ইডিমা বা শরীরে পানি জমা
আখতারুন নাহার আলো
প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
অসুস্থতা ছাড়াও অনেক সময় ভুল খাদ্যাভাস অথবা পুষ্টির অভাব হলে দেহে পানি জমতে পারে। এতে হাত-পা-চোখ-মুখ ফুলে যায়। প্রতিদিনের খাবারে আমিষযুক্ত খাবার যেমন-মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল, বাদামের অভাব হলে শরীরে পানি জমে যায়। আবার সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের মধ্যে সমতা না থাকলেও এ ধরনের অসুবিধা হতে পারে, তার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো-পানি কম পান করার কারণে ডিহাইড্রেশন হওয়া।
দিনের পর দিন লো ফ্যাট ও লো-ক্যালরির খাবার খেলে দেহে প্রোটিন বা আমিষের অভাব হতে পারে। সুস্থ থাকার জন্য খাবারে থাকবে চাহিদামতো শর্করা, আমিষ ও চর্বি। এর কোনোটির অভাব হলে পুষ্টির ঘাটতি হবেই। অনেকে রোগা হওয়ার জন্য শর্করা কম খান বা একেবারে বাদ দেন, এতে শরীরে সঞ্চিত প্রোটিনের ঘাটতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। প্রোটিনের নির্দিষ্ট কিছু কাজ আছে যেমন-দেহের গঠন, ক্ষয়পূরণ, তাপশক্তি উৎপাদন, রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো, দেহের ত্বক, চুল, অস্থি, ইত্যাদি গঠন। এনজাইম ও হরমোন তৈরিতে প্রোটিন প্রয়োজন। যখন দেহে শর্করার অভাব হয়, তখন প্রোটিনকে আরও বেশি কাজ করতে হয়। ফলে শর্করার অভাব হলে আমিষের অভাবও হবে। এতে শরীরের কোষে থাকা পানি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় না শুকিয়ে বিভিন্ন টিস্যুতে জমে। ফলে ইডিমা হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। এদিকে সোডিয়াম-পটাশিয়াম অসমতার জন্যও খাবারই দায়ী। এজন্য খাবারের ফাঁকে ফাঁকে চিপস, চানাচুর, বেকারি প্রডাক্ট সংরক্ষিত খাবার না খাওয়াই ভালো। এগুলোতে সোডিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে বলে, রক্তে সোডিয়ামের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। সোডিয়ামের পানি ধরে রাখার ক্ষমতা বেশি বলেই দেহে পানি জমা হতে পারে। এদিকে অতিরিক্ত চা-কফি খেলে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা হতে পারে। এটাও পানি জমার অন্যতম কারণ। এ কারণে কিছু কিছু খাবারের অভ্যাস করতে হবে যেমন-সবুজ শাকসবজি, মৌসুমি ফল, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল পরিমিত পরিমাণে থাকে। ইলেকট্রোলাইটের অসমতা দূর করার জন্য রান্নার পরই খাবার খেয়ে ফেলা উচিত। সংরক্ষিত বা প্রসেসড ফুড এড়িয়ে চলতে হবে। এ খাবার খুব ইচ্ছা করলে সপ্তাহে একদিন খাওয়া যেতে পারে। ডিহাইড্রেশন কাটাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। মোটকথা, শরীরে যাতে অতিরিক্ত পানি না জমে সেজন্য শরীরকে সব সময় হাইড্রেট রাখতে হবে এবং সুষম খাবার খেতে হবে।
লেখক : সভাপতি, ডায়াবেটিস নিউট্রিশনিস্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশ, নিউট্রিশনিস্ট পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শ্যামলী ও অ্যাডভান্স হাসপাতাল, ঢাকা।