বাইফোকাল লেন্স
পুলিশকে জনবান্ধব করার জন্য দরকার ব্যাপক সংস্কার
একেএম শামসুদ্দিন
প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইল ছবি
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর প্রায় আড়াই দিন বাংলাদেশে কোনো সরকার ছিল না। এ সময়ে বিজয় উৎসবও যেমন উদযাপিত হয়েছে, পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের দ্বারা প্রায় ১৫ বছর ধরে নিষ্পেষিত ক্ষুব্ধ জনতার প্রতিশোধের ঘটনাও ঘটেছে। ফলে এক অভূতপূর্ব বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় সর্বত্র। এ সময় দেশে আইনশৃঙ্খলা বলতে কিছু ছিল না। লুটপাট, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, হত্যা, ডাকাতি, দেশে এক নৈরাজ্যের সৃষ্টি হয়। সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষের বাড়িঘর এবং উপাসনালয়ে আক্রমণও হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে পুলিশ নির্বিচারে গুলি করে তিন শতাধিক মানুষ হত্যার যে নৃশংসতা দেখিয়েছে, তার চেইন রিঅ্যাকশন হিসাবে থানা আক্রমণ, অগ্নিসংযোগ এবং পুলিশ সদস্যদের পিটিয়ে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে। দেশজুড়ে এ নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে পুলিশসহ আরও দেড় শতাধিক নাগরিকের জীবনহানি ঘটে, যা কোনোভাবেই কাম্য ছিল না। মানবসৃষ্ট এ মহাদুর্যোগের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন বিলম্বিত হওয়ায় মানুষের ভেতর এক ধরনের ভয় কাজ করছিল।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এযাবৎকালে, সবচেয়ে পরাক্রমশালী শাসক হিসাবে টানা পনেরো বছর শাসন করার পর ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। এতদিন তিনি যাদের ওপর ভর করে দেশ শাসন করেছেন, এ দুর্দিনে তাদের কেউই তাকে জনরোষ থেকে বাঁচাতে পারেনি। গত তিন মেয়াদে প্রথমেই তিনি যাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে ক্ষমতা হাতে নিয়েছিলেন, শেষ পর্যন্ত সেই ছাত্র-জনতাই তাকে ক্ষমতার আসন থেকে টেনে নামিয়েছে। শেখ হাসিনার এমন পরিণতি হবে, এক মাস আগেও কেউ কল্পনা করতে পারেননি। তার শাসনকালে দেশে এমন কোনো অপকর্ম নেই, যা হয়নি। এ অপকর্মগুলো এতই হীন ও ঘৃণিত ছিল, যা আওয়ামী লীগের শাসন আমলের সব অর্জন ও সাফল্যকে ঢেকে দিয়েছে। দেশের নাগরিকদের সঙ্গে, দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে তৃণমূল নেতাকর্মীরা এতই কর্তৃত্ববাদী আচরণ করেছেন, যার ফলে তাদের প্রতি অনেক আগে থেকেই সাধারণ মানুষের ভেতর ঘৃণা ও ক্ষোভ জমা হতে থাকে। দেশে স্বাভাবিক রাজনৈতিক চর্চা ছিল বন্ধ। বিরোধী রাজনৈতিক দলকে এক মুহূর্তের জন্যও মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে দেওয়া হয়নি। সরকারি-বেসরকারি প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ব্যবহার করে বিরোধী দলের শীর্ষ নেতা-নেত্রীদের চরিত্র স্খলন করে অবিরত মিথ্যাচার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে দমনপীড়ন করা হয়েছে, যা সুস্থ রাজনৈতিক চর্চার পথকে রুদ্ধ করেছে। বিরোধী মতাবলম্বীদের তুচ্ছতচ্ছিল্য, অপমান ও অপদস্ত করা সমাজের ভালো একটি অংশকে সরকারবিরোধী করে তুলেছে। ব্যাংক লুটতরাজ, অর্থ পাচার, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, স্বজনপ্রীতি, গুম-খুন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি ইত্যাদি দেশবাসীকে প্রচণ্ড ক্ষেপিয়ে তুলেছে; যার চূড়ান্ত বিস্ফোরণ ঘটে কোটাবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গণঅভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে। আন্দোলন চলাকালে শেখ হাসিনা তার পুলিশ দিয়ে শিশু-কিশোরসহ শত শত মানুষের জীবন কেড়ে নিয়ে এক নজিরবিহীন অধ্যায় রচনা করেছেন, এ উপমহাদেশের ইতিহাসে এমন দ্বিতীয় কোনো উদাহরণ নেই। এ কুকীর্তির মাধ্যমে তিনি বিশ্বের অপরাপর স্বৈরশাসকদের তালিকায় নিজের নাম লিখিয়েছেন।
৮ আগস্ট নোবেল তারকা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দেশের প্রথিতযশা ব্যক্তিত্বদের নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এ উপদেষ্টা পরিষদে। অন্য সব উপদেষ্টা যার যার ক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত। নবীন ও প্রবীণের সমন্বয়ে গঠিত এ সরকারের দেশ পুনর্গঠনে প্রচুর কাজ করতে হবে। আওয়ামী লীগ শাসনামলে ১৫ বছরে দেশের বিচার বিভাগ থেকে শুরু করে, নির্বাচন কমিশন, সিভিল প্রশাসন, পুলিশ, এমনকি সশস্ত্র বাহিনীসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে যেভাবে দলীয়করণ করা হয়েছে, এসব রিফর্ম করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেওয়া সময়সাপেক্ষ হবে বলে মনে হচ্ছে। তবে এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি দরকার দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনা। যদিও এ ক’দিনে সহিংসতা অনেকটা কমে এসেছে, তবুও নাগরিক জীবন এখনো নিরাপদ হয়নি। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থানা, পুলিশ ফাঁড়ি, পুলিশ লাইন ও কারাগার থেকে যেসব অস্ত্র লুট হয়ে গেছে, তা সমাজ ও মানুষের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর পুলিশ দৃশ্যত সম্পূর্ণ নেতৃত্বহীন হয়ে পড়েছিল। অভিযুক্তরা গা ঢাকা দিয়েছে। অধস্তন কর্মকর্তা ও সদস্যরা দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন। ভয়, আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছে পুলিশ সদস্যরা। ঢাকাসহ দেশের চার শতাধিক থানা ও পুলিশ স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের পর ৬ আগস্ট থেকে পুলিশের নন-ক্যাডারভুক্ত সদস্যরা কাজে যোগদান থেকে বিরত থেকেছেন। নতুন পুলিশ মহাপরিদর্শক ময়নুল ইসলাম যোগদানের পর এ লেখা যখন লিখছি, তখন পর্যন্ত সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় দেশের ৬৩৯টি থানার মধ্যে ৫৩৮টি থানায় সীমিত আকারে পুলিশের কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে। তবে এটি নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট নয়।
পুলিশের অধস্তন কর্মচারী সংগঠন ‘পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন’ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের গুলি করে হত্যা করার জন্য ক্ষমা চেয়ে বিবৃতি দিয়েছে। এর আগে নবনিযুক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শকও আন্দোলনের বিক্ষোভকে ঘিরে পুলিশের ভূমিকার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। শিক্ষার্থী হত্যার জন্য পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা এখন তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছেন। তারা দাবি করেছেন, কিছু পুলিশ কর্মকর্তার ব্যক্তিগত লোভ, দলকানা কর্মকাণ্ড ও ইউনিফর্ম গায়ে জড়িয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর কারণে মানুষের ক্ষোভ সঞ্চিত হয়েছে। সেই প্রবল ক্ষোভের শিকার হচ্ছেন নিরপরাধ ও সাধারণ পুলিশ সদস্যরা। তাদের ভাষায়, আন্দোলনরত মানুষকে সরাসরি গুলি করতে না চাইলেও সেটি করতে বাধ্য হয় সরকারদলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য। পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন পুলিশের সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ১১ দফা দাবি পেশ করে। দাবিগুলোর অধিকাংশই পুলিশের ওয়েলফেয়ারসংক্রান্ত হলেও এর মধ্যে দুটো দাবি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে। এ বিষয়ে আরও পরে আলোচনা করা যাবে। ৯ আগস্ট পুলিশের নতুন আইজি রাজারবাগ পুলিশ লাইনে বিক্ষুব্ধ পুলিশ সদস্যের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় যোগ দিলে, একজন কনস্টেবল যে অভিযোগ উত্থাপন করেছেন, তা বিশ্লেষণ করলেই এ আন্দোলনে পুলিশের নিুপদস্থ সদস্যদের ব্যবহারের একটি চিত্র পাওয়া যাবে। কনস্টেবল আইজিপির উদ্দেশে বলেন, ‘আমাদের গুলি করতে বলে সিনিয়র অফিসাররা সব জায়গা থেকে পালিয়ে যান। তারা পালিয়ে যাওয়ার আগে যদি আমাদের বলতেন, তোমরা সরে যাও, তাহলে আমাদের সহকর্মীরা জীবন বাঁচাতে পারতেন। এ ঘটনায় একজন সিনিয়র অফিসারও মারা যাননি। মারা গেছে সব আমার ভাই। কেন? এর উত্তর কে দেবে? পুলিশে জনগণের আস্থা নেই কেন?’
বিক্ষুব্ধ পুলিশ সদস্যরা সাফ জানিয়ে দেন, তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কাজে যোগ দেবেন না। পুলিশ সদস্যের এ দাবির পেছনে যুক্তি আছে। এ কথা ঠিক, শিক্ষাজীবনে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ করা কিছু ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার সরকারের তাঁবেদারির কারণে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে পুলিশ। এসব পুলিশ কর্মকর্তা সমাজে খুবই মুখচেনা। প্রায়ই তাদের বিভিন্ন মিডিয়ায় দেখা যেত। শোনা যায়, সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে তারা এতই ঘনিষ্ঠ ছিলেন, পুলিশের নীতিনির্ধারণী সিনিয়র কর্মকর্তারাও তাদের কাছে অসহায় ছিলেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সরকারপ্রধানের কাছ থেকে তারা আদেশ গ্রহণ করতেন। পুলিশ সদস্যদের অভিযোগ, এসব কর্মকর্তা সরকারকে বাঁচাতে আন্দোলনকারীদের ওপর বেপরোয়া গুলি চালানোর হুকুম দিয়েছেন। হুকুম তামিল করতে গিয়ে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি পালটাতে থাকলে সাধারণ মানুষ সরকারের বিরুদ্ধাচরণ ছেড়ে দিয়ে পুলিশকে প্রতিপক্ষ মনে করতে শুরু করে। এরই জের ধরে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পরপরই বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশ ও পুলিশের স্থাপনার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। প্রশ্ন হচ্ছে, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গুলি করতে বললেই যে অতিমাত্রায় বাড়াবাড়ি করতে হবে, এমন কথা নেই। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার আদেশ যদি আইনসম্মত না হয়, তাহলে পুলিশের যে কোনো সদস্য তা অগ্রাহ্য করতে পারেন। সে অধিকার তাকে দেওয়া আছে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে, ভিক্টিমকে গ্রেফতারের সুযোগ পেয়েও পয়েন্ট ব্লাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। অন্য আরেকটি ঘটনায়, কয়েকজন পুলিশ সদস্য একজন আন্দোলনকারীকে দৌড়ে ধরার পরও গায়ে রাইফেল ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে। এমনও দেখা গেছে, মারাত্মক আহত শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য না পাঠিয়ে পুলিশের এপিসি থেকে সরাসরি রাস্তায় সজোরে ছুড়ে ফেলে মেরে ফেলা হয়েছে। এসব ভিডিও এখনো নেট দুনিয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে।
আগেই উল্লেখ করেছি, পুলিশের ১১ দফা দাবির মধ্যে দুটো দাবি বেশ গুরুত্বপুর্ণ। এ দাবিগুলো হলো-‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশদানে সংবিধান ও জনগণের মনের কাঙ্ক্ষিত বিষয় প্রাধান্য দেওয়া এবং পুলিশকে রাজনৈতিকমুক্ত রেখে নিরপেক্ষতার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ নিশ্চিত করা। অপরটি হলো, পুলিশ সদস্যরা যাতে দ্রুততম সময়ে যে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে, সেজন্য বাংলাদেশ পুলিশ সংস্কার আইন প্রণয়ন করা।’ প্রায় এক দশক ধরে পুলিশ সার্ভিসে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভাবাদর্শের লোক যে হারে রিক্রুট করা হয়েছে, তাতে ব্যাপক সংস্কারের প্রয়োজন আছে বলেই মনে হয়। বর্তমানে পুলিশ যেভাবে পরিচালিত হচ্ছে, তাতে পুলিশকে সরকারি বাহিনীই মনে হয়। পুলিশকে তাই জনগণের কাছে নিতে হলে, প্রথমেই পুলিশ সম্পর্কে মানুষের ভেতর যে ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে, তা দূর করার জন্য ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। তার জন্য পুলিশের ভেতর ব্যাপক পরিবর্তন ঘটাতে হবে। এর জন্য প্রয়োজনে আইনের পরিবর্তন করতে হলে, তাই করতে হবে।
শুধু আইন পরিবর্তন করলেই চলবে না। পুলিশের ভেতর বর্তমানে যে প্রচলিত অনুশীলন চালু আছে, তারও আমূল পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে। পুলিশের ভেতরের দুর্বলতাগুলোকে চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় সংস্কারের ব্যবস্থা করতে হবে। পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল ও জনবান্ধব হবে, এমন সব প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের ব্যবস্থা করতে হবে। সাধারণ মানুষের প্রতি কীভাবে আচরণ করতে হবে, সে ব্যাপারে প্রতিনিয়ত কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা চালু করতে হবে। মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন, জনগণের অধিকার সংরক্ষণ এবং জনগণের গণতান্ত্রিক প্রত্যাশা পূরণে পুলিশের দায়িত্ব ও কর্তব্যগুলো সততার সঙ্গে প্রতিপালন করতে হবে। পুলিশকে পেশাগত দক্ষ, জনগণের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন এবং সম্পূর্ণ রাজনীতিমুক্ত হতে হবে। একইসঙ্গে দেশের আইন, আদালত ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ হতে হবে। পুলিশকে আরও শক্তিশালী ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে আলাদা ‘পুলিশ সংস্কার কমিশন’ গঠন করে এখনই কাজ শুরু করে দিতে হবে। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ইউএনডিপির সহায়তায় বাংলাদেশ পুলিশের আধুনিকায়ন ও সংস্কারের জন্য ‘খসড়া পুলিশ অধ্যাদেশ-২০০৭’ শিরোনামে একটি প্রস্তাবনা পুলিশের পক্ষ থেকে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে উপস্থাপন করা হয়েছিল, সেটি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আর আলোর মুখ দেখেনি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সেই ‘খসড়া পুলিশ অধ্যাদেশ-২০০৭’ পুনরায় যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।
একেএম শামসুদ্দিন : অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা