Logo
Logo
×

সুস্থ থাকুন

রমজানে কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কী করবেন

Icon

ডা. মো. নাজমুল হক মাসুম

প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

রমজানে কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কী করবেন

রোজায় খাদ্যাভ্যাস ও পানি কম পানের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় অনেকে ভুগতে পারেন। কোষ্ঠকাঠিন্য কাকে বলে? কারও যদি সপ্তাহে তিনবারের কম মলত্যাগ হয় সেটাকে আমরা কোষ্ঠকাঠিন্য বলি। অনেকেই বলে থাকেন পায়খানা পরিষ্কার হয় না, চিকন নালে বাথরুম হয়। বাথরুম করতে গেলে দেখা যায়, খুব শক্ত ঘুটিঘুটি হচ্ছে এ রকম উপসর্গের রোগীরাই আমাদের কাছে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়েছে ভেবে আসেন।

কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কী করবেন? প্রাথমিক অবস্থায় কারও যদি কোষ্ঠকাঠিন্য হয়, তিনি যদি প্রচুর পরিমাণে পানি, শাকসবজি খেয়ে থাকেন এবং নিয়মিত সকালে মলত্যাগের অভ্যাস করেন; তাহলে অনেক ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য এড়ানো সম্ভব। অনেক ক্ষেত্রে আমরা পায়খানা নরম করার জন্য ল্যাকটোলোজ জাতীয় ওষুধ দিয়ে থাকি।

এতেও যদি কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণে রাখা না যায়, তাহলে ‘ইসুবগুলের ভুসি’ দিনে তিন চামচ করে দুবার খেলে এ সমস্যা থেকে প্রায়শ মুক্তি মেলে। পূর্ণবয়স্করা যদি প্রতিদিন ১০-১২ গ্লাস পানি খান, নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করেন, প্রতিদিন ভোরে নিয়মিত ঘুমান বা পরিপূর্ণ বিশ্রাম নেন তাহলে তারা কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন।

এত কিছুর পরও যদি কোষ্ঠকাঠিন্য ভালো না হয়, অনেক সময় মলদ্বারে শক্ত পায়খানা এসে আটকে থাকে, সেক্ষেত্রে আমরা মলদ্বারে গ্লিসারিন জাতীয় ওষুধ দিতে বলি। তাতেও যদি কাজ না হয়, সেক্ষেত্রে এনেমা দিতে হয়। তবে এ সমস্যাকে শুধু ‘কোষ্ঠকাঠিন্য’ ভেবে বসে থাকবেন না। অনেকেই কোষ্ঠকাঠিন্য ভেবে ফার্মেসি থেকে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ কিনে খান।

কোষ্ঠকাঠিন্যের আড়ালে অনেক সময় অনেক রকম রোগ থাকে। যেমন-বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হয় এমন একটি রোগ, যাকে আমরা বলি ‘হাসপ্রাঙ্ক ডিজিজ’। মলদ্বারের মাংসপেশিতে বিভিন্ন রকমের স্নায়ু থাকে, যা কিনা সংকোচন-প্রসারণের মাধ্যমে আমাদের মলদ্বার থেকে মলগুলো বের হতে সাহায্য করে, সেই স্নায়ুগুলো যদি না থাকে, অর্থাৎ শুকিয়ে যায়;

তাহলে এ ডিজিজটা হয়ে থাকে। কাজেই বাচ্চাদের যদি দীর্ঘদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই একজন শিশু সার্জন বিশেষজ্ঞ বা কোলন ও রেকটাল সার্জন বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হবেন।

অনেকের দেখা যায়, আগে স্বাভাবিক পায়খানা হতো, হঠাৎ করে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিয়েছে, আবার নরম পায়খানা হচ্ছে। এ সমস্যা যদি হয়, তাহলে ক্ষেত্রবিশেষে কোলন বা রেক্টাল ক্যানসার হতে পারে। কাজেই শুধুমাত্র কোষ্ঠকাঠিন্য ভেবে কারও এ রোগটিকে অবহেলা করা উচিত নয়।

কোষ্ঠকাঠিন্য হলেই যে আপনার ক্যানসার হয়ে যাবে, এ রকম কথা নয়; কিন্তু কোষ্ঠকাঠিন্য দীর্ঘদিন চলতে থাকলে যদি স্বাভাবিক নিয়মকানুনে ভালো না হয়-তাহলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

চিকিৎসক রোগীদের রোগের বিবরণ নিয়ে, বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে, কী কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হচ্ছে সেটি শনাক্ত করে যথাযথ চিকিৎসা দেবেন।

লেখক : জেনারেল ও কোলোরেকটাল সার্জন, সহযোগী অধ্যাপক, ঢাকা মেডিকেল কলেজ।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম