বাইফোকাল লেন্স
পুলিশকে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে
একেএম শামসুদ্দিন
প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
পুলিশকে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে
“২৫ মার্চ কালরাতে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ঢাকা শহরে পরিচালিত বীভৎস পৈশাচিকতার অন্যতম লক্ষ্যস্থল ছিল রাজারবাগ পুলিশ লাইনস। সেই রাতে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের অকুতোভয় বীর পুলিশ সদস্যরা আকস্মিক আক্রমণে হতবিহ্বল না হয়ে থ্রি নট থ্রি রাইফেল দিয়ে যে প্রতিরোধ যুদ্ধের সূচনা করেন, তা বিশ্ব ইতিহাসে বিরল। রাজারবাগসহ ঢাকা শহরের অন্যান্য স্থান ও স্থাপনায় পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর আক্রমণের সংবাদ তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশের বেতারের মাধ্যমে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। দেশের সব পুলিশ লাইনসে শুরু হয় প্রতিরোধ যুদ্ধের প্রস্তুতি।...সীমিত সামর্থ্য নিয়েও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সুযোগ পায় পুলিশের অসীম সাহসী বীরযোদ্ধারা। রাজারবাগ পুলিশ লাইনস থেকে পুলিশের সেই অসম কিন্তু দুঃসাহসী প্রতিরোধ যুদ্ধ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের দীর্ঘ পরিক্রমাজুড়ে উদ্দীপনা জুগিয়ে গেছে।”
ওপরের এ বাক্যগুলো আমার নয়। আমি বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর থেকে প্রকাশিত ‘মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ’ নামক বইয়ের সম্পাদকীয় থেকে উদ্ধৃত করেছি। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে দখলদার পাকিস্তান সেনাবাহিনী রাজারবাগ পুলিশ লাইনস আক্রমণ করলে বাঙালি পুলিশ সদস্যরা যার যে অস্ত্র ছিল, তাই নিয়ে সে আক্রমণ প্রতিরোধ করে মুক্তিযুদ্ধের যে সূচনা করেছিল, তার ওপর ভিত্তি করে এই মূল্যবান তথ্যবহুল বইটি প্রকাশিত হয়। বইটিতে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি দখলদারদের বিরুদ্ধে বাঙালি গর্বিত পুলিশ সদস্যদের বীরগাথা বর্ণিত আছে। ট্যাংক ও আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে পশ্চাৎপদ, ধীরগতির থ্রি নট থ্রি এবং মার্ক ফোর রাইফেল দিয়ে অসীম সাহসী বাঙালি পুলিশ সদস্যরা জীবনবাজি রেখে বীরত্বের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা করেছিলেন, সেই প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী পুলিশ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শরীফ খান মোহাম্মদ আলীর ভাষায়, ‘পাকিস্তান বাহিনী যখন রাজারবাগ পুলিশ লাইনস চারদিক দিয়ে ঘিরে আক্রমণের জন্য এগিয়ে আসছিল, তখন পুলিশ লাইনসের চারশ বাঙালি সিপাহি বুকফাটা চিৎকারে রাজারবাগ কাঁপিয়ে বলছিলেন, অস্ত্র দাও। আমাদের হাতে অস্ত্র তুলে দাও, আমরা লড়ব, লড়তে লড়তে মরব, শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত লড়াই করব, কিছুতেই পিছু হটব না, হটব না’। টগবগে তরুণ বাঙালি পুলিশ সদস্যরা এমনভাবেই সেদিন শত্রুর মোকাবিলায় আত্মোৎসর্গ করেছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রায় ১৪ হাজার পুলিশ সদস্য সরাসরি অংশগ্রহণ করেছেন। যুদ্ধে ১১ শতেরও বেশি শহিদ হয়েছেন এবং চিরতরে পঙ্গুত্ববরণ করেছেন অনেকেই। এমনই ইস্পাতকঠিন যাদের মনোবল, এমনই গৌরবময় ইতিহাস যাদের, সেই বীর মুক্তিযোদ্ধা পুলিশ সদস্যদের নিয়ে গড়ে ওঠা বাংলাদেশ পুলিশের আজকের অবস্থা দেখে সত্যিই দুঃখ হয়। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যে সংগঠন গড়ে উঠেছে, তাদের পরিণতি যে এমন হবে তা কল্পনাও করা যায়নি। পুলিশের যে এত বড় সেট ব্যাক হবে, আগে থেকে কেউ কি ভেবেছিল? ৫ আগস্ট স্বৈরশাসকের পতনের পর যেভাবে পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনায় আক্রমণ হয়েছে, অস্ত্র-গোলাবারুদ লুটপাট হয়েছে, ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, পুলিশ সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, তা ছিল সব ধারণার বাইরে। পুলিশের প্রতি জনরোষের এত তীব্র বহিঃপ্রকাশ এর আগে কখনো দেখেনি কেউ।
প্রশ্ন হচ্ছে, পুলিশের এমন পরিণতি কেন হলো? এর জন্য দায়ী কে? পুলিশের আজকের অবস্থার জন্য কি পুলিশই দায়ী? নাকি অন্য কেউ? এসব প্রশ্নের উত্তর আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। যে পুলিশ সার্ভিসের মুক্তিযুদ্ধের মতো গৌরবগাথা আছে, যাদের জঙ্গিগোষ্ঠী দমনে সাফল্যের রেকর্ড আছে, দেশের দুর্যোগ-দুর্বিপাকে যে পুলিশ জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে, যে পুলিশের জনগণের বন্ধু হওয়ার কথা, সে পুলিশকে কেন এভাবে জনগণের মুখোমুখি করে দেওয়া হলো? আসলে স্বাধীনতার পর থেকেই ‘পুলিশকে পুলিশের মতো’ গড়ে তোলা হয়নি। স্বাধীনতার পর থেকে প্রতিটি রাজনৈতিক সরকার দলীয় স্বার্থে পুলিশকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করেছে। দলের প্রয়োজনে পুলিশকে নিজেদের লাঠিয়াল বাহিনীতে পরিণত করেছে। অথচ পুলিশের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেশে আইনের শাসন জারি রাখতে হলে পুলিশকে অবশ্যই নীতি-নৈতিকতা ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হয়। এ জন্য পুলিশকে রাজনৈতিক পক্ষপাতমুক্ত হতে হবে, যাতে কেউ রাজনৈতিক ফায়দা নিতে না পারে। জনগণ বাধ্য হয়েই পুলিশের কাছে যান, কিন্তু যে সাহায্যের আশায় পুলিশের কাছে যান, পুলিশ যদি সেভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে না দেয়, তখন পুলিশের প্রতি মানুষের আর আস্থা থাকে না। গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগ পুলিশকে যেভাবে ব্যবহার করেছে, তাতে দিনে দিনে পুলিশের ওপর জনগণ আস্থা হারিয়েছে।
যদিও দলীয় সব সরকারই রাজনৈতিক স্বার্থে পুলিশকে ব্যবহার করেছে, তবে গত তিনটি টার্মে আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশকে যেভাবে ব্যবহার করেছে, তা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। শেখ হাসিনা পুলিশকে নিজস্ব বাহিনী রূপে গড়ে তুলেছিলেন। ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার লক্ষ্য নিয়েই তিনি এ কাজটি করেছেন। বিগত দেড় দশকে পুলিশে রিক্রুটমেন্টের সময় আওয়ামী লীগ পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও দলীয় আদর্শে বিশ্বাসীদেরই পুলিশে নেওয়া হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তা হিসাবে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ ক্যাডারের লোকদেরই বাছাই করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, পুলিশের সৎ ও নিষ্ঠাবান কর্মকর্তাদের সরিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদে তাদেরই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পুলিশের সুযোগ-সুবিধা আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় বৃদ্ধি করা হয়েছিল। চাকরি শেষে আমৃত্যু রেশন দেওয়ার সুবিধাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, পুলিশের সংগঠনে ৭.৬২ সেমি অটোমেটিক রাইফেল ও লাইট মেশিনগানের মতো মারাত্মক মারণাস্ত্র অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যার কোনো প্রয়োজনই ছিল না। পৃথিবীর আর কোনো দেশের পুলিশ সার্ভিসে এ ধরনের মারণাস্ত্র ব্যবহারের প্রচলন নেই।
আসলে, তিনি পুলিশকে রক্ষীবাহিনীর আদলে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু যেমন সেনাবাহিনীর প্যারালাল রক্ষীবাহিনী গড়ে তুলেছিলেন, শেখ হাসিনাও পুলিশকে সেভাবেই গড়ে তুলেছিলেন। দেশের ভুক্তভোগী মানুষের সঙ্গে পুলিশের দুর্ব্যবহারের কথা বাদ দিলাম, সেনা সদস্যদের সঙ্গেও তারা দুর্ব্যবহার করতে পিছপা হতো না। ১৯৭২ সাল থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত সেনাবাহিনীর সঙ্গে রক্ষীবাহিনীর এমন অনেক অবাঞ্ছিত ঘটনার কথা শোনা গেছে। সেনা সদস্যদের সঙ্গে পুলিশের বাড়াবাড়ি, এমনকি যে কোনো তুচ্ছ বিষয় নিয়ে অসদাচরণ সেনাবাহিনীর ভেতর ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। সেনা কর্মকর্তাসহ সৈনিকদের সঙ্গে পুলিশের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের অনেক ঘটনা গণমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছে। পুলিশের এ ধরনের উচ্ছৃঙ্খল আচরণের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণে শেখ হাসিনাকে বেশ নমনীয় থাকতে দেখা গেছে, যা যুক্তিসংগত কারণেই সেনাসদস্যদের ভেতর ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পতিত সরকার পুলিশকে এত বেশি কর্তৃত্ব দিয়েছিল যে, পুলিশের কতিপয় সুবিধাভোগী কর্মকর্তা তার সম্পূর্ণ সুযোগ নিয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, শেখ হাসিনার সরাসরি আশকারা পেয়েই এসব কর্মকর্তা বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল। শেখ হাসিনার সরাসরি আশকারা পাওয়া কর্মকর্তারা ছিলেন, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও শহিদুল হক, সাবেক অ্যাডিশনাল আইজিপি মনিরুল ইসলাম, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান ও আছাদুজ্জামান মিয়া, ডিআইজি হারুন-অর-রশীদ ও ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার ও অ্যাডিশনাল ডিআইজি প্রলয় কুমার জোয়ারদার প্রমুখ। বিগত দেড় দশক ধরে তারা পুলিশি ক্ষমতার যথেচ্ছ ব্যবহার করেছেন। বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের কাছে এসব ব্যক্তি ছিলেন মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। দেশের থানাগুলো কোনোকালেই জনগণের ভরসার জায়গা হয়ে উঠতে পারেনি। বরং, কারও কারও কাছে ছিল একেকটি টর্চার সেল। এসব থানায় অসহায় মানুষকে আটকে রেখে জিম্মি করে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ আদায়ের অনেক কিচ্ছা-কাহিনি আমরা গণমাধ্যমে পড়েছি।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শেখ হাসিনা পুলিশকে যেভাবে ব্যবহার করেছেন, তাতে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা পুলিশের এক বিপরীত চরিত্র ফুটে উঠেছে। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বর্বর বাহিনী যেভাবে গুলি করে পাখির মতো বাঙালি মেরেছে, ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত পুলিশ সদস্যরাও গণঅভ্যুত্থানের অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতাকে ওই একই কায়দায় নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করেছে। কিছু ক্ষেত্রে তারা পাকিস্তানিদেরও হার মানিয়েছে। তাদের নিষ্ঠুরতা, নৃশংসতা এবং রক্ত হিম করা রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড বর্বরতার সব মাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে, যা দেখে সহ্য করা যায় না। ভাবতেও অবাক লাগে, একজন পুলিশ সদস্য কতটুকু বর্বর হলে একজন নাগরিক হয়ে নিজ দেশের আরেকজন নাগরিককে এমন নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করতে পারে। এ পর্যন্ত পরিসংখানে যা জানা গেছে তা হলো-এ যাবত ৬৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। ১৯ হাজারের ওপর আহত হয়েছেন। আন্দোলনে গুলিতে চোখ নষ্ট হয়েছে ৪০১ জনের। যেসব পুলিশ সদস্য হত্যাকাণ্ডে জড়িত, তাদের প্রত্যেককে খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। বর্তমানে পুলিশ পুনর্গঠনের যে প্রক্রিয়া চলছে, তার প্রথম পদক্ষেপই হওয়া উচিত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের মাধ্যমে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা। লক্ষ রাখতে হবে একজন খুনিও যেন বাদ না যায়।
রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে ছয়টি কমিশন গঠন করেছে, তার মধ্যে পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশন অন্যতম। ১২ আগস্ট দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত আমার লেখা একটি নিবন্ধে বলেছিলাম, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করে দ্রুত কাজ শুরু করে দিতে হবে। খুশি হয়েছি অন্তর্বর্তী সরকার এক মাসের মাথায় এ কমিশন গঠন করে দিয়েছে। এ কমিশনের প্রধান করা হয়েছে জনাব সফর রাজ হোসেনকে। সফর রাজ হোসেন একজন সাবেক আমলা। চাকরিকালীন মাত্র দেড় থেকে দুবছর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসাবে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে তার। এ অভিজ্ঞতা নিয়ে পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কাজে তিনি কতটুকু অবদান রাখতে পারবেন, তা নিয়ে সংশয় আছে। তার বদলে একজন সাবেক আইজিপিকে কমিশনের প্রধান করা হলে বরং ভালো হতো। পুলিশের দীর্ঘদিনের চাকরির অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি সংস্কার কাজটি আরও ভালোভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারতেন। উল্লেখ্য, ব্রিটিশ আমলে ১৮৬১ সালে প্রণীত আইন দিয়েই বাংলাদেশ পুলিশ চলছে। মূলত জনগণকে শাসন করার মানসিকতা থেকেই প্রণীত হয়েছিল ১৮৬১ সালের এ আইনটি। এটি পরিবর্তন করে যুগোপযোগী করা প্রয়োজন। পুলিশ প্রশাসন সংস্কার করতে গিয়ে নিচে উল্লেখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করা যেতে পারে। এগুলো হলো-‘সংবিধান ও জনগণের মনের কাঙ্ক্ষিত বিষয়গুলো যেন গুরুত্ব দেওয়া হয়। পুলিশকে সম্পূর্ণ রাজনীতিমুক্ত রেখে নিরপেক্ষতার সঙ্গে কাজ করার যেন সুযোগ সৃষ্টি হয়। কোনো সরকারই যেন রাজনৈতিক স্বার্থে পুলিশকে ব্যবহার করতে না পারে, সে পথ বন্ধের ব্যবস্থা করতে হবে। পুলিশের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা কঠোরভাবে প্রতিপালনের জন্য যথোপযুক্ত আইন প্রণয়ন করতে হবে এবং শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা থাকতে হবে।’ এখানে আরও একটি বিষয় বিবেচনা করা যেতে পারে। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ইউএনডিপির সহায়তায় বাংলাদেশ পুলিশের আধুনিকায়ন ও সংস্কারের জন্য ‘খসড়া পুলিশ অধ্যাদেশ-২০০৭’ শিরোনামে একটি প্রস্তাবনা উপস্থাপন করা হয়েছিল; সেটি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আর আলোর মুখ দেখেনি। সদ্য গঠিত পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশনের কাছে অনুরোধ রইল তারা যেন ‘খসড়া পুলিশ অধ্যাদেশ-২০০৭’ প্রয়োজনে কাজে লাগান।
একেএম শামসুদ্দিন : অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা