Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছর

মানবিক দিকটি যেন উপেক্ষিত না হয়

Icon

এম এ হালিম

প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

মানবিক দিকটি যেন উপেক্ষিত না হয়

আজ ২৪ ফেব্রুয়ারি পূর্ণ হচ্ছে ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছর। এ যুদ্ধে ইউক্রেনের ১ কোটি ৭০ লাখ বেসামরিক মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যারা দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাতে আজ অন্যের মুখাপেক্ষী।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের রাজনৈতিক ও সামরিক উদ্দেশ্য যাই থাকুক না কেন, মানবিক দিকটি চরমভাবে উপেক্ষিত হয়েছে বা হচ্ছে। যুদ্ধে মধ্য ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৭১৯৯ জন বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ৪৩৩ জন শিশু। আহত হয়েছে ১১৭৫৬ জন বেসামরিক মানুষ, যার মধ্যে প্রায় এক হাজার শিশু।

এ বিধ্বংসী যুদ্ধে এক কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যার মধ্যে প্রতিবেশী পোল্যান্ড, হাঙ্গেরিসহ বিভিন্ন দেশে উদ্বাস্তু হিসাবে আশ্রয় গ্রহণ করেছে ৪০ লক্ষাধিক। আর আইডিপি (অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত) হয়েছে ৬০ লক্ষাধিক মানুষ। ফলে ইউক্রেনজুড়ে এক চরম মানবিক বিপর্যয় চলছে। ইউক্রেনের ৭০ লাখ মানুষ এখন বিদ্যুৎবিহীন, যা পানি সংকটেরও কারণ হয়েছে। শীতকালে ইউরোপজুড়ে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে চলে যায়।

ইউরোপের ৬০ শতাংশ গ্যাস ইউক্রেন সরবরাহ করত, যা যুদ্ধের কারণে চরমভাবে ব্যাহত হয়েছে। এছাড়া মানুষের দৈনন্দিন অপরিহার্য সামগ্রী সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে। এর মধ্যে খাদ্য ঘাটতির কারণে শুধু শিশুরাই নয়, সাধারণ মানুষও পুষ্টিহীনতায় ভুগছে।

এ তো গেল চলমান যুদ্ধে বেসামরিক মানুষের ক্ষতি ও দুর্ভোগের হিসাব। যুদ্ধে রাশিয়া ও ইউক্রেনের ১৩ হাজারেরও বেশি সৈন্য নিহত হয়েছে। গত সপ্তাহে যুগান্তরের এক রিপোর্টে জানা যায়, এক বছরে রাশিয়ার ভাড়াটে বাহিনী ‘ওয়াগনার গ্রুপের’ ৩০ হাজার সৈন্য হতাহত হয়েছে।

এখানে লক্ষণীয়, ওয়াগনার গ্রুপের যোদ্ধার ৯০ শতাংশকেই নিয়োগ দেওয়া হয় কারাগারে অন্তরীণদের মধ্য থেকে! এদের কোনো ধরনের প্রশিক্ষণ ছাড়াই যুদ্ধে যোগ দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। আরও জানা যায়, রাশিয়া ইউক্রেন ও অন্য আরও অনেক মিত্র দেশ এবং নিজ দেশের সাধারণ মানুষকে মোটা বেতনে যুদ্ধে যোগ দিতে প্ররোচিত করছে এবং ইতোমধ্যে অনেকেই যোগ দিয়েছে।

জানা যায়, ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধের বছর পূর্তিতে ইউক্রেনে বড় ধরনের আক্রমণ করার লক্ষ্যে রাশিয়া মিত্র প্রতিবেশী দেশগুলোয় ৫ লক্ষাধিক সৈন্য জড়ো করছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এদিন রাশিয়া ইউক্রেনে বড় ধরনের আক্রমণ চালাবে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউক্রেনের ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলো ইউক্রেনকে সামরিক সহযোগিতা জোরদার করছে। তাই যুদ্ধের বছরপূর্তিতে উভয় পক্ষের প্রস্তুতি ও সমূহ আক্রমণের আশঙ্কায় খেরাসনসহ অনেক শহরের বাসিন্দা এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছে।

যুদ্ধের কারণে সরাসরি মানুষের দুর্ভোগের পাশাপাশি প্রতিনিয়তই বিভিন্ন স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গত এক বছরে সাত শতাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে আছে হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং অসামরিক পরিবহণও। অথচ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন আইন/চুক্তি অনুসারে যুদ্ধকালে বেসামরিক মানুষের নিরাপত্তা ও তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন নিশ্চিত করার ব্যাপারে বিবদমান দেশ বা গোষ্ঠীর বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

যুদ্ধের প্রথমদিকে যুগান্তরে প্রকাশিত এক নিবন্ধে যুদ্ধে মানবিক দিকের গুরুত্ব ও বাধ্যবাধকতার ওপর আলোকপাকত করতে গিয়ে জেনেভা কনভেনশনের কথা আলোচনা করেছিলাম। এ কনভেনশনে যুদ্ধাবস্থায় বেসামরিক মানুষ ও স্থাপনার প্রতি আচরণ কী হবে তার নির্দেশনা রয়েছে, যা চুক্তি স্বাক্ষরকারী ১৯৬টি রাষ্ট্র প্রতিপালনে অঙ্গীকারবদ্ধ। কনভেনশন অনুসারে যুদ্ধের সময় বেসামরিক জনগণ ছাড়াও সাংস্কৃতিক সম্পত্তি, ধর্মীয় কেন্দ্র/উপাসনালয়, হাসপাতাল, সশস্ত্র বাহিনীর মেডিকেল ইউনিটের যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স, রেডক্রস-রেড ক্রিসেন্ট স্থাপনা ইত্যাদির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

এছাড়া কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্রগুলো যুদ্ধে লিপ্ত হলে কিছু বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যেমন: আহত সৈন্যের সেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, গণহত্যা-অত্যাচার পরিহার করা প্রভৃতি। জেনেভা কনভেনশন (৪র্থ কনভেনশন, আর্টিক্যাল ২৩) অনুসারে যুদ্ধরত দেশে নির্বিঘ্নে ওষুধসামগ্রী, পানি, খাদ্য ও বস্ত্র পরিবহণে রাষ্ট্রগুলো বাধ্য। এছাড়া কনভেনশন অনুসারে (১ম কনভেনশন, আর্টিক্যাল ২৩ ও ৪র্থ কনভেনশন, আর্টিক্যাল ১৪) যুদ্ধাবস্থায় হাসপাতাল একটি নিরাপদ স্থাপনা হিসাবে স্বীকৃত।

অন্যদিকে হেগ আইনে প্রতিপক্ষকে আঘাত করার পদ্ধতি, উপায়, অস্ত্র ব্যবহার ইত্যাদি তদারক করা হয়। এ আইন যুদ্ধ চলাকালীন যুদ্ধরত সৈন্যদের দায়িত্ব ও অধিকারকে চিহ্নিত করেছে এবং এতে শত্রুপক্ষের ক্ষয়ক্ষতি সীমিতকরণের বিষয় উল্লেখ রয়েছে। নিবন্ধে উল্লেখ করেছিলাম, ‘হয়তো অচিরেই জানা যাবে এসব মানবিক আইন বা কনভেনশন ইউক্রেন যুদ্ধে কতটা প্রতিপালিত হচ্ছে।’ এক বছর পেরিয়ে গেলেও আন্তর্জাতিক এসব আইন কোনোভাবেই মানা হচ্ছে না, যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হলো সাত হাজারের বেশি বেসামরিক মানুষের মৃত্যু, ১১ হাজারের বেশি মানুষ আহত আর সাত শতাধিক বেসামরিক স্থাপনায় আঘাতের তথ্য।

এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি শান্তি স্থাপনে ১০ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন যেগুলো হলো-১. বিকিরণ ও পারমাণবিক নিরাপত্তা; অধিকৃত জপোরিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা; ২. শস্য রপ্তানি সুরক্ষা এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ; ৩. শক্তি সুরক্ষা, ক্ষতিগ্রস্ত জ্বালানি অবকাঠামো পুনরুদ্ধার; ৪. যুদ্ধবন্দিসহ নির্বাসিত শিশুদের মুক্তি; ৫. আঞ্চলিক অখণ্ডতা পুনরুদ্ধার; ৬. সেনা প্রত্যাহার এবং শত্রুতা বন্ধ করা, রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় সীমানা পুনরুদ্ধার করা; ৭. রাশিয়ার যুদ্ধাপরাধের বিচারে বিশেষ ট্রাইবুন্যাল গঠন ও ন্যায়বিচার; ৮. পরিবেশের সুরক্ষা, ইকোসাইড প্রতিরোধ, পানি শোধন সুবিধা পুনরুদ্ধার; ৯. ইউরো-আটলান্টিক মহাকাশে সংঘাতের বৃদ্ধি প্রতিরোধ এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করা; ১০. নথি স্বাক্ষরসহ যুদ্ধের সমাপ্তি নিশ্চিতকরণ।

কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো যুদ্ধ বন্ধের পরিবর্তে যুদ্ধ জোরদার করতে বেশি উৎসাহী। ১৭-১৯ ফেব্রুয়ারি জার্মানির মিউনিখে ইউরোপের ৩০টি দেশের সরকারপ্রধানের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত বার্ষিক নিরাপত্তা সম্মেলনে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ বলেছেন, ‘তার দেশ শিগ্গির ইউক্রেনে প্রথম লেপার্ড ট্যাংক পাঠাবে। দীর্ঘ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে দেখিয়ে দিতে হবে যে, জার্মানি ও তার মিত্ররা ইউক্রেনের ওপর ছেড়ে দেবে না।’ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ‘ইউক্রেনে হামলা নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে সংলাপের সময় এখন নয়।’ তিনি বলেছেন, ‘আগামী কয়েক সপ্তাহ হবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মিত্রদের ইউক্রেনে সহায়তা বাড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন, যাতে তারা পালটা প্রতিরোধ গড়ে দিতে পারে।’ অন্যদিকে ২০ ফেব্রুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনে ঝটিকা সফর করেন।

তিনিও শান্তি প্রচেষ্ট বা উদ্যোগের পরিবর্তে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের নতুন সহায়তা ছাড়াও বিপুল যুদ্ধাস্ত্র ও সরঞ্জাম দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে প্রকারান্তরে যুদ্ধকে প্রলম্বিত করতেই উৎসাহ দিয়ে ফিরেছেন। এদিকে রাশিয়ার মিত্র দেশ চীনের শীর্ষ কূটনীতিকের সাম্প্রতিক রাশিয়া সফরের প্রাক্কালে ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশই কঠিন হুঁশিয়ারি প্রদান করেছে, এমনকি হুমকি দেওয়া হয়েছে যে, চীন এ যুদ্ধের বিষয়ে নাক গলালে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাধবে।

রাশিয়া যে কারণই প্রকাশ করুক না কেন, এটা স্পষ্ট যে, ইউক্রেন যাতে ন্যাটো জোটে যুক্ত হতে না পারে, সেজন্যই এক বছর আগে ইউক্রেন আক্রমণ শুরু করা হয়, যদিও এ যুদ্ধের জন্য রাশিয়া অনেক আগে থেকেই প্রস্তুতি নেয়। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়ার দখল ছাড়াও ইউক্রেনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ক্রমেই প্রকাশ্য হতে থাকে। চলমান যুদ্ধ ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্বের ফলে দুই হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালের শেষদিকে প্রতিবেশী বেলারুশে প্রায় দুই লক্ষ সৈন্য জমায়েত করে রাশিয়া।

চলমান যুদ্ধ বৈশ্বিক অর্থনীতিতে অভাবনীয় প্রভাব ফেলেছে, যা বলাই বাহুল্য। জ্বালানি তেল, গ্যাস, কৃষিজাত পণ্য-সব ক্ষেত্রেই এ প্রভাব স্পষ্ট। বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি এখন ৬ শতাংশে পৌঁছেছে। বিশ্বব্যাপী খাদ্য সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ইউরোপসহ বিশ্বের অনেক দেশই ইউক্রেনের শস্যের ওপর নির্ভরশীল।

বাংলাদেশও গম ও সয়াবিন তেলসহ কিছু পণ্য ইউক্রেন থেকে আমদানি করত। যুদ্ধের প্রথম ৫ মাস ইউক্রেন থেকে কোনো শস্যই রপ্তানি করা যায়নি। পরবর্তী সময়ে উভয় পক্ষের সম্মতিতে ইউক্রেন থেকে শস্য রপ্তানি চলতে থাকে, যদিও প্রায়ই রাশিয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করছে। এদিকে বাংলাদেশে একশ্রেণির সুযোগসন্ধানী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বৈশ্বিক প্রভাবকে রাতারাতি মুনাফা অর্জনের মোক্ষম সুযোগ হিসাবে নিয়েছে, যার ভুক্তভোগী দেশের সাধারণ ও নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ।

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মিত্রদের হুমকি এবং এর সঙ্গে ন্যাটো প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত হলে ভবিষ্যতে পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কারণ গত বছর রাশিয়া ইউক্রেনের চার অঞ্চল দখলের পর হুমকি দিয়েছিল, ‘নিজ ভূখণ্ড দখলে রাখতে রাশিয়া প্রয়োজনে পারমাণবিক শক্তি প্রয়োগে পিছপা হবে না।’ অনুমান করা হয়, পারমাণবিক যুদ্ধ হলে ইউক্রেনের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বের অন্তত পাঁচশ কোটি মানুষের মৃত্যু হবে। বিশ্বে খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। আর প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ অন্যান্য প্রভাব তো থাকছেই।

শুধু ইউক্রেন যুদ্ধের কারণেই নয়, দীর্ঘদিন থেকে চলমান আফ্রিকার খাদ্য সংকট, পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যা, আফগানিস্তান সংকট এবং সবশেষ তুরস্কের ভূমিকম্প বিশ্বব্যাপী মানবিক সংকট প্রকট থেকে প্রকটতর করছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে হয়তো কারও হাত নেই, কিন্তু যুদ্ধ বন্ধে উদ্যোগের অভাব আজ স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান। রাশিয়ার সমরাস্ত্র সক্ষমতা জানান দেওয়া আর এর পালটা পদক্ষেপ হিসাবে ইউক্রেনকে অধিক অস্ত্র না দিয়ে কীভাবে মানবতাবিধ্বংসী এ যুদ্ধ বন্ধ করা যায়, সে চেষ্টাই গুরুত্ব পাওয়া উচিত।

কিন্তু খোদ জাতিসংঘকেও এ বিষয়ে উদ্যোগী হতে দেখা যাচ্ছে না, বরং মাঝেমধ্যে নিন্দা প্রস্তাব পাশ করার মধ্যেই তাদের উদ্যোগ সীমিত। যুদ্ধে অস্ত্রের ব্যবহার এবং বেসামরিক জনগণ ও স্থাপনার নিরাপত্তা বিষয়ে জেনেভা কনভেনশনসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক আইনের বিধান ও অঙ্গীকার প্রতিপালনে সব পক্ষকে উদ্যোগী হতে হবে।

এ যুদ্ধ কখন বন্ধ হবে তা অনিশ্চিত হলেও যুদ্ধে মানবিক দিকটি যেন উপেক্ষিত না হয়, তা নজরদারি ও নিশ্চিত করার দায়িত্ব জেনেভা কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী সব দেশেরই। এ কনভেনশনের প্রচারক (প্রমোটার) হিসাবে আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি বা আইসিআরসিকে এ ব্যাপারে উদ্যোগী ভূমিকা গ্রহণ এবং বিবদমান পক্ষগুলোকে সহযোগিতা করতে হবে। যুদ্ধ কোনো না কোনোভাবে রাজনৈতিক; কিন্তু যুদ্ধে মানবিক দিকটি কোনোভাবেই যেন উপেক্ষিত না হয়, সে ব্যাপারে সব পক্ষকে আন্তরিক হতে হবে।

এম এ হালিম : বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পরিচালক, দুর্যোগ ও জলবায়ু ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিভাগ

halim_64@hotmail.com

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম