টঙ্গীর মাজার বস্তি
গোপন কুঠুরির সেই মালিককে খুঁজছে পুলিশ

যুগান্তর প্রতিবেদন ও টঙ্গী শিল্পাঞ্চল (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
টঙ্গীর মাজার বস্তিতে অভিযানকালে গোপন কুঠুরির সন্ধান পাওয়া সেই বাড়ির মালিককে খুঁজছে পুলিশ। তাকে শনাক্তের পর নেওয়া হবে পৃথক ব্যবস্থা। ওই বাড়িতে গোপন কুঠুরিগুলো অপরাধীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসাবে ব্যবহার হয়ে আসছিল- এমনটাই ধারণা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এই কুঠুরিগুলো এমনভাবে তৈরি বাইরে থেকে কারও বোঝার উপায় নেই এর ভেতরে মানুষজন অবস্থান করতে পারে। আবার কুঠুরি থেকে সহজে পালিয়ে যাওয়ারও অভিনব সুরঙ্গ তৈরি করা আছে। এদিকে শনিবার রাতে মাজার বস্তিতে যৌথ বাহিনীর অভিযানের সময় আটক ৬০ জনের মধ্যে ৪৩ জনকে অপরাধী হিসাবে শনাক্ত করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ডাকাতি প্রস্তুতির তিনটি মামলা হয়েছে টঙ্গী পশ্চিম থানায়।
জানা গেছে, টঙ্গীর মাজার বস্তিতে মাদকের পাইকারি বেচাকেনা চলে। শুধু তাই নয়, চোর ছিনতাইকারী ও ডাকাত চক্রের নিরাপদ আস্তানা এই বস্তি। রাজধানীর উপকণ্ঠ হওয়ায় নগরীতে অপরাধ সংঘটিত করে মাজার বস্তিতে গিয়ে আত্মগোপন করে দুর্বৃত্তরা। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা কিছু ব্যক্তি ওই বস্তির নিয়ন্ত্রণ করে। শুধু তাই নয়, বস্তিতে রীতিমতো মাদকের পাইকারি হাট বসে। কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা থেকে আনা মাদকের চালান এই বস্তি থেকে হাতবদল হয় বলে একাধিক গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে। অপরাধীদের তৎপরতা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার রাতে মাজার বস্তি এলাকায় অপারেশন চালায় সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবিসহ যৌথ বাহিনী। অভিযানে বস্তির বিভিন্ন কক্ষ থেকে রামদা, চাপাতি, ছোরাসহ বিপুল সংখ্যক দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়। উদ্ধার করা হয় মাদকদ্রব্যও। বস্তিতে অভিযানকালে মাজার বস্তি ইউনিট বিএনপি কার্যালয় লাগোয়া একটি ঘরের মধ্যে একাধিক গোপন কুঠুরি পাওয়া যায়। অভিনব কায়দায় তৈরি এসব কুঠুরিতে অপরাধীরা নিরাপদে আশ্রয় নিত-এমন ধারণা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। শনিবার রাত ৮টার দিকে শুরু হওয়া এই অভিযান শেষ হয় রাত সাড়ে ১০টার দিকে।
এরপর গাজীপুরের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. রায়হানুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, মাজার বস্তির অনেকেই ছিনতাই ও ডাকাতির সঙ্গে জড়িত বলেও অভিযোগ রয়েছে।
মাদক কারবারি, চিহ্নিত অপরাধীসহ ৬০ জনকে আটক করা হয়েছে। সেই সঙ্গে মাদক ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। রমজানজুড়ে এমন অভিযান চলবে বলেও জানান তিনি। এদিকে রোববার খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৬০ জনের মধ্যে যাচাই বাছাই করে ৪৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইসকান্দার হাবিবুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, অভিযানে গ্রেফতাদের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি ডাকাতির মামলা রুজু হয়েছে থানায়। একটি মামলায় ১৩ জন, একটিতে ১৬ জন এবং অপরটিতে ১৪ জনকে আসামি দেখানো হয়েছে। আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।