Logo
Logo
×

সুস্থ থাকুন

হার্টে ব্লক : অ্যাসপিরিন কতদিন খাবেন

Icon

ডা. মাহবুবর রহমান

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

হার্ট অ্যাটাক সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। অনেকে অ্যাটাককে স্ট্রোক বলে থাকেন। আসলে স্ট্রোক হলো মস্তিষ্ক বা ব্রেনের রোগ। যার জন্য প্যারালাইসিস বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগের প্রকাশ ঘটে থাকে। হার্ট অ্যাটাক মানে হলো হার্টের কোনো না কোনো রক্তনালি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়া। ফলে হার্টের মাংসপেশির যে অংশ ওই রক্তনালির মাধ্যমে অক্সিজেন পেত, তা দ্রুত ধ্বংস হতে শুরু করে। রক্তনালির ব্লকটি অপসারণ করতে না পারলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হার্টের ওই অংশটির মৃত্যু ঘটে। এতে দুটি ঘটনার সৃষ্টি হতে পারে-

▶ রোগীর দ্রুত মৃত্যু ঘটতে পারে, ফুসফুসে পানি জমে তীব্র শ্বাসকষ্ট বা প্রকট হার্ট ফেইলিওর হতে পারে।

▶ হার্টের পাম্পিং ক্ষমতা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেয়ে দীর্ঘমেয়াদি বা ক্রনিক হার্ট ফেইলিওরের জন্ম দিতে পারে। বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কমে যাবে, আর যতদিন রোগী বেঁচে থাকবেন, ততদিন এক যন্ত্রণাকাতর জীবনযাপন করতে হবে।

* কী ওষুধ খাবেন

হার্টের কী কী ওষুধ নিয়মিত খেয়ে যেতে হবে এবং কেন খেতে হবে সে সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। হার্টের রক্তনালির দেয়ালে বিভিন্ন কারণে চর্বি জমে নালি সরু হতে থাকে। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, ধূমপানসহ তামাকজাত দ্রব্য, নিয়মিত ব্যায়াম না করা, অতিরিক্ত ওজন, চর্বিযুক্ত প্রাণিজ মাংস খাওয়া, রাত জাগা, অতিরিক্ত টেনশন করা ইত্যাদি কারণে রক্তনালির চর্বি ফেটে যেতে পারে। চর্বির দলা ফেটে গেলে সেখানে রক্তের অণুচক্রিকা (Platelets) এসে রক্ত জমাট বাঁধতে উদ্বুদ্ধ করে। ফলে কিছুক্ষণের মধ্যে চর্বির দলা একটি রক্তের দলায় পরিণত হয়ে পুরো রক্তনালি বন্ধ করে দেয়। তখনই রোগী বুকে চাপ, ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, ঘাম, আতঙ্ক ইত্যাদি উপসর্গে আক্রান্ত হয়।

* প্রতিরোধের উপায়

হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ করতে হলে ওপরে বর্ণিত রোগ এবং ঝুঁকির প্রবণতাগুলো দূর করতে হবে। যদি ওষুধের প্রশ্ন আসে তাহলে হার্ট অ্যাটাক, রিং লাগানো বা বাইপাস সার্জারির পর দুটো ওষুধ নিয়মিতভাবে, প্রয়োজনে সারাজীবন খেয়ে যেতে হবে। একটি হলো চর্বির দলা প্রতিরোধ, আরেকটি হলো অনুচক্রিকা প্রতিরোধ, যাতে রক্তকে জমাট করতে না পারে। চর্বির দলা প্রতিরোধে স্ট্যাটিনজাতীয় ওষুধ (যেমন Atorvastatin, Rosuvastatin ইত্যাদি) এবং রক্ত জমাট প্রতিরোধে রক্ত পাতলা করার ওষুধ (যেমন Aspirin, Clopidogrel, Ticagrelor ইত্যাদি) ডাক্তারের পরামর্শ মতো নিয়মিত খেয়ে যেতে হবে।

সাধারণত হার্ট অ্যাটাকের কিছুক্ষণ পরে রোগীকে অ্যাসপিরিন দেয়া হলে মৃত্যুঝুঁকি কমে যায়। উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে পুনরায় হার্ট অ্যাটাক, ইস্কেমিক স্ট্রোক এবং রক্ত জমাট বাধা প্রতিরোধে সহায়তা করার জন্য অ্যাসপিরিনের দীর্ঘমেয়াদী প্রয়োগ রয়েছে। অ্যাসপিরিন, প্রায়শই একটি অ্যানালজেসিক, অ্যান্টি-পাইরেটিক এবং নন-স্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগ হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

লেখক : সিনিয়র কনসালট্যান্ট কার্ডিওলজিস্ট ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, ইনচার্জ, করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ), ল্যাবএইড কার্ডিয়াক হাসপাতাল।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম