Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

বাইফোকাল লেন্স

আন্তঃরাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ড ও বিশ্ব রাজনীতি

Icon

একেএম শামসুদ্দিন

প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

খালিস্তানের স্বাধীনতাকামী নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরকে হত্যার দায়ে কানাডা আবারও ভারতকে দোষারোপ করেছে। ১৩ অক্টোবর কানাডা সরকারের তদন্তকারী সংস্থা নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে ভারতীয় হাইকমিশনার সঞ্জয় কুমার বর্মার জড়িত থাকার কথা বলেছে। তদন্ত সংস্থা অবশ্য নিজ্জর হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার ব্যাপারে সঞ্জয় কুমার বর্মাকে কূটনৈতিক ভাষায় ‘স্বার্থ সম্পর্কিত ব্যক্তি’ বলে উল্লেখ করেছে। এ ঘোষণার ঠিক পরদিন ১৪ অক্টোবর কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘বিদেশি হস্তক্ষেপের অভিযোগ’ সংক্রান্ত কমিটিতে বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে ভারতের জড়িত থাকার তথ্যপ্রমাণ দেওয়া হলেও নয়াদিল্লি তা অস্বীকার করছে।’ ভারত তাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করছে বলেও ট্রুডো অভিযোগ করেন। ভারত কানাডার এ অভিযোগকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অযৌক্তিক’ বলেছে। কানাডার তথ্যপ্রমাণ দেওয়ার কথা অস্বীকার করে ভারত উলটো অভিযোগ করেছে, বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও কানাডা সরকার নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে ভারতের জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ দেখায়নি। ভারত কানাডার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করলেও যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য কানাডার পক্ষ নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত গুরুতর। ভারতকে বিষয়টি গুরুত্ব দিতে হবে। কিন্তু ভারত সে পথে যায়নি। ওদিকে কানাডার বিচারব্যবস্থায় পূর্ণ আস্থাশীল জানিয়েছে যুক্তরাজ্য। এ ঘটনার জেরে কানাডা ভারতের হাইকমিশনার সঞ্জয় কুমার বর্মাসহ ছয়জন ভারতীয় কূটনীতিককে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় ভারতও পালটা একই ব্যবস্থা নিয়েছে।

মার্কিন সংবাদপত্র দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, কিছুদিন আগে সিঙ্গাপুরে কানাডার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা নাটালি ড্রোনিনের সঙ্গে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের এক গোপন বৈঠক হয়। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে বৈঠক করেন কানাডা-ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টারা। কানাডার উপদেষ্টা ভারতীয় কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে পাওয়া সব প্রমাণ দোভালের কাছে তুলে দেন। ওই বৈঠকে কানাডার প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, তদন্ত করতে গিয়ে যেসব প্রমাণ তাদের তদন্তকারী কর্মকর্তাদের হাতে এসেছে, তা থেকে স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে, হরদীপ সিং নিজ্জরকে হত্যা এবং অন্যান্য শিখদের ওপর হামলার জন্য ভারতের মহারাষ্ট্রের সাবেক মন্ত্রী বর্ষীয়ান নেতা বাবা সিদ্দিকির হত্যাকারী বহুল আলোচিত লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের মতো কুখ্যাত সন্ত্রাসীর বেশকিছু সদস্যকে কাজে লাগিয়েছে ভারত। তাদের অভিযোগ, ভারতের উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা কানাডায় খালিস্তানপন্থিদের দমনে ভয়ংকর সন্ত্রাসীদের সাহায্য নিচ্ছে। তারা আরও অভিযোগ করেন, দক্ষিণ এশিয়ার কমিউনিটিকে, বিশেষ করে খালিস্তানপন্থি কার্যকলাপে টার্গেট করার জন্য এ সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর সাহায্য নিচ্ছে ভারত। ওই বৈঠকে কানাডার তরফে ভারতকে জানানো হয়, ছয়জন ভারতীয় কূটনীতিকের বিরুদ্ধেও শিখদের হত্যা বা হুমকি দেওয়ার প্রমাণ মিলেছে। এতদসংক্রান্ত যাবতীয় প্রমাণ হস্তান্তর করার পরও মানতে চাননি ভারতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা দোভাল। প্রথমে লরেন্স বিষ্ণোইকে চিনতেই চাননি দোভাল। তবে পরে মেনে নেন, জেলে বসেও যে কোনো স্থানে হিংসাত্মক তৎপরতা চালানোর ক্ষমতা রাখে এ কুখ্যাত গ্যাংস্টার। তবে কলকাতা থেকে প্রকাশিত বাংলা পত্রিকা সংবাদ প্রতিদিনে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভারতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা দোভাল সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘প্রমাণ যাই থাকুক না কেন, কানাডায় কোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রমে ভারতের যুক্ত থাকার দাবি মানা হবে না।’ এর আগেও একাধিকবার কানাডার অভ্যন্তরে হিংসা ছড়ানোর প্রশ্নে ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে কানাডা। ভারত তা বরাবরের মতো অস্বীকার করে আসছে। ওয়াশিংটন পোস্ট দাবি করেছে, পর্যাপ্ত প্রমাণ নিয়েই ভারতের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন কানাডার প্রতিনিধিরা।

আন্তঃরাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ডে ভারত জড়িত কিনা, এ নিয়ে আগেও অনেকবার প্রশ্ন উঠেছিল। ভারত শুধু কানাডায় নয়, যুক্তরাজ্যে ও পাকিস্তানেও এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহ করা হয়েছিল। গত বছর বিশ্বের নানা প্রান্তে খালিস্তান আন্দোলনের বেশ কয়েকজন নেতার রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে অভিযোগের আঙুল ভারতের বিরুদ্ধে তোলা হয়েছিল। তাৎক্ষণিক কূটনৈতিক তৎপরতার জন্য সেসব ঘটনা ধামাচাপা দিতে পারলেও কানাডার সাম্প্রতিক অভিযোগ থেকে ভারত নিজেদের কীভাবে রক্ষা করে, এখন তা দেখার বিষয়। ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, হরদীপসহ তিনজন শিখ নেতা গত বছরের মে-জুন মাসে মাত্র ৪৫ দিনের ব্যবধানে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। ২০২৩ সালের ৬ মে পাকিস্তানের লাহোরে গুলি করে হত্যা করা হয় খালিস্তানপন্থি কমান্ডো ফোর্সের প্রধান পরেন্জিৎ সিং পানজোয়ারকে। এরপর ১৪ জুন ব্রিটেনের একটি হাসপাতালে খালিস্তান লিবারেশন ফোর্সের প্রধান অবতার সিং খান্ডার রহস্যজনকভাবে নিহত হন। খালিস্তান আন্দোলনের সমর্থকদের অভিযোগ, এ দুটো হত্যাকাণ্ডেই ভারতের হাত রয়েছে। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ভাড়াটিয়া গুণ্ডা ব্যবহার করেছে বলেও তারা অভিযোগ করেছিল। কানাডার তদন্ত সংস্থার তদন্তে হরদীপ হত্যাকাণ্ডে গাংস্টার বিষ্ণোইকে ব্যবহারের যে তথ্য বেরিয়ে এসেছে, তাতে খালিস্তান আন্দোলনের সমর্থকদের অভিযোগ সত্য বলে ধরে নেওয়া যায়।

হরদীপ নিজ্জরকে হত্যার পর যুক্তরাষ্ট্রে আরেক খালিস্তানপন্থি নেতা গুরপতবন্ত পান্নুনকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল ভারতের বিরুদ্ধে। এ হত্যাচেষ্টা নস্যাৎ করে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করেছে, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর পরিকল্পনায় এ হত্যাচেষ্টা করা হয়েছিল। ‘র’-এর পরিকল্পনায়ও একজন ভাড়াটিয়া ঘাতক নিয়োগ করা হয়েছিল। ভাড়াটে ঘাতক নিয়োগ দেওয়ার জন্য ‘র’-এর কর্মকর্তা বিকাশ যাদব, ২০২৩ সালের মে মাসে নিখিল গুপ্ত নামের একজনকে দায়িত্ব দেন। পান্নুনকে হত্যার জন্য নিউইয়র্কের তার ঠিকানা, ফোন নম্বর ও প্রতিদিনের কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত তথ্য নিখিল গুপ্তকে দিয়েছিলেন বিকাশ। তিনি নিখিলকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, ওই বছর ২০ জুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যুক্তরাষ্ট্র সফরের দিন বা এর পরের দিনগুলোতে পান্নুনকে যেন হত্যা না করা হয়। নিখিল ভুল করে এমন একজনকে ভাড়া করেছিলেন, যিনি আসলে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা ড্রাগ অ্যানফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের একজন ছদ্মবেশী কর্মকর্তা। ফলে পান্নুনকে হত্যার ‘র’-এর পরিকল্পনা ফাঁস হয়ে যায়। ফাঁস হওয়ার পরপর বিকাশ যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করে ভারতে চলে যান। নিখিল যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করলেও চেক প্রজাতন্ত্রে আটক হন। পরবর্তীকালে নিখিলকে যুক্তরাষ্ট্রে এনে বিচার বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ হত্যা পরিকল্পনায় ‘র’-এর জড়িত থাকার খবর প্রকাশ পাওয়ায় ভারত বিপাকে পড়ে যায়।

গত ১৭ অক্টোবর খালিস্তানপন্থি নেতা পান্নুন হত্যা পরিকল্পনার জন্য ‘র’ কর্মকর্তা বিকাশ যাদবকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ৩৯ বছর বয়সি বিকাশ যাদব ‘র’-এর সিনিয়র ফিল্ড অফিসার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। গোয়েন্দা তৎপরতা চালাতে গিয়ে কোথাও ধরা পড়লে, যে দেশ ও সংস্থার হয়ে কাজ করছেন, তাদের বদনাম হবে ভেবে তিনি একটি মুসলিম ছদ্মনাম ধারণ করেছিলেন। তার মুসলিম ছদ্মনামটি ছিল ‘আমানত’। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই হত্যা পরিকল্পনায় নিজেদের সংশ্লিষ্টতা এড়ানোর জন্য ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণবীর জয়সওয়াল ১৭ অক্টোবর জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ যে ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করেছে, তিনি এখন আর ভারত সরকারের কর্মচারী নন। লক্ষণীয় বিষয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ‘র’-এর কর্মকর্তা উল্লেখ না করে এখানে ‘সরকারি কর্মচারী’ উল্লেখ করেছেন। যদিও ‘র’ ভারতের একটি সরকারি সংস্থা। সে অর্থে সরকারি কর্মচারী বলতেই পারেন। তবে তার বক্তব্য থেকে নিশ্চিত হয়, বিকাশ যাদব সরকার নিয়োজিত একজন কর্মকর্তা ছিলেন। হত্যা পরিকল্পনা ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর তার চাকরিটি হয়তো খারিজ হয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্র প্রথম যখন, পান্নুন হত্যা পরিকল্পনার অভিযোগ করেছিল, তখন ভারত সে অভিযোগ সরাসরি নাকচ করে দেয়নি। ভারত তখন বলেছিল, ‘র’-এর গোয়েন্দাদের জড়িত থাকার যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা নিয়ে তারা অভ্যন্তরীণ তদন্ত চালাবে। সঙ্গে এ-ও জুড়ে দিয়েছিল, ‘পান্নুন হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনার সঙ্গে যদি কোনো ভারতীয় নাগরিক জড়িতও থাকেন, তিনি সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশপ্রাপ্ত নন।’ এ বক্তব্য থেকে স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে, পান্নুন হত্যাচেষ্টাকে তারা একেবারে অস্বীকারও করছে না। এ বিষয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত করবে বললেও সে তদন্ত আদৌ হয়েছে কিনা অথবা হয়ে থাকলে তদন্তের ফলাফল কী, ভারত তা আজও প্রকাশ করেনি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে বিদেশি একটি গোয়েন্দা সংস্থা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিককে হত্যা করবে, এ বিষয়টি তারা মোটেও হালকাভাবে নেয়নি। মার্কিন কোনো নাগরিকের বিরুদ্ধে বিদেশি নাগরিকদের তৎপরতা সহ্য করবে না বলে ওয়াশিংটন ঘোষণা দিয়েছে। ভারত যতই অস্বীকার করুক, এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায় ভারত জড়িত ছিল না, যুক্তরাষ্ট্র তা মানতে রাজি নয়। গত সেপ্টেম্বরে মার্কিন সংবাদপত্র ওয়াশিংটন পোস্ট দাবি করেছে, পান্নুন হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছিলেন তৎকালীন ‘র’ প্রধান সামন্ত গোয়েল। তারা আরও দাবি করেন, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল বিষয়টি জানতেন। এ কারণে গত সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের আদালত পান্নুন হত্যা ষড়যন্ত্র মামলায় তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, ‘র’-এর সাবেক প্রধান সামন্ত গোয়েল, বিকাশ যাদব ও নিখিল গুপ্তকে তলব করেছিল।

খালিস্তানপন্থি নেতা গুরপতবন্ত সিং পান্নুন হত্যা ষড়যন্ত্র নিয়ে ঘরের ভেতরও স্বস্তিতে নেই মোদি সরকার। পান্নুন হত্যা পরিকল্পনায় মোদি সরকারের ভূমিকা নিয়ে এবার খোদ ভারতের সংসদেই প্রশ্ন উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে এ হত্যার চেষ্টায় ‘র’-এর কোনো ভূমিকা আছে কিনা, সে বিষয়ে সংসদে মোদি সরকারের বিবৃতির দাবি উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে হত্যা পরিকল্পনায় জড়িত থাকা প্রমাণিত হওয়ায় তদন্তকারী সংস্থা এফবিআই, ‘র’-এর সাবেক কর্মকর্তা বিকাশ যাদবকে ‘মোস্টওয়ান্টেড’ ঘোষণা করেছে। ওদিকে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক বি গারল্যান্ড শুনানি চলাকালে আদালতকে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের নিশানা করা এবং তাদের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দেওয়ার মতো কাজ বরদাশত করবে না বিচার বিভাগ। এ দেশের নাগরিকদের অধিকার খর্ব করার মতো কাজ করা হলে সেটাও বরদাশত করা হবে না। এর পরেই পান্নুন হত্যা ষড়যন্ত্র নিয়ে মোদি সরকারের বিবৃতির দাবি উঠতে শুরু করেছে ভারতীয় সংসদে।

বিশ্বে এ ধরনের আন্তঃরাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ড এই প্রথম নয়। এর আগেও এমন অনেক রহস্যজনক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এসব হত্যাকাণ্ডের একেক ঘটনায় একেক রকম বিশ্লেষণ হতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ইসরাইলের বিরুদ্ধেও এমন অভিযোগ রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ভিন্নমতাবলম্বীদের গুলি করে কিংবা বিষ প্রয়োগে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে এ দেশগুলোর বিরুদ্ধে; যদিও এ হত্যাকাণ্ডের অনেক অভিযোগই তারা প্রত্যাখ্যান করেছে অথবা স্বীকারই করেনি। বাংলাদেশেও ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাযজ্ঞে ‘র’-এর সম্পৃক্ততা নিয়ে অনেক কথাই ভেসে বেড়াচ্ছে। যদিও এ নিয়ে অনেকেই অভিযোগের আঙুল ওই দিকেই নির্দেশ করছেন, তবে তা প্রমাণসাপেক্ষ। পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত করা হবে বলে সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ঘোষণা করেছেন। তদন্ত কমিটি গঠন হওয়ার পর এমন কোনো তথ্য যদি বেরিয়েও আসে, আশ্চর্য হব না।

একেএম শামসুদ্দিন : অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা ও কলাম লেখক

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম