ঘনিয়ে আসছে গুরুতর পানি সংকট
ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী
প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
প্রাকৃতিক সম্পদের যথেচ্ছাচার-অপব্যবহার পুরো বিশ্বকে শুধু পর্যুদস্ত করছে না, এ ধরিত্রীর ভবিষ্যৎ করে তুলছে অনিশ্চিত।
এ দেশের জনগণসহ বিশ্বের বহু মানুষ নিরাপদ পানি সমস্যায় জর্জরিত। বিশ্বজুড়েই সুপেয় পানির হাহাকার। মূলত পরিবেশ বিপর্যয়, বিশ্বায়ন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, দ্রুত অপরিকল্পিত শিল্পায়ন-নগরায়ণ, দূষণ-অপচয়ের কারণে প্রতিনিয়ত পানির ওপর চাপ বাড়ছে।
এছাড়া খরা-তাপদাহে প্রাকৃতিক উৎসগুলো শুকিয়ে যাওয়া, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে লবণাক্ততা বেড়ে পানির আধার নষ্ট হওয়া, মাত্রাতিরিক্ত গভীর নলকূপ স্থাপনের ফলে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় সুপেয় পানির সংকট দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। উপরন্তু নদী অববাহিকায় উজানের দেশগুলোর বিশালাকার বাঁধ বা ড্যাম নির্মাণে ভাটি অঞ্চলের দেশগুলোতে পানির প্রবাহ দ্রুত কমে গিয়ে পানি সংকট অধিকতর ত্বরান্বিত করছে।
বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় নারী-পুরুষ-শিশু-বৃদ্ধ নির্বিশেষে সবাইকে পরিবারের জন্য সুপেয় পানি সংগ্রহে মাইলের পর মাইল পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে। মিঠাপানির উৎস না থাকায় অনেকে বাধ্য হয়ে পুকুর-খাল-বিলের কাদামিশ্রিত ও লবণাক্ত পানি পান করছে। এতে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে উপকূলের লাখ লাখ মানুষ। গত ২২ মার্চ জাতিসংঘ সদর দপ্তরে শুরু হওয়া সম্মেলনের প্রাক্কালে পানি নিয়ে ৪৫ বছরের বেশি সময়ের ব্যবধানে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২৬ শতাংশ মানুষ সুপেয় পানির সুবিধা থেকে বঞ্চিত। জাতিসংঘ ২০৩০ সাল নাগাদ সব মানুষের জন্য সুপেয় পানি ব্যবস্থা নিশ্চিতের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল, তা প্রায়োগিক অর্থে বিশাল ব্যবধানের চিত্র জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড ওয়াটার ডেভেলপমেন্ট রিপোর্ট-২০২৩-এ ফুটে উঠেছে। উলেখ্য, প্রতিবেদনটির এডিটর ইন চিফ রিচার্ড কনর সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বছরে প্রায় ৬০০ বিলিয়ন থেকে ১ ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে হবে। বঞ্চিত ২০০ কোটি মানুষের জন্য সুপেয় পানি আর ৩৬০ কোটি মানুষের জন্য স্যানিটেশনের ব্যবস্থা করতে বিনিয়োগকারী, দাতা, সরকার ও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করা সম্প্রদায়ের মধ্যে অংশীদারত্ব জোরদার করাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।’ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে প্রতি বছর বিশ্বে ১ শতাংশ করে পানির ব্যবহার বেড়েছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও ভোক্তা আচরণে পরিবর্তনের ফলে ২০৫০ সাল নাগাদ একই হারে পানির ব্যবহার বাড়বে।
মূলত পানির উৎসকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা ইতিহাসের বৃহৎ শহর-নগর-সভ্যতা বর্তমানে নানামুখী পানির সংকটে নিপতিত। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সূত্রমতে, বিশ্বের বৃহত্তম দেশগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে পানি ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ তালিকায় আরও আছে লন্ডন, ইস্তাম্বুল, মস্কো, জাকার্তা, কায়রো, বেইজিং, ব্যাঙ্গোলোর, সাও পাওলোসহ অনেক শহরের নাম। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এ শহরগুলোতে পানি সংকট তীব্র থেকে তীব্রতর রূপ ধারণ করে সভ্যতা-সংস্কৃতি-অর্থনীতি অসহনীয় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভবিষ্যৎ দিনগুলোতে বিশ্বের প্রায় ৪০০ কোটি মানুষ পানি সংকটে পড়বে, যার অর্ধেকই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার। এভাবে যদি সুপেয় পানি অচিরেই মানুষের নাগালের বাইরে চলে যায়, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে পানি নিয়েই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। বিগত শতাব্দীতে তেল, গ্যাস, পেট্রোলিয়ামসহ অন্যান্য সম্পদের ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণে বিশ্বব্যাপী চলমান রাজনীতি শুরু হবে পানির ক্ষেত্রেও। ক্রমান্বয়ে সুপেয় পানির পরিমাণ কমে যাওয়ায় বিশ্বনেতারা ‘লিমিটেড ওয়াটার রিসোর্সের’ জন্য লড়বেন, এটি সুনিশ্চিত। এ কারণে আগামী দিনে পানিসম্পদের ভাগাভাগি নিয়েও আন্তর্জাতিক রাজনীতির ফ্রেম মোটামুটি সুস্পষ্ট, যেখানে দ্বিপাক্ষিক বিষয়, নদী তীরবর্তী দেশগুলোর নিজেদের স্বার্থ ও ভূ-রাজনৈতিক বিভিন্ন ইস্যুও গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসাবে কাজ করবে। প্রায় ১৪ বছর আগে গোল্ডম্যান স্যাশ্স নামে একটি আমেরিকান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেছিল, পানিই হবে আগামী শতাব্দীর পেট্রোলিয়াম।
বিভিন্ন পরিসংখ্যান পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৬ সালে ভারতের কাবেরি নদীর পানিবণ্টন নিয়ে একই দেশের দুটি রাজ্য কর্ণাটক ও তামিলনাডু রাজ্যের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। ভারতের সঙ্গে আরও রয়েছে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর বহু বছর ধরে চলমান অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন নিয়ে অমীমাংসিত বিষয়। আফ্রিকা মহাদেশের কেনিয়ায় বিভিন্ন আদিবাসী গোত্রের মধ্যেও পানি নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছে। সুদানের দারফুরে গৃহযুদ্ধ শুরুর অন্যতম প্রধান কারণ ছিল পানি সংকট। নীল নদের ওপর রেনেসাঁ বাঁধ তৈরির জেরে ইথিওপিয়া এবং মিসরের মধ্যে ব্যাপক সংঘাত পরিলক্ষিত। পাশাপাশি আমাজন, মেকং ও দানিউবের মতো বড় বড় উৎসের পানির অংশীদারত্ব নিয়ে বিরাজিত বিবাদ বর্তমানে নতুন মাত্রা পেয়েছে। এ ছাড়া লেবানন-ইসরাইলের মধ্যে হাসবান নদী, তুরস্ক-সিরিয়া-ইরাকের মধ্যে ইউফ্রেটিস, সিরিয়া-ইসরাইলের মধ্যে গ্যালিলি সাগর, ইসরাইল-ফিলিস্তিন-জর্ডানের মধ্যে জর্ডান নদী, সুদান-মিসর-ইথিওপিয়াসহ বিভিন্ন দেশের মধ্যে নীল নদ, সেনেগাল-মৌরিতানিয়ার মধ্যে সেনেগাল নদী, ইরান-আফগানিস্তানের মধ্যে হেলম্যান্ড নদী নিয়ে অতিশয় বিরোধ প্রতিভাত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ পরিচালিত এক আন্তর্জাতিক গবেষণা অনুযায়ী, নিরাপদ পানির ভয়াবহ সংকটে থাকা ১০টি দেশের তালিকায় সবচেয়ে বেশি রয়েছে আফ্রিকার দেশগুলো। তালিকায় প্রথমে আছে পশ্চিম আফ্রিকার কৃষিনির্ভর দেশ নাইজার। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে প্রায় ৬৪ শতাংশ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে থাকা দেশ কঙ্গো। দেশটিতে খাওয়ার পানি, রান্না এবং ধোয়া-মোছার জন্য অধিকাংশ মানুষ অনিরাপদ পানি ব্যবহারে বাধ্য হচ্ছে। উক্ত তালিকায় থাকা অন্যান্য দেশ হলো পাপুয়া নিউগিনি, চাদ, ইথিওপিয়া, ইরিত্রিয়া, সোমালিয়া, উগান্ডা, অ্যাঙ্গোলা ও মোজাম্বিক।
