
প্রিন্ট: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৩৫ এএম

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আরও পড়ুন
রপ্তানি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক হারের নতুন শুল্কারোপে ফুঁসে উঠেছে চীন। নিজেদের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পালটা ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছে দেশটি। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বেইজিংয়ের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, এসব শুল্ক আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতিবিরোধী। এটা সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর বৈধ অধিকার ও স্বার্থের গুরুতর ক্ষতি করবে। এএফপি।
ওয়াশিংটনের এসব শুল্ক ‘অবিলম্বে বাতিল’ করার আহ্বান জানিয়েছে বেইজিং। সতর্ক করে দিয়েছে যে এটি ‘বিশ্বের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বিপন্ন করবে’। মার্কিন স্বার্থ এবং আন্তর্জাতিক সরবরাহ শৃঙ্খলের ক্ষতি করবে। যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নিয়মিত একতরফা হুমকি দেওয়ার অভিযোগও তুলেছে চীন।
বুধবার বিকাল ৪টায় (বাংলাদেশ সময় বুধবার রাত ২টা) হোয়াইট হাউজে সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্বজুড়ে আমদানি পণ্যের ওপর ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্কারোপ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদারদের ওপরও উচ্চমাত্রার অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেন। এর মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে একটি সম্ভাব্য বাণিজ্যযুদ্ধের সূত্রপাত করেছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ট্রাম্পের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার দেশগুলোর একটি হচ্ছে চীন। দেশটির ওপর বিশেষভাবে ৩৪ শতাংশ কঠোর শুল্কারোপ করেছেন ট্রাম্প। এ ছাড়া অন্যান্য দেশের মতো চীনের ওপরও ১০ শতাংশ ন্যূনতম শুল্ক প্রযোজ্য হবে। এর আগে গত মাসে চীনের সব পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্কারোপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এর প্রতিক্রিয়ায় চীন সয়াবিন, শূকরের মাংস, মুরগির মাংসসহ বিভিন্ন মার্কিন কৃষিপণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করে। শুধু চীন নয়, ট্রাম্পের এ ঘোষণায় চীন, জাপান, যুক্তরাজ্যসহ আরও অনেক দেশই ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে।
জাপানের বাণিজ্যমন্ত্রী ইয়োসি মুতো বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এ একতরফা শুল্ক পদক্ষেপ খুবই দুঃখজনক এবং এটি জাপানের ওপর প্রয়োগ না করার জন্য আমি জোরাল আহ্বান জানাই (ওয়াশিংটনকে)। দ্য জার্মান অটোমোটিভ ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (ভিডিএ) বলেছে, এই শুল্ক ক্ষতি ব্যক্তিদের সংখ্যাই শুধু বাড়াবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এখন নিজেদের একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছে উল্লেখ করে ভিডিএ আরও বলেছে, এ জোট সমঝোতায় আগ্রহের ইঙ্গিতও দিয়ে যাচ্ছে। জার্মান কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিষ্ঠানটি ইইউকে ‘মাথা ঠান্ডা’ রাখার অনুরোধ জানিয়ে বলেছে, ‘উত্তেজনা শুধু ক্ষতিই বাড়াবে।’ জাপানের মুখ্য কেবিনেট সেক্রেটারি ইয়োসিমাসা হায়াসি সাংবাদিকদের বলেন, এ শুল্ক আরোপ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) বিধিমালা ও দুই পক্ষের মধ্যকার বাণিজ্য চুক্তির লঙ্ঘন হয়ে থাকতে পারে।যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি পণ্যে ২৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের শিকার জাপান। দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রী ইয়োসি মুতো ট্রাম্পের পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন।
ইয়োসি মুতো বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এ একতরফা শুল্ক পদক্ষেপ খুবই দুঃখজনক এবং এটি জাপানের ওপর প্রয়োগ না করার জন্য আমি জোরালো আহ্বান জানাই (ওয়াশিংটনকে)।’ জাপানের মুখ্য কেবিনেট সেক্রেটারি ইয়োসিমাসা হায়াসি সাংবাদিকদের বলেন, এ শুল্ক আরোপ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) বিধিমালা ও দুই পক্ষের মধ্যকার বাণিজ্য চুক্তির লঙ্ঘন হয়ে থাকতে পারে। ব্রিটেনের বাণিজ্যমন্ত্রীজোনাথান রেনল্ডস বলেছেন, (পালটা ব্যবস্থা হিসাবে) কোনো কিছুই ভাবনার বাইরে নেই। আমাদের কাছে অনেক কিছুই রয়েছে এবং তা কাজে লাগাতে ইতস্তত করব না। কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি হুঁশিয়ার করে বলেছেন, এ শুল্ক আরোপ বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থাকে মৌলিকভাবে বদলে দেবে।
মার্ক কার্নি আরও বলেন, ‘আমরা পালটা পদক্ষেপ নিয়ে এ শুল্ক মোকাবিলা করতে যাচ্ছি। আমরা আমাদের কর্মীদের সুরক্ষা দিতে চলেছি।’