
প্রিন্ট: ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:১৭ এএম

ইসরাত জাহান ইফাত
প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ঈদের খাবার স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ রাখার জন্য কিছু সতর্কতা মেনে চলা উচিত।
* যারা বাড়ন্ত বয়সি, স্বাভাবিক ওজনে আছেন এবং সুস্থ, তারা বাড়িতে তৈরি সব খাবারই খেতে পারেন, পরিমিত পরিমাণে। এক মাস রোজা রাখার পর হঠাৎ করে তেল-চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ করলে গ্যাস বা বদহজম হতে পারে। তাই ঈদের দিনটি সহজপাচ্য ও পুষ্টিকর খাবার দিয়ে শুরু করা গুরুত্বপূর্ণ।
* ঈদের সকালে বা বিকালে দুধ-সেমাই, পায়েস, পুডিং, ফালুদা, কাস্টার্ড জাতীয় খাবার, বাড়িতে তৈরি স্বাস্থ্যকর নাশতা পরিমিত পরিমাণে খেতে পারেন। তবে কনডেন্সড মিল্ক, বাটার অয়েল, মেয়োনেজ, মার্জারিন, সাদা চিনি ইত্যাদি ক্ষতিকর উপাদান ব্যবহার এড়িয়ে এর পরিবর্তে ব্রাউন সুগার, মধু বা গুড় ব্যবহার করতে পারেন। ডায়াবেটিস রোগীরা বিকল্প মিষ্টিকারক স্টেভিয়া ব্যবহার করতে পারেন এবং চিনি, গুড়, মধু এড়িয়ে চলতে হবে।
* মিষ্টান্নের পরিবর্তে মৌসুমি রঙিন ফল খাওয়া এবং মিক্সড ফ্রুট সালাদ উপভোগ করা স্বাস্থ্যকর বিকল্প হতে পারে।
প্রধান খাবারের মেনু
* ঈদের দিনের মূল খাবারের মেনুতে পোলাও, বিরিয়ানি, খিচুড়ি, তেহারি থাকে, যা সাধারণত লাল মাংসের বিভিন্ন পদ দিয়ে তৈরি হয়। যাদের শারীরিক জটিলতা রয়েছে, তারা তৈলাক্ত খাবারের পরিবর্তে সাদা ভাতের সঙ্গে ১টি মাংসের পদ পরিমিত পরিমাণে খেতে পারেন। চাইলে মাছ বা ডিমের একটি পদ রাখতে পারেন।
* হৃদরোগ, লিভার, কিডনির রোগ, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি দীর্ঘমেয়াদি রোগীরা প্রতিবেলায় ৫০ গ্রামের বেশি মাংস খাবেন না এবং সেসময় অন্য কোনো প্রোটিন জাতীয় খাবার গ্রহণ করবেন না।
* আইবিএস রোগীরা ঈদে দুধের তৈরি খাবার ও কাঁচা সালাদ এড়িয়ে চলুন এর পরিবর্তে সামান্য দই খেতে পারেন।
* ডায়াবেটিস ও ওজনাধিক্যের রোগীরা মিষ্টান্ন কম খাবেন, পরিবর্তে ফল খাবেন। অতিরিক্ত খাবার না খেয়ে ৪-৫ বারে অল্প করে খাবেন ও ধীরে ধীরে চিবিয়ে খাবেন। প্রথমেই পোলাও বা ভাত নয়, আগে সালাদ/সবজি ও মাছ/মাংসের পদ গ্রহণ করা ভালো।
হজম ও সুস্থতা বজায় রাখতে
* কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে, সার্বিক সুস্থতার জন্য ঈদের দিনেও দুপুর ও রাতের খাবারের সঙ্গে ১০০ গ্রাম সবজি বা সালাদ খেতে পারেন। সারা দিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন। ঈদের আগের রাতে বা সকালে ইসবগুলের ভুসি পানির সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন। ভারী খাবারের পর হজমে সহায়ক বোরহানি, টক দইয়ের ঘোল বা মাঠা, লেবু বা জিরা পানি, আদা পানি, ডাবের পানি, ফ্রেশ জুস গ্রহণ করুন। কোল্ড ড্রিঙ্কস, কোলা ও কৃত্রিম রঙ-ফ্লেভারযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুন। ফাস্ট ফুড, বেকারি ও রেস্তোরাঁর খাবার এড়িয়ে চলুন। রাতের খাবারের পরপরই ঘুমাবেন না, অন্তত ২ ঘণ্টা আগে খাবার শেষ করুন। ঈদের দিনে বা রাতে ১ ঘণ্টা হাঁটাহাঁটি করুন এবং খাবারের ক্যালরি বার্ন করুন।
লেখক : পুষ্টিবিদ।