বারবার মৃত্যুর দরজা থেকে ফিরে আসে যারা, যারা সুগভীর
শীতকাল, তারা ক্ষুদ্র চড়ুইয়ের মতো, একদিন ঘুমের ভিতরে মরে গিয়ে,
ঝুপ করে ঘুমের উদ্ভিদ থেকে মাটির ভুবনে পড়ে গেলে,
পড়ে যাবার ধাক্কায় ফের জেগে উঠে, জীবনের মাঠজুড়ে হাঁটে
আর ভাবে, আমি আগেও হেঁটেছি এইখানে, ক্রমাগত হাঁটতে থাকলে
চিন্তা হয়, তা সে আগেও দেখেছে, সেই অভিজ্ঞতা তার ঝাপ্সাভাবে
মনে পড়ে; বারবার যা হয় তা আগেকার ও এখানের, এরকম ভেবে,
তার চিন্তা, হেঁটে হেঁটে উঠানের অমলিন ছায়া হয়ে যায়, গিয়েছিল
বহু আগে, জামরুল গাছের মতো বহু ঘাস, হয়তো জীবনে ছিল তার,
এইসব মনে পড়ে কিংবা ভাবে, মৃত্যুর দরজা থেকে ফিরে আসা
নীরব মানুষ
সে তো এখনো জীবিত, তবু অতীতের মতো তার সব কিছু লাগে
বিড়বিড় করে বলে, কালরাতে আমার হৃদয় বহু কষ্টে
আমাকে বাঁচিয়ে রাখছিল, তাই আমি ঝুপ করে গাছ থেকে
পড়ে গিয়ে পুনরায় জেগেছি সকালে, আমার হৃদয় প্রবাহিত
হয়ে আছে, নিজ হাতে বাঁক তৈরি করে ঘুরে যাওয়া,
ঘুরে ঘুরে জেগে ওঠা, নদীর মতন;
নদী বাঁক না নিলে, ক্রমশ না ঘুরলে, বেঁচে থাকতে পারে না;
নদী তাই নিজ প্রয়োজনে তার বাঁক তৈরি করে; মানুষেরা
সেই বাঁক বুঝে নিয়ে মোড় ঘোরে; মানুষের গ্রামগুলি প্রবাহিত
হতে থাকে; নদীর নিকটে থেকে, গ্রামও এক নদী হয়ে যায়;
বহু রাতে নদীর সঙ্গীত শুনে মানুষের জীবনে বাঁক আসে,
নদী বাঁক ঘুরে গেছে বলে তার বারবার মৃত্যুর দরজা থেকে
ফিরে আসবার নিদর্শনহীন অভিজ্ঞতা হয়; বাঁক ঘুরে
চলে যাওয়া নদীর অভিজ্ঞতা, মানুষের হৃদয়ে জন্ম দেয়;
মৃত্যুর দরজা থেকে ফিরে মানুষ ক্যাফেতে এসে, বসে থাকে;
নিজের ভিতরে এক অজানার বাঁক তার হাত দুটি অনুভব করে;
কোথায় বা যাব আজ, এই প্রশ্ন থেকে থেকে নদীরও যে মনে হয়,
বারবার ঝুপ করে গাছ থেকে পড়ে যাওয়া, পাখির মতন ক্ষুদ্র,
নীরব মানুষ, অত্যন্ত একাকী বসে টের পায়