‘সান্ত্বনার খোঁজে’ ব্রিটেনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে নাস্তানাবুদ হওয়ার পর এবার ‘সান্ত্বনার খোঁজে’ সোজা ব্রিটেনে গেলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। যুক্তরাষ্ট্রে খুব একটা সমাদৃত না হলেও যুক্তরাজ্যে উষ্ণ অভ্যর্থনা পেলেন তিনি। লন্ডনের ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে জেলেনস্কিকে আমন্ত্রণের জন্য জড়ো হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন। জেলেনস্কিকে দেখেই বুকে টেনে নিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারও। শনিবার যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন জেলেনস্কি। রয়টার্স, বিবিসি।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার জেলেনস্কিকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়ে বলেছেন, যুক্তরাজ্যজুড়ে জেলেনস্কির জন্য পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। তারা যতদিন প্রয়োজন ইউক্রেনের পাশে আছেন। জবাবে স্টারমারকে জেলেনস্কি বলেছেন, এমন বন্ধু থাকায় তার দেশ খুব খুশি। স্টারমারের সঙ্গে উষ্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে বলে উল্লেখ করে জেলেনস্কি আরও বলেছেন, ইউক্রেনের জন্য শক্তিশালী অবস্থান নিশ্চিত করা এবং নিরাপত্তা নিশ্চয়তা পাওয়া নিয়ে তাদের মধ্যে কথাবার্তা হয়েছে। আমাদের আলোচনায় অনেক কিছু উঠে এসেছে। ইউক্রেন ও ইউরোপের সামনে থাকা চ্যালেঞ্জ, অংশীদারদের সঙ্গে সমন্বয় করে চলা, ইউক্রেনের জন্য শক্তিশালী অবস্থান নিশ্চিত করা এবং নির্ভরযোগ্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তা পাওয়া নিয়ে আমরা মতবিনিময় করেছি। লন্ডনে স্টারমার-জেলেনস্কি ২২৬ কোটি পাউন্ডের একটি চুক্তিও সই করেছেন। যুদ্ধে রুশ বাহিনীকে প্রতিহত করতে সামরিক সহায়তা হিসাবে ইউক্রেনকে ওই অর্থ ঋণ হিসাবে দেবে যুক্তরাজ্য। রুশ বাহিনী ইউক্রেনে আক্রমণ করার পর রাশিয়ার যেসব সম্পদ জব্দ করা হয় যুক্তরাজ্য সেগুলোর মুনাফা থেকে ওই ঋণ পরিশোধ করে নেবে। শুক্রবার ওভাল অফিসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববাসীকে হতবাক করে দিয়ে জেলেনস্কিকে তুলোধুনো করেছেন ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে বসে কিছুটা উগ্র মেজাজ দেখানোর ফলে ইউক্রেনের ওপর থেকে সব সমর্থন তুলে নেওয়ার হুমকি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বাগবিতণ্ডার পর হোয়াইট হাউজ ছাড়তে বলা হয়েছিল জেলেনস্কিকে।
এদিকে শনিবার জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের পর স্টারমার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোর সঙ্গে কথা বলেছেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের পথ খুঁজে পেতে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে রোববার রাত ৮টায় (বাংলাদেশি সময়) লন্ডনে ইউরোপের নেতাদের একটি শীর্ষ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে ইউরোপজুড়ে প্রতিরক্ষা বিষয়েও আলোচনা হবে। এছাড়া জেলেনস্কির ব্রিটিশ রাজা চার্লসের (তৃতীয়) সঙ্গেও দেখা করার কথা রয়েছে। এসব বৈঠকে স্বাভাবিকভাবেই ওয়াশিংটনের ঘটনাবলির ছায়া পড়বে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন বাড়ার কারণে যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে সেটা নিয়েও আলোচনা হবে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে প্রধানমন্ত্রী স্টারমার নিজেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যে সেতু হিসাবে দেখাতে চেয়েছেন। ট্রাম্প প্রশাসন ইউরোপের নিরাপত্তার বিষয়ে যে কম স্টারমার ট্রাম্প ও জেলেনস্কির সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তিনি ইউক্রেনের জন্য একটি উপায় বের করতে চান। কারণ তারা শান্তি চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা গ্যারান্টি চাইছেন।
শনিবার জেলেনস্কির ডাউনিং স্ট্রিট সফরে যাওয়া প্রধানমন্ত্রীর জন্য অব্যাহত সমর্থন জানানোর একটি সুযোগ করে দিয়েছে। এ সময় বাইরে জনতার উল্লাসের কথা উল্লেখ করে তিনি ইউক্রেনের নেতাকে বলেছেন, যুক্তরাজ্যের মানুষ এভাবেই বাইরে এসে দেখিয়েছে, তারা আপনাকে ও ইউক্রেনকে কতটা সমর্থন করে।