
প্রিন্ট: ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৪০ এএম

দেওয়ান সামছুর রহমান
প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আরও পড়ুন
সিনিয়র শিক্ষক, গোয়ালপাড়া হাইস্কুল, সোনারগাঁ
সুপ্রিয় এসএসসি পরীক্ষার্থীবৃন্দ,
তোমাদের সবার প্রতি রইল আন্তরিক শুভকামনা। আশা করি তোমরা তোমাদের প্রস্তুতির চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছ। ১০ এপ্রিল ২০২৫ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে তোমাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এসএসসি পরীক্ষা। ফলে তোমাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। যে কোনো পরিবেশ বা পরিস্থিতিতে পরীক্ষার প্রস্তুতি সর্বদা গ্রহণ করে রাখবে। বর্তমান রুটিন অনুযায়ী আগামী ৩০ এপ্রিল ২০২৫ বুধবার তোমাদের ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়টির পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার ক্ষেত্রে গ্রেডিং পদ্ধতিতে সব বিষয়ই সমান গুরুত্বপূর্ণ। তদুপরি মানবিক বিভাগের জন্য ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। টিউটোরিয়াল পাতায় আমরা ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়টি নিয়ে সব সময় তোমাদের পাশে ছিলাম। তোমরা যদি গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টিকে দেখে থাক, আশাকরি অবশ্যই ভালো করবে। সৃজনশীল পদ্ধতিতে প্রশ্নের ধারণা পেতে বিগত বছরগুলোর প্রশ্নের পাশাপাশি সর্বশেষ মডেল প্রশ্নগুলোর প্রতিও একটু চোখ বুলিয়ে নিও।
মনোযোগসহকারে পড়ে বুঝতে পারলে এবং নিয়মিত চর্চা করলে সহজেই এ বিষয়টিতে এ প্লাস পাওয়া যেতে পারে। আর এর জন্য বোর্ডের নির্ধারিত পাঠ্যবইটি ভালোভাবে আয়ত্বে রাখা হচ্ছে সবচেয়ে জরুরি করণীয় বিষয়। কারণ পাঠ্যবইয়ের কোনো বিকল্প নেই। বইয়ের প্রতিটি চিত্র ভালোভাবে লক্ষ করবে এবং বাসায় প্র্যাকটিস করবে। অনেক প্রশ্নের উদ্দীপক চিত্র দিয়ে সাজানো থাকে তাই চিত্রের প্রতি মনোযোগী হতে হবে।
যে কোনো বিষয়ে ভালো নম্বর পাওয়ার ক্ষেত্রে এবং গ্রেড উন্নয়ন করতে বহুনির্বাচনি অংশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সে ক্ষেত্রে ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়টিতে ভালো করার জন্য অবশ্যই নৈর্ব্যক্তিক অংশে জোর দিতে হবে। যেহেতু ভূগোল একটি তথ্যবহুল বিষয়, তাই নৈর্ব্যক্তিকে ভালো করতে হলে এবং এ বিষয়টিতে এ প্লাস পেতে হলে অবশ্যই পুরো বইটি ভালোভাবে পড়তে হবে এবং খুঁটিনাটি বিষয়গুলো ভালোভাবে জানতে হবে।
ভূগোল একটি ব্যবহারিক বিষয় হলেও নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য এ বিষয়টিতে ব্যবহারিক নেই। অন্যান্য বিষয়ের মতো এ বিষয়টিতেও পূর্ণমান ১০০-এর মধ্যে সৃজনশীলে ৭০ এবং নৈর্ব্যক্তিকে ৩০ নম্বর। সৃজনশীল অংশে মোট ১১টি প্রশ্ন থাকবে এবং যে কোনো ৭টি প্রশ্নের উত্তর করতে হবে। প্রতিটি প্রশ্নের মান ১০। প্রতিটি প্রশ্নের মধ্যে অন্য সব সৃজনশীল বিষয়ের মতো চারটি ভাগ থাকবে। ‘ক’ জ্ঞানমূলক মান-১, ‘খ’ অনুধাবনমূলক মান-২, ‘গ’ প্রয়োগমূলক মান-৩ এবং ‘ঘ’ উচ্চতর দক্ষতামূলক মান-৪। বহুনির্বাচনি অংশে ৩০টি প্রশ্ন থাকবে, প্রতিটি প্রশ্নেরই উত্তর করতে হবে এবং প্রত্যেক প্রশ্নের মান হবে ১। সময় মোট ৩ ঘণ্টা, সৃজনশীল অংশের জন্য ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট এবং বহুনির্বাচনি অংশের জন্য ৩০ মিনিট। বহুনির্বাচনি অংশের জন্য আলাদা উত্তরপত্র সরবরাহ করা হবে। ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়টির বিষয় কোড-১৫৪।
এ বিষয়টিতে মোট অধ্যায় রয়েছে পনেরোটি। ১ম অধ্যায়-ভূগোল ও পরিবেশ, ২য় অধ্যায়-মহাবিশ্ব ও আমাদের পৃথিবী, ৩য় অধ্যায়- মানচিত্র পঠন ও ব্যবহার, ৪র্থ অধ্যায়-পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক গঠন, ৫ম অধ্যায়- বায়ুমণ্ডল, ৬ষ্ঠ অধ্যায়-বারিমণ্ডল, ৭ম অধ্যায়-জনসংখ্যা, ৮ম অধ্যায়-মানব বসতি, ৯ম অধ্যায়-সম্পদ ও অর্থনৈতিক কার্যাবলি, ১০ম অধ্যায়-বাংলাদেশের ভৌগোলিক বিবরণ, ১১শ অধ্যায়-বাংলাদেশের সম্পদ ও শিল্প, ১২শ অধ্যায়- বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা ও বাণিজ্য, ১৩শ অধ্যায়- বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও পরিবেশের ভারসাম্য, ১৪শ অধ্যায়-বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ১৫শ অধ্যায়-টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি)। যেহেতু ১১টি সৃজনশীল প্রশ্ন থাকবে ফলে প্রায় প্রতিটি অধ্যায় থেকেই প্রশ্ন পাওয়া যাবে। তবে, ২য়, ৪র্থ, ৮ম, ১০ম, ১২শ ও ১৪শ অধ্যায়গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর নৈর্ব্যক্তিক উত্তরের জন্য তো সব অধ্যায় অবশ্যই ভালোভাবে পড়তে হবে। উদ্দীপকগুলো মনোযোগসহকারে পড়ে, ভালোভাবে বুঝে সঠিকভাবে খাতায় উপস্থাপন করতে পারলে অবশ্যই পরীক্ষায় ভালো করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে খাতায় যতটা সম্ভব ঘষামাজা, কাটাছেঁড়া কম করবে এবং হাতের লেখাগুলো সুন্দর ও স্পষ্ট করার চেষ্টা করবে। প্রশ্ন হাতে পেয়ে সব প্রশ্নটা প্রথমে ভালোভাবে পড়ে নেবে, নং প্রশ্নগুলো সঠিকভাবে খাতায় লিখবে। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১০ মিনিট আগে পুরো খাতাটা ভালোভাবে আবার দেখে নেবে। আশা করি তোমরা অবশ্যই ভালো করবে। সুস্থভাবে, ভালোভাবে তোমরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ কর। আল্লাহ তোমাদের মঙ্গল করুন।