
প্রিন্ট: ০৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৫৮ পিএম

ড. মাহবুব উল্লাহ্
প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

আরও পড়ুন
প্রাইভেটাইজেশন বা বেসরকারীকরণ কথাটির সঙ্গে আমরা অনেকেই পরিচিত। আশির দশকে ওয়াশিংটন কনসেন্সাস হওয়ার পর থেকে প্রাইভেটাইজেশন কথাটি বহুলভাবে আলোচিত হয়ে আসছে। ওয়াশিংটন কনসেন্সাসের পর, বিশ্বের বহু দেশে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় পরিচালিত কলকারখানা এবং এন্টারপ্রাইজ ব্যক্তিমালিকানায় তুলে দেওয়া হয়। কারণ হিসাবে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কলকারখানা ও সংস্থাগুলো বিপুল পরিমাণে লোকসান করছে। কারণ, এগুলো অদক্ষভাবে পরিচালিত হচ্ছে এবং দুর্নীতি ঘুণপোকার মতো এগুলোর মধ্যে বাসা বেঁধেছে। এ কারখানাগুলো চালু রাখার জন্য সরকারকে বিপুল অঙ্কের ভর্তুকি দিতে হয়। ভর্তুকি না পেলে এসব কলকারখানা শ্রমিকদের বেতন ও মজুরি দিতে পারে না এবং উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল কিনতে পারে না। ভর্তুকি হিসাবে সরকার যে অর্থ ব্যয় করে, সে অর্থ জনকল্যাণমূলক আরও অনেক কাজে ব্যয় করা সম্ভব হতো। ভর্তুকির অর্থ সরকারের রাজস্ব আয় থেকে আসে। রাজস্ব আয় জনগণেরই অর্থ। জনগণ এ অর্থ কর আকারে সরকারের তহবিলে জমা দেয়।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কলকারখানাগুলোর লোকসানের সমস্যা সমাধানকল্পে বলা হলো, এসব কলকারখানা ব্যক্তি মালিকানায় হস্তান্তর করতে হবে। বাংলাদেশে এরশাদ আমলে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে প্রাইভেটাইজেশন বা বেসরকারীকরণ হয়েছে। বেসরকারীকরণ প্রক্রিয়াও দুর্নীতিমুক্ত ছিল না, ছিল না স্বচ্ছ। অনেক কারখানা প্রকৃত মূল্যের চেয়ে কমমূল্যে বিক্রি করা হয়েছে। কম মূল্যে বিক্রি করার সময় রাজনীতিবিদ, আমলা ও ক্রেতার মধ্যে এক ধরনের অশুভ যোগসাজশ ছিল। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কলকারখানাগুলো স্থাপিত হয়েছিল বিশাল জমির ওপর। যারা কারখানাগুলো পানির দরে ক্রয় করল, তারা একই সঙ্গে হয়ে গেল বিশাল পরিমাণ জমির মালিক। বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশে জমি দুষ্প্রাপ্য সম্পদ। প্রতিবছরই জমির দাম হুহু করে বাড়ছে। যারা বেসরকারীকরণের প্রক্রিয়ায় কলকারখানার মালিক হলো, তারা জমি নামক সোনার খনিরও মালিক হলো। এগুলো ছিল, রাষ্ট্রীয় পলিসি ব্যবহার করে দেশে একটি পুঁজিপতি শ্রেণি গড়ে তোলার প্রয়াস। রাষ্ট্রীয় নীতি কীভাবে নতুন শ্রেণির উদ্ভব ঘটায় এবং কীভাবে সমাজের শ্রেণিবিন্যাসে পরিবর্তন ঘটায়, এ দৃষ্টান্ত থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি।
আইয়ুব খানের আমলে পাকিস্তানে রাষ্ট্রীয় আনুকূল্যে একটি শক্তিশালী পুঁজিপতি শ্রেণি গড়ে তোলা হয়েছিল। এ পুঁজিপতি শ্রেণিটি ২২ পরিবার অভিধায় অভিহিত হয়ে উঠেছিল। ২২ পরিবারের হাতে পুঞ্জীভূত হয়েছিল তৎকালীন পাকিস্তানের শিল্প, ব্যাংক, বিমা ও বহির্বাণিজ্যের সম্পদের সিংহ ভাগ। এ গোষ্ঠীটির হাতে সম্পদ পুঞ্জীভূত হওয়ায় তৎকালীন পাকিস্তানে অর্থনৈতিক বৈষম্য প্রকট হয়ে উঠেছিল। এ বৈষম্যের বিরুদ্ধে সমগ্র পাকিস্তানে ১৯৬৯ সালে বিশাল গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল। এ অভ্যুত্থানের ফলে ডিক্টেটর ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।
পাকিস্তান আমলে রাষ্ট্রীয় আনুকূল্যে পুঁজিবাদ (State Fostered Capitalism) গড়ে তোলার জন্য রাষ্ট্রীয় বাণিজ্যনীতি, শুল্কনীতি ও শিল্পনীতিকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছিল। দেশীয় শিল্প সংরক্ষণের নামে বিদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ক্ষেত্রবিশেষে ২০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হয়। ফলে দেশীয় পুঁজিপতিরা দেশের বাজারে চড়ামূল্যে তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করে প্রচুর মুনাফা করত। ইপিআইডিসি ও ডব্লিউপিআইডিসি ছিল পাকিস্তানের দুই প্রদেশে দুটি ভিন্ন সংস্থা। এ সংস্থার কাজ ছিল নতুন নতুন শিল্পকারখানা স্থাপন করা, এগুলোকে উৎপাদনের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া এবং এসব কলকারখানা থেকে উৎপাদিত পণ্যের জন্য বাজার তৈরি করা। অর্থনীতি শাস্ত্রের দৃষ্টিকোণ থেকে এ কাজগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এ ঝুঁকির পুরোটাই বহন করত রাষ্ট্র, জনগণ প্রদত্ত রাজস্বের অর্থ ব্যয় করে। বছরতিনেক পর কারখানাটি সম্পূর্ণ চালু অবস্থায় পৌঁছালে এবং মুনাফা করতে শুরু করলে, এগুলো হস্তান্তর করা হতো তুলনামূলকভাবে কম দামে ব্যক্তি পুঁজিপতিদের হাতে। এভাবে ব্যক্তি পুঁজিপতিদের স্বর্ণের থালায় তাদের হাতে মূল্যবান উপহার তুলে দেওয়া হয়। পাকিস্তান আমলে পুঁজিপতিদের ধনী করে তোলার আরেকটি হাতিয়ার ছিল বোনাস ভাউচার স্কিম। পুঁজিপতিরা তাদের কারখানায় উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী বিদেশে রপ্তানি করে যে ডলার বা পাউন্ড উপার্জন করত, তার বিনিময়ে দেড়গুণেরও অধিক দেশীয় মুদ্রা তাদের দেওয়া হতো। পুঁজিপতিদের প্রদত্ত অর্থ দেশীয় বাজারে বৈদেশিক মুদ্রার দামের দেড়গুণেরও অধিক হারে পরিশোধ করা হতো। পণ্য রপ্তানি করে যে ভাউচার পাওয়া যেত, তার ওপর ভিত্তি করে বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিনিময় পরিশোধ করা হতো। এভাবে রাষ্ট্রীয় অনুকূল্যপ্রাপ্ত হয়ে শিল্পপতিরা যে মুনাফা করত, তা প্রকৃত মুনাফা ছিল না। এর মধ্যে লুক্কায়িত থাকত লোকসান। পাটবস্ত্রের ক্ষেত্রে পাকিস্তানি পুঁজিপতিরা যে লাভ করত, বোনাস ভাউচার স্কিম না থাকলে তা পরিণত হতো নিট লোকসানে। অর্থনীতিবিদ কাজী খলিকুজ্জমান পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অফ ডেভেলপমেন্ট ইকোনমিক্সে পাকিস্তানের পাটশিল্প নিয়ে একটি গবেষণা করেন। এ গবেষণায় দেখা গেছে, পাকিস্তানের পাটশিল্প বোনাস ভাউচার স্কিম না থাকলে লোকসানি শিল্পে পরিণত হতো। এভাবে দেখা যায়, পাকিস্তান আমলে পুঁজিপতিরা কৃচ্ছ্রসাধন, তিল তিল করে সঞ্চয় এবং আত্মসংযমের মাধ্যমে গড়ে ওঠেনি। রাষ্ট্রের আনুকূল্যে তাদের রমরমা অবস্থার সৃষ্টি হয়। এরা জে. এ. শুম্পিটার ও ফ্র্যাঙ্ক নাইট প্রদর্শিত পথে পুঁজিপতি হননি। তাহলে তাদের নিয়ে আপত্তি থাকত না।
পাকিস্তান আমল ও বাংলাদেশের বেসরকারীকরণ আমলে কীভাবে পুঁজিপতি শ্রেণির উদ্ভব ও বিকাশ ঘটেছিল, সে কাহিনি আমরা মোটা দাগে আলোচনা করলাম। এখন দেখা যাক পতিত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার আমলে কীভাবে কী প্রক্রিয়ায় ধনিকশ্রেণি গড়ে তোলা হয়েছে। দৃষ্টান্ত দিলে অনেক দৃষ্টান্ত দেওয়া সম্ভব। আমরা এসব পুঁজিপতিকে সরাসরি না চিনলেও নামে অবশ্যই চিনি। শেখ হাসিনার লুটের রাজ্যে কয়েকটি অলিগার্ক গোষ্ঠী তৈরি করা হয়েছে রাষ্ট্রের বিরাষ্ট্রীয়করণ বা প্রাইভেটাজেশনের মাধ্যমে। এক্ষেত্রে ক্ষতির মুখে পড়েছে বিশেষ করে সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক খাত। একটি দৈনিকের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া পতিত আওয়ামী সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা দেশ থেকে ১ হাজার ৭০০ কোটি ডলার বা ১৭ বিলিয়ন ডলার সরিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। স্থানীয় মুদ্রায় যা প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা। তিনি জানিয়েছেন, এর মধ্যে ১০ বিলিয়ন ডলারই সরিয়েছেন বিতর্কিত ব্যবসায়ী সাইফুল আলম মাসুদ ওরফে এস আলম। প্রভাবশালী ব্রিটিশ গণমাধ্যম ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আহসান মনসুর এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেছেন, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা দপ্তরের সাবেক কিছু কর্মকর্তা শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক দখল করতে সহায়তা করেছেন। দেশের শীর্ষস্থানীয় গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই’র বিপথগামী কিছু কর্মকর্তা তাদের পেশিশক্তি ব্যবহার করে বন্দুকের নলের মুখে কিছু ব্যাংক কর্মকর্তাকে ব্যাংকের মালিকানা হস্তান্তরে বাধ্য করেন। তখন বুঝতে হয় রাষ্ট্র বেদখল হয়ে গেছে। রাষ্ট্রের মালিকানা চলে গেছে বেজন্মাদের হাতে। জনগণ এসব দুষ্কৃতকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখার অপেক্ষায় রয়েছে। কোন কোন দেশে এসব অর্থ পাচার করা হয়েছে, তার সুনির্দিষ্ট তথ্যের সন্ধানে জোরেশোরে কাজ করছে বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বিএফআইইউ। অবশ্য ইতঃপূর্বে রাষ্ট্রের এ গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাটির নিষ্ক্রিয়তা ও দায়িত্বে অবহেলা সম্পর্কে মিডিয়ায় অভিযোগ এসেছে। আশা করা যায়, সংস্থাটি এখন থেকে তৎপর হবে। ইতোমধ্যে এস আলম, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান, সামিট গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, নজরুল ইসলাম মজুমদারের নাসা গ্রুপসহ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১০টি গ্রুপের বিরুদ্ধে তদন্ত কাজ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে সাইফুজ্জামানের দেশে-বিদেশে থাকা সব সম্পদ বাজেয়াপ্তের জন্য উচ্চ আদালত থেকে অর্ডার দেওয়া হয়েছে। এস আলমের দেশে-বিদেশে থাকা সব সম্পদ বাজেয়াপ্তের আদেশ চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হচ্ছে। এভাবে ওই ১০টি গ্রুপের সম্পদ বাজেয়াপ্তের আদেশ চাওয়া হবে।
ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর জানিয়েছেন, যে কোনো বৈশ্বিক মানদণ্ডে এটি সবচেয়ে বড়, সবচেয়ে ব্যাপক ব্যাংক ডাকাতি। এ মাত্রায় ব্যাংক ডাকাতি অন্য কোথাও হয়নি। এটি ছিল রাষ্ট্রীয় মাদদপুষ্ট। গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে জড়িতরা (ব্যাংকের সাবেক প্রধান নির্বাহীদের) মাথায় বন্দুক না ঠেকালে এটা হতে পারত না। তিনি বলেন, ডিজিএফআই’র সহায়তায় কয়েকটি ব্যাংক দখল করার পর ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলমের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার সহযোগীরা ‘অন্তত’ ১০ বিলিয়ন বা ১ হাজার কোটি ডলার ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ‘বের করে নিয়েছেন।’ তার মতে ‘তারা প্রতিদিনই নিজেদের জন্য ঋণ অনুমোদন করেছেন।’
শেখ হাসিনার আমলে আরও বহুবিধ কৌশলে রাষ্ট্রের সম্পদ ব্যক্তিগত পর্যায়ে শুষে নেওয়া হয়েছে। তার একটি দৃষ্টান্ত হলো, তাপসের দাপটে অবিশ্বাস্য ‘ব্যয়’। আরেকটি দৈনিকের প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ঘটনার শুরু ২০১৮ সালে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি আসে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে। সে চিঠিতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এমন একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়, যাতে খুশি হওয়ার কথা সিটি করপোরেশনের; কিন্তু ঘটনা গড়াল ভিন্ন দিকে। প্রস্তাব অনুযায়ী, শাহবাগে যে শিশু পার্ক রয়েছে, সেটির সংস্কার ও আধুনিকায়নের জন্য একটি প্রকল্পের (স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ-তৃতীয় পর্যায়) আওতায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে ৭৮ কোটি টাকা দেবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এর কারণ, এ প্রকল্পের জন্য শিশু পার্কের নিচ দিয়ে ভূগর্ভস্থ পার্কিং হবে। এতে পার্কের কিছু রাইড ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নতুন রাইড কেনার পাশাপাশি পার্কের আধুনিকায়নের জন্য মূলত ওই টাকা দিতে চেয়েছিল মন্ত্রণালয়। কিন্তু এত ‘অল্প টাকায়’ আধুনিকায়নের কাজটি করা যাবে না উল্লেখ করে প্রস্তাবটি ফেরত পাঠায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি। তখন মেয়রের দায়িত্বে ছিলেন মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। এরপর ২০২০ সালের মে মাসে শেখ ফজলে নূর তাপস ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়রের দায়িত্ব নেন। কিছুদিন পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওই প্রস্তাবের বিষয়টি তার নজরে আসে; কিন্তু তিনিও মন্ত্রণালয়ের ৭৮ কোটি টাকা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি ঠিক করেন শিশু পার্কের আধুনিকায়নের কাজটি সিটি করপোরেশন নিজেরাই করবে। পরে তার উদ্যোগে শিশু পার্ক নিয়ে ৬০৩ কোটি ৮১ লাখ টাকার একটি প্রকল্প তৈরি করা হয়। এ বিষয়টি নিয়ে পত্রিকাটি আরও অনেক বিস্তারিত প্রতিবেদন ছেপেছে। প্রতিবেদনের সারাংশে লেখা হয়, শিশু পার্কের আধুনিকায়ন করা যেত ৭৮ কোটি টাকায়। সে কাজ ৬০৩ কোটি ৮১ লাখ টাকায় করতে প্রকল্প পাশ করান শেখ ফজলে নূর তাপস। বিআইপির সভাপতি অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান বলেছেন, ‘বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ছোট কাজকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে বড় করে প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানোর একটা প্রবণতা ছিল। শাহবাগের শিশু পার্কের ক্ষেত্রেও এটি দেখা গেল।’ এভাবে প্রকল্প ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি করে আওয়ামী শাসনামলে রাষ্ট্রের ছাল-বাকল-মজ্জাসহ সবকিছু প্রাইভেটাইজড করা হয়েছে। এ প্রাইভেটাইজেশনের বখরা কারা কারা পেয়েছে, তা গভীর অনুসন্ধানের বিষয়।
ড. মাহবুব উল্লাহ : শিক্ষাবিদ ও অর্থনীতিবিদ