গাছায় রজতজয়ন্তীতে বক্তারা
পাঠকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে যুগান্তর

অলিদুর রহমান অলি
প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

অতিথিদের বরণ করে নিচ্ছেন যুগান্তর স্বজনরা
চব্বিশের জুলাই বিপ্লবে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সাহসী ও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার জন্য দৈনিক যুগান্তর ও যুগান্তর পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে গোটা জাতি। যুগান্তর জুলাই বিপ্লব পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে জাতীয় সংকটে বিশেষ ভূমিকা পালন করে দেশের মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। দেশ ও জাতির ক্রান্তিলগ্নে যুগান্তকারী অবদান রেখে চলেছে যুগান্তর-এমনটি বলেছেন বক্তারা। দৈনিক যুগান্তরের রজতজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষ্যে বুধবার গাজীপুর মহানগরীর গাছা মেট্রোপলিটন থানার স্বজন সমাবেশ আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা আরও বলেন, দৈনিক যুগান্তরের স্বপ্নদ্রষ্টা প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম আজ বেঁচে থাকলে রজতজয়ন্তীতে খুবই খুশি হতেন। চব্বিশের দ্বিতীয় স্বাধীনতায় জাতি প্রাণ ভরে আজ নুরুল ইসলামের অবদানের কথা স্মরণ করে তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় দেশব্যাপী দোয়া করছেন।
বক্তারা আরও বলেন, আমরা যারা ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে লড়াই করছিলাম তখন আন্দোলনের দিক-নির্দেশনার আপডেট জানতে যুগান্তর ও যুগান্তর অনলাইনের দিকে নজর রাখতাম। সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করে যুগান্তর ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে।
বুধবার বিকালে নগরীর গাছা থানার খাইলকুর বাদশা মিয়া অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের হল রুমে নানা আয়োজনে উদযাপন করা হয় দৈনিক যুগান্তরের রজতজয়ন্তী। কর্মসূচিতে ছিল কুরআন পাঠ, আলোচনা সভা ও অতিথিদের রজতজয়ন্তীর ক্রেস্ট প্রদান। গাছা স্বজন সমাবেশ আয়োজিত অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত হয়ে উঠে যুগান্তর স্বজন সমাবেশের বিভাগীয় সম্পাদক হিমেল চৌধুরী, যুগান্তর অনলাইন ইনচার্জ আতাউর রহমান ও সিনিয়র সহ-সম্পাদক ইমন চৌধুরীসহ অতিথিদের উপস্থিতিতে।
কেন্দ্রীয় স্বজন সমাবেশের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও টঙ্গীর স্বজনের সভাপতি অলিদুর রহমান অলির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি আরিফ হোসেন হাওলাদার বলেন, আমরা যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে দীর্ঘদিন রাজপথে ছিলাম তাদের আন্দোলন সংগ্রামের মুখপত্র ছিল দৈনিক যুগান্তর ও যুগান্তর অনলাইন। চব্বিশের আন্দোলন কর্মসূচি, আপডেট খবর জানতাম যুগান্তর অনলাইনে ক্লিক করে। এ পত্রিকাটি যিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং যারা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
স্বজনের বিভাগীয় সম্পাদক ও সিনিয়র সহ সম্পাদক হিমেল চৌধুরী বলেন, যুগান্তরের স্বপ্নদ্রষ্টা প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম আমাদের সাহসী ও বলিষ্ঠ হতে শিখিয়েছেন। তিঁনি বেঁচে থাকলে যুগান্তরের এ অবস্থান দেখে খুবই খুশি হতেন। আমাদের স্বজনরা সামাজিক উন্নয়নে কাজ করছে, শিক্ষার প্রসারে কাজ করছে। যা সারা দেশে ইতোমধ্যে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে স্বজনের কার্যক্রম। যুগান্তর অনলাইন ইনচার্জ আতাউর রহমান বলেন, ২৫ বছর পেরিয়ে ছাব্বিশে পা রেখেছে যুগান্তর। কোনো জাতীয় দৈনিকের পথচলার শুরু থেকে পঁচিশ বছর দাপটের সঙ্গে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করে পাঠক হৃদয় জয় করার ঘটনা দেশের বিরল। যুগান্তর শুরু থেকে আজ অবধি সত্যের পক্ষে কলম ধরেছে; সাদাকে সাদা ও কালোকে কালো বলে আসছে। নির্মোহ সংবাদ প্রকাশ করে দুর্নীতিবাজ, দখলদার, চাঁদাবাজসহ যেকোনো অন্যায়কারীর ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে যুগান্তর। তাই যুগান্তর আজ গণমানুষের কণ্ঠস্বর। যার হাত ধরে যুগান্তরের প্রতিষ্ঠা, যিনি আমাদের সব সাহস ও প্রেরণার বাতিঘর; সেই রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম আজ আর আমাদের মধ্যে নেই। আমরা যুগান্তরের স্বপ্নদ্রষ্টার দেখান পথ অনুসরণ করছি। তার দেখান পথ অনুসরণ করে এবং কোটি কোটি পাঠকদের ভালোবাসায় যুগান্তর ভবিষ্যতেও পথ হারাবে না। তিনি বলেন, পৃথিবীর প্রায় ১৯০ টি দেশে পাঠকরা সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদটি সবার আগে পাচ্ছে যুগান্তর অনলাইনে ক্লিক করে। চব্বিশের গণ-আন্দোলনের গণ-মানুষের পক্ষে জোরালো ভূমিকা রেখে যুগান্তর পাঠকদের যে ভালোবাসা পেয়েছে সেটিই আমাদের ভবিষ্যতের পথচলার শক্তি। অনুষ্ঠানে যুগান্তরের সিনিয়র সহ-সম্পাদক ইমন চৌধুরী বলেন, স্বজন সমাবেশ যুগান্তরের পাঠক ফোরাম। এটি দেশব্যাপী কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। আজ স্বজনদের দৈনিক যুগান্তরের রজতজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষ্যে ঢাকা থেকে গাজীপুর সিটির গাছায় না আসলে বুঝতে পারতাম না যুগান্তর ও স্বজনের সামাজিক কর্মকাণ্ড সাধারণ মানুষের হৃদয়ে কতটুকু জায়গা দখল করে নিয়েছে। আমি আপনাদের কর্মতৎপরতায়, জাতির প্রতি দায়িত্বশীল ভালোবাসায় অত্যন্ত মুগ্ধ ও আনন্দিত।
দৈনিক মুক্ত বলাকার প্রকাশক ও সম্পাদক আলমগীর হোসেন দেশের বহুল প্রচারিত পাঠকপ্রিয় যুগান্তরের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করে বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই যুগান্তর ভয়ভীতি উপেক্ষা করে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করে আসছে। গত জুলাই আন্দোলনেও যুগান্তর অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। ভবিষ্যতেও যুগান্তরে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
গাছা থানা স্বজন সমাবেশের সভাপতি ও খাইলকুর বাদশা মিয়া অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক প্রদীপ দেবনাথের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি মো. আরিফ হোসেন হাওলাদার। প্রধান আলোচক ছিলেন জিএমপি গাছা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার ফাহিম আসজাদ। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন দৈনিক যুগান্তরের গাছা প্রতিনিধি এম আর নাসির।
বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন-দৈনিক মুক্ত বলাকার প্রকাশক ও সম্পাদক মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, দৈনিক যুগান্তর গাজীপুর মহানগর প্রতিনিধি আখতার হোসেন, গাছা থানা বিএনপির সভাপতি মনিরুল ইসলাম বাবুল, সহসভাপতি মো. কামরুজ্জামান কামরুল, মো. আবুল হাশেম, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুল জব্বার সরকার, সহসাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন মিয়া, টঙ্গী পশ্চিম থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আবু বক্কর, ৩৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান, গাছা থানা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মফিজুল ইসলাম রানা, গাছা থানা শাখার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সোবহান আহমেদ স্বপন, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নাজিম হাওলাদার, বিএনপির নেতা শফি উল্লাহ শফি, বাদশাহ মিয়া অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. হারুন অর রশিদ, সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান জিলানি, শরিফ ওমর টুটুল প্রমুখ।
কুরআন তেলাওয়াত করেন জামালুল কুরআন কওমি মাদ্রসা প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা বেলাল হোসাইন। স্বজনদের মধ্যে ছিলেন-আমান উল্লাহ আমান, প্রভাষক আমির হোসেন, প্রভাষক নাজমুল আলম, উম্মে সালমা, প্রভাষক সুমাইয়া ভূঁইয়া, প্রভাষক মোহাম্মদ ইয়াকুব, প্রভাষক মোঃ হাসান, আব্দুর রহিম, খাদিজা আক্তার মৌমি, মোহাম্মদ কামাল প্রমুখ।