চার মামলার আসামি প্রকৌশলী হাবিবকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ
মতামত চেয়ে দুদকে চিঠি বেবিচকের

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
নয়শ কোটি টাকার চার দুর্নীতির মামলার অন্যতম প্রধান আসামি বেবিচকের প্রধান প্রকৌশলী হাবিবুর রহমানকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিতে মতামত চেয়ে দুদকে চিঠি দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি প্রধান প্রকৌশলী পদে আরও তিন কর্মকর্তার জন্যও দুদকের কাছে মতামত চাওয়া হয়েছে। বাকি ৩ কর্মকর্তা হলেন সাবেক প্রধান প্রকৌশলী শহীদুল আফরোজ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. জাকারিয়া হোসেন ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শুভাশীষ বড়ুয়া। সম্প্রতি বেবিচকের বোর্ড সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চিঠির পাশাপাশি বেবিচক বোর্ড সভার একটি কার্যবিবরণীও সংযুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে বেবিচকের বোর্ড সভার কার্য বিবরণীতে তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা সম্পর্কে বিশদ বর্ণনা দেওয়া হলেও হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে কোনো মামলার তথ্য দেওয়া হয়নি। উলটো হাবিবুর রহমানের পক্ষে দুদকের মামলাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর বলেন, হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে যেসব মামলা হয়েছে সেগুলোর এখনো চার্জশিট দেয়নি দুদক। কাজেই ধরে নিচ্ছি তার বিরুদ্ধে এখনো অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। তিনি বলেন, বেবিচকে এই মুহূর্তে সব বিভাগীয় প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা আছে। তাহলে কি সবাইকে বাদ দিয়ে দিব? তার পরও আমরা দুদকে চিঠি পাঠিয়েছি। দুদক যে মতামত দেবে সে অনুযায়ীসিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বেবিচক বোর্ড সভায় প্রধান প্রকৌশলী হাবিবুর রহমানকে অবসরোত্তর ১ বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। তবে তার আগে তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা বা অভিযোগের হাল নাগাদ তথ্য চেয়ে দুদককে চিঠি দিয়েছে বেবিচক।
৩ মার্চ অনুষ্ঠিত বেবিচকের ৩শতম বোর্ড সভায় প্রধান প্রকৌশলী নিয়োগের বিষয়ে আলোচনা হয়। সভায় বলা হয়, প্রধান প্রকৌশলী পদে কর্মরত হাবিবুর রহমান চলতি মাসের ২২ মার্চ এলপিআরএ যাবেন। ২৩ মার্চ থেকে পদটি শূন্য হবে। অতি গুরুত্বপূর্ণ এ পদটি পূরণ করা প্রয়োজন।
সভায় সভাপতি জানান, সামগ্রিক বিবেচনায় বেবিচকের প্রধান প্রকৌশলী পদে হাবিবুর রহমানকে তার অবসর উত্তর ছুটি বাতিলপূর্বক আগামী ২৩ মার্চে থেকে ১ বছরের জন্য বেবিচকের প্রধান প্রকৌশলী পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের প্রস্তাব প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো যেতে পারে।
বেবিচক সূত্র জানায়, দুদক হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে চারটি মামলা করেছে। তার বিরুদ্ধে প্রায় ৯০০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, যা বেবিচকের চারটি মেগা প্রকল্পের সঙ্গে সম্পর্কিত। হাবিব কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্প পিডি থাকাকালে ১৫০ কোটি টাকা অগ্রিম বিল পরিশোধ করেছিলেন। সিলেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পে আয়নবায়ন কর্মকর্তা হিসেবে ২১২ কোটি টাকা অগ্রিম বিল প্রদান করেন (দুদকের মামলার এজাহারে এ তথ্য রয়েছে)। তার বিরুদ্ধে রিট পিটিশন হওয়ায় হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। রয়েছে বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, যার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা রয়েছে, তাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া আইন পরিপন্থি।