বিশ্বব্যাপী সুপেয় পানির উৎস হিসাবে খ্যাত বিভিন্ন নদ-নদী-হ্রদ-খাল-বিল ইত্যাদি তীব্র দাবদাহ ও খরাসহ নানা কারণে শুকিয়ে যাওয়ার সংবাদ গণমাধ্যমে পরিবেশিত হয়েছে। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ প্রকাশিত সংবাদ মারফত জানা যায়, চীনের দীর্ঘতম ইয়াংসিকিয়াং নদীর অববাহিকায় অবস্থিত অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং সুপেয় পানির সবচেয়ে বড় উৎস খ্যাত পয়াং লেক শুকিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে লেকের সিংহভাগ পানি শুকিয়ে চারপাশে চর জেগে উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে জিয়াংশি প্রদেশে পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে প্রথমবারের মতো ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে। উলেখ্য তারিখে প্রাদেশিক সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পয়াং লেকের পানির স্তর গত তিন মাসে ১৯ দশমিক ৪৩ মিটার থেকে ৭ দশমিক ১ মিটারে নেমে এসেছে। প্রদেশটির ওয়াটার মনিটরিং সেন্টার কর্তৃক সতর্ক করা হয়েছে যে, এভাবে খরা অব্যাহত থাকলে সামনের দিনগুলোতে পানির স্তর আরও কমে যেতে পারে এবং এতে ওই অঞ্চলের প্রাণীবৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়বে। শুধু পয়াং লেক নয়; বিশ্বের সবচেয়ে বড় সুপেয় পানির উৎস তিব্বত মালভূমিরও একই চিত্র। আমেরিকার পেন স্টেট ও টেক্সাস ইউনিভার্সিটি এবং চীনের সিংহুয়া ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীদের গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে, সাম্প্রতিক দশকগুলোতে তিব্বত মালভূমির কোনো কোনো স্থানে পানি কমার পরিমাণ ১৫ দশমিক ১৮ গিগাটনে পৌঁছেছে। একইসঙ্গে মধ্য এশিয়া ও আফগানিস্তানের পানি সরবরাহ করা আমু দরিয়া অববাহিকার পানি সরবরাহের ক্ষমতা ১১৯ শতাংশ এবং ভারত-পাকিস্তানের সিন্ধু অববাহিকতার পানি সরবরাহ ক্ষমতা কমেছে ৭৯ শতাংশ। গবেষকদের দাবি, তীব্র দাবদাহ একই গতিতে অব্যাহত থাকলে এ শতাব্দীর মধ্যভাগে তিব্বত মালভূমির সঞ্চিত পানি থেকে ২৩০ গিগাটন পানি হারিয়ে গিয়ে পুরো অঞ্চলে বিপর্যয় ঘটাতে পারে। একমাত্র শক্তিশালী জলবায়ু নীতিই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সক্ষম বলে গবেষকরা মতামত পোষণ করেন।
গত ২২ মার্চ বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষ্যে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (ডিপিএইচই), ইউনিসেফ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও সুইডেন দূতাবাস আয়োজিত ‘প্রয়োজনীয় পরিবর্তনকে ত্বরান্বিত করলেই সমাধান হবে নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন সংকট’ শিরোনামে সংবাদ সম্মেলনের তথ্য-উপাত্তে দেখা যায়, বিশ্বে প্রতি চারজন মানুষের একজন নিরাপদ পানির অভাবে ভুগছে। বাংলাদেশের ৪১ শতাংশ মানুষ এখনো নিরাপদ পানি সুবিধা থেকে বঞ্চিত এবং ৬১ শতাংশ বাড়তি নিরাপদ স্যানিটেশন সুবিধা পাচ্ছে না। সম্মেলনে উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধে বলা হয়েছে, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) ৬ অনুসারে ২০৩০ সালের মধ্যে শতভাগ মানুষের কাছে নিরাপদ পানি পৌঁছাতে হবে। কিন্তু দেশে নিরাপদ পানি পৌঁছানো গেছে ৫৯ শতাংশ মানুষের কাছে। পানিতে জীবাণু-আর্সেনিক ও লবণাক্ততা থাকায় দুর্গম-উপকূলীয় এলাকা, গ্রামাঞ্চল এবং শহরের বস্তি এলাকায় নিরাপদ পানি সহজে পাওয়া যায় না। এসডিজি লক্ষ্য পূরণ করতে হলে নিরাপদ পানির জন্য এখন কমপক্ষে চারগুণ সক্ষমতা বাড়াতে হবে। উলেখ্য, অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পলী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের ৯৮-৯৯ শতাংশ মানুষ সাধারণভাবে পানির সুবিধা পেলেও গুণগত মানসম্পন্ন নিরাপদ পানি এখনো সবার জন্য নিশ্চিত করা যায়নি। পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে এটা একটা সমস্যা। ঢাকায় ঘনবসতি বলে সমস্যা বেশি। পানি শোধনাগার যা আছে, তা যথেষ্ট নয়। তবে সরকার এসডিজি লক্ষ্য পূরণের বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা বাড়াতে আগের চেয়ে বাজেট অনেক বাড়ানো হয়েছে।’
বাংলাদেশে প্রবেশ করা আন্তর্জাতিক নদীগুলোর প্রায় সবই নেপাল, ভারত ও চীন থেকে আসা এবং এসব নদীর উজানে সংশিষ্ট দেশগুলো নিজেদের স্বার্থে বাঁধ তৈরি করে নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহকে প্রচণ্ডভাবে বাধাগ্রস্ত করেছে। এ কারণে বাংলাদেশ তার ন্যায্য পানির হিস্যা পাচ্ছে না। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রমতে, এবারের সম্মেলন সামনে রেখে বাংলাদেশ পাঁচটি ইস্যুতে গুরুত্ব দিয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে আন্তঃসীমান্ত এবং আন্তর্জাতিক পানি সহযোগিতার ওপর। সম্মেলনের সাধারণ বিতর্কে বক্তব্য প্রদানকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার আওতাধীন পানিবিষয়ক কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য আন্তর্জাতিক অর্থায়ন বৃদ্ধিতে উন্নয়ন সহযোগী ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন। বক্তব্যে তিনি জাতীয় পর্যায়ে একটি কার্যকর ও সমন্বিত পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা তৈরির লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্যান-২১০০’ এবং ‘বাংলাদেশ পানি আইন ২০১৩’ প্রণয়ন করার বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেন। মোদ্দাকথা, চলমান এবং অচিরেই সম্ভাব্য গুরুতর পানি সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশসহ সব দেশের সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের সমন্বিত প্রয়াস অতি জরুরি। অপব্যবহার-অপচয় রোধে ও পানি প্রবাহে যৌক্তিক পদক্ষেপ গ্রহণে সময়ক্ষেপণ ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি করবে। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ গ্রহণ ও ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টিতে ব্যর্থতা সংকট সমাধানের পরিবর্তে তৃষ্ণার্তের আর্তনাদ করুণ পরিণতির রূপ পরিগ্রহ করবে, এটুকু ব্যক্ত করা মোটেও অমূলক নয়।
ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী : শিক্ষাবিদ; সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়