দু-একদিনের মধ্যেই গণবিজ্ঞপ্তি
নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন দেবে ইসি

বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দু-একদিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হতে পারে। বিজ্ঞপ্তিতে নিবন্ধনপ্রত্যাশী দলগুলোকে ২০ এপ্রিলের মধ্যে নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করার আহ্বান জানানো হবে। রোববার বিকালে এ সংক্রান্ত ফাইল অনুমোদন করেছে কমিশন। নতুন দল নিবন্ধন দিতে আরপিও সংশোধনে সংস্কার কমিশন যে সুপারিশ করেছে, তা আমলে নেওয়া হয়নি। ওই সুপারিশ চূড়ান্ত হওয়ার আগেই নতুন দল নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হলো। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রসঙ্গত, বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৪৯টি।
জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, নির্বাচন কমিশন নতুন দল নিবন্ধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শিগ্গিরই এ সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে।
ইসির সংশ্লিষ্টরা জানান, নতুন দল নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরুর মধ্য দিয়ে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কাজে আরেক ধাপ এগিয়ে গেল কমিশন। নতুন গঠিত রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-সহ অন্য অনিবন্ধিত দলগুলো আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে হলে এ প্রক্রিয়ায় আবেদন করতে হবে।
তবে এ প্রক্রিয়ায় নিবন্ধন আবেদন করবে না জামায়াতে ইসলামী। দলটির নেতারা উচ্চ আদালয়ের রায়ের জন্য অপেক্ষা করছেন। জানতে চাইলে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার যুগান্তরকে বলেন, জামায়াতের নিবন্ধন নিয়ে উচ্চ আদালতের রায়ের জন্য অপেক্ষা করছি। আশা করছি, আমরা ন্যায়বিচার পাব। তিনি বলেন, নিবন্ধন নিয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান আছে। নতুন করে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করব না।
২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে প্রথমবার রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন পদ্ধতি চালু করা হয়। ওই সময়ে জাতীয় নির্বাচনসংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) নতুন বিধান যুক্ত করা হয়। ওই আইন অনুযায়ী, কোনো দলকে নিবন্ধন পেতে কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়, অন্তত এক-তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর কার্যালয় এবং অন্তত ১০০টি উপজেলা বা মেট্রোপলিটন (মহানগর) থানায় কার্যালয় থাকতে হবে এবং প্রতিটি কার্যালয়ে ন্যূনতম ২০০ ভোটার তালিকাভুক্ত থাকতে হবে। ওই শর্ত সহজ করার প্রস্তাব করেছে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। এজন্য নিবন্ধন সংক্রান্ত ধারা-উপধারাগুলোয় সংশোধনী এনে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) একটি খসড়া প্রস্তাব সরকারের কাছে জমা দিয়েছে। সেখানে মাঠপর্যায়ে দলীয় কার্যালয় ও দলের সদস্য সংখ্যা বিদ্যমান নিয়মের চেয়ে কমিয়ে নিবন্ধন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে বা কমিটিতে থাকা অযোগ্য ঘোষণার নতুন বিধান যুক্তের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ সংশোধনী পাশ হওয়ার আগেই বিদ্যমান আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী দল নিবন্ধনের সিদ্ধান্ত নিল ইসি।
নতুন দল নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় বিদ্যমান আইন অনুযায়ী হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ। তিনি যুগান্তরকে বলেন, আমরা আইন সংশোধন করিনি। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী নিবন্ধন হবে।