ভিটামিন ডি গ্রহণে গুরুত্ব দিন
আখতারুন নাহার আলো
প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ভিটামিন ডি শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আমাদের দেশে ৩০-৫০ শতাংশ লোকের ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি রয়েছে। ক্রমাগত এর অভাব থাকলে, খাবার খাওয়ার পরে ক্ষুধা নিবৃত হওয়াটা ঠিকমতো অনুভব করা যায় না বলে অনাকাঙ্ক্ষিত শারীরিক ওজন বৃদ্ধি হতে পারে। এ কারণে মাঝে মাঝে অবশ্যই রক্তে ভিটামিন ডি-এর মাত্রা পরীক্ষা করতে হবে। চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিনের মধ্যে ডি অন্যতম। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি তৈলাক্ত ত্বকের ওপর পড়লে দেহে ভিটামিন ডি তৈরি হয়। পরে শরীরে এটা শোষিত হয়। যখন মুখে ভিটামিন ডি খাওয়া হয়, তখন চর্বির মাধ্যমে এটা ক্ষুদ্রান্ত্রের দেওয়ালে শোষণ হয়। ভিটামিন ডি’র দৈনিক প্রয়োজন ৪০০০ আইইউ। ১০ মিনিট রোদে দাঁড়ালে ১০,০০০ আইইউ তৈরি হয়। এই ভিটামিনকে সানশাইন ভিটামিনও বলা হয়।
* ভিটামিন ডি’র কাজ
▶ রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
▶ ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম ফসফরাসকে দেহে ধরে রাখে বলেই দাঁত, হাড় মজবুত ও স্বাস্থ্যকর থাকে।
▶ ৬৫ বছরের ওপরের মানুষের বোধবুদ্ধি, চিন্তাধারা, স্মৃতিশক্তি বাড়ায়।
▶ ইনসুলিন সহনশীলতার জন্য ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় ভিটামিন ডি উপকারী।
▶ কোলন, প্রোস্টেট, ওভারির ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।
▶ আলঝাইমার রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে।
▶ ভিটামিন এ, সি-এর সঙ্গে এই ভিটামিন গ্রহণ করলে ঠান্ডাজনিত ফ্লু রোধ হয়।
* ভিটামিন ডি’র অভাবে কী হয়
▶ রিকেট ও অস্টিও ম্যালেশিয়া হয়ে থাকে।
হাড় ও দাঁত ঠিকমতো গঠিত হয় না।
▶ টাইপ ১ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে।
▶ রিউম্যাটিক আর্থাইটিস, হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডিমেনশিয়া, পারকিনসন্স ডিজিজ হতে পারে।
▶ গর্ভবতী মায়েদের অপারেশনের ঝুঁকি বাড়ে।
▶ দেহের ওজন বেড়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও ভিটামিন ডি-এর স্বল্পতার ভূমিকা আছে।
▶ যেসব শিশু সূর্যের আলোতে খেলাধুলা করে তাদের রিকেট রোগ কম হয়।
* ভিটামিন ডি’র উৎস
▶ সূর্যের আলো ডিটামিন ডি-এর অন্যতম উৎস। যদি শিশুদের দশ মিনিট রোদে রাখা যায় তাহলে ৩০ কাপ কমলালেবুর সমান ভিটামিন ডি পাওয়া যাবে।
▶ সমুদ্রের মাছ, ডিমের কুসুম, কডলিভার অয়েল, মাখন, দুধ ইত্যাদিতে ভিটামিন ডি রয়েছে।
আমাদের দেশে সূর্যের কিরণ বেশি হওয়ার কারণে দেশের বেশির ভাগ মানুষের দেহের রং বাদামি অথবা কালো হয়ে থাকে। এ ধরনের ত্বক সূর্যের আলো সহ্য করতে পারে। এদিকে ক্যালসিয়াম ছাড়া ভিটামিন ডি শোষণ হয় না বলে, খাবারে অবশ্যই ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার থাকতে হবে। এজন্য খেতে হবে দুধ, পনির, বিভিন্ন ধরনের মাছ, শুঁটকি মাছ, খেজুর গুড়, শালগম, কালো কচুশাক, শজনেপাতা, পোস্তদানা, তিল, জিরা, বিট, সরিষাশাক, ধনিয়াপাতা, কুমড়ার বিচি, পুদিনাপাতা, কদবেল, খেজুর, ব্রকলি ইত্যাদি।
লেখক : চিফ নিউট্রিশন অফিসার ও বিভাগীয় প্রধান (অব.), বারডেম। সভাপতি, ডায়াবেটিস নিউট্রিশনিস্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশ, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শ্যামলী ও অ্যাডভান্স হাসপাতাল, ঢাকা।