নীতি দুর্নীতি অর্থনীতি
সরকারি ব্যয় কমাতেই হবে
ড. আর এম দেবনাথ
প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আমাদের রয়েছে তিনটি বছর : বাংলা বছর, পঞ্জিকাবর্ষ ও অর্থবছর। শেষেরটি অর্থনৈতিকভাবে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সেই বছরটিই শুরু হয়েছে জুলাই মাসের ১ তারিখে। আজ ৭ তারিখ। দেখতে দেখতে চলে যাবে জুলাই মাস। চলে যাবে ঠিকই, কিন্তু পেছনে গেছে যে বছর, সে বছরটি আমাদের বিশেষ ভালো যায়নি। এ প্রেক্ষাপটেই জারি হয়েছে আমাদের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট, যার নাম ‘টেকসই উন্নয়নের পরিক্রমায় স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নযাত্রা’। নামের মধ্যে রয়েছে অনেক অর্থ। আমরা এসবে যাব না। আমরা দেখব কিছুটা অতীতকে, বাকিটা বর্তমান বছরকে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের আকার মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিলে প্রকৃত অর্থে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের তুলনায় ছোট। এর আগের কয়েকটি বাজেটের আকার ছিল উচ্চাভিলাষী। কিন্তু এবার তা নয়। ২০২৩-২৪-এর ৭ লাখ ১৪ হাজার ৪১৮ কোটি টাকার স্থলে এবার মাত্র ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট-মানে খরচের বাজেট। বোঝাই যায়, সরকার খরচের লাগাম টেনে ধরার চেষ্টা করছে। শুধু তাই নয়, সরকার সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি এবং সাবধানী বাণিজ্য নীতিও গ্রহণ করেছে। উদ্দেশ্য, প্রধান শত্রু মূল্যস্ফীতি রোধ করা। বড় বেশি উৎপাত মূল্যস্ফীতির। বস্তুত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের পুরোটাই গেছে এ শত্রুর উৎপাতে। একটি খবরে দেখলাম, গেল অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ। এটাও শেষ কথা নয়। এর ভেতরে আবার সর্বনাশা খবর হলো খাদ্য মূল্যস্ফীতির খরচ। এর পরিমাণ ১২-১৫ শতাংশ। গ্রামে আরও বেশি।
বস্তুত মূল্যস্ফীতির অত্যাচার শুরু হয়েছে, যেদিন থেকে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন শুরু হয়েছে, বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর। এ পর্যন্ত ২৫-৩০-৩২ শতাংশ অবমূল্যায়িত হয়েছে টাকার মান। এতে আমদানিনির্ভর অর্থনীতিতে দুর্দশা নেমে আসে। বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের নিট হিসাবে দেখা যায়, আমাদের রিজার্ভ এখন মোটামুটি ১৭ বিলিয়ন ডলার, যা একবার ৪৮ বিলিয়ন (এক বিলিয়ন সমান শত কোটি) ডলারে উঠেছিল। এই হ্রাস আবার বিপুলভাবে আমদানি হ্রাসের পর। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে আমদানি ব্যয় হ্রাস পেয়েছে প্রায় ১৬ শতাংশ। অবশ্য রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে। রপ্তানি বৃদ্ধির পরিমাণ একই সময়ে ছিল ২ শতাংশের মতো। এদিকে রেমিট্যান্সের পরিমাণও বেড়েছে ভালোই। ১০ শতাংশের উপর। বেসরকারি খাতে ঋণের পরিমাণও বৃদ্ধি পেয়েছে একই সময়ে প্রায় ১০ শতাংশ।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের এ পারফরম্যান্সের প্রেক্ষাপটেই রচিত হয়েছে নতুন বাজেট। নতুন বাজেট উচ্চাভিলাষী নয়। মোটামুটি সংযত লক্ষ্যমাত্রা নিয়েই এসেছে নতুন বাজেট। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তুলনায় আকার বেড়েছে ৪ শতাংশের মতো। মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিলে এটা কোনো বৃদ্ধি নয়। তবে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে অর্জিত ৫ দশমিক ৮২ শতাংশের বিপরীতে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আবার মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সাড়ে ৬ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ছিল প্রায় ১০ শতাংশ। দেখা যাচ্ছে, খরচ হবে মোট ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। আর রাজস্ব আয় মাত্র ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আদায় করবে সিংহভাগ অর্থাৎ ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। মুশকিল হচ্ছে, এত আদায়ের পরেও ঘাটতি বিশাল। মোট ঘাটতি ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা, যা জিডিপির সাড়ে ৪ শতাংশ-গেল অর্থবছরের তুলনায় একবিন্দু কম। বরাবরই আমাদের ঘাটতি বাজেট-সরকার নির্বিশেষে। এ নিয়ে খুব বেশি কথা এতদিন হয়নি। ভাবটা ছিল-চলছে, চলবে, চলুক। সামান্য কথা কেউ কেউ বলেছে। কিন্তু সবসময়ই বলা হয়েছে, ঘাটতি প্রশাসনিক খরচের জন্য নয়, ঘাটতি হচ্ছে উন্নয়নের টাকা জোগাড় করতে গিয়ে। অর্থাৎ ‘ঋণ করে ঘি খাওয়া’র জন্য নয়। ঋণ উন্নয়নের জন্য। এটাও কিন্তু শেষ বিচারে কোনো যুক্তি হয় না। আয় হবে এক নম্বরে, খরচ দুই নম্বরে-যা থাকবে তা-ই হবে সম্পদ, যা দরকার উন্নয়নের জন্য।
আমাদের দুঃখ হলো, স্বাধীনতার এত বছর পরও আমাদের বাজেটে ঘাটতি। বিভিন্ন দেশ ঋণ দেয়, বাজেট সহায়তা দেয় আমাদের উন্নয়নের জন্য। ঋণ করতে হয় দেশের ভেতর। ৩ জুলাইয়ের এক খবরে দেখা যাচ্ছে, আমাদের মোট ঋণ এখন ১৮ লাখ ৩৫ হাজার ৩৫ কোটি টাকা। ডলারে হয় ১৫ হাজার ৬৮৪ কোটি। এতেও কোনো অসুবিধা নেই। কারণ অঙ্কে দেখা যাচ্ছে, শতাংশের হিসাবে আমরা সহনশীল সীমার মধ্যে রয়েছি। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের মধ্যেই আছি। কিন্তু বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে, আমরা কি ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারছি? অভ্যন্তরীণ ঋণের ক্ষেত্রে কী অবস্থা? কী অবস্থা বৈদেশিক ঋণের ক্ষেত্রে? অভ্যন্তরীণ ঋণের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, সরকার অনেক বকেয়া টাকা পাওনাদারদের দিতে পারছে না। ভর্তুকির টাকা দিতে হচ্ছে ‘বন্ডে’। অর্থাৎ ‘ক্যাশ’ দেওয়া যাচ্ছে না। দিতে হচ্ছে ‘বন্ডে’, যা দীর্ঘমেয়াদি দায় এবং এর ওপর উচ্চ সুদের ভার বহন করতে হবে। আবার দেখা যাচ্ছে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে বৈদেশিক দেনাও আমরা পরিশোধ করতে পারছি না। যদিও এসব ‘ডিফল্টার’ পর্যায়ে পড়ে না। কিন্তু আশঙ্কার খবর অবশ্যই। সবচেয়ে বড় সমস্যা এখন ডলার নিয়ে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক কেবল ২০২৩-২৪ অর্থবছরেই ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার ব্যাংকগুলোর কাছে বিক্রি করেছে। এর ফল হচ্ছে, ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ‘ক্যাশ’ টাকা চলে গেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। তাদের এখন ‘ক্যাশ’ সংকট-তারল্য সংকট। আমদানি হ্রাস পেয়েছে, আমদানির ওপর নিয়ন্ত্রণ জারি রয়েছে। তারপরও এ অবস্থা। এতে কাঁচামাল আমদানি, মধ্যবর্তী পণ্য এবং যন্ত্রপাতি আমদানি সবকিছুই বিঘ্নিত হচ্ছে।
এদিকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণেও কোনো অগ্রগতি নেই। অথচ সরকার আবার ২০-২৫টি পণ্য আমদানির ওপর শুল্ক হ্রাস করেছে। কিন্তু এর কোনো প্রভাব বাজারে পড়েনি। কুরবানির ঈদ গেল এই তো সেদিন-জুন মাসে। বাজার যথারীতি গরমই ছিল। কোনো কিছুর মূল্যেই কোনো স্বস্তি মিলছে না। অথচ মাননীয় অর্থমন্ত্রী বলছেন, তার পক্ষে যা যা সম্ভব, তার সবই করা হয়েছে। নীতি সুদহার (ব্যাংক রেট) ৮ দশমিক ৫ শতাংশে বৃদ্ধি করা হয়েছে, যাতে ঋণ আরও ব্যয়বহুল হয়। সুদের হার ব্যাংকের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আমানত ও সুদের হার এখন তারা ঠিক করছে। ডলারের মূল্য ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতিতে নির্ধারিত হচ্ছে। জারি করা হয়েছে সহায়ক রাজস্বনীতি। নিু অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ব্যয় বন্ধ রাখা হয়েছে। কৃচ্ছ্রসাধনের নীতি চালু আছে। বাজেট ঘাটতি কিছুটা কমানো হয়েছে। এত কিছুর পরও বাজার নড়াচড়া করছে না কেন? বিরাট প্রশ্ন। ব্যাংকে এখনো টাকার অভাব, ডলারের মার্কেট ঊর্ধ্বমুখী, যদিও প্রবাসী আয় বেড়েছে, আমদানি কমেছে। মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী। শাকসবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী। বাজেটেও এমন কিছু করা হয়নি যাতে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে। তারপরও ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শুরুটা ভালো হচ্ছে না কেন?
তবে কি বাজেটের আকার আরও ছোট করার দরকার ছিল? শত হোক, এখন আমাদের উচ্চতর প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য নয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একবার বলেছিলেন, যতটুকু উন্নতি/প্রবৃদ্ধি হয়েছে, তা মোটামুটি ধরে রাখা দরকার। আমার মনে হয় ৫-৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বর্তমান অবস্থায় যথেষ্ট। বেশি বেশি উন্নয়নে যে ‘হিট’ তৈরি হয়, তা অনেক সময় সহ্য করা যায় না। এ প্রেক্ষাপটে বাজেটের আকার আরও কিছুটা হ্রাস করা যেতে পারত। বিশেষ করে একটি কারণে, আর তা হচ্ছে ঋণ। ঋণনির্ভরতা আমাদের বেড়ে যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা, আমাদের মানসিকতা ঋণনির্ভর হয়ে পড়েছে। আর একশ্রেণির লোকের জন্ম হয়েছে যারা ঋণনির্ভর প্রকল্প চায়। এতে তাদের লাভ, দেশের বরং ক্ষতি। টাকার অঙ্কে নয়, রপ্তানি অথবা রেমিট্যান্সের অনুপাতে আমাদের ঋণ বেড়ে যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা, এ মুহূর্তে আমরা ঋণের টাকা শোধ করতে পারছি না। এমন অবস্থা হয়েছিল যে বাজারে টাকা না পেয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন টাকা ছাপিয়ে সরকারকে ঋণ দিচ্ছিল। সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মালিক, এর পরিচালনা বোর্ডের সদস্যরা সরকার মনোনীত। অতএব, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরকার হরেদরে ঋণ নিতে শুরু করে। ভাগ্য ভালো, আমাদের কথায় নয়, শেষ পর্যন্ত ‘ত্রাণকর্তা’ আইএমএফের কথায় তা বন্ধ হয়েছে বলে মনে হয়। বস্তুত তাদের কথাতেই এখন আমরা চলছি। সর্বশেষ দেখলাম, যে ১০টি সরকারি সংস্থায় চাকরিতে রেশন ব্যবস্থা আছে, সেখানে পর্যাপ্ত ভর্তুকি হ্রাস করে পণ্যের মূল্য হ্রাস করতে হয়েছে।
আমি বুঝি না, কেন তাদের এত কথা শুনতে হবে? আমরা তো নিজেরাই বুঝতে পারি কীসে কী হচ্ছে। যদি তাই হয়, তাহলে সংযত আচরণে আমাদের বাধা কোথায়? কোথায় বাধা খরচ কমাতে। খরচ কমাতে পারলে সরকারকে ঋণ করতে হয় না। ২০২৪-২৫ অর্থবছরেই সরকার ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ নেবে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। সরকারের মোট অভ্যন্তরীণ ঋণ হবে ১ লাখ ৬০ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। আবার বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ৯০ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা। মোট ঘাটতি ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। ঠিক ওই পরিমাণেই আমাদের হবে ঋণ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে। এর অর্থ কী? যদি ১ টাকাও খরচ কমাতে পারি, তাহলে ১ টাকাই ঋণ কমবে, যা দরকার এখন ভীষণভাবে। আমি মনে করি, খরচ আরও কমানো যায়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা খরচ না করেও সরকার পারে। এটা কি সম্ভব? সরকার জানে, মন্ত্রীরাও জানেন মন্ত্রণালয়ে কীভাবে ১ টাকার পণ্য ২ টাকায় কেনা যায়। কীভাবে ১ টাকার কাজ এডিপিতে ২-৩ টাকায় হয়। এ জায়গায় সবাই মিলে চেষ্টা করলে, এখানে কিছুটা হলেও গুণগত পরিবর্তন আনতে পারলে অনেক খরচ কমানো সম্ভব। খরচ কমানো এখন ‘ফরজ’ কাজ। বহু অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প এখনো বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে রয়েছে। চোখ বুজে এসব বাদ দেওয়া যায়। যে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু হয়েছে, যার কথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, তা আরও জোরদার করুন-তাহলে ঘুস-দুর্নীতি কিছুটা হলেও কমবে, খরচও কমতে পারে। খরচ না কমলে ঘাটতি কমবে না। ঘাটতি না কমলে ঋণের পরিমাণ কমবে না। ঋণের পরিমাণ না কমলে সুদ ব্যয়ও কমবে না। এটা একটা বৃত্ত। এ বৃত্তে শেষ পর্যন্ত ঋণ নিয়ে ঋণ শোধ করতে হয়, যা উত্তরবঙ্গের শ্রমজীবীরা নিয়মিত করে যাচ্ছেন। শ্রীলংকা, পাকিস্তানসহ অনেক দেশও তা-ই করছে। কাজেই সাবধান, খরচ কমান। এখনকার কাজ তিনটি-খরচ কমানো, খরচ কমানো এবং খরচ কমানো। ১০ শতাংশ খরচ কমালে ৮০ হাজার কোটি টাকা খরচ কমে। ৫ শতাংশ কমালে কমবে ৪০ হাজার কোটি টাকা।
এ তো গেল সরকারের খরচের কথা। এটা কমালে মূল্যস্ফীতি রোধে কাজে লাগতে পারে। দ্বিতীয়ত, বেসরকারি খাতে ঋণের ক্ষেত্রে ঋণকে সস্তা করবেন না। বাজারমূল্যে ঋণ হোক। আমানতকারীরা বাজারমূল্যে সুদ পাক। প্রবাসীরা বাজারমূল্যে ডলার বিক্রি করুক। এতে বলা হতে পারে বেসরকারি খাত ঋণের অভাবে ভুগবে। সরকার যদি ঋণ কম করতে পারে, তাহলে ব্যাংকে তারল্য বাড়বে। দ্বিতীয় কথা, বেসরকারি খাতের সবারই ঋণের দরকার নেই। ‘ওভার ‘বরোড’ কোম্পানির ঋণ বন্ধ করা দরকার। অনেক বড় বড় গ্রাহক আছেন, তারা নানাভাবে তাদের প্রয়োজন মেটাতে পারেন এবং তা তাদের অনেকে করছেনও। তা তারা করুন। লক্ষ রাখুন ছোট, মাঝারি, অতিক্ষুদ্রদের প্রতি। তারাই অর্থনীতির প্রাণ। তারাই বেশিরভাগ শ্রমিকের খাবার জোগায়। তাদের ঋণের চাহিদা মেটানো দরকার। কৃষিতে ঋণ ঠিক রাখুন। বড়দের এবার বলুন ‘স্টক এক্সচেঞ্জে’ যেতে, সেখান থেকে পুঁজি সংগ্রহ করতে। ‘ব্যাংক-ফিন্যান্স লেড’ গ্রোথ নীতিমালা থেকে আস্তে আস্তে বেরিয়ে আসুন। আমাদের বেসরকারি খাত এখন হিসাব করে ‘বিলিয়নে’-এ কথা মনে রাখতে হবে। তারা এখন সাবালক। সিঙ্গাপুরে অনেকের বাড়ি-ঘর, ব্যবসা, স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার ব্যবস্থা আছে।
ড. আর এম দেবনাথ : অর্থনীতি বিশ্লেষক; সাবেক শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়