Logo
Logo
×

তারাঝিলমিল

নাটকে বেড়েছে গানের ব্যবহার

একটি সিনেমা জনপ্রিয় করে তুলতে গানের ভূমিকা অপরিসীম। গানের জন্যই অনেক সিনেমা দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে। গান যত ভালো হতো, সিনেমা তত হিট-এটাও একসময় প্রচলিত ছিল। এ কারণে সিনেমার গান নিয়ে নির্মাতাকে আলাদা করে ভাবতে হয়। একসময় সিনেমায় অনেক গানের ব্যবহার হতো। সেগুলো এতই জনপ্রিয় হতো যা দর্শকদের মুখে মুখে থাকত। এক সিনেমায় সাত থেকে আটটি গানও ব্যবহার করা হতো। কালের বিবর্তনে তা এখন কমে দুই থেকে তিনটিতে এসে ঠেকেছে। তবে এদিকে নাটকের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। নাটকে গানের ব্যবহার হবে এটি একসময় ভাবনার বাইরে ছিল। কালেভদ্রে গল্পের প্রয়োজনে কখনো একটি গানের কয়েক লাইন ব্যবহার করা হতো। কারণ নাটকের ব্যাপ্তিকাল কম থাকায়, গান ব্যবহার নিয়ে নির্মাতাদের আগ্রহ তেমন ছিল না। এখন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নাটকে এসেছে পরিবর্তন।

Icon

তারা ঝিলমিল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

গত কয়েক বছরে সিনেমায় গানের সংখ্যা কমে গেছে। এর উল্টোটা দেখা গেছে নাটকে। ছোটপর্দার এ কনটেন্টে গানের ব্যবহার বেড়েছে। বর্তমানে অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, গান ব্যবহার না করলে যেন নাটকটিই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। বিষয়টিকে কেউ কেউ ইতিবাচকভাবে দেখলেও, অনেকে মনে করছেন বাণিজ্যিক মুনাফার আশায় অপ্রয়োজনীয়ভাবেই নাটকে গান ব্যবহার করা হচ্ছে। ভিউ বাণিজ্যের আশায় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলোও গানে বেশি নজর দিচ্ছেন। দেখা গেছে, নাটক প্রকাশের পর সেই গানগুলোর অডিও-ভিডিও আলাদা করে পুনরায় প্রকাশ করা হচ্ছে। সেখান থেকেও একটি বাড়তি অর্থ আসছে। তাই বর্তমান সময়ে খুব কম নির্মাতাই আছেন, গান ছাড়া নাটক নির্মাণ করেন। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, গল্পের প্রয়োজনে গানের ব্যবহার হতে পারে, তবে গানের জন্য নাটক হওয়াটা সমীচীন নয়। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে নাটকে অতিরঞ্জিত গান নাটকের মান নষ্ট করছে। যদি এটি চলতে থাকে তাহলে নাটক তার ঐতিহ্য হারাবে।

কেন নাটকে গানের ব্যবহার বাড়ছে, এ প্রশ্নের উত্তরে নাট্যনির্মাতা শিহাব শাহীন বলেন, ‘একটি নাটকের ব্যাপ্তিকাল ৪০ মিনিট। স্বল্প সময়ে নাটকের গল্প বলাই যেখানে কঠিন, সেখানে গান কীভাবে সম্ভব! নাটকে গানের ব্যবহারের ফর্মুলা বানিয়ে ফেলেছেন অনেকে। এভাবে চলতে থাকলে নাটকের জন্য ক্ষতিকর।’

নির্মাতা সাগর জাহান বলেন, ‘নাটকে গান ব্যবহার হতেই পারে, আমি এর পক্ষে। তবে এখন নাটকে যে হারে গান ব্যবহার হচ্ছে তার পক্ষে নই। এখন অনেক নির্মাতা গানকে কেন্দ্র করে নাটকের গল্প তৈরি করেন। এটি একজন নির্মাতার জন্য শোভনীয় নয়।’

সিনেমার গানের কিংবদন্তি শিল্পী বলা হয় কনকচাঁপাকে। সিনেমার বদলে নাটকে গানের ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সিনেমায় তো অনেক গান করেছি। আমার যা কিছু অর্জন সব সিনেমার গান গেয়ে। এখন আর গান গাওয়া হয় না। সিনেমায় তো এখন গানও অনেক কমেছে। তবে নাটকের বিষয়টি আমি জানি না। তবে গল্পের প্রয়োজনে যদি এখন নাটকেও গান ব্যবহার হয় সেটি দোষের নয়।’

সংগীতশিল্পী মনির খান বলেন, ‘এটি এখন সময়ের দাবি। গানের মাধ্যমে গল্পের অনেক কিছু প্রকাশ পায়। নাটকেও গল্পের কারণে গান থাকতে পারে। আমার কাছে এটি ভালোই মনে হয়। তবে অপ্রাসঙ্গিক, অপ্রয়োজনীয় গান ব্যবহার করা উচিত নয়।’

নাটকে গানের ব্যবহারকে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন সংগীতশিল্পী বাপ্পা মজুমদার। তিনি বলেন, ‘এতে করে নাটকের মধ্য দিয়েও গানের প্রচার হচ্ছে। গান ছড়িয়ে যাচ্ছে। নাটক যেমন গানের জন্য আলাদা একটি দর্শকপ্রিয়তা পাচ্ছে বা তার গল্পের প্রয়োজনে গান ব্যবহৃত হচ্ছে, তেমনি গানও নাটকের মাধ্যমে দর্শকদের কাছে পৌঁছাচ্ছে। তাতে করে কাজের জায়গাটা বড় হচ্ছে।’

সংগীতশিল্পী দিলশাদ নাহার কণা বলেন, ‘সিনেমায় গান অনেক আগে থেকেই রয়েছে। নাটকে আগেও গান হতো, কিন্তু কম বলে তেমন আলোচনা হতো না। এখন সংখ্যাটা বেড়েছে, এ কারণেই আলোচনা হচ্ছে। এতে করে শিল্পীদের কাজের ক্ষেত্রও বাড়ছে। দর্শক নতুন গান পাচ্ছেন।’ আরেফিন রুমি বলেন, ‘খুবই ইতিবাচক দিক। এখানে খারাপ কিছু নেই। নাটকে গানের ব্যবহার নতুন নয়। এটিকে সাধুবাদ জানাই।’

নাটকের গানে বেশি দেখা যায় ইমরান মাহমুদুলকে। তিনি বলেন, ‘নাটকে এখন গানের ব্যবহার বেড়েছে। এজন্য আমরা যারা নাটকেও গান করি তাদের ব্যস্ততা বেড়েছে। আমার কথাই যদি বলি, চলতি বছরে নাটকের গানেই ব্যস্ততা গিয়েছে। প্রচারের মাধ্যম বেশি থাকায় নাটক এখন অনেক বেশি নির্মাণ হচ্ছে, যার ফলে গানের কাজও বেড়েছে।’

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম