Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে

Icon

ড. মীর্জ্জা এবি মো. আজিজুল ইসলাম

প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে

গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর এক বিশেষ প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর অর্থনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক সংস্কারের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। আমি ঠিক সংস্কারের কথা বলব না। আমি অর্থনীতিতে বিদ্যমান বিভিন্ন কঠিন সমস্যা বা চ্যালেঞ্জ নিয়ে কিছু কথা বলতে চাই। অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে যেসব সমস্যা বর্তমানে প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে, সেগুলো তাৎক্ষণিকভাবে সৃষ্ট বা তৈরি কোনো সমস্যা নয়। এগুলো অনেক দিন ধরেই আমাদের অর্থনীতিতে বিদ্যমান রয়েছে। দ্রুত সমাধান করা না গেলে আগামীতে এসব সমস্যা আরও জটিল হয়ে ওঠার আশঙ্কা রয়েছে। তাই এ মুহূর্তে অর্থনীতিতে বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য কার্যকর ও উপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করা খুবই প্রয়োজন।

সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের রপ্তানি খাতে সংকোচন প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে। পণ্য রপ্তানি খাত সংকুচিত হলে তা বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের স্থিতির ওপর চাপ সৃষ্টি করে। রপ্তানি আয় কমে গেলে বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রা টাকার বিনিময় হার বা মান কমে যেতে পারে। স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন হলে সেটা আবার মূল্যস্ফীতিকে উসকে দিতে পারে। কাজেই রপ্তানি খাতকে চাঙা রাখা আমাদের অর্থনীতির জন্য এই মুহূর্তে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসাবে দেখা দিয়েছে।

আমাদের অর্থনীতিতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি একটি জটিল সমস্যায় পরিণত হয়েছে। গত প্রায় ২ থেকে আড়াই বছর ধরে দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। করোনা-উত্তর বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পর্যায়ে শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এই যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী সাপ্লাই চেইন ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছিল। সেই সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে বিগত ৪০ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ১ শতাংশে উন্নীত হয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব আমেরিকা (ফিড) পলিসি রেট বৃদ্ধি করাসহ নানা ধরনের প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। বিশ্বের অন্তত ৭৭টি দেশ ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অফ আমেরিকার অনুসরণে পলিসি রেট বৃদ্ধি করে। একইসঙ্গে আরও নানাবিধ ব্যবস্থা গ্রহণ করে উচ্চ মূল্যস্ফীতিকে সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়। কিছুদিন আগের তথ্য মোতাবেক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি ৩ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে এসেছে। এখন ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অফ আমেরিকা পলিসি রেট বাড়ানোর চিন্তা-ভাবনা করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকও বেশ কয়েকবার পলিসি রেট বৃদ্ধি করেছে। আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের পলিসি রেট ছিল ৫ শতাংশ। এখন তা ১০ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। কিন্তু এক বছর আগেও ব্যাংক ঋণের সুদের সর্বোচ্চ হার ৯ শতাংশে ফিক্সড করে রাখা হয়েছিল। বাজারে অর্থ প্রবাহ হ্রাস না পেয়ে বরং আরও বেড়েছে। ফলে পলিসি রেট বৃদ্ধির প্রভাব ঋণ প্রবাহের ওপর তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি। আগের এক মুদ্রানীতিতে ব্যক্তি খাতে ব্যাংক ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৪ দশমিক ১ শতাংশ। সেই সময় ব্যক্তি খাতে ব্যাংক ঋণের বাস্তব প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিল ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ। বাংলাদেশের মতো অর্থনীতিতে শুধু মুদ্রানীতি দিয়ে বা পলিসি রেট বাড়িয়ে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। এজন্য মুদ্রানীতির রাজস্ব নীতির সমন্বয় সাধন করতে হবে। মূল্য বৃদ্ধি করে পণ্যের চাহিদা হয়তো কমানো যাবে। কিন্তু পণ্যের জোগান যদি একই সঙ্গে বৃদ্ধি না পায়, তাহলে মূল্যস্ফীতি কমবে না। ব্যাংক ঋণের সুদের হার বৃদ্ধি পেলে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ কমে যায়। বিনিয়োগ কমে গেলে উৎপাদন কমে যাবে। আর উৎপাদন কমে গেলে কর্মসংস্থানের পর্যাপ্ত সুযোগ সৃষ্টি হবে না। আর সবার জন্য উপযুক্ততা অনুযায়ী কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা না গেলে দারিদ্র্য বিমোচন কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়তে বাধ্য।

গত ২ থেকে আড়াই বছর ধরে অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতির সার্বিক হার সাড়ে ৯ শতাংশের ওপরে রয়েছে। এর মধ্যে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি অধিকাংশ সময়ই ডাবল ডিজিটের ওপরে ছিল। খাদ্যপণ্যের উচ্চমূল্যের কারণে সাধারণ দরিদ্র ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষগুলো খুবই অসুবিধার মধ্যে রয়েছে। মূল্যস্ফীতির হার যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, মজুরি বৃদ্ধির হার তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কুলিয়ে উঠতে পারছে না। যেমন এপ্রিল, ২০২৪-এ সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এর মজুরি বৃদ্ধির হার ছিল ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি আর মজুরি বৃদ্ধির এই পার্থক্যের কারণে সাধারণ মানুষ সংসারের ব্যয় নির্বাহের ক্ষেত্রে হিমশিম খাচ্ছে। অনেক পরিবার তাদের খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। কেউ বা তুলনামূলক কম পুষ্টিসম্পন্ন কম দামি খাবার গ্রহণ করছে। অধিকাংশ দরিদ্র মানুষই এখন উচ্চ মূল্যস্ফীতির কশাঘাতে জর্জরিত হয়ে পড়েছে। আমদানিনীতি পরিবর্তন এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক কমানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে আমদানি হ্রাসের প্রবণতা প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে। প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে আমদানি ব্যয় হ্রাস পেয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সব পণ্যের আমদানি হ্রাস পাওয়াটা অর্থনীতির জন্য শুভ সংবাদ নয়। যদি অপ্রয়োজনীয় এবং বিলাসজাত পণ্যের আমদানি কমে, তাহলে সেটা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক হতে পারে। কিন্তু উৎপাদনে কার্যে ব্যবহৃত কাঁচামাল, ক্যাপিটাল মেশিনারিজ এবং মধ্যবর্তী পণ্য আমদানি কমে গেলে সেটা অর্থনীতির জন্য শুভ সংবাদ নাও হতে পারে। অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে বিভিন্ন পণ্যের আমদানি হ্রাস পেলেও সবচেয়ে বেশি কমেছে শিল্পে ব্যবহার্য ক্যাপিটাল মেশিনারিজের আমদানি। ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আমদানি কমেছে প্রায় ৪৪ শতাংশ। তার অর্থ হচ্ছে, আগামীতে দেশের শিল্প-কারখানায় উৎপাদন নিশ্চিতভাবেই কমে যাবে। চলতি অর্থবছরের জন্য বাস্তবায়নাধীন জাতীয় বাজেটে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগের হার জিডিপির ২৭ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত রয়েছে। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলেই মনে হচ্ছে।

সার্বিকভাবে দেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতি মোটেও সন্তোষজনক নয়। বিশ্বব্যাংক কয়েক বছর আগেও বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ পরিবেশের মূল্যায়ন করে ‘ইজ অফ ডুয়িং বিজনেস’ সূচক প্রকাশ করত। সেটি বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। সর্বশেষ ‘ইজ অফ ডুয়িং বিজনেস’ সূচকে ১৯০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৭৬তম। বিশ্বব্যাংক সম্প্রতি ‘বিজনেস রেডি’ নামে নতুন একটি সূচক প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বিবেচনাধীন ৫০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ বিভিন্ন সূচকে প্রাপ্ত নাম্বারের ভিত্তিতে ‘ডি’ ক্যাটাগরি বা চতুর্থ সারিতে অবস্থান লাভ করেছে। বাংলাদেশের স্কোর হচ্ছে ১০০-এর মধ্যে ৫৩ দশমিক ৮৬। প্রতিবেদন ভবিষ্যৎ উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্যক্তি খাতকে আরও গতিশীল করার পরামর্শ দিয়েছে। প্রতিবেদনাধীন দেশগুলোকে আগামী এক দশকে প্রতিবছর গড়ে ৪ কোটি ৪০ লাখ তরুণের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। এদের ৩০ শতাংশই আফ্রিকার দেশ। চরম দারিদ্র্য দূরীকরণে নিম্নআয়ের দেশগুলোকে আগামী এক দশক গড়ে ৯ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে ২০৩০ সাল পর্যন্ত উন্নয়নশীল দেশগুলোকে গড়ে প্রতিবছর ২ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করতে হবে।

বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত উপযোগী একটি স্থান। এখানে রয়েছে ১৭ কোটি ভোক্তার এক বিশাল বাজার। কিন্তু বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের সময় নানা ধরনের প্রতিবন্ধতার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। অধিকাংশ সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের একশ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। রাষ্ট্রীয় সেবামূলক প্রতিষ্ঠান থেকে বিনিয়োগ প্রস্তাব অনুমোদন এবং সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতার সম্মুখীন হতে হয়। ফলে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য দীর্ঘ সময়ক্ষেপণ করতে হয়। একটি প্রকল্প নির্দিষ্ট সময়ে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে যেতে পারে না বলে অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক বাজারে উৎপাদিত পণ্য অনেক সময়ই উপযোগিতা হারায়। ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো না গেলে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় উন্নয়ন অর্জন কোনোভাবেই সম্ভব হবে না। বিনিয়োগ বৃদ্ধি করাটা বর্তমান সরকারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। যদিও এই চ্যালেঞ্জ তাৎক্ষণিকভাবে সৃষ্টি হয়নি। আগে থেকেই অর্থনীতিতে বিদ্যমান রয়েছে। রাষ্ট্রীয় খাতে যে বিনিয়োগ হয়, তা মূলত অবকাঠামোগত উন্নয়ন সাধন করে। আর ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ উৎপাদন বৃদ্ধি করে। তাই ব্যক্তি খাতের ওপর বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য জোর দিতে হবে।

কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে, অনেক দিন ধরেই দেশে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ কার্যক্রম একটি নির্দিষ্ট স্থানে স্তিমিত হয়ে আছে। গত সরকার আমলের শেষের দিকে কিছুদিন বাদে প্রায় পুরোটা সময় দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছিল। কিন্তু উদ্যোক্তা এবং বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের অনিশ্চয়তা বিরাজমান ছিল। ফলে বিনিয়োগকারীরা নতুন বিনিয়োগ প্রস্তাব বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও ‘ধীরে চলো’ নীতি অনুসরণ করছিলেন। আর কোনো দেশের উদ্যোক্তারা যদি নিজ দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিনিয়োগ না করেন, তাহলে সেই দেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ প্রস্তাব নিয়ে আসে না। অনেকদিন ধরেই বাংলাদেশের ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ জিডিপির ২২/২৩ শতাংশে আটকে আছে। অথচ বাংলাদেশ যেভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জন করতে চাচ্ছে, তাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগ আহরণ ছাড়া কোনো গত্যন্তর নেই। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির যে আকার এবং শক্তি, তাতে এক শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে অন্তত ৪ থেকে ৫ শতাংশ বিনিয়োগ হতে হবে। এই বিনিয়োগ হতে হবে ব্যক্তি খাতে। বিনিয়োগ কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় বৃদ্ধি না পাওয়ার কারণে প্রত্যাশিত মাত্রায় জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করা যাচ্ছে না। চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশ কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারবে না। বিশ্বব্যাংক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ড (আইএমএফ), প্রত্যেকেই বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়ে তাদের আগের প্রক্ষেপণ থেকে সরে এসেছে। সংস্থাগুলো বলছে, বাংলাদেশ ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ৪ থেকে সাড়ে ৪ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারে।

যে কোনো অর্থনৈতিক কার্যক্রম সফল হতে হলে দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকতে হয়। কিন্তু বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা চালাতে হবে। পণ্য পরিবহনকালে চাঁদাবাজি এখনো চলছে আগের মতোই। মার্কেটে মার্কেটে চাঁদাবাজি হচ্ছে। হয়তো চাঁদাবাজের বদল হয়েছে। কিন্তু চাঁদাবাজি বন্ধ হচ্ছে না। মূল্যস্ফীতির জন্য রাস্তায় রাস্তায় পণ্য চলাচলকালে চাঁদাবাজি অনেকটাই দায়ী।

জাতিসংঘে দায়িত্ব পালনকালে বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। আমি প্রত্যক্ষ করেছি, কোনো দেশে যদি অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগকারীরা পর্যাপ্ত পরিমাণে বিনিয়োগ না করেন, তাহলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সাধারণত সে দেশে বিনিয়োগের জন্য আগ্রহী হন না। স্থানীয় বিনিয়োগকারীরা যদি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করে, তাহলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা মনে করেন দেশটিতে বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ আছে। তখন তারা বিনিয়োগের জন্য উৎসাহী হন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, আমরা দেশের বিনিয়োগ পরিবেশ এখনো উন্নত এবং বিনিয়োগবান্ধব করতে পারিনি। (অনুলিখন : এমএ খালেক)

ড. মীর্জ্জা এবি মো. আজিজুল ইসলাম : অর্থনীতিবিদ; সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম