মিঠে কড়া সংলাপ
চিকিৎসাক্ষেত্রে কিছু হতাশার চিত্র
ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন
প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
১৭ কোটি মানুষের এ দেশে এখন পর্যন্ত চিকিৎসাব্যবস্থা সন্তোষজনক নয়। দেশের সাধারণ মানুষ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা বলতে যা পান, বর্তমান বিশ্বের গড় চিকিৎসাব্যবস্থার সঙ্গে তুলনা করলে তা হতাশাজনক। একেকটি সরকারি হাসপাতালের দিকে তাকালেই সে কথাটির প্রমাণ মেলে; প্রতিদিন আগত রোগীর সংখ্যার সঙ্গে সেখানকার ডাক্তার, নার্সসহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা মিলিয়ে দেখলেই বোঝা যায় রোগীরা কীভাবে কতটুকু চিকিৎসা সুবিধা পান। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যেসব রোগী চিকিৎসা পেতে আসেন, সেই অনুপাতে ডাক্তার না থাকায় বা প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র না পাওয়ায় আগত অধিকাংশ রোগীই হতাশ হয়ে পড়েন এবং আশপাশে থাকা দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে যেতে বাধ্য হন। আর মফস্বল শহরের সরকারি হাসপাতালগুলোয় তো এটা একটা পাকাপোক্ত রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, সরকারি হাসপাতালের প্রায় প্রত্যেক ডাক্তারই হাসপাতালের চেয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে বেশি সময় ও মনোযোগ দিয়ে থাকেন। আবার এ শ্রেণির ডাক্তারদের অনেকেই সরকারি হাসপাতালের আশপাশেই নিজেদের মালিকাধীন ক্লিনিক গড়ে তুলে সেখানে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যান। আর তাদের মনোনীত দালালরা সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে সেসব ক্লিনিকে নিয়ে যান এবং সে ক্ষেত্রে রোগীদের বোঝানো হয়, সরকারি হাসপাতালে ভালো চিকিৎসা পাওয়া যাবে না!
উপরের তথ্যগুলো আমাদের সবারই জানা। কারণ, এসব ঘটনা বহুবার বহুভাবে বিভিন্ন মিডিয়ায় সবিস্তারে প্রকাশিত হয়েছে। সুতরাং, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তথা স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তাব্যক্তিরা বিষয়টি জানেন না, এমনটিও নয়। কিন্তু তারপরও এদেশে যুগ যুগ ধরে চিকিৎসাক্ষেত্রে এমনসব অব্যবস্থাপনা অব্যাহত আছে। চিকিৎসা খাতে প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করা সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত কোনো সরকারের পক্ষেই এ ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে কোটি কোটি টাকার ওষুধ লোপাটসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্রয়ে সীমাহীন দুর্নীতির ফলে সাধারণ মানুষ চিকিৎসাবঞ্চিত হয়েছেন এবং হচ্ছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একশ্রেণির ঠিকাদার স্বাস্থ্য বিভাগে ওষুধ সরবরাহের নামে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা লুটে নিয়েছেন। স্বাস্থ্য বিভাগের সামান্য একজন কর্মচারী এবং তার স্ত্রী মিলে কয়েকশ কোটি টাকা লুটে নিয়েছেন বলে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এ অবস্থায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি, সড়ক বিভাগ ইত্যাদি সংস্থার মতো পাল্লা দিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগেও সরকারি অর্থ হরিলুট করা হয়েছে; সাধারণ মানুষের চিকিৎসাসেবায় ব্যয়কৃত সরকারি অর্থও রাজনীতি করে খাওয়া লুটেরাদের পকেটে ঢুকেছে। আর দুঃখজনকভাবে এক শ্রেণির ডাক্তারও এসব লুটতরাজে অংশগ্রহণ করে ডাক্তারি পেশার অবমাননা করেছেন; মেডিকেল সনদ গ্রহণকালে তারা যে শপথ গ্রহণ করেছিলেন, সে শপথ তারা ভঙ্গ করেছেন! অন্যথায় জেলায় জেলায় সরকারি হাসপাতালে ওষুধ চুরির ঘটনা ঘটত না, সরকারি হাসপাতালগুলোয় বিভিন্ন মেডিকেল সরঞ্জাম ক্রয়ে এত দুর্নীতির ঘটনা ঘটত না, ওষুধ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বা ঠিকাদার ওষুধ সরবরাহ না করেই বা নিম্নমানের ওষুধ সরবরাহ করে শত শত কোটি টাকার বিল তুলে নিতে পারত না। অথচ এতদিন ধরে তেমনটিই ঘটেছে। কারণ, আমাদের দেশের একশ্রেণির ডাক্তার রাজনৈতিক লুটেরাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তারাও রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করে ডাক্তারি পেশাকে কলঙ্কিত করেছেন। বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তারাও রাজনৈতিক ময়দানে আবির্ভূত হয়েছেন এবং ক্ষেত্রবিশেষে তা more catholic than pope-এর মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বেশ কিছুদিন হলো, একদিন সকাল ১০টার পর আমি আমার পূর্বপরিচিত একজন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বাসায় তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে নারী-পুরুষ মিলে সেখানে প্রায় একশজন ডাক্তারের উপস্থিতি দেখতে পাই! সে অবস্থায় ডাক্তারদের ভিড়ের মধ্যে মন্ত্রী সাহেবের সান্নিধ্যে যাওয়াই আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছিল না; এমনকি তাকে ঠিকমতো দেখতে পর্যন্ত পাচ্ছিলাম না। কারণ, তাকে ঘিরে থাকা ডাক্তাররা সবাই নিজ নিজ পদ-পদায়নসহ বিবিধ বিষয়ে মন্ত্রীর সুপারিশ গ্রহণের জন্য তাকে এমনভাবে ঘিরে ধরেছিলেন, তার সন্নিকটবর্তী হওয়া আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছিল না। এ অবস্থায় অন্য একদিন আসব, কোনোমতে এ কথাটি বলেই সেদিন আমাকে চলে আসতে হয়েছিল। অথচ যে সময়ে ডাক্তার সাহেবরা মন্ত্রীর বাসায় গিয়েছিলেন, সে সময়ে নিজ নিজ কর্মস্থলে তাদের উপস্থিত থাকার কথা।
প্রায় সমসাময়িক সময়েরই পাবনা সদর হাসপাতালের একটি ঘটনার কথা বলি। ছোটখাটো একটি দুর্ঘটনায় এক ব্যক্তির ডান কাঁধের জয়েন্ট খুলে যাওয়ায় (shoulder joint dislocation) তার কাঁধ ফুলে যায় এবং যন্ত্রণাকাতর অবস্থায় তাকে সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত অর্থোপেডিক সার্জন তাকে একনজর দেখে সেখান থেকে চলে গেলে পরে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না! এদিকে কাঁধের ব্যথায় রোগীটি ছটফট করতে থাকেন। সে অবস্থায় সেখানে কর্মরত আমার পরিচিত ‘বেলাল’ নামে একজন স্টাফকে সংশ্লিষ্ট ডাক্তার কোথায় গেলেন জিজ্ঞেস করায় তিনি বললেন, ‘পাশেই তার নিজস্ব ক্লিনিক আছে, সেখানে রোগীকে নিয়ে গেলে চিকিৎসা পাবেন’। জবাবে আমি কিছুটা প্রতিবাদ তথা ধমক দিয়ে উঠলে আশপাশ সচকিত হয়ে ওঠে এবং দয়াপরবশ হয়ে একজন অভিজ্ঞ ব্রাদার এগিয়ে এসে রোগীর হাত উঁচিয়ে ধরে কেমন যেন একটি কায়দা করে চাপ দিলেন আর সঙ্গে সঙ্গে রোগী চিৎকার করে উঠলেন এবং তার শোল্ডার জয়েন্ট ঠিক হয়ে গেল। এ অবস্থায় রোগীকে তিনি ব্যথানাশক ওষুধ খেতে বলে আমাদের চলে আসতে বলেন। সে দিনের সেই ব্রাদারের মহানুভবতা এবং সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের নিষ্ঠুরতা কোনোদিনই আমি ভুলতে পারব না। কারণ, সামান্য কিছু অর্থের লোভে ডাক্তার সাহেব সেদিন বেলাল নামক কর্মচারীকে ইঙ্গিত দিয়ে যেভাবে হাসপাতাল ত্যাগ করে নিজের ক্লিনিকে চলে গিয়েছিলেন, তেমন নিষ্ঠুরতা সহ্য করা যায় না। জানি না আজও এমন কোনো অর্থলোভী ডাক্তার আমাদের দেশের কোনো হাসপাতালে আছেন কিনা।
আমার জানা ভালো-মন্দ এমন আরও কিছু ঘটনা উল্লেখ করার ইচ্ছা থাকলেও স্থানাভাবে তা সম্ভব নয়। তবে অতি সাম্প্রতিক দেখা আরও দুটি ঘটনা অতি সংক্ষেপে তুলে ধরেই আজকের লেখাটি শেষ করব। কারণ, আমাদের দেশের চিকিৎসাব্যবস্থা সংক্রান্ত এ দুটি ঘটনাও দেশের মানুষ এবং সরকারের জানা উচিত।
এ বয়সেও নিয়মিত পড়ালেখা করি বলে চোখের নানা সমস্যায় ডাক্তার দেখাতে হয় বলে প্রায় এক বছর আগে দেশের সর্বাপেক্ষা নামি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চোখ দেখাতে গিয়েছিলাম। সেখানকার ভিসি সাহেবের সঙ্গে পূর্বালাপের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি তার ভিজিটিং কার্ড দিয়ে যেতে বলায় একদিন সকালে তার অফিস কক্ষে গিয়ে দেখি সেখানে এলাহি কারবার। তখনো ভিসি সাহেব না এলেও তার রুম ও বারান্দায় ডাক্তার এবং ভিজিটর মিলে প্রায় চল্লিশজন মানুষের অবস্থান। অতঃপর কিছুক্ষণ পর ভিসি সাহেব এলে ডাক্তার সাহেবরা তাদের একেকটি সুপারিশ, আব্দার ভিসি সাহেবের সামনে তুলে ধরলেন এবং তাদের কথা শেষে আমরা কথা বলতে গেলে তখনো ডাক্তার সাহেবরা সেখানে ঠাঁই দাঁড়িয়ে রইলেন। সে অবস্থার এক ফাঁকে আমাকে আসতে বলেছিলেন বলায়, ভিসি সাহেব আমাকে অনেকটা না চেনার মতো ভাব দেখিয়ে একজন জুনিয়র ডাক্তারের ওপর আমাকে ন্যস্ত করায় আমি বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালাম। কিন্তু আধাঘণ্টা পার হলেও সেই ডাক্তার সাহেব ভিসির রুম থেকে বের হচ্ছেন না দেখে আমি ভেতরে ঢুকে দেখলাম এবং শুনলাম, ভিসি সাহেব উপস্থিত ডাক্তারদের উদ্দেশে সেদিন যেসব ভিআইপি এবং তাদের আত্মীয়স্বজন আসবেন, তাদের স্পেশাল সার্ভিস প্রদানের নির্দেশনা দিচ্ছেন। সে অবস্থায় আমি আবারও ডাক্তার সাহেবের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি আবারও আমাকে বারান্দায় গিয়ে অপেক্ষা করতে বললেন। আমি আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে চলে আসব ভাবছি, এমন সময় সেই জুনিয়র ডাক্তার সাহেব বেরিয়ে আমাকে নিয়ে হন্তদন্ত হয়ে অন্য একটি ফ্লোরের দেওয়ালের রংচটা একটি কক্ষে চোখ পরীক্ষার অতি পুরোনো একটি যন্ত্রের সামনে আমাকে বসিয়ে আমার চোখ পরীক্ষা করতে থাকলেন। অথচ আমি এই ভেবে এসেছিলাম, বর্তমান অবস্থায় অত্যাধুনিক মেশিনে আমার চোখ পরীক্ষা করা হবে। কিন্তু সেদিন জীর্ণ একটি কক্ষে অতি পুরোনো মেশিনের সাহায্যে আমার চোখ পরীক্ষা করা হয়েছিল এবং তাতে আমি ব্যথিত হয়েছিলাম। কারণ আমি নিশ্চিত, ২০২৩ সালে সেখানে নতুন বা উন্নততর চোখ পরীক্ষার মেশিন ছিল, যা আমার ভাগ্যে জোটেনি! কারণ, আমি ভিআইপি বা ভিভিআইপি নই। অথচ সব সরকারই গলাবাজি করে বলে থাকে, ‘মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান’। কথাটি এখানে বলার কারণ হলো, সেদিন বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে যা দেখেছি, শুনেছি, তাতে করে মনে হয়েছে, সেদিনের ভিসি সাহেবও একজন সুপার পলিটিশিয়ান এবং সে কারণেই তিনি ভিসি হতে পেরেছিলেন। এ অবস্থায় অতঃপর এ ধরনের কোনো ব্যক্তি যাতে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ইত্যাদিতে ভিসি, প্রিন্সিপাল নিয়োগ লাভ না করেন, সে বিষয়টির প্রতি যাতে বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ সরকার দৃষ্টি রাখে, সে কারণেও কথাগুলো এখানে উল্লেখ করলাম।
আগারগাঁওয়ে অবস্থিত আমার দেখা জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট সম্বন্ধে কিছু বলেই লেখাটি শেষ করব। কয়েকদিন আগে সেখানে গিয়ে দেখি লোকে লোকারণ্য। নিচতলায় এবং সামনের পোর্টিকো মিলে হাজারখানেক লোকের গাদাগাদি। ৫/৬টি লাইনে শত শত লোক টিকিট কাটার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং কয়েকজন আনসার তাদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন। নিজ প্রয়োজনে সেখানে গিয়ে প্রমাদ গুনলাম! দোতলায় গিয়ে হাসপাতাল পরিচালক সাহেবকে মানুষের ভোগান্তির কথা বললাম। ভদ্রলোক মনোযোগ দিয়ে আমার কথা শুনে বললেন, আগত রোগীদের তুলনায় সেখানে ডাক্তার, নার্স, ইসিজি মেশিন, প্যাথলজিক্যাল সুবিধা ইত্যাদি সবই অপ্রতুল। জবাবে আমি বললাম, এভাবে এত রোগী সামাল দেওয়া তো আসলেই অসম্ভব। অতঃপর আমি আরও কিছুটা ঘোরাঘুরি করলাম; কারণ, এখানেই আমার চোখের ছানি অপারেশন করানো হবে; যা হোক, ঘুরতে ঘুরতে ইসিজি রুমে গিয়ে দেখলাম, সেখানেও লম্বা লাইন। টেকনিশিয়ান বললেন, সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিরামহীনভাবে প্রায় দেড়শ জনের ইসিজি করেছেন তিনি। আমি আবারও ফিরে গিয়ে পরিচালক মহোদয়কে বললাম, প্রতি এক মিনিটে একজনকে ইসিজি করা হচ্ছে, এভাবে চিকিৎসা চলে কী করে? ভদ্রলোককে অত্যন্ত সজ্জন বলেই মনে হলো, তিনি বললেন, এভাবেই চালিয়ে নিতে হচ্ছে। তবে সরকার যদি এখানকার ডাক্তার, টেকনিশিয়ান, নার্স বৃদ্ধিসহ আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে, তাহলে দেশের সাধারণ মানুষ, যারা এখানে চক্ষুসেবা নিতে আসেন, তারা উপকৃত হবেন। কারণ, সারা দেশ থেকে এখানে রোগী আসেন।
দেখেশুনে আমারও তাই মনে হলো, মনে হলো সীমিত সুযোগ-সুবিধায় এখানে প্রচুর রোগী চিকিৎসা পাচ্ছেন। আর এখানকার ডাক্তার সাহেবদেরও অপেক্ষাকৃত সেবাধর্মী বলে মনে হলো। এ অবস্থায় জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের প্রতি অবশ্যই সরকারের আশু দৃষ্টি দেওয়া উচিত। কারণ, উপচেপড়া ভিড়ের কারণে বর্তমান স্ট্রাকচারে সেখানে সুচিকিৎসা প্রদান ব্যাহত হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উচিত হবে এখানকার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা, উচিত হবে জরুরি ভিত্তিতে ইসিজিসহ প্যাথলজিক্যাল সুবিধা সম্প্রসারিত করা। অন্যথায় শত চেষ্টা সত্ত্বেও এখানকার পরিচালক, ডাক্তারসহ রোগী সেবায় নিবেদিত কেউই প্রতিষ্ঠানটির সুনাম ধরে রাখতে পারবেন না। দেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসাবে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, এমনকি মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাকে প্রতিষ্ঠানটি দশ মিনিটের জন্য হলেও পরিদর্শন করতে যেতে বলব। কেবল তখনই সমস্যাটি তারা বুঝতে পারবেন। অন্যথায় ঘরে বা অফিস রুমে বসে বসে দেশের মানুষের চিকিৎসাসেবা সন্তোষজনক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। মাঝেমধ্যে মাঠ পর্যায়ে এসে বাস্তব অবস্থা দেখারও প্রয়োজন আছে।
ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন : কবি, প্রাবন্ধিক, কলামিস্ট, বীর মুক্তিযোদ্ধা