ক্ষমতার ভারসাম্য ও বিকেন্দ্রীকরণ
মো. জাহেদুর রহমান
প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
জুলাই বিপ্লব, যা জেন জি এবং সাধারণ মানুষ দ্বারা সংঘটিত হয়েছিল, তা কয়েক দশক ধরে চলা নিপীড়ন, দুর্নীতি, গুম, স্বজনপ্রীতি, ছদ্ম-রাজতন্ত্র, মৌলিক, মানবিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চনার ফল। যদিও এ বিপ্লবের সূচনালগ্ন নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে, তবে বিদ্রোহের কারণগুলো স্ফটিক জলের মতো স্বচ্ছ। এগুলো হলো বাংলাদেশ সৃষ্টির পর থেকে চলমান সব ফ্যাসিবাদী এবং নিপীড়ক শাসনের সঞ্চিত দেনা।
ক্ষমতার ভারসাম্য
বর্তমান সরকারের কাঠামোতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্যের অভাব এবং সংসদে এ নিয়ে প্রশ্ন তোলার অক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীকে অসীম ক্ষমতাবান হওয়ার এবং ছদ্ম-রাজতন্ত্র সৃষ্টির সুযোগ করে দেয়। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী সরকারপ্রধান এবং রাষ্ট্রের সব বিষয় পরিচালনা করেন। রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা করা ছাড়া অন্য কোনো ক্ষমতা নেই, যা অনুচ্ছেদ ৪৯, অধ্যায় ১, অংশ ৪ দ্বারা উল্লেখ করা হয়েছে। এ সংবিধান অনুযায়ী, কেবল প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্র ছাড়া রাষ্ট্রপতি তার অন্য সব দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী করবেন। তবে শর্ত থাকে, প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতিকে আদৌ কোনো পরামর্শ দান করেছেন কিনা এবং করে থাকলে কী পরামর্শ দান করেছেন, কোনো আদালত সেই সম্পর্কে কোনো তদন্ত করতে পারবেন না। সুতরাং ক্ষমা করার ক্ষমতা প্রয়োগের জন্যও তার প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ প্রয়োজন। রাষ্ট্রপতি যে কোনো বিষয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করতে পারেন, যা কেবিনেটের বিবেচনার জন্য উপস্থাপন করতে হবে (সংবিধান, অধ্যায় ১, অংশ ৪, অনুচ্ছেদ ৪৮ (৫)। প্রজাতন্ত্রের সব ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর হাতে (সংবিধান, অধ্যায় ২, অংশ ৪, অনুচ্ছেদ ৫৫)। সংবিধানের এ বিধানের ফলে সৃষ্ট অসামঞ্জস্যের চূড়ান্ত ফল আমাদের সবারই জানা। অতীতে সব রাষ্ট্রপতি (রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারে) এবং প্রধানমন্ত্রী (পার্লামেন্টারি সরকারে) রাজাসুলভ আচরণ করেছেন এবং ছদ্ম-রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন।
এ প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনার লক্ষ্যে আমি দৃঢ়ভাবে সুপারিশ করি, ‘ওয়েস্টমিনিস্টার’ ধাঁচের সংসদীয় শাসনব্যবস্থা চলমান রাখতে হবে, তবে কিছু সংশোধনসহ যাতে রাষ্ট্রপতি (রাষ্ট্রপ্রধান) এবং প্রধানমন্ত্রী (সরকারপ্রধান)-এর ক্ষমতার মধ্যে পর্যাপ্ত ভারসাম্য নিশ্চিত করা যায়।
আমি প্রস্তাব করি, রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতি জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হবেন। তাদের দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকতে পারে বা না-ও থাকতে পারে। তারা রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব ভাগাভাগি করবেন, যা সংবিধান দ্বারা নির্ধারিত হবে এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিষয়গুলো দেখাশোনা করবেন। তবে যুদ্ধ ঘোষণা কিংবা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার ক্ষমতা সংসদের হাতে থাকা উচিত এবং তা উভয় কক্ষের যৌথ অধিবেশনে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার মাধ্যমে অনুমোদিত হতে হবে।
আমি সংসদীয় এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পরিচালনার জন্য তিন মাসের একটি অন্তর্বর্তী সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ধারণাকে সমর্থন করি। তবে প্রধান বিচারপতি এ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হওয়া উচিত নয়। প্রধান বিচারপতির সব রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার ঊর্ধ্বে থাকা উচিত। উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, উভয় কক্ষের নেতা এবং সংখ্যালঘু নেতা সমন্বয়ে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা যেতে পারে। এ কমিটির সব সদস্য সর্বসম্মতিক্রমে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান এবং উপদেষ্টাদের নির্বাচন করবেন। সংসদ বিলুপ্ত হওয়ার ৩০ দিন আগে এ কমিটি গঠন করা যেতে পারে।
আইনসভা
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ আমার পছন্দ। আইনসভা দুটি কক্ষ নিয়ে গঠিত হবে : ওপরের কক্ষ এবং নিচের কক্ষ। নাম হতে পারে উচ্চসভা এবং সাধারণ সভা।
উচ্চসভা : এ কক্ষের সব সদস্য, অর্থাৎ ১০০ জন সদস্য জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হবেন। এর মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য জেলা পরিষদ ও সিটি করপোরেশন থেকে আসবেন। বাংলাদেশে ৬৪ জেলা এবং ১২ সিটি করপোরেশন রয়েছে। মোট ৭৬ জন সদস্য জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবেন। বাকি ২৪ জন সদস্যকে জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রশাসনিক বিভাগগুলোর মধ্যে বণ্টন করা হবে এবং তাদেরও প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত করা হবে। পেশাজীবী গোষ্ঠী থেকে নির্বাচনের ধারণাটি স্বজনপ্রীতি ও গোষ্ঠীগুলোর অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করবে। সর্বোচ্চ গণতান্ত্রিক প্ল্যাটফর্মের জন্য নির্বাচন হওয়া উচিত, মনোনয়ন নয়। এমন বৈচিত্র্যময় নির্বাচন সমন্বয় করা এবং কর্মটি সম্পাদন করা নিশ্চিতভাবে চ্যালেঞ্জিং হবে, তবে তা সম্ভব। রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি, জেলা পরিষদ এবং সিটি করপোরেশনের নির্বাচন একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে। উপরাষ্ট্রপতি উপরের কক্ষের স্পিকার হতে পারেন।
নিচের কক্ষ বা সাধারণ সভা : নিচের কক্ষটি ৩০০ সদস্য নিয়ে গঠিত হবে, যারা নিজ নিজ নির্বাচনি এলাকা থেকে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হবেন। আমি প্রস্তাব করছি, সংরক্ষিত নারী আসন ব্যতীত আরও ৫০ জন সদস্যকে ভোটের অনুপাতের ভিত্তিতে প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে নির্বাচিত করা হোক।
রাষ্ট্রপতি সংসদ সদস্যের মধ্যে থেকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে সেই সদস্যকে নিয়োগ করবেন, যিনি সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্যের সমর্থন পেশ করবেন। উভয় কক্ষ দ্বারা অনুমোদিত বাজেটও তিনি অনুমোদন করবেন।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা
বিচার বিভাগ তখনই স্বাধীন হতে পারে, যখন প্রধান বিচারপতি এবং আপিল বিভাগের অন্যান্য বিচারকের নিয়োগ আইন সভা এবং নির্বাহী শাখার প্রভাবমুক্ত হয়। উপরাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে গঠিত একটি কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রধান বিচারপতিসহ প্রতিটি শূন্য পদের বিপরীতে তিনজন সম্ভাব্য প্রার্থীর একটি তালিকা উপস্থাপন করবে। প্রধানমন্ত্রী, উভয় কক্ষের নেতা এবং বিরোধীদলের নেতা এ কমিটির অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। উপস্থাপিত তালিকা থেকে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক মনোনীত প্রার্থীকে ওপরের কক্ষে আলোচনা হওয়ার পর সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে অনুমোদন দিতে হবে।
বিচার বিভাগের বার্ষিক বাজেট বিচার বিভাগই প্রণয়ন করবে এবং সংসদের উভয় কক্ষের অনুমোদনের জন্য তা পেশ করা হবে। যদি উভয় কক্ষ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাজেট অনুমোদন করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে রাষ্ট্রপতি সরাসরি বাজেট অনুমোদন করতে পারেন। বিচার বিভাগ কার্যকরভাবে স্বাধীন হলেও বিচার বিভাগের ব্যয় সম্পর্কে জানা এবং তাদের মতামত দেওয়ার অধিকার জনগণের রয়েছে; কারণ এটি ‘করদাতাদের অর্থ’।
নিচের কক্ষ সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতি বা আপিল বিভাগের বিচারকদের অভিশংসন প্রস্তাব আনতে পারে। ওপরের কক্ষ এটি দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে অনুমোদন করতে পারবে। ন্যূনতম পাঁচ সদস্যের একটি বিচার কমিশন গঠন করা উচিত। এ কমিশন প্রধান বিচারপতির কার্যালয় থেকে প্রেরিত নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালত পর্যন্ত বিচারকদের শৃঙ্খলাভঙ্গ ও অপসারণসংক্রান্ত বিষয়াদি নিষ্পত্তি করবে।
একটি জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন বিচার বিভাগের নতুন নিয়োগের বিষয়গুলো, যার মধ্যে উচ্চ আদালতের বিচারকরাও অন্তর্ভুক্ত, পরিচালনা করবে। উচ্চ আদালতের বিচারকদের ক্ষেত্রে, কমিশন প্রতি শূন্যপদের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে প্রধান বিচারপতির মাধ্যমে তিনজন সম্ভাব্য প্রার্থীর একটি প্যানেল প্রেরণ করবে। রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতি এবং জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগ হবে। সব বিচারকের চাকরির শর্তাবলী একটি পৃথক জুডিশিয়াল সার্ভিস আইনের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। ন্যায়বিচার বিলম্বিত হলে তা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করার সমতুল্য। উচ্চ আদালতকে আটটি প্রশাসনিক বিভাগে বিন্যস্ত করার এখনই উপযুক্ত সময়।
অন্যান্য সাংবিধানিক নিয়োগ
নির্বাচন কমিশন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, যা সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয়। এ কমিশনের নির্বাহী শাখার প্রযোজ্য সময়ের জন্য এবং নির্বাচনের সময় সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব থাকতে হবে। প্রথম এবং প্রধান গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো একটি স্বাধীন, শক্তিশালী, কার্যকর এবং দক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করা। উপরাষ্ট্রপতি একটি কমিটির নেতৃত্ব দিতে পারেন, যা প্রতিটি পদের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে তিনজন সম্ভাব্য প্রার্থীর একটি তালিকা উপস্থাপন করবে। প্রধানমন্ত্রী উভয় কক্ষের নেতা এবং উভয় কক্ষের বিরোধীদলের নেতা এ কমিটির সদস্য হতে পারেন। কমিটি কর্তৃক উপস্থাপিত তালিকা থেকে রাষ্ট্রপতি মনোনীত প্রার্থীকে উপরের কক্ষে আলোচনা এবং সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে অনুমোদন করতে হবে। কমিশনটি চেয়ারম্যানসহ পাঁচজন সদস্য নিয়ে গঠিত হবে।
দুর্নীতি দমন কমিশন আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, যা জাতি এবং জনগণের টিকে থাকার জন্য অপরিহার্য। এ প্রতিষ্ঠানটি নির্বাহী শাখার প্রভাব থেকে মুক্ত থাকতে হবে। এ কমিশনের সদস্যরাও উপরোক্ত প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত হতে পারেন।
অন্যান্য সাংবিধানিক নিয়োগের জন্য যেমন আইন কমিশন, তথ্য কমিশন, মানবাধিকার কমিশন, অ্যাটর্নি জেনারেল, অডিটর ও কম্পট্রোলার জেনারেল, পাবলিক সার্ভিস কমিশন ইত্যাদির প্রার্থীদের নির্বাচন করার জন্য একটি পৃথক সার্চ কমিটি গঠন করা যেতে পারে। উল্লেখিত সব নিয়োগের মেয়াদ পাঁচ বছর হতে হবে। কোনো ব্যক্তি দুটি ধারাবাহিক মেয়াদের বেশি কোনো পদে নির্বাচিত বা মনোনীত হতে পারবেন না।
স্থানীয় সরকার
কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, স্থানীয় সরকারের ক্ষমতায়ন, উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে স্থানীয় সরকারের অংশগ্রহণ, নিচ থেকে ওপরে বাজেট প্রক্রিয়া প্রবর্তন, ‘আমলাতন্ত্র রাজনৈতিক নেতৃত্বের অধীন’ এ ধারণাটিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে জনগণের অংশগ্রহণ বাড়ানো কার্যকর স্থানীয় শাসনের চাবিকাঠি। সংবিধানে প্রদত্ত খুবই সংক্ষিপ্ত এবং অপর্যাপ্ত কাঠামো ও বিদ্যমান আইনসমূহ স্থানীয় সরকারকে অদক্ষ ও অকার্যকর করেছে। স্থানীয় সরকার নিয়ে আমার কিছু প্রস্তাবনা আছে :
ক. সব সিটি করপোরেশন স্ব স্ব নির্বাচিত সিটি গভর্নরের নেতৃত্বে থাকা উচিত। গভর্নর সরাসরি সব ইউটিলিটি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো, নগর পরিকল্পনা ও অবকাঠামো অনুমোদনকারী প্রতিষ্ঠান, নগরের অবকাঠামো ও সড়ক নির্মাণ ও উন্নয়নকারী প্রতিষ্ঠান, নগরের ভূমি অফিস এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো নিয়ন্ত্রণ করবেন।
খ. একইভাবে, সব জেলা চেয়ারম্যান সরাসরি নির্বাচিত হয়ে জেলা গভর্নর নামে পরিচিত হবেন। সব উন্নয়ন কার্যক্রম এ অফিসের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। জেলার সেবা ও আইন প্রয়োগকারী অফিসগুলো জেলা গভর্নরের অধীনে থাকবে। পৌরসভাসমূহ জেলা গভর্নরের অধীনে থাকবে।
গ. একজন সিটি গভর্নর এবং জেলা গভর্নর সংসদের উচ্চকক্ষের সদস্য হবেন।
ঘ. উপজেলা চেয়ারম্যান নিজ নিজ উপজেলায় উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু হবেন। সব সহায়ক সরকারি অফিস তার অধীনে থাকবে। উপজেলা চেয়ারম্যান এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য (নিম্ন সভা বা সাধারণ সভার) জেলা পরিষদের সদস্য হবেন।
উপসংহার
বাংলাদেশের রাজনৈতিক কাঠামোতে ক্ষমতার ভারসাম্য ও বিকেন্দ্রীকরণ অত্যন্ত প্রয়োজন। প্রস্তাবিত মূল সংস্কারগুলোর মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতির সরাসরি নির্বাচন, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদীয় ব্যবস্থা এবং বিচার বিভাগের আরও স্বাধীনতা। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে স্থানীয় সরকারকে ক্ষমতায়ন করা আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং কার্যকর শাসনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ পরিবর্তনগুলো দুর্নীতি এবং স্বৈরতন্ত্রের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যাগুলো সমাধান করতে এবং একটি ন্যায়সংগত, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গণতান্ত্রিক সমাজের পথ প্রসারিত করতে পারে।
মো. জাহেদুর রহমান : বিশ্লেষক, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা