Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

দুদক সংস্কারে গুটিকয় চিন্তা

Icon

মঈদুল ইসলাম

প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

দুদক সংস্কারে গুটিকয় চিন্তা

প্রতিরোধ ও গবেষণা : দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে দুর্নীতি প্রতিরোধ কার্যক্রম হিসাবে কিছু সভা-সেমিনার ও গণশুনানির আয়োজন, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সততা স্টোর গঠন ও পরিচালনা, ছাত্রাবাসে সততা সংঘ গঠন ও পরিচালনা, জেলা-উপজেলা-ইউনিয়নে দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি গঠন, ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন ইত্যাদি সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম চালানো হয়ে থাকে। এনফোর্সমেন্ট টিমের মাধ্যমে কিছু প্রতিরোধমূলক কাজও করা হয়ে থাকে। প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে তথ্য সংগ্রহ করা ও এর ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির উৎস চিহ্নিত ও সুপারিশ তৈরির মাধ্যমে গবেষণা ধরনের সামান্য কিছু কাজও করা হয়ে থাকে।

এসব কাজের প্রায় সবই হয় নামকাওয়াস্তের মতো, লোকদেখানোর মতো। এসব কাজ করানো হয় অনুসন্ধান-তদন্তে ব্যস্ত একই কর্মকর্তাদের দিয়ে। প্রতিরোধ ও গবেষণার উইং আলাদা থাকলেও আলাদাভাবে কর্মকর্তা রাখা হয় না, বিশেষত জেলা পর্যায়ে তো নয়ই। ফলে প্রতিরোধ ও গবেষণার কাজও যেমনটি হওয়া দরকার, তেমন ফলপ্রসূ হয় না; আবার অনুসন্ধান-তদন্তও যেমনটি হওয়া দরকার, তেমন সফল ও সার্থক হয় না। তাই অনুসন্ধান-তদন্তের কাজমুক্ত কর্মকর্তাদের দিয়ে প্রতিরোধ ও গবেষণাসংক্রান্ত কাজ পরিচালনার ব্যবস্থা গড়ে তোলা দরকার।

দুদকে দুজন কমিশনারের একজন কমিশনার (অনুসন্ধান), আরেকজন কমিশনার (তদন্ত)। দুদকের কাজে অনুসন্ধানের ধারাবাহিকতায় পরবর্তী ধাপ হলো তদন্ত। এ দুটি কাজ দুজন কমিশনারের মধ্যে ভাগাভাগি করে রাখায় কাজের কোনো সুবিধা হয় না, বরং অসুবিধাই সৃষ্টি করে। এ দুটি কাজ একজন কমিশনারের হাতে থাকা বাঞ্ছনীয়। অন্যদিকে, প্রতিরোধ ও গবেষণা কাজ কোনো কমিশনারের হাতে নেই। এ দায়িত্ব একজন কমিশনারের হাতে থাকা উচিত। তাই আমার মতে, দুদকে দুজন কমিশনারের একজনকে কমিশনার (অনুসন্ধান-তদন্ত) এবং অপরজনকে কমিশনার (প্রতিরোধ ও গবেষণা) হিসাবে দায়িত্ব ভাগাভাগি হওয়া উচিত।

স্থায়ী প্রসিকিউশন ইউনিট গঠন : দুদক আইনে (৩৩ ধারা) স্থায়ী প্রসিকিউশন ইউনিট গঠনের বিধান আছে। কিন্তু সে ব্যাপারে কার্যকর কোনো উদ্যোগ না নিয়ে আপন পেশায় নিয়োজিত আইনজীবীদের একরকম ভাড়া করা অস্থায়ী ব্যবস্থাই চলে আসছে ১৪ বছরের বেশি সময় ধরে। এসব আইনজীবীর বেশির ভাগেরই দক্ষতা ও আন্তরিকতা, এমনকি সততা ও আনুগত্য নিয়েও প্রশ্ন ওঠে, যার ক্ষতিকর প্রভাব দুদকের মামলায় স্পষ্ট। তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করা যায় না সবসময়। তাই ৩৩(২) ধারার বিধান অনুযায়ী প্রয়োজনীয় বিধিমালা প্রণয়ন করে দক্ষ ও শক্তিশালী স্থায়ী প্রসিকিউশন ইউনিট প্রতিষ্ঠা জরুরি।

বিচার কার্যক্রম : দুদকের ২০২৩ সালের বার্ষিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে দেখা যাবে, নিম্ন আদালতে, মানে বিচারের স্পেশাল জজকোর্টগুলোয় ২০২৩ সালে মামলা অনিষ্পন্ন ছিল ব্যুরো আমলের ৩৫৯টি, আর দুদক আমলের ২৯৯৪টি, সব মিলিয়ে ৩৩৫৩টি। নিষ্পত্তি হয়েছে ব্যুরো আমলের ৩০টি আর দুদক আমলের ২৮৩টি, সব মিলিয়ে ৩১৩টি, শতকরা হিসাবে যা মাত্র ৯.৩৩ শতাংশ। ২০০৭ সালে ঢাকায় সৃষ্ট ১০টিসহ সারা দেশে একেবারে পৃথকভাবে সৃজিত স্পেশাল জজ আদালত আছে ২৯টি। সেগুলো আদতে আর পৃথক নেই, কার্যত হয়ে গেছে সাধারণ আদালত। কারণ, সেগুলোতে ২০০৩ সালের ‘অতিরিক্ত দায়িত্ব আইন’ দিয়ে অন্যসব মামলাও ঢুকিয়ে রাখা হয়েছে; যার ফলে আদালতপ্রতি গড়ে ১১৫টি করে মামলা পড়লেও সারা বছর এই ২৯টি আদালতের একেকটিতে গড়ে নিষ্পত্তি হচ্ছে মাত্র ১০টির মতো, মাসে হচ্ছে একটিরও কম।

২০১৮ সালে স্পেশাল জজ আদালতগুলোয় আগের পেন্ডিং মামলার সঙ্গে তার প্রায় ৮ শতাংশ নতুন এসে যোগ হয়; নিষ্পত্তি মোটের ওপর মাত্র প্রায় ৭ শতাংশ, যার প্রায় ৬০ শতাংশ সাজা। পিপিদের কাজের মনিটরিং-তদারকি জোরদার করায় এবং সাক্ষী-আলামত হাজির করায় বিশেষ জোর দেওয়ায় সাজার হার বাড়া শুরু হয় ২০১৬ সাল থেকে। কিন্তু মোট নিষ্পত্তির হার বাড়ানো মোটেই সম্ভব হয়নি। প্রতিবছর দুদকের বিচারাধীন মোট মামলা সাড়ে তিন হাজারের কাছাকাছি থাকে (২০১৮ সাল পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী)।

২০০৭ সালে ঢাকায় সৃষ্ট ১০টিসহ সারা দেশে পুরোপুরি পৃথকভাবে স্পেশাল জজ আদালত আছে ২৯টি। সে হিসাবে আদালতপ্রতি গড়ে ১২০টি করে মামলা পড়ে। ২০১৮ সালে মোট নিষ্পত্তি হয় মাত্র ২৪৯টি মামলা। অর্থাৎ, সারা বছরে এই ২৯টি আদালতের একেকটিতে গড়ে নিষ্পত্তির সংখ্যা দাঁড়ায় ৯টিরও কম এবং মাসে পড়ে একটিরও কম।

শুরুতে স্পেশাল জজ আদালতগুলোয় দুর্নীতির মামলা ছাড়া অন্য কোনো মামলা বিচারের এখতিয়ার ছিল না। কিন্তু ২০০৩ সালে ‘অতিরিক্ত দায়িত্ব আইন’ করে অন্যান্য আদালতে জট লেগে থাকা বিচারাধীন মামলা স্পেশাল জজ আদালতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। ফলে, তখন থেকে স্পেশাল জজ আদালতগুলোয় দুর্নীতির মামলার চেয়ে অন্যান্য আদালত থেকে আসা মামলারই জট লেগেছে বেশি, এর বেশির ভাগ আবার দুর্নীতির মামলার চেয়ে অনেক কম জটিল। স্বাভাবিক কারণেই দুর্নীতির মামলার ভাগে আদালতের সময় ও মনোযোগ পড়ে অনেক কম। সারা দেশে আদালতগুলো যে রকম মামলা ভারাক্রান্ত, তাতে এসব স্পেশাল জজ আদালতকে আর কেবল দুদকের তিন/সাড়ে তিন হাজার দুর্নীতির মামলা বিচারের জন্য আগের মতো পৃথক রাখার দাবি করারও কোনো উপায় নেই। এছাড়া ৬৪ জেলায় সিনিয়র স্পেশাল জজের কাছ থেকে কগনিজ্যান্স হয়ে বিচারের জন্য স্পেশাল জজ আদালতে মামলা আসতে কালক্ষেপণ হয় প্রচুর, অনেক ক্ষেত্রে স্পেশাল জজ আদালতে না এসে মামলা পড়ে থাকে অতিরিক্ত দায়রা জজ বা যুগ্ম দায়রা জজের কাছেও (সরকারি নোটিফিকেশন অনুযায়ী পদাধিকার বলে তারাও স্পেশাল জজ)।

স্পেশাল জজ আদালতের বিচারাধীন অনেক মামলার কার্যক্রম রিট-রিভিশনে হাইকোর্টের আদেশে স্থগিত হয়ে যায়। হাইকোর্টে অন্যান্য মামলার চাপে এসব রিট-রিভিশন নিষ্পত্তি হতে বছরের পর বছর লেগে যায়, স্পেশাল জজ আদালতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত থাকে বছরের পর বছর। অনেক সময় কোনো কোনো মামলায় একাধিকবারও হাইকোর্টে আসে আর স্থগিতাদেশ হয় একাধিকবার। স্পেশাল জজ আদালতে মামলার বিচার শেষ হলে হাইকোর্টে শুরু হয় আপিল। হাইকোর্টে অন্যান্য মামলার চাপে এসব আপিল নিষ্পত্তি হতে বছরের পর লেগে যায়, সাজাপ্রাপ্ত-আপিলকারী অনেক আসামি মারাও যায় আপিল নিষ্পত্তির আগে।

দুদকের ২০২৩ সালের বার্ষিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে দেখা যাবে, হাইকোর্টে আগের অনিষ্পন্ন ১০০৮টির সঙ্গে নতুন দায়ের হওয়া ১৯১টি মিলিয়ে ২০২৩ সালে ফৌজদারি আপিল ছিল মোট ১১৯৯টি, আর নিষ্পত্তি হয়েছে (২০২৩ সালে) মাত্র ২৮টি, শতকরা হিসাবে নিষ্পত্তির হার মাত্র ২.৩৩ শতাংশ। সে বছর (২০২৩ সালে) আগের অনিষ্পন্ন ৫১৩টির সঙ্গে নতুন দায়ের হওয়া ১৫৯টি মিলিয়ে ফৌজদারি রিভিশন ছিল মোট ৬৭২টি, নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র ৩২টি, শতকরা হিসাবে নিষ্পত্তির হার মাত্র ৪.৭৬ শতাংশ। জামিন আর মামলা বাতিলের মিসকেস নিষ্পত্তিতেই (৪৯২টি) সময় গেছে, ফাঁকে রিট (দুদক যাতে কোনো ব্যবস্থা নিতে না পারে সেই প্রার্থনার) নিষ্পত্তি হয়েছে ৫.৮২ শতাংশ (৭৭৫টির মধ্যে নিষ্পত্তি ৪৪টি)। হাইকোর্টের পরে আবার আপিল বিভাগ তো আছেই। সাজা কার্যকর হয় না প্রায়ই।

পৃথক আদালত/ট্রাইব্যুনাল গঠন : দুর্নীতিবাজদের শাস্তি নিশ্চিত করতে যথাসময়ে বিচার নিষ্পত্তির কোনো বিকল্প নেই। সর্বোচ্চ ৬০ দিনের মধ্যে (৪৫ দিনে না পারলে আরও ১৫ দিনে অবশ্যই) স্পেশাল জজ আদালতে মামলার বিচার শেষ করার সময়সীমা আইনে নির্ধারিতও আছে। কিন্তু বাস্তবে শেষ হয় না বছরের পর বছর গেলেও। এ অবস্থায় আমি মনে করি, শুধু দুর্নীতির মামলা বিচারের এখতিয়ার দিয়ে সম্পূর্ণ পৃথকভাবে ঢাকায় ৩/৪টি এবং বাকি পুরোনো ১৮টি জেলায় একটি করে দুর্নীতি দমন আদালত/ট্রাইব্যুনাল নতুনভাবে সৃষ্টি করা দরকার। এজন্য দুদক আইনে প্রয়োজনীয় বিধানাবলি সংযোজন করা দরকার।

সিনিয়র স্পেশাল জজে কগনিজ্যান্স হয়ে বিচারের জন্য স্পেশাল জজ আদালতে মামলা আসার কালক্ষেপণ প্রক্রিয়া বাদ দিয়ে সৃজিতব্য এসব আদালত/ট্রাইব্যুনালের প্রত্যেকের স্থানীয় এখতিয়ারের এলাকা নির্দিষ্ট করে দিয়ে একই সঙ্গে কগনিজ্যান্স ও বিচারের ক্ষমতা দিতে হবে। এসব আদালত/ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল মাধ্যমে ভিডিও কনফারেন্সিং ব্যবস্থায় দ্রুত সাক্ষ্যপ্রমাণ গ্রহণের ব্যবস্থা রাখতে হবে। ডিজিটাল মাধ্যমে প্রাপ্ত/সংগৃহীত শব্দ, ছবি, লেখা ইত্যাদি এসব আদালত/ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্যপ্রমাণ হিসাবে গ্রহণের বিধান রাখতে হবে। মামলা নিষ্পত্তির সময়সীমা নির্ধারিত করে দিতে হবে বাধ্যতামূলকভাবে পালন করার মতো করে। মামলা নিষ্পত্তির আগে অন্তর্বর্তীকালে উচ্চ আদালতে আপিল-রিভিশন নিষিদ্ধের বিধান রাখতে হবে অর্থ ঋণ আদালত আইনের মতো করে। এরকম বিধান দুদক আইনে সংযোজন করা দরকার।

দুর্নীতিলব্ধ অর্থসম্পদ উদ্ধার : মামলায় সাজা হলে জরিমানা আদায় ও বাজেয়াপ্তি কার্যকর করার দায়িত্ব আর দুদকের হাতে থাকে না বিদ্যমান আইনে, চলে যায় জেলা প্রশাসকের কাছে; জরিমানা আদায় তাকে করতে হবে দেওয়ানি আদালতে ডিক্রি জারি মামলা করে (ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৮৬ ধারা)। গুরুত্বপূর্ণ এ বিশেষ কর্মসম্পাদনের জন্য জেলা প্রশাসকদের অফিসে বিশেষভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা নির্ধারিত নেই। এত ঘুরপথের কারণে জরিমানা আদায় ও বাজেয়াপ্তি কার্যকর হয় না মোটেও। অপরাধলব্ধ সম্পদ দণ্ডিত অপরাধীরাই বংশপরম্পরায় ভোগ করে চলে। তাই সাজার পরে জরিমানা আদায় ও বাজেয়াপ্তি কার্যকরের বাকি কার্যক্রমটুকুও সৃজিতব্য এসব আদালত/ট্রাইব্যুনালেই সম্পন্নের বিধান দুদক আইনে সংযোজন করতে হবে।

পৃথক আপিল আদালত/ট্রাইব্যুনাল গঠন : সরকারি কর্মচারী ও শ্রমিকদের চাকরির মামলার আপিলের জন্য হাইকোর্টের বাইরে পৃথকভাবে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল, শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল আছে। তেমনই দুর্নীতির মামলার সব কার্যক্রমের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি দ্রুততর করার জন্য হাইকোর্টের বিচারপতির যোগ্যতাসম্পন্ন বিচারকদের সমন্বয়ে পুরোপুরি পৃথক ২/৩টি দুর্নীতি দমন আপিল আদালত/ট্রাইব্যুনাল গঠন করা দরকার। আপিল বিভাগের রায়ে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালকে যেমন রিট এখতিয়ারের বিষয়েও হাইকোর্ট বিভাগের অনুরূপ ক্ষমতা নিশ্চিত করা হয়েছে, তেমন ক্ষমতা সৃজিতব্য এসব আপিল আদালত/ট্রাইব্যুনালকে দিতে হবে। এজন্য দুদক আইনে প্রয়োজনীয় বিধানাবলি সংযোজন করা দরকার।

দুর্নীতিবাজদের জনপ্রতিনিধি ইত্যাদি থাকার ও নির্বাচিত/মনোনীত হওয়ার অযোগ্যকরণ : সরকারি কর্মচারী ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত হলে তাকে সাময়িক বরখাস্ত রাখার বিধান আছে। সেটি দুর্নীতির অপরাধেও তাদের জন্য প্রযোজ্য। কিন্তু জনপ্রতিনিধি, রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক সংগঠনের কার্যকর কমিটি/বোর্ডের চেয়ারম্যান-পরিচালক-সদস্যদের সাময়িক অপসারণ/অব্যাহতির কোনো বিধান নেই। দুর্নীতির অপরাধে অভিযুক্ত হলে তাদেরও সাময়িক অপসারণ/অব্যাহতির এবং দণ্ডিত হলে সেই সাময়িক অপসারণ/অব্যাহতি চূড়ান্ত করা এবং দণ্ডাদেশ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তাদের নির্বাচিত/মনোনীত হওয়ার অযোগ্য করার বিধান করা প্রয়োজন। আপিলে দণ্ড স্থগিতের অজুহাতে নির্বাচিত/মনোনীত হওয়ার সুযোগ চিরতরে বন্ধ করা দরকার। গুটিকয় ব্যক্তির অধিকার/স্বার্থের চেয়ে সমগ্র জনগণের স্বার্থ অনেক বড়। ক্ষুদ্রতর স্বার্থে বদলে বৃহত্তর স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে।

কোনো অপরাধী অনুসন্ধানকালে বা তদন্তকালে বা বিচারকালে এমনকি, আপিলেও দোষ স্বীকার করলে কোনো কারাদণ্ড না দিয়ে (দোষ স্বীকারে উদ্বুদ্ধ করার জন্য) শুধু জরিমানা ও তার অপরাধলব্ধ অর্থসম্পদ বাজেয়াপ্ত করার এবং তাকে নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য জনপ্রতিনিধি/রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক সংগঠনের কার্যকর কমিটি/বোর্ডের চেয়ারম্যান-পরিচালক-সদস্য ইত্যাদি পদে থাকার ও নির্বাচিত/মনোনীত হওয়ার অযোগ্য করার বিধান করা দরকার। তাহলে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হবে এবং একই সঙ্গে আপিল-রিভিশনের ঝামেলা দূর হবে। এর ফলে ছোট ছোট দুর্নীতির তো বটেই, বড় বড় দুর্নীতির মামলারও দ্রুত চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করা যাবে। এজন্য দুদক আইনে প্রয়োজনীয় বিধানাবলি সংযোজন করা দরকার।

মঈদুল ইসলাম : কলামিস্ট, প্রবন্ধকার ও গ্রন্থকার; অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা জজ ও দুদকের সাবেক মহাপরিচালক

moyeedislam@yahoo.com

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম