দীর্ঘমেয়াদে স্টেরয়েড ব্যবহার ও হাড়ক্ষয় রোগ
ডা. তাহমীদ কামাল
প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
শ্বাসকষ্টের চিকিৎসায় টানা স্টেরয়েড ওষুধ খেলে সেটা থেকে হতে পারে মারাত্মক হাড়ক্ষয়-হাড় পচনের মতো রোগ। যদিও স্টেরয়েড শ্বাসকষ্টের লক্ষণ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে, তবে দীর্ঘমেয়াদি বা উচ্চমাত্রার স্টেরয়েড ব্যবহার কিছু মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে, যার মধ্যে এভাস্কুলার নেক্রোসিস উল্লেখযোগ্য।
* এভাস্কুলার নেক্রোসিস কী
এভাস্কুলার নেক্রোসিস একটি চিকিৎসাগত অবস্থা, যেখানে হাড়ের কোনো নির্দিষ্ট অংশে রক্তপ্রবাহ হ্রাস পায় বা বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে সেই হাড়ের টিস্যু মরে যায় এবং ধীরে ধীরে ক্ষয় হয়। সাধারণত এটি হিপ জয়েন্ট, হাঁটু, কাঁধ বা হাতের ছোট ছোট জয়েন্টে বেশি দেখা যায়।
* স্টেরয়েড কীভাবে এভাস্কুলার নেক্রোসিস সৃষ্টি করে
স্টেরয়েডের দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারে শরীরে বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়, যা এভাস্কুলার নেক্রোসিসের কারণ হতে পারে।
▶ রক্তনালি সংকোচন : স্টেরয়েড রক্তনালি সংকুচিত করে, ফলে হাড়ে রক্ত প্রবাহ কমে যায়।
▶ লিপিড মেটাবোলিজমের পরিবর্তন : স্টেরয়েড লিপিডের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা রক্তনালির ভেতর ফ্যাট ড্রপলেট তৈরি করতে পারে এবং এই ফ্যাট এমবোলিজম রক্তপ্রবাহ বন্ধ করতে পারে।
▶ অস্থি কোষে প্রভাব : স্টেরয়েড সরাসরি অস্থি কোষের কার্যক্ষমতা হ্রাস করতে পারে, ফলে হাড়ের ক্ষয় হয়।
* লক্ষণ ও উপসর্গ
▶ প্রথমদিকে হালকা ব্যথা অনুভূত হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি তীব্র হতে পারে, বিশেষত চলাচল বা চাপের সময়।
▶ হাড়ের টিস্যু মরে গেলে জয়েন্টে সংকোচন বা দৃঢ়তা অনুভূত হতে পারে।
▶ জয়েন্টের চলাচলে সীমাবদ্ধতা আসতে পারে।
* প্রতিকার ও ব্যবস্থাপনা
যদি স্টেরয়েড ব্যবহার করতেই হয়, তাহলে কিছু প্রতিকার ব্যবস্থা গ্রহণ করে এভাস্কুলার নেক্রোসিসের ঝুঁকি কমানো যেতে পারে।
▶ স্টেরয়েডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ : চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী স্টেরয়েডের ডোজ ও ব্যবহারের মেয়াদ নির্ধারণ করা।
▶ সুস্থ জীবনধারা : ব্যালেন্সড ডায়েট ও নিয়মিত ব্যায়াম করে শরীরের হাড় ও জয়েন্ট শক্তিশালী রাখা।
▶ নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা : নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে স্টেরয়েড ব্যবহারের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা।
লেখক : ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিশেষজ্ঞ