর্মে অধিকতর দক্ষ ব্যবস্থাপনা, জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা আনয়ন।
প্রশ্ন হলো, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের এ ‘স্কোপ’ বা পরিধি কি কমিশন গঠনের চূড়ান্ত উদ্দেশ্য-নতুন বাংলাদেশে রূপান্তরে সহায়ক হবে? দক্ষতা, নিরপেক্ষতা, জবাবদিহিতা ও জনকল্যাণমনস্কতার বাইরে কি আমলাতন্ত্রে আর কোনো সমস্যা আছে, যেটি কাঙ্ক্ষিত নতুন বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ? যেহেতু কমিশন এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের রিপোর্ট দাখিল করেনি, সেহেতু কমিশন গঠনের সময় প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত ‘স্কোপ’-এর বাইরে আর কী কী লক্ষ্যমাত্রা সামনে রেখে কমিশন কাজ করছে, সেটি বলা দুষ্কর। রিপোর্ট দাখিলের আগেই গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে আমরা কিছু সম্ভাব্য প্রস্তাবের কথা কমিশনপ্রধান ও সদস্য সচিবের মুখ থেকে জানতে পারি। এর মাঝে উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে ৫০ শতাংশ এবং অন্যান্য ২৫ ক্যাডার কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে ৫০ শতাংশ কর্মকর্তাকে উন্মুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ প্রদান নিয়ে ক্যাডার কর্মকর্তারা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা উপসচিব পদে শতভাগ পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়ার দাবি তোলেন এবং তাদের বক্তব্য অনুসারে কমিশনের এ প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে সরকারি কর্মে ক্যাডার বৈষম্য কমবে। অন্যদিকে প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের দাবি হলো, উপসচিব পদ শতভাগ প্রশাসন ক্যাডারের সহজাত পদ। ফলে তাদের মতে, অন্য ক্যাডার কর্মকর্তাদের এ পদে পদোন্নতি পাওয়া প্রশাসন ক্যাডারের জন্য বৈষম্যমূলক।
পালটাপালটি দাবির এ ডামাডোলে যে প্রশ্নটি হারিয়ে গেছে, তা হলো, ৫০-৫০-এ বণ্টন এই কমিশনের কোন অভিলক্ষ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত? এতে কি সরকারি কর্মচারীর জবাবদিহিতা, দক্ষতা বা নিরপেক্ষতা বৃদ্ধি পাবে? এতে কি প্রশাসন আরও জনমুখী হবে? দুঃখজনক হলো, এ বণ্টনের সুবিধা-অসুবিধার আলোচনায় আমরা কমিশনের মূল লক্ষ্য ‘নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে’র সংযোগ ঘটাতেই ব্যর্থ হয়েছি বলে মনে হচ্ছে। ফলে মুখ্য বিতর্কগুলো আন্তঃক্যাডার দ্বন্দ্বের গৌণ গল্পের আড়ালে চাপা পড়ে যাচ্ছে।
তারপরও ৫০-৫০ বণ্টনের প্রাসঙ্গিকতা এ মুহূর্তে দেশে প্রশ্নাতীত। সেই প্রাসঙ্গিকতা ধরে এ বিতর্কের একটু ভেতরে ঢোকা আবশ্যক। বাংলাদেশ সরকারের নীতি প্রণয়ন করে মূলত মন্ত্রণালয় বা বিভাগগুলো, যার মূল নেতৃত্ব থাকে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের হাতে আর সহকারী সচিব, সিনিয়র সহকারী সচিব, উপসচিব, যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে কর্মরত কর্মকর্তারা সরকারের পলিসি প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের সহায়তা করেন। যেহেতু দেশের উন্নয়ন, সরকারি সেবার মান, শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষা, সামাজিক বৈষম্য হ্রাস ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় লক্ষ্যমাত্রার বিষয়ে নীতি প্রণয়নের সঙ্গে উপসচিব পদে কর্মরত কর্মকর্তারা যুক্ত থাকেন, সেহেতু এ পদে কর্মরতরা কেমন হবেন, এ বিষয়ে আমাদের ভাবনার প্রয়োজন রয়েছে।
তাই ‘নতুন বাংলাদেশে’ নীতি প্রণয়নে সহায়তাকারী উপসচিব বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মেধা প্রাধান্য পাবে; প্রাসঙ্গিক অভিজ্ঞতা, যার সঙ্গে পলিসি মেকিংয়ের সংযোগ আছে, সেই অভিজ্ঞতা প্রাধান্য পাবে; প্রাধান্য পাবে দক্ষতা। এ প্রাধান্যগুলোর পাশাপাশি সব ক্যাডারের প্রতি সুবিচার নিশ্চিত করা গেলে তা হবে সোনায় সোহাগা।
বাংলাদেশের আমলা নিয়োগ পদ্ধতি মেধাভিত্তিক অর্থাৎ পরীক্ষার মাধ্যমে সিভিল সার্ভিসের সদস্যদের নিয়োগ করা হয়। দেশে সিভিল সার্ভিসে প্রবেশপথ পাবলিক সার্ভিস কমিশন কর্তৃক গৃহীত বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষা, যেখানে জেনারেল, টেকনিক্যাল ও উভয় ক্যাডারে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পায় সবাই। এ পর্যায়ে সংবিধানের ২৯(১) অনুচ্ছেদে উল্লিখিত প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ লাভের সব নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করা হয়। অতঃপর পরীক্ষার নম্বর ও পছন্দের ভিত্তিতে উত্তীর্ণরা নানা ক্যাডারে শ্রেণিবিভক্ত হয়ে যায়। বিসিএস পরীক্ষায় আবেদনকারীদের মধ্যে প্রথম পছন্দ দেওয়ার প্রবণতা বেশি তিনটি ক্যাডারে : পররাষ্ট্র, প্রশাসন ও পুলিশ। বেশি নম্বর ও প্রদত্ত পছন্দের সমন্বয়ে আবেদনকারীরা সাধারণত এসব ক্যাডার পেয়ে থাকেন, যদিও কোটাপ্রথা চালু থাকার কারণে এসব ক্যাডারেও অনেককে পাওয়া যাবে, যারা অন্যান্য ক্যাডার থেকে তুলনামূলকভাবে কম নম্বর পেয়েছেন। কিন্তু কোটাপ্রথা সব ক্যাডারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ফলে অন্যান্য ক্যাডারেও এমন কর্মকর্তা পাওয়া যাবে, যাদের নম্বর নন-ক্যাডার কর্মকর্তা থেকে কম অথচ তারা ক্যাডার কর্মকর্তা হিসাবে কাজ করছেন। সামগ্রিকভাবে বিসিএস পরীক্ষার নম্বরকে মেধার ভিত্তি ধরলে পররাষ্ট্র, প্রশাসন ও পুলিশ ক্যাডারে যারা এসেছেন, তারা অল্পকিছু ব্যতিক্রম বাদে তুলনামূলকভাবে বেশি মেধাবী। ফলে প্রশাসন ক্যাডার থেকে ৭৫ শতাংশ উপসচিব পদে নিয়োগের মাধ্যমে মেধাভিত্তিক নিয়োগ নিশ্চিত করা সম্ভব। তবে সেক্ষেত্রে পররাষ্ট্র, পুলিশসহ নম্বরে এগিয়ে থাকা কর্মকর্তাদেরও সুযোগ প্রদান মেধার প্রতি সাম্য প্রতিষ্ঠার শামিল হবে।
দ্বিতীয় বিষয়টি নতুন বাংলাদেশে যারা উপসচিব হবেন, তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তা হলো, কর্মকর্তার অভিজ্ঞতা, প্রশিক্ষণ ও অন্তর্দৃষ্টি পলিসি প্রণয়নে কতটা প্রাসঙ্গিক। এ বিষয়ে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা অন্যদের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে থাকেন; কারণ মাঠে পলিসি বাস্তবায়নে জেলা বা উপজেলা প্রশাসনে তারা কাজ করেন। এসব পদে কাজ করতে গিয়ে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা নানা পলিসি নিয়ে সামগ্রিক অভিজ্ঞতা অর্জন করার সুযোগ পান, যেখানে অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সুনির্দিষ্ট একটি পলিসি বাস্তবায়ন করার ফলে অভিজ্ঞতা সুনির্দিষ্ট হয়, সামগ্রিক হয় না। এ অভিজ্ঞতার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো, সমাজের রাজনৈতিক দিক নিয়ে বোঝাপড়া। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসক হিসাবে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্যদের সঙ্গে যে মিথস্ক্রিয়ার সুযোগ প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা পান, সেটি তাদের অন্যদের চেয়ে কিছুটা সুবিধা দেয় পলিসির রাজনৈতিক দিক বোঝার জন্য। তদুপরি, নানা পলিসির আন্তঃসম্পর্ক ও সমন্বয়ের অভিজ্ঞতায়ও প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা এগিয়ে থাকেন। এক্সিকিউটিভ ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে দায়িত্ব পালন করার কারণে পলিসির আইনি দিক নিয়েও তাদের অভিজ্ঞতা বেশি থাকে।
মূলত এসব দিক বিবেচনায় যেসব দেশে পলিসি বাস্তবায়নকারীদের মধ্য থেকেই পলিসি প্রণয়নে সহযোগীদের বাছাই করা হয়; যেমন-ভারত ও পাকিস্তান-সেসব দেশে উপসচিব বা সমতুল্য পদে স্ব স্ব দেশের প্রশাসন ক্যাডার/সার্ভিসের সদস্যদের প্রাধান্য দেওয়া হয়। ভারতে উপসচিব পদে ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসের, (যা বাংলাদেশের প্রশাসন ক্যাডারের সমতুল্য) সদস্যদের প্রাধান্য দেওয়া হয়। একইভাবে, পাকিস্তানে পাকিস্তান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসের কর্মকর্তাদের সচিবালয়ের উচ্চ পদে প্রাধান্য দেওয়া হয়। একই সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সিভিল সার্ভিসে স্পেশালিস্টদের জন্যও পলিসি প্রণয়নে উচ্চপদে যুক্ত হওয়ার সুযোগ ক্রমেই বাড়ছে। সেই হিসাবে অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে বিদ্যমান ২৫ শতাংশ নিয়োগের যৌক্তিকতাও বিদ্যমান।
তবে এ হার ৫০ শতাংশ হলে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য, বিশেষ করে নবীন কর্মকর্তাদের জন্য, একটা বৈষম্য সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হবে। ক্যাডার অফিসারদের মধ্যে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা ৫ম গ্রেডে উপসচিব পদে পদোন্নতি পান। তারা ৫ম গ্রেডে আর অন্য কোনো পদে পদোন্নতি পান না। ৫ম গ্রেড বা তদূর্ধ্ব পদে যেতে হলে তাদের জন্য উপসচিবের পদ সোপান অতিক্রম করা বাধ্যতামূলক। অপরদিকে অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য যেমন পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য ৫ম গ্রেডে পদোন্নতির দুটি সুযোগ থাকে, একটি পুলিশ সুপার পদে এবং অপরটি উপসচিব পদে। ফলে সুযোগের সংখ্যা বিবেচনা করলে এখানে একটি বৈষম্য স্পষ্ট। তদুপরি প্রশাসন ক্যাডারের বর্তমানে বিদ্যমান একমাত্র সুযোগ যদি ৭৫ থেকে ৫০ শতাংশ হ্রাস পায়, তাহলে প্রশাসন ক্যাডারের সুযোগ আরও সংকুচিত হবে। অপরদিকে দুটি সুযোগ পাওয়া অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সুযোগ বাড়বে। এটি প্রশাসন ক্যাডারের নবীন কর্মকর্তাদের জন্য বৈষম্যমূলক হবে।
সব দিক বিবেচনায়, ৫০-৫০ বণ্টন দেশের লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি করবে কিনা, এ অঙ্কটা ভালো করে কষতে হবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনকে। এ প্রস্তাবে সাম্যের চেয়ে বৈষম্য বাড়বে কিনা, এতে করে সংস্কার কমিশনের মূল অভিলক্ষ্য অর্জিত হবে কিনা এবং সবশেষে এ বণ্টন ‘নতুন বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে সহায়ক হবে কিনা, এ বিবেচনাও কমিশনকে করতে হবে। একই সঙ্গে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ‘স্কোপ’ কী হবে এবং সেই ‘স্কোপের’ সঙ্গে জনকল্যাণের সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়গুলোও কমিশনকে বিবেচনায় নিতে হবে।
ড. মোসলেহ উদ্দিন আহমদ : প্রফেসর, লোকপ্রশাসন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
muslehua@du.ac.bd