সুখে-আনন্দে রাখে যে হরমোন
ডা. শাহজাদা সেলিম
প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আমাদের ইতিবাচক সংযোগ ও বিস্ময় এবং বিস্ময়ের অভিজ্ঞতাগুলো আসলে আমাদের মস্তিষ্কে একটি রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। এটি আমাদের মস্তিষ্কে রাসায়নিক বার্তাবাহকের মাধ্যমে হয়, যা হরমোন নামে পরিচিত। চারটি প্রধান হরমোন রয়েছে যা প্রাথমিকভাবে এ অনুভূতিগুলো এবং সংবেদনগুলো তৈরি করার জন্য দায়ী। তারা আমাদের সুস্থতার অনুভূতিকে সংযত করে এবং আমাদের চাপের মাত্রা, স্বযত্ন এবং জীবনধারা দ্বারা প্রভাবিত হয়।
* ডোপামিন : প্রায়শই এটিকে ‘সুখী হরমোন’ বলা হয়। ডোপামিনের ফলে সুস্থতার অনুভূতি হয়। মস্তিষ্কের পুরস্কার বা রিওয়ার্ড সিস্টেমের এটি প্রাথমিক চালক, যখন আমরা আনন্দদায়ক কিছু অনুভব করি তখন এটি বৃদ্ধি পায়। আমাদের দেহে খাদ্য গ্রহণ, যৌনতা, কেনাকাটা, উন্মুক্ত স্থানে হাঁটাচলা, হাল্কা ব্যায়াম ইত্যাদি কার্যকলাপ থেকে প্রচুর পরিমাণে ডোপামিন উৎপন্ন হয় যা আমাদের এই সময়টাকে উপভোগ্য করে তুলে।
* সেরোটোনিন : ‘ফিল-গুড হরমোন’ নামে পরিচিত। সেরোটোনিন উদ্বেগ এবং বিষণ্নতা দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ব্যায়াম, বাইরে সময় কাটানো এবং রাতের ঘুম সেরোটোনিন বাড়াতে সাহায্য করে।
* এন্ডোরফিন : ব্যায়ামের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি সম্পর্কযুক্ত। কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়াম হলো এন্ডোরফিন বাড়ানোর সেরা উপায়। এ শক্তিশালী হরমোন প্রাকৃতিক ব্যথানাশক হিসাবে কাজ করে, অস্বস্তি কমিয়ে দেয় এবং সর্বাধিক আনন্দ দেয়।
* অক্সিটোসিন : মানসিক বন্ধন এবং পারস্পারিক সম্প্রীতির জন্যে সর্বাধিক পরিচিত, অক্সিটোসিন প্রসবের সময় এবং স্তন্যপান করার সময় নারীর সিস্টেমকেও প্রভাবিত করে। এ ‘ভালোবাসার হরমোন’ হাত ধরা, আলিঙ্গন, চুম্বন, শরীর ম্যাসেজ এবং যৌনতাসহ যে কোনো ধরনের অন্তরঙ্গ স্পর্শের কারণেও যথেষ্ট পরিমাণে নিঃসরিত হয়।
অন্যদিকে, এমন কিছু ক্রিয়াকলাপ রয়েছে যা চারটি সুখের হরমোনকে স্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে তোলা যায়। যেমন-প্রিয়জনের সঙ্গে আলিঙ্গন, ব্যায়াম, অ্যারোমাথেরাপি, ম্যাসেজ, যৌন ক্রিয়া, ভালো লাগার গান শোনা, ধ্যান করা, বাইরে সময় কাটানো, ভালো ঘুম হওয়া, কমেডি নাটক বা সিনেমা উপভোগ করা।
লেখক:সহযোগীঅধ্যাপক, হরমোন রোগ বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।